শুক্রবার , ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - শীতকাল || ২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

তিল তিল করে জমানো অর্থ নিয়ে উধাও রুহুল আমিন: গ্রাহকদের আহাজারি

প্রকাশিত হয়েছে-

আবির আহমেদ হামিদ – রংপুরঃ

পীরগাছা উপজেলার পারুল ইউনিয়ন পরিষদের মনুরছড়া গ্রামের আমান উল্লহের পুত্র রুহুল আমিনের (৪০) উদ্যোগে ১৭ জন সদস্য নিয়ে যাত্রা শুরু করে একটি এনজিও *এমআরএ সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিঃ*। প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হয় ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসের ০৯ তারিখে যা সরকারীভাবে নিবন্ধিত – যার নিবন্ধন নং – গভঃ রেজিঃ নং – ৬৫/২০১৬। শর্তানুসারে সদস্যগণ সর্বোচ্চ দুই কিস্তিতে ১০০০০০/- (একলক্ষ) টাকা বা তার বেশি জমা রাখিলে প্রতি মাসে লাখে-১৫০০/- (পনেরশত) টাকা মুনাফা পাওয়ার চুক্তিতে ১৭ জন সদস্যের মধ্যে ১১ জন সদস্য মিলে প্রায় ১৮২৬৪০০/- (আঠারো লক্ষ ছাব্বিশ হাজার চার শত) টাকা জমা করলে – কিছুদিন চুক্তি অনুসারে মাসিকভাবে মুনাফা প্রদান করিলেও পরবর্তীতে আর মুনাফা পরিশোধ করে নাই। অতপর সদস্য গণ টাকা উত্তোলনের জন্য অফিসে বার বার ধর্না দিলেও কোন প্রকার সুরাহা পান নি। আজ কাল আগামী তারিখ বলিয়া কাল ক্ষেপণ করিতে থাকিলে সদস্যগণ কুল কিনারা না পাইয়া তাহারা বিগত ০৪/০৭/২২ইং তারিখে স্থানীয় পারু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নিকট লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন। চেয়ারম্যান সাহেব অভিযোগ আমলে নিয়ে সমাধানের জন্য উদ্যোক্তা এবং তাহার সহযোগীগণকে ডাকিয়া নোটিশ পাঠাইলে তাহারা চেয়ারম্যানের নিকট উপস্থিত হন নাই। অবশেষে কুল-কিনারাহীণ হয়ে সদস্যগণ গত ০৮/১০/২২ ইং বিজ্ঞ আদালতের স্মরনাপন্ন হয় এবং মোঃ আফজাল হোসেন (৪৫) বাদী হইয়া অন্যান্য সদসগণকে সাক্ষী মানিয়া উদ্যোক্তা রুহুল আমিন গং কে আসামী করে দঃবিঃ ৪০৬/৪২০/১০৯ ধারায় মামলায় করেন – যার মামলা নং – সিআর -৪৩৮/২০২২ইং।

আসামী পক্ষের সাথে যোগাযোগ করিলে – উদ্যোক্তা অর্থাৎ ১নং আসামী রুহুল আমিনে বড় ভাই ২ নং আসামী জহুরুল ইসলাম (৫০) জানান – উদ্যোক্তা রুহুল আমিন ব্যবসায় লোকসান করিয়া প্রায় ছয়মাস যাবত ঢাকায় অবস্থান করছে। এমতাবস্থায় সদস্যগণ নিয়মিত হুমকি ধামকি দিচ্ছেন – অফিস ভাঙচুর ও লুটপাটের করার অভিযোগ করেন উদ্যোক্তার বড় ভাই জহুরুল ইসলাম। তিনি আরও বলেন – “আমাকে তারা মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েন। কারন আমি এই প্রতিষ্ঠানের সাথে কোন প্রকার সম্পৃক্ত ছিলাম না।”

জহুরুল ইসলাম আরও বলেন – তারা অফিস ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে মামলা করার প্রস্তুতি গ্রহণ করতেছে – যে কোন সময় মামলা করা হতে পারে।

(বাদী এবং সাক্ষীগণও স্বীকার করেন যে – জহুরুল ইসলাম ঐ প্রতিষ্ঠানের সাথে কোন ভাবেই যুক্ত ছিলেন না। তবে রুহুল আমিনের নিকট পাওনা অর্থ আদায় করতে গেলে জহুরুল ইসলাম তাদেরকে নানান প্রকার আক্রমনাত্মক কথা বলে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে – আর সেজন্যই তাহাকে আসামি করেছেন। তবে লুটপাটের বিষয়টি সম্পুর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন বলিয়া দাবী করেন সদস্যগণ।)

সদস্য গণের অর্থ জমার একটি নির্ভরযোগ্য প্রমান আমাদের হাতে আসে – সদস্য আবজাল হোসেন (হিসাব নং – ৩২২) দুই কিস্তিতে ১০০০০০/- (একলক্ষ) টাকা জমা করে – ২০০০০/- (বিশহাজার) উত্তোলন করে ৮০০০০/- (আশিহাজার) টাকা জমা রাখেন এবং আরও ৯৯০০/- (নয়হাজার নয়শত) টাকা মাসিক কিস্তিতে জমা রাখেন। আরেক সদস্য আরজিনা (হিসাব নং-৩০০) চার কিস্তিতে মোট ৩০০০০/- (তিনলক্ষ) টাকা জমা রাখেন। আরেক সদস্য রুমানা (হিসাস নং- ৪০৪) দুই কিস্তিতে মোট ৬৫০০০/- (পয়ষট্টি হাজার) টাকা জমা রাখেন। অন্য এক সদস্য আমির হামজা (হিসাব নং- ১৩৯) ১৭৫০০০/- (একলক্ষ পচাত্তর হাজার) টাকা জমা রাখেন। অন্য এক সদস্য শরিফুল ইসলাম (হিসাব নং – ৪০০) ১৮০০০০/- (একলক্ষ আশিহাজার) টাকা জমা রাখেন। আরেক সদস্য আছিয়া বেগম ( হিসাব নং- ৩৯১) ১০০০০০/- (একলক্ষ) টাকা জমা রাখেন। আরেক সদস্য নুর জাহানেী (হিসাব নং – ২৮৫) মোট স্থিতি – ৪৮০০০০/- (চারলক্ষ আশিহাজার) টাকা মাত্র। আরেক সদস্য জরিনা ( হিঃ নং – ৩৬৮) ৫০০০০/- (পঞ্চাশহাজার) টাকা জমা রাখেন। আরেক সদস্য মোতালেব হোসেন (হিঃ নং – ৪০৫) ১৮০০০০/- (একলক্ষ আশিহাজার) টাকা জমা রাখেন। আরেক সদস্য নুর হোসেন (হিঃ নং – ২২৬) ৫৫৪৪০/- (পঞ্চান্ন হাজার চারশত চল্লিশ) টাকা জমা রাখেন। মোট ১৭ সদস্যের মধ্যে ১১ সদস্যের মোট জমাকৃত টাকার পরিমান দাঁড়ায় ১৮২৬৪৪০/- (আঠারো লক্ষ ছাব্বিশ হাজার চার শত চল্লিশ) টাকা মাত্র।

পুরো অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাৎ করে উদ্যোক্তা অর্থাৎ রুহুল আমিন পালিয়ে গেছে বলে অভিযোগ সকল সদস্যদের। সদস্যদের দাবী তারা তাদের জমাকৃত অর্থ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ফেরত পান। আসামি রুহুল আমিনের সঠিক বিচার দাবি করেন তারা।