উখিয়ায় আমনের মাঠে হাওয়ায় দুলছে সোনালি ধান। হেমন্তের মিষ্টি হাওয়ায় সেই ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত এই অঞ্চলের কৃষকেরা। নানা স্বপ্নে বীজ বোনা যেন এই ফসলে। উখিয়ায় বাম্পার ফলনে সেই স্বপ্ন-সফলতার দারপ্রান্তে। তাই বেশি হাসিখুশিই তারা। দেশের অন্যান্য এলাকার মতো এখানকার কৃষককে বৈরি আবহাওয়ার সাথে লড়তে হয়নি। কোন প্রকার ক্লান্তি ছাড়াই চকচকে সোনালি ধান কাটিয়ে ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষক। সব কিছু ঠিকঠাক থাকায় আল্লাহর রহমতে শতভাগ ফসল উঠবে ঘরে।এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে উৎপাদন ভালো হবে বলে জানিয়েছেন কৃষিবিদ বদিউর আলম। এরই মধ্যে ৫ শতাংশ রোপো আমন ধান কাটা শেষ হয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে আমন ধান কাটা শেস হবে এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কৃষকরা বলছেন, এবার প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হওয়ায় ধানের আবাদে অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই কৃষকরা মহা খুশি। এখন ধান কাটতে শুরু করেছেন। আবহাওয়া ঠিক থাকলে শতভাগ ফসল ঘরে তুলতে পারবেন বলে মনে করছেন তারা। তবে স্থানীয় শ্রমজীবি মানুষেরা হতাশা ব্যক্ত করেছেন। দিন মজুর জানে আলম বলেন, আমরা ধান কাটতাম। এখন কাটতে পারি না। কম দামে রোহিঙ্গাদের এনে ধান কাটা হচ্ছে। ধান কাটা থেকে শুরু করে সকল প্রকার কাজ রোহিঙ্গাদের দখলে। তাই আমরা পরিজন-পরিবার নিয়ে অতি কষ্টে দিনাতিপাত করছি। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী শাহ আলম বলেন, তরিতরকারির দোকান, চায়ের দোকান, টমটম চালানো থেকে সর্বত্রই এখন রোহিঙ্গারা। এরা আমাদের কাজে ভাগ বসাচ্ছে। ধান কাটতে আসা উখিয়া ৬ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের শামসুল আলম বলেন, আমরা সারা দিন ক্যাম্পে বসে থাকি। কোনো কাজ নেই। তাই কাজের সন্ধানে গ্রামাঞ্চলে গিয়ে ধান কাটার কাজ করছি। ধান কাটতে আসা আরেক রোহিঙ্গা রিদুয়ান বলেন, আমরা ভোর বেলা দল বেধে কাজে চলে আসি। এখানকার মানুষজন আমাদের আদর করে কাজ দেয়। তাই আমরা কাজ করতে পারি। যদি স্থানীয়রা আমাদের বাধা দিত তাহলে আমরা কাজ করতে পারতাম না। স্থানীয় নুরুল ইসলাম বলেন, এখানকার মানুষের চাইতে রোহিঙ্গারা ভালো কাজ করে। তারা কাজে ফাঁকি দেয় না। তাছাড়া কম মজুরি দিয়ে তাদের কাজ করানো যায়। ক্যাম্পে থাকা শতকরা ৮০ ভাগ রোহিঙ্গা তাদের দেশ মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে কৃষি কাজ করতেন। কৃষিতে তাদের পারদর্শীতা রয়েছে। এছাড়াও তারা কর্মট। আমরা স্থানীয় ও রোহিঙ্গারা মিলে সহাবস্থানে থাকতে চাই। যতদিন পর্যন্ত তারা তাদের দেশে সম্মানের সাথে তারা যেন ফিরে না যায়।
Leave a Reply