মঙ্গলবার , ৯ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২৫শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

মানবপাচার মামলার ছোট ভাইকে দেখিয়ে হাইকোর্টে বড় ভাইয়ের জামিন নেওয়া সেই ছোটভাই র‍্যাব-১৫ হাতে গ্রেফতার

প্রকাশিত হয়েছে-

কক্সবাজার প্রতিনিধি,

২০১৪ সালে কতিপয় কক্সবাজারের আলোচিত মানবপাচারকারী মালয়েশিয়ায় উচ্চ বেতনে চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে নুরুল ইসলামসহ আর একজনকে ট্রলারের মাধ্যমে জাহাজে তুলে দেয়া হয়। কয়েকদিন পর জাহাজটি থাইল্যান্ড উপকূলে তাদের নামিয়ে দেয়। অতঃপর সেখানকার দালালেরা তাদের উপর শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে স্থানীয় আলাউদ্দিনের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছ থেকে চার লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করে।

পরবর্তীতে তাদের মালয়েশিয়ার দালালদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ২০১৭ সালে মালয়েশিয়া পুলিশ অবৈধ অভিবাসী হিসেবে নুরুল ইসলামকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। ০১ বছর কারাভোগের পর ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে নুরুল ইসলাম দেশে ফিরে আসে। এরপর ২৯ অক্টোবর ২০১৮ সালে নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালতে আলাউদ্দিনসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে আদালত অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।

গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর ২০১৯ সালের ২৮ অক্টোবর উচ্চ আদালতের একটি দ্বৈত বেঞ্চে আলাউদ্দিনের (২২) বদলী তার ছোট ভাই রফিকুলকে (১২) দাঁড় করানো হয়। আদালত ছোট ভাই রফিকুলকে, আলাউদ্দিন মনে করে আট সপ্তাহের আগাম জামিন দেন। এই ঘটনা জানাজানি হলে কক্সবাজারে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় আদালত প্রাঙ্গনে আইনজীবীর সঙ্গে আলাউদ্দিনের জায়গায় রফিকুল ইসলামের সাথে তার মা রাজিয়া বেগমের ছবিসহ ঘটনাটি প্রকাশিত হয়। উক্ত ঘটনার পর থেকে তাদের পরিবারের সবাই আত্নগোপনে চলে যায়। এছাড়াও ২০২১ সালের ২৩ এপ্রিল আলাউদ্দিনসহ কয়েকজন মিলে উপরোক্ত মামলার বাদী নুরুল ইসলাম ও চাকমারকুল ইউনিয়নের পশ্চিম শাহ আহমেদের পাড়ার বাসিন্দা রফিককে (৩০) হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। তাদের এলোপাতাড়ি ছুড়িকাঘাতে রফিকের চোখ ও মুখে জখম হয়। এ বিষয়ে আলাউদ্দিনসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মোঃ রফিক বাদী হয়ে একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলায় আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। এরপর পুলিশ আলাউদ্দিনকে গ্রেফতার করলেও ছোটভাই রফিকুল আত্নগোপনে থাকে।

উক্ত ঘটনা জানার পর থেকে র‌্যাব আলাউদ্দিনের ছোটভাই রফিকুলকে গ্রেফতার করতে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রাখে। একপর্যায়ে র‌্যাব জানতে পারে যে, রফিকুল মহেশখালী থানাধীন শাপলাপুর এলাকায় আত্নগোপনে আছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-১৫ এর একটি আভিযানিক দল ২৭/০৪/২০২২ তারিখ আনুমানিক রাত ০১.০৫ ঘটিকায় কক্সবাজার জেলার মহেশখালী থানাধীন শাপলাপুর এলাকা থেকে আলাউদ্দিনের ছোট ভাই মোঃ রফিকুল ইসলাম (১৫), পিতা-মৃত মোঃ ইলিয়াছ, স্থায়ী: সাং-চাকমারকুল, পশ্চিম সমুদ্রপাড়া, থানা-রামু, জেলা-কক্সবাজার’কে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণার্থে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।