Category: রাজনৈতিক

  • পদ্ধতিগত (নির্বাচনী) গণতন্ত্রের চর্চা: ইসলামী সরকার বা ইসলাম প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা ও বাস্তবতা!!

    পদ্ধতিগত (নির্বাচনী) গণতন্ত্রের চর্চা: ইসলামী সরকার বা ইসলাম প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা ও বাস্তবতা!!

    নিউজ ডেস্ক:

    পদ্ধতিগত (নির্বাচনী) গণতন্ত্রের চর্চা: ইসলামী সরকার বা ইসলাম প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা ও বাস্তবতা!!- আহমদ আলী। [গণতন্ত্র: ইসলামী দৃষ্টিকোণ নতুন সংস্করণ (প্রকাশিতব্য) বই থেকে] গণতন্ত্র বিরুদ্ধে এক দল আলিমের একটি বড়ো আপত্তি হলো- প্রচলিত গণতন্ত্রের মাধ্যমে ইসলামী সরকার গঠন করা কোনোক্রমেই সম্ভব নয়। কেননা, গণতান্ত্রিক নির্বাচনব্যবস্থা বলতে গেলে কার্যত টাকার খেলা, প্রভাব-প্রতিপত্তির খেলা, ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের খেলা, ব্যালট বাক্সে জাল ভোট ভর্তির খেলা, এসব খেলা কোনো ইসলামী আদর্শবাদী লোকেরা খেলতে পারে না। অতএব, তাদের পক্ষে ব্যাপকভাবে বিজয়ী হওয়া এবং দলগতভাবে জয় লাভ করা, অন্তত সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তদুপরি গণতন্ত্রে যেহেতু বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও মতবাদের অস্তিত্ব স্বীকার করে নিতে হয় এবং সেখানে তাদেরকে তাদের নিজস্ব মত, চিন্তা ও মতাদর্শ লালন ও প্রচারের অধিকারও মেনে নিতে হয়, তাই গণতন্ত্রের মাধ্যমে কোনোভাবেই ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। এ আপত্তির মধ্যে দুটি প্রসঙ্গ রয়েছে এক. গণতন্ত্রের মাধ্যমে ইসলামী সরকার গঠন এবং ইসলামপন্থীদের পক্ষে বিজয়লাভ ও ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব নয়। দুই. গণতন্ত্রের মাধ্যমে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। প্রথম প্রসঙ্গে আমাদের বক্তব্য হলো- আমরা মনে করি, এ কথাটি যদিও কোনো কোনো দেশে গণতন্ত্র চর্চার অবস্থার নিরিখে সঠিক মনে হয়; কিন্তু গণতন্ত্রের মূল ধারণা, আদর্শ ও লক্ষ্যের ভিত্তিতে তা যুক্তিযুক্ত নয়। আমরা মুসলিম বিশ্বের এমন অনেক দেশ (যেমন: সুদান, আলজেরিয়া, মরক্কো, তিউনিসিয়া, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, মিসর ও মধ্যপ্রাচ্যের অধিকাংশ দেশ) সম্পর্কে জানি, যেখানে গণতন্ত্র সঠিকভাবে বিকশিত হতে পারলে অল্প সময়ের মধ্যেই ইসলামপন্থার অনুসারীরাই সরকার গঠন করবেন। তাই এসব দেশে যাতে ইসলামপন্থার অনুসারীরা সরকার গঠন করতে না পারেন, এ কারণে মুসলিমবিদ্বেষী বিশ্বমোড়লরা সেসব দেশে গণতন্ত্রের চর্চাকে নানা উপায়ে বাধাগ্রস্ত করে চলছে। মূল কথা হলো- বর্তমান গণতান্ত্রিক নির্বাচনব্যবস্থা ইসলামী সরকার গঠনের জন্য বড়ো বাধা নয়। ইসলামী সরকার গঠনের জন্য সবচেয়ে বড়ো প্রয়োজন হলো, ইসলামী সরকার গঠনের পক্ষে ব্যাপক জনমত গড়ে তোলা। আর এজন্য ইসলামপন্থিদের জনমত সৃষ্টির যুগোপযোগী মাধ্যমগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার করে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে ইসলামী শাসনব্যবস্থার পক্ষে নিয়ে আসতে হবে। এতদুদ্দেশ্যে দাওয়াহ ও তারবিয়াহ কার্যক্রম বাড়াতে হবে, শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তুলতে হবে এবং শিক্ষা ও সেবামূলক কর্মকাণ্ডের ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটাতে হবে।বলার অপেক্ষা রাখে না, যে দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী ইসলামী সরকার প্রত্যাশা করবে, তাতে গণতান্ত্রিক নির্বাচনব্যবস্থা_ যদি তা সুষ্ঠুভাবে বিকশিত করা যায়_ ইসলামী সরকার প্রতিষ্ঠার করার পথকে বাধাগ্রস্ত তো করবেই না; বরং অধিকতর প্রশস্ত ও সুগম করে দেবে। জনমতের বিরুদ্ধে গিয়ে যেকোনোভাবে জোরজবরদস্তিমূলক ইসলামী সরকার প্রতিষ্ঠার প্রয়াসকে ইসলামও সমর্থন করে না। আর এভাবে কোনোক্রমে ইসলামী সরকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হলেও বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে তা টিকিয়ে রাখা একেবারেই সম্ভব নয়।

    অনেকেই ‘গণতন্ত্রের মাধ্যমে ইসলামী সরকার আদৌ কায়েম করা সম্ভব নয়’- এ প্রসঙ্গে সাম্প্রতিককালের মিসর ও আলজেরিয়াকে উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করে থাকেন। আলজেরিয়ায় ইসলামপন্থার অনুসারীগণ নির্বাচনে জিতেও ক্ষমতায় যেতে পারেনি এবং মিসরে ক্ষমতায় গিয়েও টিকে থাকতে পারেনি। আমরা মনে করি, এটা গণতন্ত্রের ত্রæটি নয়। সেই দেশদুটিতে কিছু সময়ের জন্য হলেও গণতন্ত্রের সুবাতাস প্রবাহিত হয়েছিল বলেই তারা নির্বাচনে জিতেছিল এবং ক্ষমতায়ও যেতে পেরেছিল। আর তাদের যা ব্যর্থতা (অর্থাৎ ক্ষমতায় যেতে না পারা কিংবা ক্ষমতায় টিকতে না পারা) তার মূল কারণ ছিল বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক ষড়যন্ত্র ও অপরাজনীতি এবং সেনাবাহিনীর উচ্চাভিলাষ। বিশ্লেষকদের মতে, মিসরে মুরসীর পতনের পেছনে মূল কারিগর ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল; সৌদি আরবও গোপনে নানাভাবে ষড়যন্ত্রে অংশ নিয়েছিল। তারা মিসরে ইখওয়ানের উত্থানকে নিজেদের অস্তিত্ব ও মধ্যপ্রাচ্যে খবরদারির জন্য হুমকি মনে করেছিল। উল্লেখ্য, গণতন্ত্রের মাধ্যমে ইসলামপন্থীরা ক্ষমতায় গেলেই এবং সরকার গঠন করলেই যে পরিপূর্ণ ইসলাম কায়েম হয়ে যাবে তা নয়। কারণ, ইসলাম একটি বিপ্লবের নাম; আমূল পরিবর্তনের নাম; ব্যক্তি থেকে রাষ্ট্র পর্যন্ত সকল দিক ও বিভাগের পরিবর্তনের নাম; দু/চারটি বিধান কার্যকর করার নাম ইসলাম প্রতিষ্ঠা নয়; বরং ইসলাম প্রতিষ্ঠার অর্থ হলো_ ব্যক্তির চিন্তা-চেতনা ও বিশ্বাস থেকে শুরু করে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে ইসলামী নীতির পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন ও প্রতিষ্ঠা। বলার অপেক্ষা রাখে না, গণতন্ত্রের মাধ্যমে পরিপূর্ণ ইসলাম প্রতিষ্ঠা, এরূপ আমূল পরিবর্তন প্রায় দুরূহ বলা চলে। কারণ, ইতঃপূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে, গণতন্ত্রে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও মতবাদের অস্তিত্ব স্বীকার করে নিতে হয় এবং সেখানে তাদেরকে তাদের নিজস্ব মত, চিন্তা ও মতাদর্শ প্রচারের অধিকারও মেনে নিতে হয়, যদিও তা স্পষ্টত ইসলাম ও উম্মাহর স্বার্থের বিরুদ্ধে যায়। অথচ সত্যিকার ইসলামী রাষ্ট্রে বাকস্বাধীনতার অধিকারের কথা বলে ইসলাম ও তার শিক্ষার বিরুদ্ধে প্রচারণার কোনো সুযোগ নেই।

    এ কথা স্বীকার্য যে, সমাজের যে কোনো বড়ো ধরনের পরিবর্তন, বিশেষ করে শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন, স্বৈরাচারী সরকারের পতন, কোনো মতাদর্শ প্রতিষ্ঠা প্রভৃতি সহজেই নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে খুব কমই সংঘটিত হয়। এর জন্য প্রয়োজন ব্যাপক জনমত তৈরি ও গণজাগরণ। পৃথিবীতে যতবারই বড়ো ধরনের পরিবর্তন হয়েছে তা গণজাগরণের মাধ্যমে হয়েছে। সাম্প্রতিককালে চীনের সমাজতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা বলুন, রাশিয়ায় সমাজতন্ত্রের পতন বলুন, ইরানের বিপ্লব বলুন, আফগানিস্তানে ইমারতে ইসলামিয়্যাহর প্রতিষ্ঠা বলুন- কোনো পরিবর্তনই ভোটের মাধ্যমে হয়নি; গণজাগরণের মাধ্যমেই সংঘটিত হয়েছে। এমনকি, বাংলাদেশে গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকে আর দু হাজার চব্বিশে স্বৈরাচারের পতনও ভোটের মাধ্যমে হয়নি; গণজাগরণের মাধ্যমেই সংঘটিত হয়েছে। মোটকথা, রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠার পক্ষে যদি ব্যাপক জনমত গড়ে তোলা যায় এবং ইসলামের চাহিদাকে গণদাবিতে পরিণত করা যায়, তখনই গণজাগরণের মাধ্যমে ইসলামী ব্যবস্থা পরিপূর্ণরূপে কায়েম করা সম্ভব হতে পারে।

    ইতঃপূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে, এমন অনেক মুসলিম দেশ রয়েছে, সেগুলোতে যদি গণতন্ত্র সঠিকভাবে বিকশিত হতে পারে, তবে অল্প সময়ের মধ্যে সেসব দেশে ইসলামপন্থীরা সরকার গঠন করতে পারবে; তবে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে তাদের পক্ষে ক্ষমতায় গিয়েও পূর্ণাঙ্গ ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং সমাজ ও রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে ইসলামের বিধিবিধান চালু করা প্রায় অসম্ভবই বলা চলে। তারা আপাতত সেসব দেশে- যদি ইসলামী সরকার গঠিত হয়- যেসব কর্মসূচি নিয়ে এগুতে পারে তা হলো- সামাজিক সাম্য ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিতে পারে এবং সার্বিক পরিবেশ-পরিস্থিতি বিবেচনা করে ধীরে ধীরে- যতটা সম্ভব- ইসলামী বিধানগুলো কার্যকর করার পদক্ষেপ নিতে পারে। বলার অপেক্ষা রাখে না, একযোগে পূর্ণাঙ্গ ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা এবং সমাজ ও রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে ইসলামের বিধিবিধান চালু করার উদ্যোগ ভেস্তে যেতে পারে; ক্ষেত্রবিশেষে তা মহাবিপর্যয় ডেকে আনতে পারে, এ অবস্থায় নিজেদের অস্তিত্ব বিপন্ন হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। উল্লেখ্য, সকল নবী ও রাসূলই নিজ নিজ জাতিকে সর্বপ্রথম তাওহীদের দাওয়াত পেশ করেছেন। যখন কোনো জাতি এ দাওয়াত কবুল করতো, তখনই তাদেরকে ধীরে ধীরে অন্যান্য বিধানের প্রতি দাওয়াত দেওয়া হতো। মুসলিম উম্মাতের ওপর আল্লাহ তা‘আলার একটি বড় অনুগ্রহ হচ্ছে, তিনি শরীয়তের সকল বিধান একযোগে নাযিল করেননি; বরং ক্রমাগতভাবে শরীয়তের বিধানগুলো জারি করেছেন। তদুপরি অনেক বিষয়ের চূড়ান্ত বিধি-নিষেধ এক দিনেও কার্যকর করেননি। ইসলামের আবির্ভাবের সময় মদ্যপান ছিল তৎকালীন আরবের তথা গোটা পৃথিবীর মানুষের সাধারণ অভ্যাস এবং তারা মদ্যপানকে কোনোরূপ অপরাধযোগ্য কর্ম মনে করতো না। অনুরূপভাবে যিনাও ছিল তৎকালীন সমাজে বহুল প্রচলিত একটি সাধারণ চরিত্র। কিন্তু ইসলামে মদ্যপান, যিনা প্রভৃতি মারাত্মক দণ্ডনীয় অপরাধ। তবে মানুষের এই চিরাচরিত অভ্যাস ও চরিত্র পরিবর্তন সাধনে ইসলাম ধীর পদক্ষেপে পর্যায়ক্রমে অগ্রসর হয়েছে। কেননা, এসব বিষয়কে যদি হঠাৎ করে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হতো তাহলে তা মেনে চলা তখনকার লোকদের পক্ষে খুবই কষ্টকর হয়ে পড়তো। অনেকেই হয়তো তা গ্রাহ্যই করতো না। এ প্রসঙ্গে উম্মুল মুমিনীন আয়িশা (রা) বলেছেন,

    ‘‘.. কুরআনের প্রথম অবতীর্ণ সূরাগুলোর মধ্যে জান্নাত ও জাহান্নামের উল্লেখ রয়েছে। তারপর যখন লোকেরা দলে দলে ইসলামে দীক্ষিত হতে লাগলো তখন হালাল-হারামের বিধান সম্বলিত সূরাগুলো নাযিল হয়েছে। যদি শুরুতেই নাযিল হতো যে, তোমরা মদ পান করো না, তাহলে তারা অবশ্যই বলতো যে, আমরা কখনো মদপান ত্যাগ করবো না। যদি শুরুতেই নাযিল হতো যে, তোমরা ব্যভিচার করো না, তাহলে তারা অবশ্যই বলতো যে, আমরা কখনো অবৈধ যৌনাচার বর্জন করবো না।…” (বুখারী)

    সাইয়িদুনা ইবনে আব্বাস (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘‘আল্লাহ তা‘আলা মুহাম্মদ (সা:)-কে পাঠালেন, এই দাওয়াত দেওয়ার জন্য যে, আল্লাহ ব্যতীত কোনো সত্যিকার ইলাহ নেই। মুমিনরা যখন এই কথার স্বীকৃতি দিলো তখন তাদের ওপর সালাত ফরয করা হলো। যখন তারা সালাত বাস্তবায়ন করলো তখন তাদের ওপর সিয়ামের বিধান দেওয়া হলো। যখন তারা সিয়াম পালন করলো তখন তাদের ওপর যাকাত ফরয করা হলো। যখন যাকাতের বিধান পালন করলো তখন হজ্জের বিধান দেওয়া হলো। যখন হজ্জের বিধান পূর্ণ করলো তখন জিহাদের বিধান প্রদান করা হলো। এরপর এই আয়াত অবর্তীণ করা হলো- আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম।” (তাফসীরে তাবারী) এসব রিওয়ায়াতে গুরুত্ব অনুযায়ী দাওয়াতের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা রক্ষার শিক্ষা রয়েছে। তাই আমাদেরও ইসলাম প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় রাখতে হবে। খলীফা উমর ইবনু আবদিল আযীয (রাহ.) সম্পর্কে বর্ণিত রয়েছে, খলীফা হবার পর তিনি শরীয়তের কিছু কিছু বিধান কার্যকর করতে সময় নিচ্ছিলেন। তখন তাঁর ছেলে আবদুল মালিক (রাহ.) এসব বিধানের দ্রæত বাস্তবায়নের কামনা পেশ করলে তিনি বলেন,

    “হে স্নেহের পুত্র! তাড়াহুড়া করো না! কারণ, আল্লাহ তা‘আলাও পবিত্র কুরআনে প্রথম দুবার মদের নিন্দা করেছেন, তৃতীয়বারে হারাম করেছেন। আমার আশঙ্কা হয় যে, আমি যদি সকল লোককে একসাথে সকল সত্য মেনে চলতে নির্দেশ দেই, তাহলে তারা সকলেই মিলে সত্যকে প্রত্যাখ্যান করবে এবং এতে ফিতনা সৃষ্টি হবে।” (আল মুওয়াফাকাত) বর্তমানে দুঃখজনক বাস্তবতা হলো, বর্তমানে বিশ্ব মোড়লরা আন্তর্জাতিকতাবাদ ও বিশ্বায়নের কঠিন ফাঁদে ফেলে মুসলিম দেশগুলোকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে যেভাবে শাসন-শোষণ করছে, তাদের ওপর নিজেদের একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছে, তাতে মুসলিম দেশগুলোতে ইসলামপন্থীদের ক্ষমতায়ন বা ইসলামী রাষ্ট্র কায়িম করা তো দূরের কথা, বরং স্বাধীনভাবে তাদের অস্তিত্ব রক্ষা করাও এখন দুরূহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক ব্যবস্থায় বড়ো ধরনের কোনো পরিবর্তন সূচিত না হলে নিকট-ভবিষ্যতে প্রায় সকল দেশেই_ গণতন্ত্র বলেন, গণজাগরণ বলেন বা সশস্ত্র জিহাদ বলেন_ কোনো পদ্ধতিতেই ইসলামপন্থীদের পক্ষে ব্যাপক জনসমর্থন থাকলেও ক্ষমতায় যাওয়া কঠিন, আবার কোথাও কোনোভাবে গেলেও স্বাধীনভাবে টিকে থাকা অনেক চ্যালিঞ্জিং ব্যাপার, যা মোকাবেলা করার মতো ইসলামী নেতৃত্ব ও মুসলিমমানস আজও মুসলিম দুনিয়ায় খুব একটা গড়ে ওঠেনি।

    সুতরাং এ বৈশ্বিক রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রেক্ষিতে গণতান্ত্রিক মুসলিম দেশগুলোতে ইসলামপন্থীদের গণতন্ত্রের চর্চা, গণতান্ত্রিক নির্বাচনে অংশগ্রহণ কেবল ক্ষমতায় যাওয়ার জন্যই নয়; বরং নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা ও অবস্থান উত্তরোত্তর দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর করার উদ্দেশ্যেও হতে পারে। এরূপ প্রতিকূল রাজনৈতিক অবস্থায় ইসলামপন্থীগণ অন্তত গণতান্ত্রিক নির্বাচন ব্যবস্থায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে-যতটুকু সুযোগ পাওয়া যায় তার যথার্থ ব্যবহার করে- ক্ষমতার দৃশ্যপটে বরাবরই একটি বড়ো প্রেসার গ্রুপ/ইন্টারেস্ট গ্রুপ হিসেবে আবির্ভূত হতে পারেন এবং এ প্রক্রিয়ায় দীন ও মিল্লতের স্বার্থ ও কল্যাণ- যতটা সম্ভব- আদায় করে নিতে পারেন। পক্ষান্তরে এ অবস্থায় যদি ইসলামপন্থীগণ মোটেরওপর গণতন্ত্রের চর্চা ত্যাগ করেন, নির্বাচন ব্যবস্থা বর্জন করেন, তাহলে অনেক ক্ষেত্রে তারা ক্ষমতার দৃশ্যপট থেকে সম্পূর্ণ হারিয়ে যেতে বাধ্য হবেন এবং এর ফলে ক্রমে তাদের অস্তিত্ব ও স্বাতন্ত্র্য রক্ষা করা, সম্মানজনক অবস্থান ধরে রাখাও অনেকখানি কঠিন হয়ে যেতে পারে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এ কথাটি আরও উত্তমভাবে প্রযোজ্য। সমকালীন বৈশ্বিক রাজনীতি ও বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান, বিশেষ করে বর্তমান ভারতের পেটে বসে ইসলামপন্থীদের ক্ষমতায়ন বা ইসলামী রাষ্ট্র/খিলাফত/ইমারত কায়িম করা তো দূরের কথা; বরং স্বাধীনভাবে নিজেদের টিকে থাকা এবং সগর্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোই এখন অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। এমনকি, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে দেশে ইসলামী শক্তির পক্ষে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বাইরে গিয়ে কোনো সরকার গঠন করার কিংবা রাষ্ট্র তৈরি করার বা সমহিমায় টিকে থাকার চিন্তা করা যে একটা অপরিণামদর্শী ও অবাস্তব চিন্তা_ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কাজেই আপাতত ইসলামী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অগ্রসর হয়ে নিজেদের অবস্থান_যতটা পারা যায়_সুসংহত করার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে, যতদিন না বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক রাজনীতিতে আশানুরূপ কোনোরূপ পরিবর্তন আসে।

    তবে এর মানে কখনো এ নয় যে, আমরা একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী রাষ্ট্র/খিলাফত/ইমারত কায়েমের প্রচেষ্টা একেবারে ছেড়ে দেবো; বরং সার্বিক পরিস্থিতির প্রতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে সময়োচিত ও বাস্তবসম্মত কর্মসূচি ও পরিকল্পনা নিয়ে আমরা আমাদের লক্ষ্যপানে এগিয়ে যাবো, আমাদের প্রচেষ্টা প্রতিনিয়ত চালিয়ে থাকবে। আল্লাহ তা‘আলা_ চাহেন তো_ যেকোনো মুহূর্তে অবস্থা পরিবর্তন করে দিতে পারেন!! আমাদের কেউ কেউ আফগানিস্তানের উদাহরণ টানেন। তাদের কথা হলো, সেখানে যদি বিপ্লবের মাধ্যমে ‘ইমারতে ইসলামিয়্যাহ’ প্রতিষ্ঠা করা যায়, তাহলে বাংলাদেশে বা অন্য দেশগুলোতে পারা যাবে না কেন?! আমরা মনে করি, আফগানিস্তানের ইতিহাস ও এর ভৌগোলিক অবস্থার সাথে আমাদের ইতিহাস ও ভৌগোলিক অবস্থার ঢের পার্থক্য রয়েছে। প্রথমত, আফগানরা প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে বিশে^র পরাশক্তিগুলোর সাথে লড়াই করে নিজেদের সক্ষমতার অনন্য নজীর স্থাপন করেছেন; এ দীর্ঘ সময় ধরে তারা প্রচুর ত্যাগ স্বীকার করেছেন এবং চরম ধৈর্যের পরীক্ষা দিয়েছেন। বলতে গেলে, এ সময়ের মধ্যে আফগান শিশুরা মায়ের পেট থেকে বের হয়েছে বোমার আওয়াজ শুনে, যুদ্ধ-বিগ্রহের মধ্যে দিয়েই তারা বেড়ে ওঠেছে। এভাবে ক্রমে তারা এক ধরনের অজেয় শক্তিতে পরিণত হন এবং দেশটি পরিচয় লাভ করে ‘সাম্রাজ্যবাদের কবরস্থান’রূপে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও সোভিয়েত ইউনিয়নসহ বিশে^র সব পরাশক্তি দীর্ঘসময় সামরিক অভিযান পরিচালনার পরও আফগান জনগণকে নিজেদের করতলে আনতে সক্ষম হয়নি এবং শেষাবধি ব্যর্থ হয়ে ফিরে গেছে।

    রাজনৈতিক বিশ্লেষক অ্যাসবি বলেন,
    ‘‘যদি বস্তুনিষ্ঠভাবে দেখা হয়, আফগানিস্তান একটি কঠিন জায়গা। এটি এমন এক জটিল দেশ, যেখানে অস্থিতিশীল অবকাঠামো, খুব সীমিত উন্নয়ন এবং অঞ্চলটির চারদিকে রয়েছে বিস্তৃত ভূমি। .. সোভিয়েত ইউনিয়ন, ব্রিটেন বা যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানের সঙ্গে কোনো নমনীয়তা দেখায়নি। তারা নিজেদের পথে যেতে চেয়েছিল, অনেকদূর এগিয়েও যায়, কিন্তু তারা কখনও আফগানিস্তানের জটিলতা বুঝতে পারেনি।” বলতে গেলে আফগানিস্তান বর্তমানে এমন এক অবস্থায় এসে পৌঁছেছে, মনে হয় না যে, এখন অন্য কোনো শক্তি কথিত ওই কবরস্থানে আক্রমণের ঝুঁকি নেবে। দ্বিতীয়ত, তাদের ভৌগোলিক অবস্থানও আমাদের তুলনায় অনেক সুবিধাজনক; এটি প্রায়ই মুসলিম দেশগুলোর মধ্যস্থলে অবস্থিত, এর সীমানায় রয়েছে ইরান, পাকিস্তান, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান ও তুর্কমেনিস্তান প্রভৃতি দেশ। ওই সব দেশ থেকে বিভিন্ন সময় তারা নানাভাবে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও রসদ প্রভৃতি সহযোগিতা পেয়েছে।

    তৃতীয়ত, সেখানে জনসংখ্যার প্রায় ৯৯ শতাংশই হলো মুসলিম। ফলে দেশের অভ্যন্তরে সংখ্যালঘু কর্তৃক কোনোরূপ ষড়যন্ত্র তৈরির সম্ভাবনাও ছিল না বললেই চলে। আমাদের বাংলাদেশের অবস্থা ঠিক বিপরীত। কারণ, প্রথমত, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বৃহৎ শক্তিগুলোর সাথে দীর্ঘ সময় ধরে মোকাবেলা করে টিকে থাকার মতো দৃঢ় মানসিকতাসম্পন্ন ত্যাগী জানবাজ লোক আজও এ দেশে খুব বেশি তৈরি হয়নি। দ্বিতীয়ত, প্রশ্ন হলোÑ দীর্ঘ সময় ধরে কোনো বড়ো শক্তির সাথে যুদ্ধ-সংগ্রাম চালিয়ে যাবার মতো প্রয়োজনীয় শক্তি-সামর্থ্য-রসদ-সরঞ্জাম আমাদের কতটা আছে?! ভারত যেভাবে বিভিন্ন দিক থেকে আমাদের বেষ্টন করে রেখেছে সেই অবস্থায় থেকে বাইরের সহযোগিতা পাওয়াও আমাদের জন্য অনেক কঠিন ব্যাপার। তৃতীয়ত, আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ আজও ইসলামী বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত নয়। তারা ইসলামকে ভালোবাসলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হোক- তা আন্তরিকভাবে কামনা করে না এবং এ কারণে এতদুদ্দেশ্যে বড়ো ধরনের কোনো ত্যাগ স্বীকার করতেও প্রস্তুত নয়। চতুর্থত, বাংলাদেশ যদিও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য ভূমি; তবুও আমাদের পাশর্^বর্তী রাষ্ট্র ভারত তার স্বার্থে প্রতিনিয়ত সংখ্যালঘুদের একটি শ্রেণিকে দিয়ে নতুন নতুন ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে। পঞ্চমত, আমাদের ইসলামী শক্তিগুলো সুসংহত ও ঐক্যবদ্ধ নয়। নিজেরা নানা দল-উপদল ও শাখা-প্রশাখায় বিভক্ত এবং প্রায়ই নিজেদের অভ্যন্তরীণ কলহ-বিবাদে লিপ্ত থাকে। তদুপরি সামাজিক ও সেবামূলক কার্যক্রমে তাদের অন্তর্ভুক্তিও আশানুরূপ নয়। এ অবস্থায় আমাদের জনগণ তাদেরকে কোনোভাবেই রাষ্ট্রপরিচালনায় আস্থায় নিতে পারছে না।

    কাজেই প্রত্যেকটি দেশকে তার নিজস্ব ইতিহাস-ঐতিহ্য, শক্তি-সামর্থ্য ও অবস্থান দিয়েই মূল্যায়ন করতে হবে; অন্য দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য, শক্তি-সামর্থ্য ও অবস্থান দিয়েই নয়। উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে এটা প্রতীয়মান হয় যে, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ক্ষেত্রবিশেষে ইসলামপন্থীদের পক্ষে ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব, এমনকি সরকারও গঠন করা যেতে পারে; তবে এ কথা অনস্বীকার্য যে, এ পদ্ধতিতে সমাজ ও রাষ্ট্রে পরিপূর্ণরূপে ইসলাম প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।তবে বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠায় কিছু সুবিধা লাভ করা যায়, যা অন্য কোনো শাসনব্যবস্থায় (যেমন- রাজতন্ত্র, একনায়কতন্ত্র, স্বৈরতন্ত্র প্রভৃতি) লাভ করা দুরূহ। নিম্নে এ সুবিধাগুলো উল্লেখ করা হলো-ক. ইসলামের পক্ষে ব্যাপক জনমত গড়ে তোলা যায় গণতন্ত্রে যেহেতু কথা বলার স্বাধীনতা থাকে, সভা-সমাবেশের অধিকার থাকে, অবাধ প্রচারণা চালাবার অধিকার থাকে, তাই এ সুবাদে সেখানে স্বাধীনভাবে ইসলামের প্রচারণা চালানো যায়, তার পক্ষে ব্যাপক জনমত গড়ে তোলা যায়।

    খ. ইসলামপন্থীদের ভিত্ মজবুত করা যায়
    গণতন্ত্রে যেহেতু সামাজিক ও রাজনৈতিক নানা দল, সংগঠন ও সমিতি গড়ে তোলা যায় এবং নির্বিঘেœ দলীয় ও সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করা যায়, তাই এই সুবাদে ইসলামপন্থীরাও সেখানে নিজেদের বিভিন্ন দল ও সংগঠন গড়ে তুলতে পারে এবং নির্বিঘ্নে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে। এভাবে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় তাদের ভিত্ মজবুত করা যায়। গ. রাষ্ট্র ও সমাজের সর্বস্তরে অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করা যায় গণতন্ত্রে যেহেতু সকলেই সমান অধিকার ভোগ করে, রাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিক তার সামর্থ্য ও যোগ্যতা অনুসারে প্রযোজ্য যে কোনো পদে অধিষ্ঠিত হবার অধিকার লাভ করে, তাই সেই সুবাদে ইসলামপন্থীদের পক্ষে সেখানে সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বস্তরে নিজেদের অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি করা সহজ হয়।

    ঘ. সহজেই গণঅভ্যুত্থান ঘটানো যায়
    গণতন্ত্রে যেহেতু নাগরিকরা স্বাধীনভাবে সভা-সম্মেলন-শোডাউন-মিছিল ইত্যাদি করতে পারে, তাই সেই সুবাদে সেখানে সহজেই গণঅভ্যুত্থান ঘটানো যায়, বিপ্লব ঘটানো যায়। ঙ. ইসলামবিরোধী সরকার পরিবর্তন করা যায় গণতন্ত্রে যেহেতু নির্দিষ্ট মেয়াদ অন্তর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ পায়, তাই সেই সুবাদে জনমতের ভিত্তিতে নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ইসলাম-বিরোধী সরকার পরিবর্তন করা যায়, এমনকি কখনও ইসলামপন্থীরা সরকারও গঠন করতে পারে।

    (রিপোস্ট)
    (আপনার সুচিন্তিত মতামতের জন্য ধন্যবাদ)

  • দারিদ্র্যের হার ২৮% হওয়া উদ্বেগজনক; চাঁদাবাজী নতুন বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের পথে প্রধান অন্তরায়- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

    দারিদ্র্যের হার ২৮% হওয়া উদ্বেগজনক; চাঁদাবাজী নতুন বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের পথে প্রধান অন্তরায়- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

    #ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

    স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরে এসে আজ আমাদের দেখতে হচ্ছে, কমপক্ষে পৌনে পাঁচ কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছেন। প্রতি চারজনের একজন এখন গরিব। আরও অনেক মানুষ এমন আর্থিক অবস্থায় রয়েছেন যে অসুস্থতা বা অন্য কোনো সংকটে তাঁরা গরিব হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন। এর চেয়ে হতাশাজনক বিষয় আর কি হতে পারে? দারিদ্র্যতার এই অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে শুধু জিডিপির (মোট দেশজ উৎপাদন) ওপর আলোচনাটা সীমাবদ্ধ না রেখে সমতা, ন্যায়বিচার, বৈষম্যহীনতা ও নাগরিকের কল্যাণ নিয়ে আলোচনা বাড়াতে হবে। ২৬ আগস্ট,২০২৫ মঙ্গলবার ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নিয়মিত বৈঠকে দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ উপর্যুক্ত মন্তব্য করেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব বলেন, বিগত পনের বছরে আমরা উন্নয়নের নানা রকম গল্প শুনেছি। আদতে সেগুলো ছিলো মিথ্যার ফুলঝুড়ি। গণঅভ্যুত্থানের পরে আশা ছিলো অবস্থার পরিবর্তন হবে। কিন্তু অতিতের দীর্ঘ সময়ের সঞ্চিত অব্যবস্থাপনা এবং নতুন করে সৃষ্ট চাঁদাবাজদের উৎপাতের কারণে দেশে নতুন বিনিয়োগ প্রায় থমকে গেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতা এবং রাজনৈতিক সন্ত্রাসের প্রতি নমনীয়তার কারণে পরিস্থিতির কোন উন্নতি হয় নাই। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনে করে, আগামী নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা না করে এখন থেকেই জোড়ালো ও সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে এবং দারিদ্র্যের হার যে কোন মূল্যে শুন্যের ঘরে নামিয়ে আনতে হবে।

    বৈঠকে দলের মুখপাত্র ও যুগ্মমহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, পিআর নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের মন্তব্য আপত্তিজনক। বারংবার “পিআর সংবিধানে নাই” বলে তিনি জনমত প্রভাবিত করতে চাইছেন কিনা সেই সন্দেহ দানা বেঁধেছে। এবং কথা কথায় সংবিধানের দোহা্ই দেয়া আমাদেরকে পতিত স্বৈরাচারের কথা মনে করিয়ে দেয়। আমরা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে থেকে আরো সতর্ক ও নিরপেক্ষ আচারণ আশা করি। সাপ্তাহিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম, মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম, কে এম আতিকুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ ইফতেখার তারিক, দফতর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসেন জাফরী, মহিলা ও পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মুফতী কেফায়েতুল্লাহ কাশফী, সংখ্যালঘু বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ মকবুল হোসাইন, খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী মোস্তফা কামাল, ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জি এম রুহুল আমীন, ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আরিফুল ইসলাম, সহ-প্রচার ও দাওয়াহ্ বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা কেএম শরীয়াতুল্লাহ, সহ-অর্থ ও প্রকাশনা সম্পাদক অধ্যাপক নাছির উদ্দিন খাঁন, সহ-প্রশিক্ষণ সম্পাদক মুফতি মানসুর আহমাদ সাকী, কেন্দ্রীয় সদস্য মাওলানা মুহাম্মাদ নেছার উদ্দীন, ডা. শহিদুল ইসলাম।

  • ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত।

    ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত।

    ইসলামী রাজনীতি।

    ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সঙ্গে রাজনীতি, নির্বাচন, সংস্কার, নাগরিক অধিকার এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্য ও সম্পর্ক উন্নয়ন নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। আজ ১২ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ৫৫/বি পুরানা পল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই মতবিনিময় বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি কর্তৃক আরোপিত শুল্ক পুনর্বিবেচনা করে সহনীয় করায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীরের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়। মতবিনিময় সভায় আগামীর বাংলাদেশে নির্মাণে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ভাবনা ও তার যৌক্তিকতা তুলে ধরেন দলের যুগ্মমহাসচিব ও মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। একই সাথে সংস্কার কমিশনে ইসলামী আন্দোলনের নীতিগত অবস্থানের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।

    বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, পলিটিক্যাল অফিসার জেমস স্টুয়ার্ট, পলিটিক্যাল স্পেশালিষ্ট ফিরোজ আহমেদ ও পলিটিক্যাল এসিস্ট্যান্ট ইকবাল মাহমুদ।ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. বেলাল নূর আজিজী, দফতর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসেন জাফরী, সহ-প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক কেএম শরীয়াতুল্লাহ, আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য খায়রুল আহসান মারজান, মুহাম্মাদ রাজন শিকদার।

  • ঢাকা, চট্রগ্রাম, বরিশাল ও রাজশাহী বিভাগের প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ- অধ্যাপক হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমেদ।

    ঢাকা, চট্রগ্রাম, বরিশাল ও রাজশাহী বিভাগের প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ- অধ্যাপক হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমেদ।

    #UkhiyaVoice24.Com

    পিআর পদ্ধতির জন্য লড়াইয়ের সাথে সাথে মানুষের ভোটের সম্মান নিশ্চিত করতে আসনভিত্তিক নির্বাচনের প্রস্তুতিও চলবে- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। ২৮ জুলাই ২০২৫ খ্রি: সোমবার সকাল ১০ ঘটিকা হইতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে (৫৫/বি, পুরানা পল্টন-৩য় তলা) ঢাকা, চট্রগ্রাম. বরিশাল ও রাজশাহী বিভাগের সংসদীয় আসনের প্রাথমিক বাছাইয়ে নির্ধারিত প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হয়। সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমদ বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রাষ্ট্র ক্ষমতায় জনগণের ভোটের মূল্যায়ন নিশ্চিত করতে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবীতে বদ্ধপরিকর। পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের জন্য আমরা শেষ সময় পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবো। একই সাথে প্রচলিত নির্বাচন পদ্ধতিতেও প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে চাই। কারণ, আগামী নির্বাচনে দেশপ্রেমিক শক্তিকে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জন করতে হবে। সেজন্য আমাদের সকল ধরণের প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে।

    ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্মমহাসচিব ও দলের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান ঐকমত্য কমিশনে বিএনপির ওয়াকআউট করার প্রসঙ্গ টেনে বলেছেন, শাসন বিভাগ জনতার অনুমোদিত আইনের বলে ক্ষমতায়িত হয় এবং সেই আইনের জন্য জনতার কাছে দায়বদ্ধ থাকে। কিন্তু বাংলাদেশের অতিতের তিক্ত অভিজ্ঞতায় আমরা দেখেছি যে, জনতার কাছে দায়বদ্ধতা এড়াতে নির্বাহী ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে। সেজন্যই নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতায় ভারসাম্য তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। সারা বিশ্বেই এখন ডেলিগেশন অফ পাওয়ার বা ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ একটি বহুল চর্চিত সুশাসন নির্দেশক। সুশাসন প্রতিষ্ঠার এমন পরীক্ষিত ও বহুল চর্চিত নীতির ক্ষেত্রে বিএনপির অনিহা আমাদেরকে শংকিত করে। আমরা আশা করবো ক্ষমতার বিকেন্দ্রিকরণে বিএনপি ঐকমত্য কমিশনকে সহায়তা করবে। সাক্ষাৎকারে প্রতিটি আসন থেকে একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী ও জেলা নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হয়েছেন। তাদের সাথে নির্বাচনী কৌশল, সম্ভাব্যতা নিয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা করা হয়। দলের মহাসচিব মাওলানা ইউুনস আহমদ বলেন, আমাদের আমীরের ঘোষিত “একবাক্সে ভোট”নীতি নিয়ে আমরা দৃঢ় আশাবাদী। আমরা আমাদের মতো করে কাজ গোছানোর জন্য প্রার্থী ঘোষণা করবো। তারা প্রচারণাসহ সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করবেন। নির্বাচনের আগে জাতীয় স্বার্থে কোন দলকে কোন আসন ছেড়ে দিতে হলে নির্দ্বিধায় আমরা তা করবো। ফলে আসন ভিত্তিক প্রার্থী ঘোষণার সাথে ‘একবাক্সে ভোট’ নীতির কোন অসামঞ্জস্যতা নাই।

  • বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঐতিহাসিক রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী ময়দানে জাতীয় সমাবেশ সফলভাবে সম্পন্ন।

    বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঐতিহাসিক রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী ময়দানে জাতীয় সমাবেশ সফলভাবে সম্পন্ন।

    #UkhiyaVoice24.Com


    জামায়াতে ইসলামী যদি আল্লাহর ইচ্ছায়, জনগণের ভালোবাসায় ক্ষমতায় আসে তাহলে মালিক হবে না, সেবক হবে- ডা. শফিকুর রহমান

    অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ, সকল গণহত্যার বিচার, প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার, জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং এক কোটিরও বেশি প্রবাসীদের ভোট প্রদানের ব্যবস্থাসহ ৭ দফা দাবিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আজ ১৯ জুলাই বেলা ২টায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অর্থসহ পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয়। সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, যাদের ত্যাগ ও কুরবানীর বিনিময় ফ্যাসিবাদীদের পতন হয়েছে আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমরা তাদের কথা চিরদিন স্মরণ করব। তাদের কল্যাণের জন্য যা করা দরকার তাই আমরা করবো। আমরা তাদের যেন অবজ্ঞা না করি। অন্য দলকে যেন তুচ্ছ তাচ্ছিল্য না করি। আমরা রাজনৈতিক শিষ্টাচার রক্ষা করবো। জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি তৈরি করব। যারা এখানে কথা বলেছেন তারা আমার মনের কথাই বলেছেন। আমাদের আর একটি লড়াই করতে হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে। সেই লড়াইয়ে আমরা বিজয়ী হবো ইনশাআল্লাহ। দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়বো ইনশাআল্লাহ। জামায়াতের এমপি প্রার্থীগণ নির্বাচিত হলে ট্যাক্স ফ্রি গাড়ী নিবে না, রাষ্ট্রীয় ফ্ল্যাট গ্রহণ করবে না। সাড়া দেশের গণহত্যা,২৪শের গণহত্যা, পিলখানার গণহত্যা, শাপলা চত্বরের গণহত্যার বিচার এই বাংলার মাটিতে নিশ্চিত করতে হবে। জাতীয় সমাবেশে আসার সমর পথে খুলনার দাকোপ উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আবু সাঈদ, পাবনা জেলার ঈশ্বর্দী উপজেলার মোস্তাফিজুর রহমান ঢাকায় আসার পথে এবং রংপুরের শাহ আলম সমাবেশস্থলে ইন্তিকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আমীরে জামায়াত তাদের রূহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করেন এবং তাদের শোক-সন্তপ্ত পরিবার- পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। আমীরে জামায়াত নিন্মোক্ত বিষয়গুলোর উপর মূল্যবান বক্তব্য দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বক্তৃতা দানকালে তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় তার পক্ষে বক্তব্য রাখা সম্ভব হয়নি। আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনে নির্যাতিতদের সম্পর্কে, নির্যাতিত প্রবাসী ভাই-বোনদের ব্যাপারে, দেশের শিক্ষাব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন সাধনের গুরুত্ব তুলে ধরে, রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের (প্রবাসী) অবদান তুলে ধরে তাদের ভোটাধিকার প্রাপ্তির বিষয়ে, সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সুযোগ-সুবিধা ও কল্যাণ সাধনের ব্যাপারে এবং দেশবাসী ও সংগঠনের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে কিছু মূল্যবান কথা বলতে চেয়েছিলেন। আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ ইউনুস আহমাদ, হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমীর মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী, এনসিপির সদস্য সচিব জনাব আখতার হোসেন, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমেদ আবদুল কাদের, খেলাফত আন্দোলনের আমীর আবু জাফর কাসেমী, গণ-অধিকার পরিষদের সভাপতি জনাব নূরুল হক নূর, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, নেজামে ইসলামের মহাসচিব মুসা বিন ইযহার, জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব ডা. গোবিন্দ চন্দ্র প্রামানিক, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির সভাপতি এড. একেএম আনোয়ারুল ইসলাম, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এসএম মোস্তাফিজুর রহমান, জাগপার সহসভাপতি ও মুখপাত্র ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান, বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ড. ফয়জুল হক, কয়েকটি শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ এবং কয়েকজন জুলাই যোদ্ধা।

    জাতীয় সমাবেশে জামায়াত বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মজলুম জননেতা জনাব এটিএম আজহারুল ইসলাম, নায়েবে আমীর সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, নায়েবে আমীর সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোঃ তাহের, সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ও সাবেক এমপি ড.এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর জনাব নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর জনাব মোঃ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, সুপ্রিম কোর্টের বিজ্ঞ আইনজীবী এড. জসীম উদ্দিন সরকার, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম, অন্যতম জুলাই যোদ্ধা ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি সাদিক কাইয়ুম।

    সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এড. এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি এড. মতিউর রহমান আকন্দ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ ও উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিমের যৌথ পরিচালনায় জাতীয় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমীর, সাবেক এমপি মাওলানা আনম শামসুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, মাওলানা আবদুল হালিম, এড. মোয়াযযম হোসাইন হেলাল ও মাওলানা মুহাম্মাদ শাহজাহান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য জনাব সাইফুল আলম খান মিলন, জনাব আবদুর রব, অধ্যক্ষ মোঃ শাহাবুদ্দিন, অধ্যক্ষ মোঃ ইজ্জত উল্লাহ ও জনাব মোবারক হোসাইন প্রমুখ।

    ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমদ বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ৭ দফা দেশের জন্য মঙ্গলজনক। আমরা ৭ দফা পূর্ণভাবে সমর্থন করছি। ইসলামী ঝান্ডা নিয়ে যুবকরা এগিয়ে যাবে ইনশাল্লাহ। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন বলেন, আওয়ামী লীগ ধ্বংস, অভিসাপ, টাকা পাচার, জুলুম নির্যাতনের নাম। তারা দেশকে জঙ্গলে পরিণত করেছে। ফ্যাসিবাদীরা আবার আসলে কারো পিটের চামড়া থাকবে না, সারা বিশ্বে ৯১টি দেশে পিআর পদ্ধতি চালু আছে। আমাদের একটি দল পিআর পদ্ধতি চায় না। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব জনাব আখতার হোসেন বলেন, শুধু নির্বাচন দিয়ে গণতন্ত্র সুরক্ষা করা যাবে না। সুরক্ষা করতে হলে মৌলিক সংস্কার করতে হবে। পিআর পদ্ধতির নির্বাচন চাই। পিআর যারা চায় না তারা জাতির সাথে প্রতারণা করে। মুসলমানদের ন্যুনতম অধিকার ফ্যাসিবাদীরা দেয়নি। এ দেশের সকল ধর্মের মানুষ শান্তিতে বসবাস করবে। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক জনাব সারজিস আলম বলেন, বাংলাদেশে মুজিববাদের স্থান হবে না। খুনী হাসিনার বিচার হতে হবে। ভারতীয় আধিপত্যবাদের স্থান হবে না। বিচার বিভাগ নিরপেক্ষ হতে হবে। ৭২ সালের সংবিধান এক পাশে রাখতে হবে। নারী অধিকার ও সংখ্যালঘুদের অধিকার পূরণ করতে হবে। ফ্যাসিবাদ বিরোধীদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ করতে হবে।বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের সদস্য, মজলুম জননেতা জনাব এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, আমি ১৪ বছর জালেম সরকারের কারাগারে বন্দী ছিলাম। আমাকে ফাঁসি দিয়ে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিলো। তাই আমি বলতে চাই যে, দেশ যেমন নতুনভাবে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। তেমনি আমি নতুনভাবে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের ইচ্ছায় আমি ফাঁসির মঞ্চ থেকে লক্ষ জনতার সামনে উপস্থিত হতে পেরেছি। আমাকে হত্যার আয়োজন করা হয়েছিলো। আমি অন্তবর্তিকালীন সরকারের কাছে আবেদন জানাতে চাই, আমাদের নেতাদের ফাঁসি দিয়ে ও জেলে আটক রেখে হত্যা করা হয়েছে। যারা তাদের হত্যা করেছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে এবং বিচার করতে হবে। তাদের কি অপরাধ ছিলো? তাদের অপরাধ ছিলো তারা এ দেশের জনগণের পক্ষে ও ইসলামের পক্ষে ছিলো।

    আজ কারা পালিয়েছে? জামায়াতে ইসলামীর কোন নেতাকর্মী পালায়নি। আমরা ৫৪ বছর বাংলাদেশ দেখলাম। কিন্তু ৫৪ বছরে বাংলাদেশের কোন পরিবর্তন হয়নি। ১৮ কোটি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে হলে কুরআনের আইন দ্বারা দেশ পরিচালনা করতে হবে। আমরা আল্লাহর আইন ও সৎ লোকের শাসন চাই।বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর, সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, ইসলাম যেখানে থাকে সেখানে শান্তি থাকে। যেখানে ইসলামী নেই সেখানে শান্তি থাকতে পাবে না। সেখানে দুর্নীতি বাসাবাঁধে। আপনারা কি আর দুঃখ কষ্ট চলতে দিতে চান। না দিতে চাইলে সংসদে চলবে ইসলামী আইন। অন্য কোন আইন সংসদে চলবে না। শক্তি দিয়ে অন্যায়কে প্রতিরোধ করতে হবে। আমরা অন্যায়কে প্রতিরোধ করতে চাই। বাংলাদেশ জামায়াতের ইসলামীর নায়েবে আমীর, সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোঃ তাহের বলেন, জামায়াতে ইসলামী দেশবাসী সকলের প্রিয় দল। নারী-পুরুষ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের দল। জামায়াতে ইসলামী জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে। দেশের জনগণের স্বার্থে জামায়াতের লড়াই অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল, সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জামায়াত নেতৃবৃন্দকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছে। জামায়াতের বৃদ্ধ নেতাদের জেলে বন্দী করে রেখে তিলে তিলে হত্যা করা হয়েছে। আমীরে জামায়াতের নির্দেশ জামায়াতে ইসলামী শহীদদের পাশে দাঁড়িয়েছে। সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমরা একটি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। সাংবাদিক,আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিদ্যুৎ বিভাগ, ঢাকা ওয়াসা-সহ সমাবেশ বাস্তবায়নে সার্বিক সহযোগিতাকারীদের সংগঠনের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানানো হয়েছে। কষ্ট শিকার করে সমাবেশ বাস্তবায়নে সহযোগিতা করায় ঢাকাবাসীর প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানানো হয়েছে।

  • প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী সমাবেশ সফল করার লক্ষে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ নরসিংদী জেলা শাখার থানা ও ইউনিয়ন প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত।

    প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী সমাবেশ সফল করার লক্ষে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ নরসিংদী জেলা শাখার থানা ও ইউনিয়ন প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত।

    #এইচ এম শাহাবউদ্দিন তাওহীদ।

    প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী সমাবেশ সফল করার লক্ষে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ নরসিংদী জেলা শাখার থানা ও ইউনিয়ন প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত। অদ্য ৫ জুলাই-২০২৫ খ্রি: শনিবার নরসিংদী প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জেলা সভাপতি মুফতি সাইদ আহমদ সরকার এর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এম এম মাহমুদুল হাসান এর সঞ্চালনায় আগামী ২৫ জুলাই’ ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ নরসিংদী জেলা শাখার ৯ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী সমাবেশ সফল করার লক্ষে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ নরসিংদী জেলা শাখার থানা ও ইউনিয়ন প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় (ঢাকা বিভাগ) সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আরিফ বিন মেহের উদ্দিন । বিশেষ অতিথি – আইএবি নরসিংদী জেলা শাখার ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক হা.মাওলানা শেখ আমিনুল ইসলাম মাহমুদী। আরো উপস্থিত ছিলেন, জেলা সহ-সভাপতি মাওলানা মোবারক হোসাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক, বিএম রাশিদুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক, ইমরান হোসেন, থানা ও ইউনিয়ন দায়িত্বশীল প্রমুখ।

    বার্তা প্রেরক মুহা.কাউছার গাজী, প্রচার সম্পাদক ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ নরসিংদী জেলা শাখা।

  • ইসলামপন্থীদের মধ্যে ঐক্য এখন সময়ের দাবি- সাবেক ছাত্রনেতা রিয়াদ

    ইসলামপন্থীদের মধ্যে ঐক্য এখন সময়ের দাবি- সাবেক ছাত্রনেতা রিয়াদ



    নিউজ ডেস্ক: উখিয়া ভয়েস ২৪ ডটকম

    ইসলামপন্থীদের মধ্যে ঐক্য এখন সময়ের দাবি!বাংলাদেশের মানুষকে খাই খাই রাজনীতি থেকে মুক্ত করতে হলে ইসলামপন্থীদের ঐক্যের বিকল্প নাই।সিন্ডিকেট, চাঁদাবাজী, খুনাখুনি এসব অপরাজনীতির বিকল্পই এখন ইসলাম। সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ! গত ১৬ বছরের তান্ডবের শেষ না হতেই পুরাতন এক পার্টি হাজির হয়েছে বাজার, খেয়াঘাট, গরুর হাট দখলের রাজনীতি নিয়ে। আবার নিজেরা নিজেরা কিলাকিলি করে খুনাখুনিতেও শতক ছাড়িয়ে গেছে। এখনই সুযোগ ওদের রাজনীতির বিরুদ্ধে ইসলামী রাজনীতি খাড়া করানো। যেটা আমরা অতীতে কখনো পারিনি!

    আমাদেরকে নিয়ে ওরা খেলেছে। আমাদেরকে রাজনৈতিক পুতুল বানিয়ে ওরা ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছে।১/২ আসন নয়, এবার আমরা খেলবো পুরো সংসদ বিজয় করার জন্য। জনগণ প্রস্তুত। ইসলামপন্থীদের বাক্স ভরে দিতে। তবে ইসলামপন্থীরা এবারের নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে যেতে না পারলে কপালে শনি আছে।জনগণ মারবেতো মারবে! গালাগালিও করবে! তবে আশার বাণী হলো ইসলামপন্থীদের নির্বাচনি জোট ঘোষণা এখন অপেক্ষা মাত্র! ইনশাআল্লাহ। এবার ইতিহাস পাল্টে যাবে। আগামী নির্বাচনে নতুন এক ইতিহাস রচনা হবে ইসলামের পক্ষে। কেউ ভোট চুরি করে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখা ঠিক হবে না। এবার ভোট চোরদের মুকাবিলা করা হবে শক্ত হাতে। এবার জনগণকে সাথে নিয়ে ইসলামকে বিজয় করেই ঘরে ফিরব। ইনশাআল্লাহ- শরিফুল ইসলাম রিয়াদ।

  • রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে পীর সাহেব চরমোনাই আহ্বানে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ৫টি দলের জরুরী বৈঠক অনুষ্ঠিত।

    রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে পীর সাহেব চরমোনাই আহ্বানে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ৫টি দলের জরুরী বৈঠক অনুষ্ঠিত।

    এইচ এম শাহাবউদ্দিন তাওহীদ।

    দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করিম পীর সাহেব চরমোনাইর আহ্বানে ঢাকার পুরানা পল্টনস্থ ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার রাতে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ৫টি দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের জরুরী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরু, ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, এবি পার্টির মহাসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমদ, এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, মুফতি সৈয়দ এসহাক মুহাম্মদ আবুল খায়ের, আহমদ আবদুল কাইয়ুম, এবি পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ লোকমান, এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন, গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ প্রমুখ।

    বৈঠকে দেশের চলমান রাজনৈতিক ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয় এবং যে কোন মূল্যে ফ্যাসিবাদ বিরোধী সকল রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানানো হয়। কোন কুচক্রি মহল যাতে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়।
    আগামীতে দেশ গঠনে এবং দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় আরো ঘনিষ্ঠভাবে ঐক্যবদ্ধ কৌশল গ্রহণের বিষয়ে বৈঠকে বিষদ আলোচনা হয়।

    অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মোহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানে নেতৃবৃন্দ একমত পোষণ করেন।
    বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. মোহাম্মদ শফিকুর রহমান মুঠোফোনে এ বিষয়ে একমত পোষণ করেন।

  • দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও জাতীয় নাগরিক পার্টির সংলাপ অনুষ্ঠিত

    দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও জাতীয় নাগরিক পার্টির সংলাপ অনুষ্ঠিত

    এইচ এম শাহাবউদ্দিন তাওহীদ উখিয়া।

    স্থানীয় নির্বাচন,মৌলিক সংস্কার ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিচারের দাবীতে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা। লিয়াজো কমিটি গঠন। অদ্য ৩০ এপ্রিল-২০২৫ ইং বুধবার ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মধ্যে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সংলাপে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম, পীর সাহেব চরমোনাই। সংলাপে এনসিপির পক্ষে নেতৃত্ব দেন দলের আহবায়ক জনাব নাহিদ ইসলাম।

    সংলাপে তিনটি বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা হয়।

    ১. জনদুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত স্থানীয় নির্বাচন আয়োজন করা। ২. গণহত্যার ও ফ্যাসিজমের সাথে জড়িতদের দ্রুত বিচার করা এবং দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার করা। বিচার চলাকালীন আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত রাখা। ৩. মৌলিক সংস্কার শেষ করে নির্বাচন আয়োজন করা। এছাড়াও গণ পরিষদ নির্বাচন ও সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতির নির্বাচনসহ সংস্কার ও রাজনীতি নিয়ে উভয় দলের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এবং সংস্কার ও আগামীর রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণে একটি লিয়াজো কমিটি গঠন করা হয়েছে।

    সংলাপে এনসিপির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব, ডক্টর আতিক মুজাহিদ, সরোয়ার তুষার, আশরাফ উদ্দিন মাহদী, যুগ্ম মূখ্য সমন্বয়ক সাদ্দাম হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য আল আমীন টুটুল। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী,অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, হাফেজ মাওলানা ফজলে বারী মাসউদ,সহকারী মহাসচিব সৈয়দ এসহাক মুহাম্মাদ আবুল খায়ের, মাওলানা আহমদ আব্দুল কাইউম।

  • অবিলম্বে সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধিনে সুষ্ঠু নির্বাচন দিন,আলহাজ্ব জান্নাতুল ইসলাম

    অবিলম্বে সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধিনে সুষ্ঠু নির্বাচন দিন,আলহাজ্ব জান্নাতুল ইসলাম

    আলমগীর ইসলামাবাদী চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি।

    আন্দরকিল্লায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগরীর সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত
    বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে সংসদ ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু নিরপক্ষে নির্বাচন। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ ও ব্যর্থ নির্বাচন কমিশন বাতিল ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, জাতীয় সংহতি ও কার্যকর সংসদ প্রতিষ্ঠায় জাতীয় নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির (চ.জ) নির্বাচন ব্যবস্থার প্রর্বতনের দাবিতে আজ ২৭ অক্টোবর ২০২৩ (শুক্রবার) বাদ জুমা, আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের উত্তর গেইটে ইসলামী আন্দোলন বংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগরের সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

    ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগরীর সভাপতি আলহাজ¦ মুহাম্মদ জান্নাতুল ইসলমের সভাপতিত্বে ও নগর সেক্রেটারী আলহাজ¦ আল মুহাম্মদ ইকবালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন, নগর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র সদস্য, আলহাজ¦ আবুল কাশেম মাতাব্বর, নগর জয়েন্ট সেক্রেটারী হাফেজ মাওলানা মোসলেহ উদ্দিন, মাওলানা বোরহান উদ্দিন আল বারী, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি শ্রমিকনেতা ওয়ায়েজ হোসেন ভূইয়া, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মুফতী ইমদাদুল্লাহ কাবীর ভূঁইয়া, জাতীয় শিক্ষক ফোরাম চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি মাওলানা দিদারুল মাওলা, নগর কৃষি ও শ্রম বিষয়ক সম্পাদক শরীফুল আলম চৌধুরী শরীফ, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগরের সেক্রেটারী মাওলানা মাসুদ আল হাবিবী, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি মুহাম্মদ জিল্লুর রহমান প্রমুখ।

    নেতৃবৃন্দ বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদ সরকারকে পদত্যাগ করে জাতীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি আওয়ামী লীগ ছাড়া সকল রাজনৈতিক দলের। সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের নামে দেশে বাকশাল কায়েম করেছে। আইন বিভাগ, বিচার বিভাগ, চিকিৎসা বিভাগ, নির্বাচনী ব্যবস্থা, শিক্ষাঙ্গণসহ সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব আজ সংকটাপন্ন, জনগণ তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত, দুর্নীতিবাজ, লুটেরা এবং তাবেদার শক্তি দেশের মানুষকে জিম্মি করে রেখেছে। উন্নয়নের নামে দেশে দুর্নীতির মহোৎসব চলছে। আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসলে দেশ ধ্বংস হবে। দেশের স্বাধীনতা র্সাবভৌমত্ব বিপন্ন হবে। মানবতা ভুলুন্ঠিত হবে। অনিবার্য সংঘাত এড়াতে সরকারকে দ্রুত পদত্যাগের ঘোষণা দিতে হবে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্তমান ক্ষমতাসীনদের অধীনে হবে না, হতে দেয়া হবে না। সরকার সসম্মানে পদত্যাগ না করলে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।

    নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছর পেরিয়ে গেলেও দেশের জনগণ স্বধীনতার প্রকৃত সুফল পায়নি। জনগণের ভোটাধিকার হরণ এবং মৌলিক অধিকার থেকে জনগণকে বঞ্চিত করার কারণে জাতি আজ স্বাধীনতার সুফল থেকে চরমভাবে বঞ্চিত। দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত উর্ধ্বগতি, শাসকগোষ্ঠীর দুর্নীতি, অধিকার হরণ ও চরম জুুলুম-অত্যাচারে মানুষ আজ দিশেহারা, বাংলাদেশের মানুষ তাদের ভোটারাধিকার থেকে বঞ্চিত। বিগত জাতীয় নির্বাচনসহ স্থানীয় নির্বাচনেও এ অবৈধ আওয়ামীলীগ সরকার যা করেছে, তাতে স্বাধীনতার মর্ম বিচ্যুত হয়েছে। তাই, চট্টগ্রামবাসী ভোটাধিকার আদায়ের সংগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের মতো আগামী ০৩ নভেম্বর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে মানুষের ভোটারাধিকার আদায়ের সমাবেশ সফল করার আহব্বান জানান।