বাঁশখালীতে গত শনিবার এস আলম কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পে সংঘটিত শ্রমিকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় ৫ শ্রমিক নিহত ও অর্ধ শতাধিক লোক আহত হওয়ার জের ধরে কয়লা প্রকল্পের পক্ষে দায়ের করা মামলায় যে ২২ জনকে এজহার নামীয় আসামী করা হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এতে নিরীহ লোকদের আসামী করে প্রকৃত ইন্দনদাতাদের আড়াল করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা। তাছাড়া মামলার আসামীদের কয়েকজন ছাড়া প্রায় সকলে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। হয়তো কোন কুচক্রি মহলের ইন্দনে মামলায় নিরীহ লোকদের আসামী করে মামলার মোটিভ নষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছে। যিনি মামলার বাদী ফারুক আহমদ তিনি স্থানীয় কেউ নয়। যাদের আসামী করা হয়েছে তাদের তিনি চিনেন বলেও মনে হয়না। এপযর্ন্ত দায়ের করা দুটি মামলায় পুলিশ বাদী হয়ে করা মামলাটিতে কারো নাম নেই।
সেখানের সবাই অজ্ঞাতনামা। আর কয়লা প্রকল্পের পক্ষে করা মামলায় ২২ জনের নাম উল্লেখ করে বাকীদের অজ্ঞাতনামা হিসেবে দেখানো হয়েছে। দুটি মামলার আসামী প্রায় সাড়ে ৩ হাজার। মামলার পর গ্রেফতার আতংকে বর্তমানে গন্ডামারা বড়ঘোনা পুরুষ শুন্য। লোকজন যে যার।মত এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তবে পুলিশ বলছে, মামলা হলেও নিরীহ কাউকে গ্রেফতার করা হবে না। ভিডিও ফুটেজ এবং তথ্য প্রমাণের ভিক্তিতেই কেবল গ্রেফতার করা হবে।
স্থানীয় লোকজন জানান, মামলাটি এস আলম কর্তৃপক্ষের পক্ষে করা হলেও এখানে লেয়াকত আলীর প্রতিপক্ষ লোকগুলোকেই কেবল এজহার নামীয় আসামী করা হয়েছে। হয়তো তার ইশারাতেই এসব করা হয়েছে বলে সন্দেহ এলাকাবাসীর। সুত্র জানায়, শুধুই লেয়াকত বিরোধী হওয়ায় গন্ডামারা ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ও ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার আলী হায়দার আসিফকে আসামী করা হয়েছে। তিনি লেয়াকত বিরোধী হিসেবে পরিচিত। তাছাড়া ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার প্রার্থী আবুল হোসেন সিকদার আবুকেও করা হয়েছে সরাসরি আসামী। তিনিও লেয়াকত বিরোধী এবং স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা। যাকে মুলহোতা বলে এজহার নামীয় ১নং আসামী করা হয়েছে সেই আবদুর রশিদ একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত আবদুর রশিদকেও বানানো হচ্ছে জামাত নেতা হিসেবে। এই বিষয়ে প্যানেল চেয়ারম্যান আলী হায়দার আসিফ জানান, আমরা কয়লা প্রকল্পের জন্য জমি দিলাম, পক্ষে ভূমিকা রাখলাম। এখন যারা এই প্রকল্পের বিরোধী তাদের বিরাগভাজন হয়ে মামলার আসামী হলাম। তিনি চ্যালেন্জ দিয়ে বলেন, কোন ভিডিও চিত্র কিংবা শ্রমিক আন্দোলনে আমার কোন ধরণের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেলে যে কোন শাস্তি।মাথা পেতে নেব। আওয়ামীলীগ নেতা আবুল হোসাইন সিকদার আবু বলেন, আমরা লেয়াকত বিরোধী হওয়ায় আমাদের এই মামলায় ফাসানো হয়েছে। তিনি তদন্ত পুর্বক প্রকৃত ইন্দনদাতাকে খুজে বের করতে প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান।
গন্ডামারা ইউনিয়নের বাসিন্দা শাহ নেওয়াজ চৌধুরী জানান, হয়তো বড় রাগব বোয়ালদের আড়াল করতে এই মামলায় নিরীহ লোকদের জড়ানো হয়েছে। মামলায় নিরীহ লোকদের আসামী করার ঘটনা দুঃখজনক। এমনকি শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়াও অমানবিক। যারা গুলি খেল, যারা মারা গেল দিন শেষে তারাই আসামী। বর্তমানে শ্রমিকরা গ্রেফতার আতংকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে বলেও জানান তিনি।
বাঁশখালী থানার ওসি সফিউল কবির জানান, গন্ডামারার ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। মামলার তদন্ত শুরু হয়েছে। বিভিন্ন আলামত ও ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহের কাজ চলছে। তিনি জানান, কোন অবস্থাতেই নিরীহ কাউকেই গ্রেফতার করা হবে না।
Leave a Reply