শুক্রবার , ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ - বসন্তকাল || ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

মহেশখালীর কালারমারছড়া বাজারে দূর্ধর্ষ চুরি

প্রকাশিত হয়েছে-

মিছবাহ উদ্দীন আরজু, (মহেশখালী প্রতিনিধি),

মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া বাজারে এক রাতেই দুটি দোকান, উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র, একটি প্রাইভেট হাসপাতাল ও দুটি ঘরে দূর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটেছে। ১৫ নভেম্বর (রবিবার) মধ্যরাতে কালারমারছড়া উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র, পার্শ্ববর্তী আল হামরা হাসপাতাল, সাবেক মেম্বার রশিদ আহমদের বাড়ি, পাশ্ববর্তী এলাকা অফিসপাড়ার আব্দুল হক মেম্বারের বাড়িসহ কালারমারছড়া বাজারে অবস্থিত সাফা মার্কেটের দুটি দোকান চুরি হয়েছে।

চুরি হওয়া প্রতিটি জায়গা থেকে প্রায় নগদ দেড় লক্ষ টাকা ও দামী মালামাল চুরি করে নিয়ে যায় চোরের দল।

এ বিষয়ে আল হামরা হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা ডাক্তার জয়নাল আবেদীন জানান, ফজরের নামাজ পড়তে উঠে দেখি গ্রিলটি বাহির থেকে লক করা এবং স্টোর রুমের তালাসহ প্লেট লকারটি ভাঙ্গা।

এসময় স্টোররুমের ড্রয়ার থেকে হাসপাতাল সংলগ্ন ফার্মেসীর ঔষধের মাসিক বিল ৭০ হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে যায়।

অপরদিকে রশিদ মেম্বারের বাড়ি ও তার বড়ভাই আবু বক্কর ছিদ্দিকের বাড়ির দরজা ভেঙ্গে কিছু দামী মালামাল, অফিসপাড়ার সাবেক আব্দুল হক মেম্বারের পুত্র সাইফুলের রুমের দরজা ভেঙ্গে আলমারিতে রাখা ৩৫ হাজার টাকা, তার স্ত্রীর কাছে থাকা সাড়ে ১৩ হাজার টাকা, বিছানার পাশে রাখা মানি ব্যাগ ও ১ টি এন্ড্রয়েড মোবাইল চুরি করে নিয়ে যায় দূর্বৃত্তরা।

একই রাতে সাফা মার্কেটের টিন কেটে ভিতরে প্রবেশ করে মেহেদীর দোকানের ড্রয়ার ভেঙ্গে ৭০০ টাকা ও মামুনের দোকান থেকে অল্প মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে দূর্বৃত্তরা।

এ বিষয়ে কালারমারছড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভুক্তভোগী ডাক্তার ইছমত আরা বেগম জিমি বলেন, হাসপাতালের সিকিউরিটি ও গেইট না থাকায় চোর সহজে হাসপাতালে প্রবেশ করে। প্রথমে হাসপাতালের পিছনের গেইটের তালা ভাঙ্গে। পরে ভিতরে গিয়ে আরো দু’টি রুমের তালা ভেঙ্গে রুমে প্রবেশ করে। ঐ সময় হাসপাতালে সরকারি ঔষধ আর ভারি যন্ত্রপাতি ছিল। তবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তালা ভাঙ্গলেও কিছু চুরি হয়নি। চুরের সাথে থাকা তালা ভাঙ্গার তিনটি রড রেখে যায় বলে জানান।

এ বিষয়ে মহেশখালী থানার ওসি আব্দুল হাই জানান, ঘটনার বিষয়টি শুনেছি। এই ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তারা পেশাদার বলেই মনে হচ্ছে। পুলিশ কাজ শুরু করেছে। চোর দ্রুতই ধরা পড়বে বলে আশা করছেন তিনি।

এবিষয়ে কালারমারছড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তারেক বিন ওসমান শরীফ বলেন- কালারমারছড়ায় স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প না থাকায় ও অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির করার জন্য প্রতিনিয়ত হত্যাকান্ড ও চুরির ঘটনা কোন এক অদৃশ্য শক্তি করাচ্ছে। এছাড়াও কে বা কারা চুরির মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে তা খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।

বাজার কমিটির সভাপতি জানান, আমাদের তিনজন পাহাদার রয়েছে। তারা প্রত্যেকেই বাজারের সম্মুখস্থে পাহারা দিয়ে থাকেন। চুরি হওয়া তিনটি স্থানে চোর পিছনের দিক থেকে প্রবেশ করেছে। তাই প্রত্যেক সওদাগরের উচিত দোকানের পিছনে নিজ দায়িত্বে লাইটের ব্যবস্থা নেওয়া। তবে চুরি হওয়া বিষয়ে তদন্ত চলছে বলে জানান।

ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্বাস সিকদার বলেন- যারা চুরি করেছে তারা খুব পরিকল্পিতভাবেই করেছে। বাজারে সবসময় নিরাপত্তাকর্মীরা থাকেন। তারপরও রাতের আঁধারে টিন কেটে দোকান চুরির ঘটনা খুবই দুঃখজনক। তিনি এ বিষয়ে প্রশাসনকে গৃহীত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন।

বাজার কমিটির দুয়েকজন সওদাগর খুব আক্ষেপ করে বলেন- বাজারে ৩/৪ জন পাহাদার দ্বারা এত নিরাপত্তার মধ্যেও কীভাবে মার্কেটের চালের টিন কেটে তারা ঢুকলো। দায়িত্বে থাকা বাজার পাহাদারদের জিজ্ঞেস করার দাবি জানান তারা।

স্থানিয় সচেতন মহলের দাবি, সাফা মার্কেটে চলাচলের গলিতে সিসিটিভি লাগানো ছিল। চোর সরাসরি টিন কেটে দোকানে প্রবেশে প্রমাণ হয়, এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত চুরি। এবিষয়ে যথার্থ ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

বার্তা প্রেরক-
মিছবাহ উদ্দীন আরজু
(মহেশখালী)
মোবাঃ 01811323339