মহান ভাষা দিবস ও একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন উপলক্ষ্যে বান্দরবানের লামায় ফাইতং ইউনিয়ন “মঙ্গলবার” নয়াপাড়া থেকে র্যালি দিয়ে ফাইতং উচ্চ বিদ্যালয় এসে শেষ’করে। সকাল ৯ টায় শহীদ মিনারে নানা শ্রেণী পেশার মানুষ পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিবসটি স্মরণ করেন। এদিকে দিবসটি উপলক্ষে ফাইতং ইউনিয়ন আ’লীগ এর অঙ্গসংগঠন সমূহের উদ্যোগে ফাইতং উচ্চ বিদ্যালয় শহীদ মিনারে ও জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে। ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ফাইতং ইউনিয়ন আওয়ামিলীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠন, পুলিশ, বিদ্যালয় শিক্ষক সহ শত-শত মানুষ শহীদ মিনার ফুল দেয় এবং হল রুমে বিশাল আলোচনা সভা হয়। ’এদিকে সকাল ৭/৮ টায় ভাষা শহীদদের রূহের মাগফিরাত এবং দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নতি কামনা করে মসজিদে কুরআনখানি, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে মোনাজাত করে মাওলানা কাজী জাহেদুল ইসলাম ।
অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ফাইতং ইউনিয়ন আওয়ামিলীগ সিনিয়র সহসভাপতি মো. শহিদুল্লাহ মিন্টু এর সভাপতিত্বে এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন, ইউনিয়ন আওয়ামিলীগ সাধারণ সম্পাদক চেয়ারম্যান মো. ওমর ফারুক, বিশেষ অতিথি মাহামুদুর রহমান শুক্কুর, পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ শামিম শেখ, ইউনিয়ন আওয়ামিলীগ সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান মো. জালাল উদ্দীন কোম্পানি সহধর্মিণী শাহিনা আক্তার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ এইচ এম আহসান উল্লাহ, আইন বিষয়ক সম্পাদক বেলাল উদ্দিন বিপ্লব, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সোজা আকবর, কৃষকলীগ সভাপতি মেম্বার মুহাম্মদ জুবাইরুল ইসলাম (জুবাইর), যুবলীগ সভাপতি বাবু থোয়াইং সানু মার্মা, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াছিন, বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসাইন জয়, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান রুবেল, ছাত্রলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ইসমাইলুল করিম, মহিলা আওয়ামিলীগ সভাপতি শাহেদা ইয়াসমিন শাহেদা, যুব মহিলা আওয়ামিলীগ সভাপতি রেজিয়া বেগম, এবং সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী, মুক্তিযোদ্ধা, আ’লীগ এবং অঙ্গসংগঠন এর নেতাকর্মী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, পেশাজীবী সহ নানান শ্রেনী পেশার মানুষ ও দলের বিপুল সংখ্যক নেতা উপস্থিত ছিলেন।
স্বেচ্ছাসেবক লীগ মিজানুর রহমান রুবেল বলেন, রক্তস্নাত ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবহ মহান শহীদ দিবস। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ১৯৫২ সালের এই দিনে মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রাখতে গিয়ে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিল রফিক, সালাম, বরকত, সফিউর, জব্বাররা। তাদের রক্তে শৃঙ্খলমুক্ত হয়েছিল দুঃখিনী বর্ণমালা, মায়ের ভাষা। বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশের যে সংগ্রামের সূচনা সেদিন ঘটেছিল, মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় পথ বেয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মধ্য দিয়ে তা চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। একুশে ফেব্রুয়ারি তাই বাঙালির কাছে চির প্রেরণার প্রতীকে পরিণত হয়েছে।
অতিথিরা বক্তব্য বলেন, একুশের চেতনা আমাদের আত্মমর্যাদাশীল করেছে। দুর্জয় সাহস জুগিয়েছে। ‘একুশ মানে মাথা নত না করা’- চিরকালের এ স্লোগান আজও সমহিমায় ভাস্বর। একুশ মানে অন্যায়ের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ, যাবতীয় গোঁড়ামি আর সংকীর্ণতার বিরুদ্ধে শুভবোধের অঙ্গীকার। ৫২-র ভাষা আন্দোলনেও এর কোনো ব্যতিক্রম ঘটেনি। মায়ের ভাষার অধিকার রক্ষার জন্য জীবন দিয়েছিল যেসব ভাষা শহীদ, তাদের ত্যাগই আমাদের এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে সব ভাষা শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান৷
প্রধান অতিথি চেয়ারম্যান মোঃ ওমর ফারুক বলেন, ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারিতে বাংলা ভাষার দাবীতে রাস্তায় নেমে আসে মানুষ। জারি করা হয় ১৪৪ ধারা, ভেঙে ফেলা হয় শোষকের শৃঙ্খল। রক্তে ভেসে যায় রাজপথ। গুলিতে বিদীর্ণ হয় বুক। শহীদ হন রফিক, শফিক, সালাম, বরকত, জব্বারসহ নাম না জানা আরো অনেকে। ভাষার জন্য প্রাণ দিয়ে ইতিহাস গড়েন তারা। বাংলা পায় রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে একাত্তরে জন্ম নেয় স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ। মাতৃভাষার জন্য প্রাণ উৎসর্গের এই দিনটিকে জাতিসংঘ স্বীকৃতি দেয় ১৯৯৯ সালে। অমর একুশে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। একুশের চেতনার প্রতীক ‘শহীদ মিনার।
Leave a Reply