শুক্রবার , ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ১৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

চরম্বার লালারখিল রাস্তার বেহাল দশা, রাস্তা নয়, যেন চাষের জমি

প্রকাশিত হয়েছে-

(বিশেষ প্রতিনিধি)

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মজিদার পাড়া হতে লালারখিল রাস্তাটি প্রথম দেখায় মনে হতে পারে যেন ধান চাষের উপযোগী জমি। কিন্তু ভালো করে আশপাশে দেখলে বোঝা যাবে এটি আসলেই একটি দীর্ঘদিনের অবহেলিত রাস্তা।
সব জায়গায় উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও ওই রাস্তায় যুগ যুগ ধরে কোন ধরনের উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চরম্বা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মজিদার পাড়া হতে লালারখিল রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে কোন ধরনের সংস্কার ছাড়াই পড়ে আছে।
রাস্তাটি টংকাবতী হয়ে বান্দরবান সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত। এই রাস্তা দিয়ে বিভিন্ন গ্রামের হাজার হাজার মানুষের চলাচল। শুষ্ক মৌসুমে ধুলিবালির রাজত্ব এবং বর্ষাকালে একধম চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। বর্ষা শুরু হতে না হতেই কাঁদামাকা রাস্তা দিয়ে এলাকাবাসীকে চলাচল করতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।অথচ এই রাস্তা দিয়েই প্রতিনিয়ত যাতায়ত করেন বিভিন্ন গ্রামের শিশু, বৃদ্ধা, প্রসুতি নারী, অসুস্থ রোগী ও মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজগামী হাজার হাজার মানুষ। রাস্তাটি বর্তমানে ধান চাষের জমিতে পরিনত হয়েছে এবং মাঝে মাঝে পুকুরের মতো রূপ নিয়েছে। যেকোন মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।এছাড়াও বিভিন্ন হাট-বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য ও কৃষি পণ্য সামগ্রী নিয়ে বেচাকেনা করতে অনেক দূর থেকে পায়ে হেঁটে যেতে হয় এলাকাবাসীকে।

স্থানীয়রা জানান, এই রাস্তার কারনে ঝিমিয়ে পড়েছে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক চাকা। কারণ একটি অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা যদি ভাল না হয় সেই অঞ্চলের মানুষদের জীবনমানে কোন গুরুত্ব নেই। এই এলাকার মানুষ স্বপ্ন দেখে যে কখনেই মৃত্যু আগে হয়তো গ্রামে রাস্তাটি পাঁকা দেখে যে পারবেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন কি স্বপ্নই থাকবেই নাকি বাস্তবে পরিনত হবে এমন শংকা নিয়েই দিনাপাত করছেন এলাকার জনসাধারণ। এই গ্রামের কেউ মৃত্যুবরণ করলে তার লাশ খাটিয়ায় করে কবরস্থানে নিয়ে যাওয়াই দুষ্কর হয়ে পড়ে। আর বর্ষার দিনে তো গ্রাম থেকে বের হওয়ায় দায় হয়ে পড়ে। গ্রামের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া সম্ভব হয় না।

স্থানীয়রা আরও জানান, দীর্ঘদিনের এ ভোগান্তি নিরসনে এলাকাবাসী দাবী জানিয়ে সমস্যার সমাধানে উদাসীন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এমন দাবী ভূক্তোভোগী মানুষের। প্রতি বছর বর্ষাকাল এলে এ দুর্ভোগ চরম আকার ধারন করে। দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী একটি রাস্তার জন্য বিভিন্ন মহলের কাছে বলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। চলাচলের দুর্ভোগ যেন তাদের পিছুই ছাড়ছেনা। যানবাহন চলাচলের কোন সুযোগই নেই এই রাস্তা দিয়ে। তাই বাধ্য হয়ে পায়ে হেটেই চলতে হয় সকল শ্রেণী পেশাজীবী মানুষের। ফলে পা পিছলে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা হেলাল উদ্দিন এলাকাবাসীর দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে জানান, এই রাস্তার বিষয়ে অনেক আগে থেকে এমপি মহোদয়কে অবগত করেছি। তবে এখনো পর্যন্ত রাস্তাটি সংস্কারের জন্য কোন ধরনের বরাদ্দ আসেনি বলেও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে লোহাগাড়া উপজেলা স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) মো. ইফরাদ বিন মুনীর জানান, রাস্তাটি জনগনের জন্য খুবই প্রয়োজন। এই রাস্তার বিষয়ে আমাকে কেউ বলেনি। তবে পরে স্থানীয় চেয়ারম্যানের সাথে কথা হয়েছে। ওই রাস্তাটি সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।