শুক্রবার , ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ - বসন্তকাল || ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

মহেশখালীতে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে নাগরিক সমাজের ব্যানারে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়

প্রকাশিত হয়েছে-

মিজবাহ উদ্দিন আরজু, (মহেশখালী প্রতিনিধি)::

সড়ক দুর্ঘটনা এখন নিত্যদিনের খবরে পরিণত হয়েছে। প্রতিনিয়ত প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। মহেশখালীতে বিগত কয়েক বছরে শতশত প্রাণের বলি হয়েছে এ সড়ক পথেই। সড়ক পথে প্রতিটি ক্ষণই থাকতে হয় আতঙ্কে- এই বুঝি গাড়ি উঠে গেলো গায়ের ওপর! এই বুঝি আর বাড়ি ফেরা হলো না! একটু লক্ষ করলেই দেখতে পাই যে, প্রতিনিয়তই আমাদের দেশে সড়ক দুর্ঘটনা দ্রুতই বেড়ে চলেছে। সড়ক নয়, যেন একেকটি মৃত্যুফাঁদ। একই সাথে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন অনেকেই। আহত হয়ে কেউ হাসপাতালের বেডে আবার কেউ বাড়িতে পড়ে রয়েছেন। অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও যুবকদের বেপরোয়া মোটরবাইক চালানোর ফলে তারা নিজেরা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে এবং অন্যান্য যানবাহনকেও ঝুঁকিতে ফেলছে। পুলিশের বেশিরভাগ রিপোর্টে সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা যায় গাড়ির অতিরিক্ত গতি ও চালকের বেপরোয়া গাড়ি চালানোর মনোভাব। গাড়ি চালানোর সময় তারা মোবাইল ফোনে কথা বলেন, আবার ফুল ভলিউম দিয়ে গান শোনার কারণে আশেপাশের ঘটনা বা কোনো গাড়ির সংকেত বা হর্ন তারা শুনতে পান না। আবার অনেক চালকের গাড়ি চালানোর পর্যাপ্ত বয়সও হয়নি বা শারীরিক-মানসিক সক্ষমতা ছাড়াই চালকরা গাড়ি চালিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত সড়ক দুর্ঘটনার সৃষ্টি করে অকালে ঝরিয়ে দেন তাজা প্রাণ।

২৮ মার্চ (মঙ্গলবার) দুপুরে ২টায় মহেশখালী পৌরসভাস্থ গোরকঘাটা চৌরাস্তার মোড়ে সড়ক দুর্ঘটনার সচেতনতামূলক পোস্টার নিয়ে একটি র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি গোরকঘাটাস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হয়ে চৌরাস্তার মোড়ে এক পথসভার মধ্য দিয়ে শেষ হয়।

সচেতনতামূলক কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন- মহেশখালীর সচেতন ছাত্র সমাজ, মহেশখালী সবখবর সম্পাদক, সাংবাদিক মাহাবুব রোকন, সাংবাদিক আ ন ম হাসান, সাংবাদিক মিজবাহ উদ্দীন আরজু, কবি ও সাংবাদিক সুব্রত আপন সাংবাদিক এনামুল হক সহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ।

বক্তরা মহেশখালীর ২৫ কিলোমিটার সড়কে যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে ১৫ টা দাবি উত্তাপন করেন। যথাক্রমে প্রতিটি গাড়িতে লুকিং গ্লাস থাকা বাধ্যতামূলক, সাউন্ডবক্সে গান না বাজানো ১৮ বছরের নিচে গাড়ি ড্রাইভিংয়ে নিরুৎসাহিত করা, অতিরিক্ত হর্ণ না বাজানো, মহিলাদের গাড়িতে উঠলে বোরকা বিষয়ে সচেতন হওয়া, নিদিষ্ট জায়গা হতে যাত্রী উঠানামার ব্যাবস্থা করা, টমটম গাড়ির ডান পাশে বন্ধ করে দেওয়া, ফায়ার সার্ভিস এবং এ্যাম্বুলেন্সের আসা যাওয়ার ব্যাপারে বিশেষ ব্যাবস্থা রাখা, সিএনজি গাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার নিরাপদে রাখা, উচ্চস্বরে হর্ণ না বাজানো, ফুটপাত দখল করে দোকান মালামাল না রাখা, গাড়ি চলাকালীন সময়ে ধূমপান হতে বিরত থাকা, প্রতিযোগীতা মূলক গাড়ি চালানো থেকে বিরত থাকা, গাড়ির গতি স্বাভাবিক রাখা ইত্যাদি।

বক্তারা আরও বলেন- মহেশখালী উপজেলার ২৫ কিলোমিটার যে সড়ক আছে যা এখন মৃত্যুপুরী বললেই চলে, এই সড়ক নিরাপদ রাখতে উপরোক্ত দাবীগুলো কার্যকর ভূমিকা রাখবে। মহেশখালীর বিভিন্ন ইউনিয়নে এই কার্যক্রম চলমান থাকবে।
উপরোক্ত দাবী বাস্তবায়নে গাড়ি চালক, সমিতি এবং প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করেন বক্তারা৷
অন্যথায় ঈদ পরবর্তী সময়ে মহেশখালী নাগরিকদেন স্বার্থে-সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কঠোর কর্মসূচী হাতে নেওয়া হবে। সড়কে শৃঙ্খলা ফিরে না আসা পর্যন্ত কর্মসূচী চলতে থাকবে বলে জানানো হয়।