আলমগীর ইসলামাবাদী চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি”
“বাংলাদেশ আমার অহংকার” এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
অদ্য ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক ০২,০৫ ঘটিকায় ধৃত আসামী মোঃ আবুল হোসেন র্যাব-৭, চট্টগ্রাম’কে বিশেষ সংবাদের মাধ্যমে জানায় যে, চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও থানাধীন পশ্চিম মুহরা দেওয়ান মহসীন সড়কস্থ জনৈকা নাসরিন আক্তারের বসত ঘরে মাদকদ্রব্য ইয়াবা ট্যাবলেট ও অস্ত্র-গুলি আছে, যা দ্রæত উদ্ধার না করলে সরিয়ে ফেলবে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল তথ্য প্রধানকারী মোঃ আবুল হোসেন’কে সংঙ্গে নিয়ে সাক্ষী ও অন্যান্য লোকদের সাথে জনৈকা নাসরিন আক্তারের বসতঘরে উপস্থিত হয়। তখন সংবাদদাতা জানায় যে, উক্ত বসতঘরের কক্ষের ফলস্ ছাদের উপর অবৈধ অস্ত্র-গুলি এবং ওয়ারড্রপের ড্রয়ারে ইয়াবা ট্যাবলেট রয়েছে। তার দেয়া তথ্য মতে উক্ত কক্ষে প্রবেশ করে উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে তল্লাশী করে কক্ষের ফলস্ ছাদের উপর হতে একটি শপিং ব্যাগের ভিতর ০১টি ওয়ান শ্যুটারগান, ০১টি পাইপগান, ০১ রাউন্ড কার্তুজ এবং ঐ কক্ষেরই একটি ওয়ারড্রফের ভিতর থেকে ২২৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে উদ্ধারকৃত অস্ত্র-গুলি ও ইয়াবা ট্যাবলেট সংক্রান্তে জনৈকা নাসরিন আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদে সে এগুলো সম্পর্কে কিছুই জানে না মর্মে জানায়। উপস্থিত স্বাক্ষী ও স্থানীয় ব্যাক্তিবর্গকে জিজ্ঞাসাবাদে নাসরিন আক্তার একজন সহজ-সরল মহিলা এবং তার স্বভাব-চরিত্র ভাল বলে জানান। ঘটনা দৃষ্টে মোঃ আবুল হোসেন এর দেয়া সংবাদটি রহস্যজনক বলে সন্দেহের সৃষ্টি হলে সংবাদদাতা আবুল হোসেন‘কে বর্ণিত ঘটনার বিষয়ে সাক্ষীদের সম্মুখে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে স্বীকার করে যে, বর্ণিত বসতঘরের মালিক নাসরিন আক্তার ও তার ছেলে মোঃ সোহান (১৮) এর সাথে জায়গা-জমি নিয়ে স্বামী ইউসুফ ও তার ২য় স্ত্রী কোহিনুর আক্তার এর বেশ কিছুদিন যাবত বিরোধ চলে আসছে। উক্ত বিরোধের জের ধরে নাসরিন আক্তার ও তার ছেলে মোঃ সোহান‘কে অবৈধ অস্ত্র-গুলি ও ইয়াবা ট্যাবলেট দিয়ে ফাঁসানোর জন্য ইউসুফ ও তার ২য় স্ত্রী কোহিনুর আক্তার আবুল হোসেনকে নিয়ে পরিকল্পনা করে। সিদ্ধান্ত হয় যে, আবুল হোসেন উল্লেখিত অস্ত্র-গুলি এবং ইয়াবা সংগ্রহ করে নাসরিন আক্তারের ঘরে রেখে র্যাব’কে দিয়ে অভিযান পরিচালনা করাবে। অভিযান শেষ হলে মোঃ আবুল হোসেন’কে এ বাবদ কোাহিনুর এবং ইউসুফ ০৩ লক্ষ টাকা দিবে মর্মে চুক্তি হয়। চুক্তি মোতাবেক আবুল হোসেন উল্লেখিত অস্ত্র গুলি এবং ইয়াবা সংগ্রহ করে নাসরিন ও তার ছেলে মোঃ সোহান ঘরে না থাকার সুযোগে গত ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক ১৮.৩০ ঘটিকায় ইউসুফকে নিয়ে নাসরিন এর ঘরে রেখে আসে।
উল্লেখিত ঘটনাপৃষ্ঠে, মাদক ও অস্ত্র-গুলি টাকার বিনিময়ে অন্যের বসত ঘরে রাখার দায়ে সংবাদদাতা আসামী ১। মোঃ আবুল হোসেন (৩৯), পিতা-মৃত আঃ হাকিম, সাং-আমিন কোড়ালপাড়া, থানা-রাঙ্গুনিয়া, জেলা-চট্টগ্রাম, বর্তমানে সিএন্ডবি গ্যাস কলোনীর পাশে, থানা-চান্দগাঁও, চট্টগ্রাম মহানগর‘কে ০১টি ওয়ান শ্যুটারগান, ০১টি পাইপগান, ০১ রাউন্ড কার্তুজ এবং ২২৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ তৎক্ষনাত গ্রেপ্তার করে এবং ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী নাসরিন আক্তারের স্বামী ইউসুফ ও তার ২য় স্ত্রী কোহিনুর আক্তার র্যাবের উপস্থিতি আচ করতে পেরে সুকৌশলে পালিয়ে যায়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, জমি-জমা ও পারিবারিক কলহের কারনে উক্ত বসতঘরের মালিক নাসরিন আক্তার ও তার ছেলে সোহান‘কে ফাঁসানোর জন্য ইউসুফ ও তার ২য় স্ত্রী কোহিনুর আক্তার এর পরিকল্পনা মোতাবেক টাকার বিনিময়ে উল্লেখিত অস্ত্র-গুলি ও মাদকদ্রব্য ইয়াবা ট্যাবলেট নাসরিন এর ঘরে রেখেছে বলে অকপটে স্বীকার করে।
উল্লেখ্য যে, সিডিএমএস পর্যালোচনা করে গ্রেপ্তারকৃত আসামী মোঃ আবুল হোসেন এর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও থানায় চাঁদাবাজি, হত্যাচেষ্টা ও চুরিসহ সর্বমোট ৬ টি মামলা পাওয়া যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
Leave a Reply