বাঁশখালীর ১৪ ইউনিয়নের ১৩টিতে ১৫ জুন বুধবার অনুষ্ঠিত হবে ইউপি নির্বাচন। চাম্বল ইউনিয়নের নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। ১৩ ইউনিয়নে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১২৭টি। এরমধ্যে ১১৪টি ঝুঁকিপূর্ণ।
জানা গেছে, বাঁশখালীর সরল, শিলকূপ, গন্ডামারা, শেখেরখীল, ছনুয়া, বাহারছড়া এ ছয়টি ইউনিয়ন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। পাশাপাশি ৪৭টি ভোটকেন্দ্র অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ও ৬৭টি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
বাঁশখালী ইউপি নির্বাচনে ১১টি ক্ষমতাসীন দলের চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিপরীতে একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। বিদ্রোহী প্রার্থীর চ্যালেঞ্জের মুখে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা। ইতোমধ্যে কয়েকটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছে বিদ্রোহী প্রার্থীদের।
সরলের চেয়ারম্যান প্রার্থী লেয়াকত আলী অভিযোগ করে বলেন, আমাকে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী রশিদ আহমদ ও তার সমর্থকরা প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে। আমি প্রচারণায় বের হতে পারছিনা। এখন তিনি প্রচারণার অংশ হিসেবে সামাজিক যোগাযযোগ মাধ্যমে ভিডিও লাইভ করে ভোটের প্রচারণা চালাচ্ছে।
বাঁশখালীর ১২৭ টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র ১৩টি ভোটকেন্দ্র আছে ঝুঁকিমুক্ত। উপকূলীয় খানখানাবাদ, বাহারছড়া, কাথরিয়া, সরল, গন্ডামারা ও ছনুয়া ইউনিয়নে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক থাকবে এমনটি জানান সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তা।
পুকুরিয়ায় ৩টি, বাহারছড়ায় ১টি, কালীপুরে ১টি, সরলে ২টি, পুঁইছড়িতে ৩টি, শেখেরখীলে ১টি ও ছনুয়ায় ৪টি কেন্দ্র ঝুঁকিমুক্ত।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিবেদন বলছে, পুকুরিয়ার ১০টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ৫টি, অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ২টি। সাধনপুরের ৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৬টি ঝুঁকিপূর্ণ, ৩টি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ, খানখানাবাদের ১১টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৪টি ঝুঁকিপূর্ণ ও ৭টি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ, বাহারছড়ার ১০টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৫টি ঝুঁকিপূর্ণ, ৪টি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ, কালীপুরের ৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৪টি ঝুঁকিপূর্ণ, ৪টি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ, বৈলছড়ির ৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৪টি ঝুঁকিপূর্ণ, ৫টি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ, কাথরিয়ার ৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৫টি ঝুঁকিপূর্ণ, ৪টি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ, সরলের ১১টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৫টি ঝুঁকিপূর্ণ, ৪টি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ, শীলকূপের ৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৮টি ঝুঁকিপূর্ণ, ১টি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ, গন্ডামারার ১০টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৬টি ঝুঁকিপূর্ণ, ৪টি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ, পুঁইছড়ির ১২টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৩টি ঝুঁকিপূর্ণ, ৬টি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ, শেখেরখীলের ৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৬টি ঝুঁকিপূর্ণ ও ২টি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ, ছনুয়ার ৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ২টি ঝুঁকিপূর্ণ ও ৩টি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ ফয়সাল আলম বলেন, ‘বাঁশখালীতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন উপহার দিতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখানে প্রশাসন সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে,ইনশাআল্লাহ।
নির্বাচনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খোন্দকার মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘বাঁশখালীতে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে যেসব পদক্ষেপ দরকার সবই নেওয়া হবে। তাছাড়া এ পর্যন্ত নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে ২৩ জন চেয়ারম্যানপ্রার্থীকে জরিমানা করা হয়েছে। এ নির্বাচনে নিরাপত্তা বাহিনীর ফোর্স থাকবে। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও দায়িত্বে থাকবেন।
তাছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত কেন্দ্রগুলোকে বিশেষ নজরদারিতে রাখা হবে। জনগণ যাতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে পারে তার জন্য সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখতে প্রশাসন থাকবে শক্ত অবস্থানে।
Leave a Reply