ইসলামের দৃষ্টিতে মাতৃভাষার গুরুত্ব-আলমগীর-আলমগীর ইসলামাবাদী

চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি,

ইসলামে মাতৃভাষা ও মাতৃভূমির গুরুত্ব অপরিসীম। দেশপ্রেম যেমন ঈমানের অংশ। ঠিক তেমনই মাতৃভাষার প্রতি ভালোবাসা ও আন্তরিকতা থাকাও ঈমানের অপরিহার্য বিষয়। মহাজগতে যা কিছু আছে তা সর্বশক্তিমান আল্লাহর কুদরত। তেমনি ভাষাও এর ব্যতিক্রম নয়। ইসলাম সব ভাষাকে সম্মান করতে শেখায়।

পবিত্র কুরআনে আল্লাহতাআলা ইরশাদ করেন: ‘আর আমি প্রত্যেক রাসুলকে তার জাতির ভাষাতেই ওহিসহ পাঠিয়েছি যাতে করে সে স্পষ্টভাবে আমার কথা তাদের বুঝিয়ে দিতে পারে।’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত: ৪) হাদিসে উল্লেখ রয়েছে হজরত আবু যর (রা.) থকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ প্রত্যেক নবিকে তার স্বজাতির ভাষায় প্রেরণ করেছেন।’ (মুসনাদে আহমাদ)। হজরত মূসা (আ.) এর সম্প্রদায়ের ভাষা ছিল ইবরানি তাই সে ভাষায় তাওরাত কিতাব নাজিল করা হয়েছে। হজরত দাউদ (আ.) এর সম্প্রদায়ের ভাষা ছিল ইউনানি তাই যাবুর সে ভাষায় নাজিল করা হয়েছে।

হজরত ঈসা (আ.) এর উম্মতের ভাষা ছিল সুরিয়ানি তাই এ ভাষায় ইঞ্জিল কিতাব নাজিল করা হয়েছে। বিশ্ব নবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) এর উম্মতের মাতৃভাষা ছিল আরবি তাই কোরআন তার মাতৃভাষা আরবিতে নাজিল করা হয়েছে। ইসলাম মাতৃভাষা নিয়ে গর্ব অবৈধ মনে করে না। হাদিসে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মায়ের ভাষায় কথা বলতে গর্ববোধ করতেন। তিনি বলতেন, ‘আরবদের মধ্যে আমার ভাষা সর্বাধিক সুফলিত। তোমাদের চাইতেও আমার ভাষা অধিকতর মার্জিত ও সুফলিত। (ইবনুল ‘আরাবী, আল-মু’জাম, প্রাগুক্ত, খ. ৫, পৃ. ৩৫৫, হাদিস নম্বর-২৩৪৫)। আমাদের মাতৃভাষা বাংলার প্রতি শহীদদের অবদান এবং মহানবীর (সা.) মাতৃভাষা প্রীতির অজস্র দৃষ্টান্ত আমাদের সামনে রয়েছে।

তাই ভাষার ক্ষেত্রে আমাদেরকে আরো সচতেন হতে হবে আর নিজ মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় সদা প্রস্তুত থাকতে হবে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *