দূর্নীতিবাজ ও শিক্ষকদের কাছ থেকে জোরপূর্বক উৎকোচ আদায়কারী ইসলামিক ফাউন্ডেশন মহেশখালী উপজেলা ফিল্ড সুপারভাইজার সৈয়দ মীর কাশেমের অপসারণ ও জোরপূর্বক আদায়কৃত টাকা ফেরৎ পাওয়া সহ সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ১লা মার্চ (সোমবার) সকাল ১১টায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন মহেশখালী উপজেলা কার্যালয়ের সামনে, জাতীয় ইমাম সমিতি ও বুনিয়াদি শিক্ষক সমিতি ইসলামিক ফাউন্ডেশন মহেশখালী উপজেলার আয়োজনে, শিক্ষক সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন।
এসময় বক্তারা তাদের কাছ থেকে জোরপূর্বক উৎকোচ আদায়কৃত টাকা ফেরৎ না দিলে আদালতে মামলা করবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন। এবং কোন ধরনের তদন্ত ছাড়া অব্যাহতি দেওয়া শিক্ষকদের চাকরি পূর্ণ বহাল রাখার দাবি জানান।
উল্লেখ্য অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সাল থেকে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রনালয় হতে পরিচালিত ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক মহেশখালী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ১৪৮টি (চলমান) কেন্দ্রে মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা, সহজ কোরআন শিক্ষা ও বয়স্ক শিক্ষা পরিচালনা করা হচ্ছে। কেন্দ্র সমূহের ভুক্তভোগী শিক্ষক মুহাম্মদ মফিজুর রহমান, মোঃ ছালেজ জঙ্গী, আবদু শুক্কুর, আবু তাহের সহ কয়েকজন শিক্ষক জানান, প্রকল্পের সুপার ভাইজার সৈয়দ মুহাম্মদ মীর কাশেম বিভিন্ন সময় শিক্ষকদের জিম্মি করে রাখে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, বেতন থেকে টাকা কর্তন করে নেয়া, ঘুষের বিনিময়ে শিক্ষক নিয়োগ সহ নানান দুর্নীতি করে আসছে। কোন শিক্ষক প্রতিবাদ করলে বিভিন্ন অযুহাত সৃষ্টি করে ঐ শিক্ষকদের চাকরিচ্যুত করেন। যার ভয়ে এতদিন অনেক শিক্ষক মুখ খুলেননি।
শিক্ষকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আরো জানা যায়, উক্ত কেন্দ্র সমূহে কর্মরত শিক্ষকদের বেতন সুপার ভাইজারের মাধ্যমেই আসে। সেই সুবাদে সুপার ভাইজার প্রত্যেক শিক্ষকের বেতন থেকে অর্ধেক টাকা কর্তন করে নিজে ভোগ করেন। এমনকি চলমান করোনা মহামারীতে প্রত্যেক শিক্ষক নিদারুণ কষ্টে জীবনযাপন করেছেন। মন্ত্রনালয় হতে মহেশখালীতে চলমান কেন্দ্রের শিক্ষকদের জন্য ৬ মাসের বেতন এক সাথে প্রদান করে। এই সুযোগকে অবৈধ ভাবে শিক্ষকদের জিম্মি করে কাজে লাগান সুপার ভাইজার সৈয়দ মোহাম্মদ মীর কাশেম। তিনি প্রত্যেক শিক্ষক থেকে বিভিন্ন অযুহাতে জোরপূর্বক ৬-১২ হাজার টাকা কর্তন করে রেখে দেন।
শিক্ষকরা প্রতিবাদ করলে চাকরিচ্যুত করার হুমকি দেন। এদিকে ভুক্তভোগী শিক্ষকরা সুপার ভাইজারের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে ইফা ডিজি, পিডি, কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও প্রকল্পের জেলা প্রদানকে লিখিত অভিযোগ দেন। এছাড়াও গত ৩ জানুয়ারী প্রাক-প্রাথমিক ও সহজ কোরআন শিক্ষা কেন্দ্রের ভুক্তভোগী শিক্ষকরা মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিতও অভিযোগ দেন বলে জানা যায়।
এদিকে এসব অভিযোগের ব্যাপারে বক্তব্য নিতে প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ মীর কাশের ব্যবহৃত (রবি, গ্রামীণ ফোন) দুটি ফোন নাম্বারে যোগাযোগ করে বন্ধ পাওয়া যাওয়ায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। এই ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহফুজুর রহমান জানান, অভিযোগটি পাওয়ার পর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। তারা পরবর্তী প্রয়েজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।
Leave a Reply