তুর মেয়েকে পেট্রল দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছি, এসে নিয়ে যা’ সেই নরপিশাচ স্বামী রাসেল গ্রেপ্তার

  • আলমগীর ইসলামাবাদী
  • চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ-

 

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় যৌতুক চেয়ে না পেয়ে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে পেট্রল ঢেলে স্ত্রীর যৌনাঙ্গ ঝলসে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার কোদালা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড গোয়ালপুরা গ্রামের সন্দ্বীপপাড়া এলাকায় গতকাল শুক্রবার ভোরে এই ঘটনা ঘটেছে। ওই নারী বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন। পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্র ঘটনাটি নিশ্চিত করেছে।

 

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের সহকারী অধ্যাপক এ খালেদ মুঠোফোনে প্রতিবেদককে বলেন, ওই গৃহবধূর শরীরের ৪০ শতাংশ পুড়ে গেছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক।

 

ওই গৃহবধূর শরীরের ৪০ শতাংশ পুড়ে গেছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এ খালেদ, সহকারী অধ্যাপক, বার্ন ইউনিট, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

ঘটনার শিকার নারীর নাম ইয়াছমিন আকতার (৩০)। তিনি উপজেলার চন্দ্রঘোনা-কদমতলি ইউনিয়নের নবগ্রাম এলাকার হারুনুর রশিদের মেয়ে। অভিযুক্ত স্বামীর নাম রাছেল (৩০)। তিনি সন্দ্বীপপাড়ার মৃত মো. শফিকুল ইসলামের ছেলে। ঘটনার পর থেকে রাছেল পলাতক ছিলেন। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রাঙ্গুনিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। চট্টগ্রামের পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (রাঙ্গুনিয়া সার্কেল) আনোয়ার হোসেন শামীম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

 

এর আগে বিকেল ৪টার দিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে রাছেলের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন ইয়াছমিনের বাবা হারুনুর রশিদ।

 

ইয়াছমিনের চাচা চন্দ্রঘোনা কদমতলি ইউপির সদস্য আবদুল মালেক বলেন, ইয়াছমিনের সঙ্গে প্রায় আট বছর আগে বিয়ে হয় রাছেলের। তাঁদের সংসারে ৫ বছরের এক ছেলেসন্তান রয়েছে।

 

যৌতুকের দাবিতে ইয়াছমিনকে প্রায়ই নির্যাতন করত জামাতা রাছেল। যৌতুক নিয়ে কথা–কাটাকাটির জেরে শুক্রবার ভোররাতে রাছেল ইয়াছমিনের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। পেট্রল ঢেলে আগুন দেওয়ার পর রাছেল আমাকে ফোন করে। এ সময় সে মুঠোফোনে বলে, ‘তুর মেয়েকে পেট্রল দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছি, এসে নিয়ে যা।’

হারুনুর রশিদ,

ইয়াছমিনের বাবা হারুনুর রশিদ বলেন, যৌতুকের দাবিতে ইয়াছমিনকে প্রায়ই নির্যাতন করতেন জামাতা রাছেল। গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রতিদিনের মতো তাঁরা ঘুমাতে যান। এ সময় যৌতুক নিয়ে তাঁদের মধ্যে অন্য দিনের মতোই কথা-কাটাকাটি হয়। শুক্রবার ভোররাতে রাছেল ইয়াছমিনের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। পেট্রল ঢেলে আগুন দেওয়ার পর রাছেল শ্বশুর হারুনুর রশিদকে ফোন করেন। এ সময় রাসেল মুঠোফোনে বলেন, ‘তুর মেয়েকে পেট্রল দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছি, এসে নিয়ে যা।’ হারুনুর রশিদ বলেন, আগুনে ইয়াছমিনের শরীরের নিচের অংশ ঝলসে গেছে। তিনি রাছেলের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন।

 

চট্টগ্রামের পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (রাঙ্গুনিয়া সার্কেল) আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, ‘চমেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে গিয়ে গৃহবধূর অবস্থা দেখেছি। ঘটনায় জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।’

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *