আপত্তি নিরসন।
অভিযোগ: ১
বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে টেকনাফ উপজেলার অন্তর্গত শাহপরীর দ্বীপ দক্ষিণ পাড়ায় অবস্থিত মাদ্রাসা দারুল ঈমাম আল ইসলামিয়া। মাদ্রাসাটি দীর্ঘ ১০০ শত বছর ধরে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে মকতবের নিয়মে পাঠদান করে আসছিল। গত ১৩-১৪ বছর আগে মাঃ জামাল উদ্দিন মাদ্রাসাটিকে তার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। এলাকার কিছু লোকজনকে তার কব্জায় করে উচ্চতর শিক্ষা পাঠদানের আশ্বাস দিয়ে দখলে নেয়।
জবাব: ১
নিঃসন্দেহে যে মাদ্রাসার প্রাণ কেন্দ্রে বসে আপনারা কথাগুলো শুনছেন, তা একসময় কেবল মকতবেই সীমাবদ্ধ ছিল। পরে আল্লাহ পাকের অশেষ রহমতের বদৌলতে মকতব থেকে কোরআন, সুন্নাহ সমন্বিত একটি দ্বীনি দরসেগাহে রূপায়ন হয় আমি অধমের হাত ধরে। তারা আপত্তি করেছে মকতব থেকে নাকি মাদ্রাসা হবার পেছনে আমার স্বার্থসিদ্ধি ছিল, এবং মুষ্টিমেয় মানুষের সহযোগিতায় আমি তা হাসিল করতে পেরেছি। নাউযুবিল্লাহ, আল্লাহর পানাহ চাই। যদি তাই হয়ে থাকে, সূচনালগ্নে তাদের নিঃস্বার্থ বৃহৎ জামাত কয় ছিল? এবং সঙ্গবদ্ধভাবে কেন বাধা দেয়নি আমার উদ্যেশ্যে হাসিল পথে? তাদের ভাষ্যমতে হয়তো আমার সাথে মুষ্টিমেয় কিছুজন ছিল, বাকি তাদের বিরাট দল কেন প্রতিরোধ করেনি আমাই?
মাদ্রাসা হয়ে এলাকার কি বেশিই ক্ষতি হয়ে গেল? মকতব থেকে হেফজ বিভাগ হয়ে এলাকার ছোট্ট ছোট্ট ছেলেরা কোরানের হাফেজ হয়ে মা বাবার মুখে হাসি ফুটালো। গায়ে জুব্বা পরিধান করলো। চারিত্রিক সৌন্দর্যে এগিয়ে গেল। পরে মাদ্রাসা কারিকুলাম চালু হয়ে হাফেজ হবার সাথে সাথে কোরআন হাদিসের বিস্তর ইলম হাসিল করতে সক্ষম হলো। এবং তাদের মধ্যে বর্তমান অনেকেই দেশের বাছাই আলেম হলো, এ ছোট্ট টিনের ছাউনি থেকে শিখে বড় বড় দালানে আহরিত ইলম পাঠদানে শক্তি অর্জন করলো, সব কি আমার মতলবি উদ্যেশ্যে ছিল? উত্তরটুকু আপনাদের কাছে জমা দিলাম। সবমিলিয়ে ছোট মানুষ হয়ে বড় স্বপ্ন হয়তো দেখেছি, তবে অভিযুক্ত অপরাধের মতো হীন উদ্যেশ্য আমার মধ্যে কিঞ্চিৎ ছিল না, ওয়াল্লাহী।
অভিযোগ: ২
দীর্ঘ সময় ধরে তার মন মতো একটি সাজানো কমিটির অজুহাত দিয়ে মাদ্রাসাটি চালিয়ে আসছিল। যদিও কওমি মাদ্রাসা পরিচালনার আইন কানুন থাকলেও নিয়ম-কানুন কোনোটাই মানা হয়নি। কমিটির সদস্যদের শত ভাগের ধর্মীয় জ্ঞান নাই যা আইনের বাহিরে।
জবাব: ২
মন মতো সাজানো কমিটির অজুহাত দিয়ে মাদ্রাসাটি চালানোর অর্থ আমি বুঝিনি। কারণ, এলাকার মান্যবর কোন সভ্য ব্যক্তি বাদ গেছে যার উত্তম পরামর্শ উপেক্ষা করে নিজের মতো মনগড়া সিন্ধান্ত নিয়েছি? মাদ্রাসা পরিচালনার কানুন কী, তা হয়তো তাদের কাছে শিখা দরকার! কারণ প্রতি বছরই তো হেড অফিস থেকে যাচাইকরণের জন্য কিছু মেহমান আসেন। সম্পূর্ণ অবস্থা দেখেই ফিরেন তারা। অভিযোগ থাকলে তারাই করতো, একাকি সিন্ধান্ত নিয়ে মাদ্রাসা অধপতনের ঘৃণ্য মানসিকতা থাকলে, তারাই ধরিয়ে দিতো! কয়, কার কাছে অভিযোগ করে গেছে তারা? এমন তো হয়নি কখনোই। তাদের আপত্তি হলো, কমিটির সদস্যদের ধর্মীয় জ্ঞান নেই। তা সঠিক। কারণ, এমন কিছু মাদ্রাসার একনিষ্ঠ শুভাকাংখী যারা সর্বাত্বক মাদ্রাসার কল্যাণ চায়; এবং বয়সের দিক থেকে মুরব্বি হিশেবে সর্বোচ্চ আসনে আসীন হবার অধিকার রাখেন। তারা কমিটিতে থাকা কোনোদিনও অযৌক্তিক হতে পারে না। বড় বড় মাদ্রাসার দিকে আপনি লক্ষ্য করলেও এমনটা দেখতে পাবেন, যারা মকতবেও পড়ানোর সক্ষমতা রাখেন না, তবে সর্বোচ্চ শুরা আসনে তাদের রাখা হয়েছে মাদ্রাসার উন্নতিলাভের আশায়। এটি দোষ নয়, বরং প্রতিষ্ঠানের জন্য মঙ্গলজনক।
অভিযোগ: ৩
ভেতর ভেতরে দেখা যায় তার সম্পদের পাহাড় খবরটি প্রকাশ হলে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তিনি ১৪-১৫ হাজার টাকার বেতনধারী কর্মকর্তা হয়ে তার রয়েছে চট্টগ্রামে ভিআইপি প্লাট ও বিভিন্ন এলাকায় জায়গাসহ কোটি কোটি টাকার সম্পদ ও বিলাসিতা জীবন জাপন, নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক তার ঘনিষ্ঠজন বলেন বাজার করতে গেলে বাজারের সব থেকে বড় মাছটি তার ঘরে চলে আসে, এবং তার ৩ জন পড়োয়া ছেলে মেয়ের জন্য প্রতি মাসে খরচ করে প্রায় ৩০ হাজার টাকার মত; এটা কিভাবে সম্ভব? এত টাকা আসে কোথা থেকে?
জবাব: ৩
আমার নাকি সম্পদের পাহাড় জমা আছে। যার ফলে এলাকায় বিশৃংখলা দেখা যাচ্ছে। কতটা মিথ্যুক হলে এমন অন্ধ মন্তব্য করা যায় আপনারাই বলুন। আমার ধবধবে সাদা জুব্বা দেখে যদি আপনার মনে হয় আমি বিশাল সম্পদের পাহাড় জমিয়ে রেখেছি, তবে আপনার চোখ দুটো আর কলবটা জুব্বার মতো সাদা করুন। আপনি হিংসা বশীভূত হয়ে আমাকে রঙিন দেখছেন। জুব্বায় একাধিক পকেট দেখে বিরাট টাকাওয়ালা ধরে বসে আছেন। ওয়াল্লাহী যার বাস্তবতা আমার ভেতর নেই। চট্টগ্রামে দামি প্লট আছে বলেও আপত্তি করেছে তারা। প্লট তো অনেক দূরের, কিঞ্চিৎ পরিমাণ যদি অথবা এক হাত বরাবর আমার নামে আমার পরিবারের নামে অথবা আমার মালিকানায় সস্তা থেকে সস্তা জায়গাও থাকে, আল্লাহর কসম করে বলছি— এ সুন্নাতি লেবাস নিয়ে আপনাদের সামনে দাঁড়াব না। কোটি কোটি টাকার সম্পদ আছে বলে তারা মিথ্যে অপবাদ রটিয়ে দিচ্ছে; ভাবা যায়? শাহপরীর দ্বীপের ইয়াহিয়া সাহেবের কাছেও অত সম্পত্তি আছে কি না সন্দেহ। বাজারের বড় মাছ নাকি আমি কেনার সামর্থ রাখি না। যাই কিনেছি, তা নাকি সব প্রতিষ্ঠানের টাকা। একজন রিক্সাওয়ালাও তো পরিবারের চাহিদা পূরণে সক্ষম। তার বাড়িতেও বাজার হয়। নিত্যদিন বাজার একজন অল্প আয়ের নাগরিকও করেন। আপত্তি সব নাকি আমার বেলায়? আমার বেতন কত, আর বিদেশ সফরে গেলে বেতন কত হয়, আর আত্মীয়দের নেক দৃষ্টি সব মিলিয়ে ছোট্ট পরিবারটা চালাতে পারলে যদি এহেন অভিযোগ গায়ে এসে পৌঁছয়; তবে তা মিথ্যে বৈ কিছু্ নয় তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর বাইরে ছেলেদের পড়াশোনা কীভাবে সম্ভব? আমি তো আর ছেলে মেয়ে ভার্সিটিতে পড়াই না। কওমি মাদ্রাসায় পড়াই। আপনার ছেলে মেয়ে এ প্রতিষ্ঠানে পড়তে যত খরচ, ঠিক সেইম খরচ ওখানেও। শুধু জায়গার দূরত্বে গাড়ি ভাড়া ভিন্ন। ভেতরের আর্তনাদ কে শুনে? এমনও অনেক সময় অতিবাহিত হয়; যখন তাদের পকেট শুন্য হয়ে খরচ তলবে টাকার কথা জানান দেয়। আর নাজুক পরিস্থিতি লুকিয়ে ধার নিয়ে যে কতবার তাদের হাজত পূরণ করা হয়েছে সে খবর তো আর ষড়যন্ত্রকারীরা রাখে না।অভিযোগ: ৪
মাঃ জামালের অপসারণ চাই তো চাই!
জবাব:৩
দেখুন অপসারণযোগ্য অভিযোগ থাকলে প্রমাণাদি নিয়ে আপনারা আসুন, চাইতে হবে না; আমি অধম যদি অপসারণযোগ্য কিছুই করে থাকি নিজে নিজেই তো নিজের সম্মান বাঁচাব। তা না করে আপনারা যেসব বিকল্প পথে হাঁটছেন, তা অত্যন্ত মানহানিকর এবং হিংসা বশীভূত আচরণ।
Leave a Reply