ককসবাজার জেলার রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া ইউনিয়নস্থ গর্জনিয়া বাজারে গবাদিপশু বিক্রির জন্যে আনতে পারছে না ৪ বৈধখামারী। তারা নানা জটিলতায় পড়ে
তাদের পালিত এ সব গরু খামারেই রেখে দিয়ে শুধু ৪ বেলা খাওয়াচ্ছে আর সেবা দিচ্ছে।
তারা বলেছেন,সীমান্তরক্ষী ও পুলিশের অতিরিক্ত তদারকিতে তারা এসব গরু-মহিষ বাজারে উঠিয়ে ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তারা এক ধরণের যাতাকলে পড়ে হিমশিম খাচ্ছে। আবার অনেকে বলছেন,ঋণের টাকায় গড়ে তোলা তাদের খামারের বিপরীতে নেয়া ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় তারা দারুণ দূঃচিন্তায় দিন কাটাচ্ছে বর্তমানে । এভাবে বাকীদের দাবী ও একই। বর্মী গরুর চাপাচাপিতে দেশীয় গরু-মহিষ এখন বাজারে আকাল।
বালুবাসা গ্রামের খামারী জাফর আলম
এ প্রতিবেদককে বলেন,তার মোট গরু আছে ৭০ টি। তার ছেলে জমিম উদ্দিনের ছাগল আছে শতাধিক। আবার এ সব পশুর জন্য ধান ক্ষেত আবাদ করেছে প্রায় ৪০ কানি। এভাবে গবাদিপশু পালন ও রোপা আমনের আবাদ করতে অন্তত ৫০ /৬০ লক্ষ টাকা তার খরচ হয়েছে । যার যোগান দিতে তিনি ঋণগ্রস্থ হয় প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা। তার মূলধন ১৫ লাখ টাকাসহ সব টাকা এখন মালে আর আমনে পড়ে রয়েছে।
তিনি আরো বলেন,মাল বলতে সেই পালিত গবাদিপশুকেই বুঝিয়েছেন তিনি।
আর আমনে বলতে রোপা আমন।
অপর ব্যবসায়ী আলী সওদাগর বলেন,তিনি গরীর ব্যবসায়ী। অনেক কষ্টে এবং ধারে এ গরুর খামার গড়ে তুলেন তিনি। কিন্ত মিয়ানমার থেকে চোরাই পথের গরু আসার অজুহাতে তার গরু গুলো খামারের বাইর করতে পারছেন না তিনি। হয় বিজি্বি নয় তো পুলিশ। তারা এখন মিয়ানমারের গরু ধরছে গর্জনিয়া বাজরের আশপাশে। সে কারণে খামারিরা বিপাকে পড়েছে। যদি ভূল বশতঃ তাদের বাড়িস্থ সে গরু বিজিবি আটক দেখায়।
তখন তার মূলধন শেষ।
তিনি আরো বলেন, অনেক ব্যবসায়ী
বিজিবির জব্দ করা গরু-মহিষ নিলামে ক্রয় করলেও তার মেয়াদ থাকে ৭ দিন। কিন্তু সে পশু গুলো উক্ত সময়ে বিক্রি করতে না পারলে আবারো সে পশু গুলো বিজিবি বা পুলিশ জব্দের চেষ্টা করে। যাতে বিপাকে তারা।
কেননা বিজিবির সামনে কেউ সুপারিশ করে না। কথাও বলার সাহস পায় না।
খামারী আবদুর রশিদ ও আমানুল্লাহ বলেন, তারা দীর্ঘ দিন ধরে গবাদিপশুর খামার করে আসছে। কখনও কোন সমস্যা হয় নি। সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহবানে সাড়া দিয়ে দ্বিগুন উৎসাহে গরু-মহিষ ও ছাগল পালন করে আসছে তারা।
কিন্ত হঠাৎ করে মিয়ানমারে
যুদ্ধ শুরু হলে কিছু অসাধু ব্যক্তি কম দামে গরু-মহিষ এনে তাদের বাজার নষ্ট করে দিয়েছে। কিছুদিন এভাবে চলার পর বর্তমানে সীমান্তে চোরাইপশু পাচার বন্ধ হয়ে যায় বিজিবির কঠোর নজরদারীতে।
তারা দাবী জানান,বিজিবি সীমান্তে যা করে অবশ্যই ভাল কাজ করে। কিন্তু
গর্জনিয়া বাজারের আশপাশে খামারী এলাকায় বা তাদের পালিত পশুগুলো বাজারে আনা-নেয়ার সময় এতো কঠোরতা তা মোটেও কাম্য নয়। দেশের ক্ষতি। এ জন্যে দেশীয় গরুর খামারীদের গবাদিপশু গুলো বিক্রি করতে পারছে না তারা। কারণ বিজিবির সোর্স গুলো দেশী আর চোরাই পথের গরুর বিষয়ে তথ্য কি দেন তারা খামারীদের বোধে আসছে না। এখন কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের খামারীদের কয়েকশ গরু আটকে আছে গোয়ালে আর খামারে। এ সবের খাবার জোগান দিতে তারা সব সম্পদ বিক্রি করে দিচ্ছে ধাপে ধাপে।
তারা অভিযোগ করে আরো বলেন,এখন নানা যাতাকলে পড়ে তাদের গবাদিপশু বিক্রি করতে না পারায় তারা ঋণের কিস্তি দিতে পারছে না ২ মাস । ঋণের বোঝা এখন গলায়গলায় গিয়ে ঠেকছে বর্তমানে।
গবাদিপশুর খামারীরা এ সব থেকে মুক্তি চায়।
Leave a Reply