শুক্রবার , ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ১৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

ঈদগাঁও আলমাছিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ছাত্রী ভর্তিতে বাধা প্রদান ও অনিয়মের অভিযোগ

প্রকাশিত হয়েছে-

বার্তা পরিবেশক:

কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁও থানার আওতাধীন আলমাছিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মৌলানা হেফাজত উল্লাহ নদভীর বিরুদ্ধে ছাত্রী ভর্তিতে হয়রানিসহ নানা ধরনের অনিয়মের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈদগাঁও আল মাছিয়া ডিগ্রি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ  দীর্ঘদিন ধরে ২ জন মাদ্রাসা ছাত্রীকে ভর্তি করতে নিষেধ করছে‌ন। ছাত্রীদের কোনো ধরনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া একতরফাভাবে অনিয়ম,দুর্নীতি এবং তাহার  স্ত্রীর কথায় মাদ্রাসা পরিচালনা করে আসছেন তিনি। ইতিমধ্যে তাহার স্ত্রীর কথায়
স্ত্রীর জন্য মাদ্রাসায় একটি অফিসও দিয়েছেন।ভর্তিচ্ছুক দু’জনই ছাত্রী। তারা দীর্ঘদিন থেকে অত্র প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করে আসছে। তাদের মধ্যে একজন ৩য় শ্রেণী থেকে বার্ষিক পরিক্ষায় সফলতার সাথে ৪র্থ স্থানে উত্তীর্ণ হয়। আরেকজন ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে উত্তীর্ণ হয়ে ৭ম শ্রেণীতে ভর্তি হবে। কিন্তু সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই ২ ছাত্রীদেরকে ৪র্থ ও ৭ম শ্রেণীতে ভর্তি হতে বাধা প্রদান করছেন স্বয়ং অধ্যক্ষ নিজেই।

ছাত্রীদের অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়েরা অত্যান্ত মেধা, প্রজ্ঞা ও সুনামের সাথে মাদ্রাসায় দীর্ঘ দিন ধরে পড়ালেখা করে আসছে। নতুন বছরে মেয়েদের ভর্তির বিষয়ে মাদ্রাসায় যোগাযোগ করলে আমার মেয়েদের ভর্তি করাবেনা বলে অফিস থেকে জানানো হয়।তাদের বড় ভাই  কেন ভর্তি করাবেন না মর্মে জানতে চাইলে, অধ্যক্ষের নিষেধ আছে বলে জানান অফিস কর্তৃপক্ষ। অধ্যক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি তাদেরকে  মাদ্রাসা থেকে বের করে দেন। অধ্যক্ষের বীণা কারণে এমন অপমানজনক আচরণের বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখতে উপজেলা শিক্ষা অফিসার, ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভুগী এক মহিলা বলেনঃঅধ্যক্ষ মৌলানা হেফাজত উল্লাহর স্ত্রীঃ অধ্যক্ষের সাথে আমার  অনৈতিক সম্পর্ক আছে বলে কিছু দিন আগে আমার সাথে  অধ্যক্ষের স্ত্রীর সাথে আমার কথা-কাটাকাটি হয় একপর্যায়ে মারামারির ঘটনাও ঘটেছে আমার নিজ বাসায়। এমন অনৈতিক সন্দেহের কারণে আমার পাসের বাসার আরও কয়েকজনের সঙ্গে  মারামারির কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। অধ্যক্ষ ও তার স্ত্রীর এমন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভুগী আরও এক মহিলা বলেনঃ অধ্যক্ষের স্ত্রী  অধ্যক্ষের সাথে আমার অনৈতিক সম্পর্ক আছে  মর্মে সন্দেহ করে আমার বাসায় এসে এবং মোবাইলে বারবার ফোন দিয়ে বিরক্ত করতেছে তাহার স্ত্রীর এমন কর্মকাণ্ডে বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভুগী আরও তিন জন মহিলা বলেনঃঅধ্যক্ষ মৌলানা হেফাজত উল্লাহর স্ত্রীঃ অধ্যক্ষের সাথে আমাদের  অনৈতিক সম্পর্ক আছে বলে আমদের বাসায় এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। উক্ত ঘটনার বিষয়ে অধ্যক্ষের কাছে বিচার দিতে গেলে অধ্যক্ষ বলেন আপনারা কারা আমি চিনি না আপনাদের সাথে আমার কোন কথা নেই।আমার স্ত্রীর বিষয়ে  কিছু বলতে পারব না।অধ্যক্ষ ও তার স্ত্রীর এমন কর্মকাণ্ডে বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি ।

সূত্র জানায়, অধ্যক্ষের স্ত্রী মাদ্রাসায় আগত মহিলা অভিভাবকদের অনেকের সাথে অধ্যক্ষের অনৈতিক সম্পর্ক চলছে মর্মে সন্দেহ করতে থাকে। সন্দেহ প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাওয়ায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ বেকায়দায় পড়েছে। এমন অনৈতিক সন্দেহের কারণে বিচ্ছিন্নভাবে মারামারিসহ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। অধ্যক্ষ ও তার স্ত্রীর এমন কর্মকাণ্ডে মাঝখানে বলি হচ্ছে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। ফলে, মাদ্রাসায় কোন কোন ছাত্রী ভর্তি হবে তা ঠিক করে দেন তাহার স্ত্রী। কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনার কারণে স্ত্রীর পরকিয়া সন্দেহ বিষয়টি তোলপাড় চলছে মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকায়। বিষয়টি সম্পর্কে স্থানীয় মেম্বার অবগত রয়েছেন।

এবিষয়ে স্থানীয় এক মেম্বার বলেন, অধ্যক্ষ মৌলানা হেফাজত উল্লাহর স্ত্রীর অভিযোগ তিনি পরকিয়ায় আসক্ত। সুনির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়, তিনি কেন ছাত্রীদের মাদ্রাসায় ভর্তি করাচ্ছেন না। হয়তো উনার স্ত্রী নিষেধ করেছেন। আমরা সামাজিকভাবে বিষয়টি দেখছি।

কেন ছাত্রীদের ভর্তি করানো হচ্ছে না জানতে চাইলে এ প্রতিবেদককে অধ্যক্ষ মৌলানা হেফাজত উল্লাহ বলেন, আপনাকে এতো কিছু কেন বলতে হচ্ছে। এসব বিষয়ে আমি কিছু জানি না। ছাত্রীদের ভর্তির বিষয়ে তিনি মাদ্রাসার সভাপতির সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।