বৃহস্পতিবার , ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

টংকাবতীতে দুই পাহাড়ের মাঝে সড়ক, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে হাজারেও মানুষ

প্রকাশিত হয়েছে-

বিশেষ প্রতিনিধি,

বান্দরবান সদর উপজেলার টংকাবতী ইউনিয়নে ৭নং ওয়ার্ডের টংকাবতী বনবিভাগের (রেঞ্জ) অফিস হতে ডিসি সড়ক পর্যন্ত ৫ কি: মিটার দুর্গম দুই পাহাড়ের মাঝ দিয়ে সড়ক (সওজের) সড়কটি একধম ঝুঁকিপূর্ণ। এই সড়ক দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের চলাচল। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় ভোগান্তিতে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ ও বিভিন্ন বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা।

স্থানীয় মোঃ আরিফুল ইসলাম, মোঃ সাদ্দাম, মোঃ জামাল উদ্দীন সহ আরও অনেকের অভিযোগ, দুই পাহাড়ের মাঝ দিয়ে জীবন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে আসছে বিভিন্ন এলাকার জনসাধারণ। কখন পাহাড় ধ্বংসের পড়ে দুর্ঘটনা ঘটে এমন চিন্তা মাথায় নিয়ে চলাচল করে আসছে। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি সংস্কার না করায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে যে, রাস্তার কিছু অংশ পাহাড় ধষে পড়ে একেবারেই চলাচলের অনুপযোগী। যার কারনে অনেকদিন যাবৎ ভ্যান, ইজিবাইক সহ অন্য যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তাই সড়কটি দ্রুত সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করে দেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকার জনসাধারণ।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, বার আউলিয়া, চরম্বা হয়ে টংকাবতী ইউনিয়নের রেঞ্জ অফিস স্টেশন থেকে ডিসি সড়ক পর্যন্ত বিভিন্ন গ্রামের হাজার হাজার মানুষের এই সড়ক দিয়ে চলাচল। রাস্তার বেশির ভাগ অংশ এখন ভেঙ্গে চৌচির হয়ে পরে রয়েছে। আবার অনেক জায়গায় বড় বড় গর্তে সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তাটির অবস্থা খুবই নাজুক। এমন দুরাবস্থা পূর্ণ রাস্তার কারনে এলাকার লোকজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দুই পাহাড়ের মাঝে চলাচল করে যাচ্ছে। রাতে চলাচলে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্কুল-কলেজ সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের। কারন তাদের দীর্ঘ ভাঙ্গা পথ পাড়ি দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। যার কারনে স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সময় মত শিক্ষার্থীরা যেতে পারে না। এছাড়াও রাস্তার এমন পরিস্থিতিতে কৃষকদের ব্যবসায় বেশ ক্ষতি হচ্ছে। যানবাহন না চলায় তাদের কষ্টের শেষ নেই।

একজন ভ্যান চালক জানান, এ রাস্তাটি যেন দেখার যেন কেউ নেই। প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে হাজার হাজার লোকজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে। রাতে অন্ধকারে চলাচল করতে গিয়ে এলাকার লোকজন পাহাড় ধষে দুর্ঘটনার কবলে পরেছে। আমি গরীব মানুষ ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। কিন্তু রাস্তার যে অবস্থা পায়ে হেটে চলাই কষ্ট তারপর আবার ভ্যানে কিভাবে মানুষ নিয়ে চলাচল করবো।

ওই রাস্তায় চলাচলকারী শিক্ষার্থী তানভীরুল ইসলাম, মৈসং ম্রো, মোঃ পারভেজ, সাহাত মনি, রেদুওয়ান জানান, রাস্তাটির বেশির ভাগ স্থানই ভেঙ্গে গর্ত হয়ে গেছে। যার কারনে স্কুলে যেতে আমাদের খুবই কষ্ট হয়। আমরা চাই রাস্তাটি দ্রুত মেরামত করে দেয়া হোক।

এ ব্যাপারে টংকাবতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাং ইয়ং ম্রো প্রদীপ জানান, টংকাবতী বনবিভাগ হতে দুর্গম পাহাড়ের মাঝ দিয়ে ৫ কি: মিটারের ডিসি (সওজের) সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে নাজুক অবস্থায় পড়ে আছে। এই সড়ক দিয়ে হাজারেও মানুষের চলাচল।
বর্তমানে এই সড়ক দিয়ে যানচলাচল একধম বন্ধ রয়েছে। অসুস্থ রোগী ও গর্ভবতী মা স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। স্কুল-কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা সঠিক সময়ে লেখাপড়া করতে পারছে না। এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কারণ যেকোনো মুহূর্তে পাহাড় ধ্বংসে অনাকাঙ্ক্ষিত বড় ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। এছাড়াও কিছুদিন আগেও দুইটি গরু পাহাড় ধ্বংসে মারা গেছে।

এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটনা হতে রক্ষা পেতে দ্রুত সড়কটি পাকাকরণের জন্য মাননীয় মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি মহোদয়, সড়ক ও জনপদ বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।