বুধবার , ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পলিটিক্যাল স্ট্যাটেজি

প্রকাশিত হয়েছে-

 

আলমগীর ইসলামাবাদী
চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি

 

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর রাজনৈতিক স্ট্যাটেজি সহজে সবাই বুঝে না।অনেকে সন্দেহের চোখে দেখে। অথচ রাজনৈতিক প্রজ্ঞাবান ব্যক্তিরা সহজেই বুঝতে পারে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর পদ্ধতি,কৌশল এবং সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা। তাদের একটি দীর্ঘমেয়াদী প্লান রয়েছে।কোন একটি ইস্যুতে Do or die নীতি অবলম্বন করে শক্তি নিঃশেষ করে দেয়না। আচ্ছা মূর্তি ইস্যুতে যদি ডু অর ডাই নীতি অবলম্বন করে তাহলে লাভটা কাদের হবে? অনেকেই এই বিশ্লেষণে গিয়ে ধাক্কা খেয়ে যায়।চরমোনাইর পীর কদম বাড়ানোর অাগে হাজারবার ভাবে এই কদমের রিয়েকশন কি হতে পারে। সেই জন্যে রাজনীতিতে তারা ঠান্ডা মাথায় খেলে দিতে পারে। কোন একটি ইস্যু পেলেই তাকে চূড়ান্তভাবে সরকার পতনের দিকে নিয়ে যাওয়া ইসলামী আন্দোলনের কাজ নয়।বিএনপি চেয়ে আছে পরের মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে খাবে বলে।২০১৩ সালের সেই স্বপ্ন যখন পূরণ হয়নি এখনো তারা সুযোগের সন্ধানে।

একটি ইস্যু হলেই সরকার বিরোধি এজেন্সি গুলো ইসলামী দলগুলোর মাধ্যমে সরকার পতনের স্বপ্ন দেখে। যেমন ডক্টর জাফরুল্লাহ গতকালই বলেছেন একটু ধাক্কা দিলেই সরকার কিনারায় পড়ে যাবে। এটা মূর্তি ইস্যুতে ইসলামপন্থীদের কঠিন অবস্থানকে পূজি করে বলেছেন। নিজেদের শক্তি ক্ষয় করে,ধর্মপ্রাণ মানুষের অাবেগকে কাজে লাগিয়ে কোন বিরোধী শক্তিকে ক্ষমতার সিঁড়ি হিসেবে সুযোগ দিতে চায়না ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। যারা বিএনপির জোটে এবং হেফাজতে আছে তাদের নীতিতে,মননে মস্তিকে বিএনপি প্রীতি কাজ করে। যার ফলশ্রুতিতে কোন একটা ইস্যু পেলেই মাঠ গরম করে সরকার পতনের দিকে নিয়ে যেতে চায়। এই একটি জায়গায় এসে ইসলামী আন্দোলনের রাজনৈতিক কৌশলের সাথে অন্যান্য ইসলামী দলের পলিটিক্যাল স্ট্যাটেজি ফেইল করে। কারণ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কাউকে ক্ষমতা থেকে নামানো বা ক্ষমতায় উঠানোর এজেন্ডা বাস্তবায়নে বিশ্বাসী নয়। সময় হলে তারা শক্তি কাজে লাগিয়ে ইসলামকে ক্ষমতায় নিয়ে যাবে। মূর্তি ইস্যুতে ইসলামী আন্দোলনের অবস্থান স্পষ্ট। তা স্বত্বেও অনেকে পাগলের প্রলাপ বকছেন। এদের পলিটিক্যাল নলেজ যে হাঁটুর নিচে তা স্পষ্টই প্রমাণিত।

কোন একটা ইস্যুতে ইসলামী আন্দোলন আগে মাঠে নামে। প্রথমেই জনমত সৃষ্টি করে। দলের আমির, নায়েবে আমিরের বক্তব্যগুলো শুনলে বুঝতে পারবেন তাদের প্রজ্ঞা। প্রথমে তারা জনতাকে বিষয়টি সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দিবে। জনতা বিষয়টি বুঝতে পারার পর তারা একটি ঝাকুনি দেয়।এতেই সাধারণ জনতা ঐ বিষয়ে সিরিয়াস হয়ে উঠে। পরীক্ষায় প্রথম প্রশ্ন কমন না পড়লে সেটা নিয়ে বসে থাকা কোন মেধাবি শিক্ষার্থীর কাজ হতে পারেনা। অংক একটি না পারলেও পরীক্ষার হলে বার বার সেটা চেষ্টা করতে গিয়ে কাল ক্ষেপন করে বাকি অংকগুলো করার সময় থাকেনা। সুতরাং একটি অংক ভুল হলে সেটা বাদ রেখে বাকিগুলোতে মনোযোগ দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।
। একবার না পারিলে দেখ শতবার থিউরি পরীক্ষার হলে কাজে আসেনা। হিতে বিপরীত হয়। মূর্তি ইস্যু নিয়ে পড়ে থাকাটাও কোন রাজনৈতিক কৌশল নয়। ইসলামী আন্দোলন যেহেতু সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে রাজনীতি করছে তাদের একটি ইস্যু নিয়ে পড়ে থাকার মানেই হয়না। যেমন আজ আরেকটি ইস্যুতে সরব চরমোনাইর পীর সাহেব। বিভিন্ন পত্রিকায় ইতিমধ্যে চলে এসেছে বিষয়টি। আগামী ২০২২ সাল থেকে এস এস সিতে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা সাবজেক্টটি রাখছে না শিক্ষামন্ত্রণালয়। এটার কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির পীর সাহেব চরমোনাই। একটি রাজনৈতিক দল শুধু একটি ইস্যুতে ডুর অর ডাই নীতি অবলম্বন করতে পারেনা। কিছু কাজ করতে হয় রাজপথে, আবার কিছু কাজ করতে হয় ঠান্ডা মাথায় কূটনীতিকভাবে। ইসলামী অান্দোলন বাংলাদেশ ঠান্ডা মাথায় রাজনীতির পুতুলটা নিয়ে হাঁটছে।