কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর অভিযানে অবৈধ সিমকার্ড নিবন্ধন জালিয়াতি চক্র
৫ সদস্যকে ২০৪ টি অবৈধ সিমসহ গ্রেফতার।
এইচ এম শাহাবউদ্দিন তাওহীদ।
১। র্যাব এলিট ফোর্স হিসেবে আত্নপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই বিভিন্ন প্রকার অপরাধ নির্মূলের লক্ষে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে। ‘‘বাংলাদেশ আমার অহংকার’’ এই স্লোগান নিয়ে র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেফতারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।
২। সাম্প্রতিক সময়ে আভিযানিক কার্যক্রম করার সময় র্যাবের নজরে আসে, একটি চক্র অজ্ঞাত ব্যক্তির নামে নিবন্ধিত সিমকার্ড বিক্রি করছে এবং বিভিন্ন মানুষজন তা ব্যবহার করছে। যার ফলে ওইসব সিমকার্ড ব্যবহার করে অপরাধীরা বিভিন্ন অপরাধ সংগঠিত করছে এবং তাদের পরিচয় পেতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে বেগ পেতে হচ্ছে। উক্ত বিষয়টি র্যাবের নজরে আসার পর র্যাব উল্লেখিত চক্রটিকে সনাক্ত এবং গ্রেফতারের নিমিত্তে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।
৩। এরই প্রেক্ষিতে র্যাব গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে জানতে পারে যে, কতিপয় ব্যক্তি কক্সবাজার জেলার সদর থানাধীন কক্সবাজার পৌরসভাস্থ দি কক্স সিটি সুপার মার্কেটের সামনে অবৈধভাবে অন্যের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে নিবন্ধনকৃত সিম বিক্রি করছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১৫ এর আভিযানিক দল বিষয়টির সত্যতা যাচাই করে এবং ২৩/০৭/২০২২ তারিখ আনুমানিক ১৯.৪৫ ঘটিকায় উল্লেখিত স্থান হতে অবৈধভাবে নিবন্ধিত ২০৪ টি সিমকার্ডসহ ১। মোঃ জাহিদ (১৯), পিতা-মোঃ জামাল, সাং-পাহাড়তলী, নতুনবাজার, ০৭ নং ওয়ার্ড, কক্সবাজার পৌরসভা, থানা-কক্সবাজার সদর, জেলা-কক্সবাজার; ২। মোঃ ফারুক (১৯), পিতা-খুরশেদ আলম, সাং-বদরমোকান, ০৩ নং ওয়ার্ড, থানা-কক্সবাজার সদর, জেলা-কক্সবাজার; ৩। মোঃ ইলিয়াস (২৭), পিতা-মৃত মোহাম্মদ আলী, সাং-খাজা মঞ্জিল, ০৯ নং ওয়ার্ড, থানা-কক্সবাজার সদর, জেলা-কক্সবাজার; ৪। সুজন সাহা (৩০), পিতা-কালীপদ সাহা, সাং-সদর হসপিটাল রোড, বঙ্গপাহাড়, ১০ নং ওয়ার্ড, থানা- সদর, জেলা-কক্সবাজার; ৫। জয় বিশ্বাস (২৪) (মূলহোতা), পিতা-জীবন বিশ্বাস, সাং-হরিজনপাড়া, হাসপাতাল রোড, ০৯ নং ওয়ার্ড, থানা-কক্সবাজার সদর, জেলা-কক্সবাজারদের গ্রেফতার করা হয়।
৪। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কক্সবাজারের অবৈধভাবে সিমকার্ড বিক্রির মূলহোতা জয় বিশ্বাস জানায়, সে দীর্ঘদিন একটি টেলিকম অপারেটরে চাকুরী করতো এবং সেখান থেকে একটি সিমকার্ড কিভাবে অবৈধভাবে সচল ও ব্যবহার করা যায় সেই ধারনা নেয়। তার এক সহকর্মী (ব্যাচমেট) চট্টগ্রামের একটি টেলিকম কোম্পানীতে বর্তমানে চাকুরীরত আছে এবং সে চট্টগ্রাম থেকে অবৈধ পন্থায় সিমকার্ড সংগ্রহ করে তা কক্সবাজারের জয় বিশ্বাস এর নিকট পাঠাতো ও জয় বিশ্বাস কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় এগুলো চড়া মূল্যে বিক্রি করতো।
৫। অবৈধভাবে সিমকার্ড রেজিস্ট্রেশন করার প্রক্রিয়া সম্পর্কে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, টেলিকম কোম্পানীতে চাকুরীরতদের (চক্রের সদস্য) নিকট কোন গ্রাহক সিমকার্ড পরিবর্তন করতে আসলে তাদের আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে যেকোন একটি সমস্যা দেখিয়ে ২য় বারও আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে সিমকার্ড পরিবর্তন করে দেয়া হতো। অতঃপর গ্রাহকদের ১ম বার আঙ্গুলের ছাপ তাদের সংগ্রহে রেখে অন্য একটি সিমকার্ড ওই গ্রাহকদের নামে রেজিস্ট্রেশন করতো এবং তা বিক্রির উদ্দেশ্যে সরবরাহ করতো।
৬। গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply