গত ৩রা অক্টোবর ২০২০ উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের জরুরী বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে রাখা আমার বক্তব্যের একটি অংশকে ইচ্ছাকৃতভাবে বিকৃত করে স্বার্থন্মেষী একটি মহল যে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে তা দেখে আমি সত্যিই মর্মাহত।
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে আমার বক্তব্যে বা জীবনাচারে কখনোই কাউকে যেমন হেয় করার চেষ্টা করিনি তেমনি সবসময় চেষ্টা করেছি সততার সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে নিতে।
আপনারা জানেন, উখিয়া আওয়ামী লীগের ইতিহাসে দীর্ঘদিন ধরে প্রথম সরাসরি ভোটে নির্বাচিত সভাপতি হিসেবে আমি নিস্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখ এবং পরিতাপের বিষয় সাম্প্রতিক সময়ে উখিয়া আওয়ামী লীগের একটি চিহ্নিত গ্রুপ নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে সাবেক কেবিনেট সচিবের ভাই জনাব শাহ আলমের প্রত্যক্ষ মদদে ব্যক্তিগতভাবে আমার প্রতি ঈষান্মৃত হয়ে সংগঠনের গঠনতন্ত্রের তোয়াক্কা না করে, কেন্দ্রীয় এবং জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সুস্পষ্ট লিখিত নির্দেশনা অমান্য করে আমার প্রানপ্রিয় সংগঠন আওয়ামী লীগের ইমেজ ক্ষুণ্নের চেষ্টা করছে।
প্রকৃতপক্ষে আমার সেদিনের সামগ্রিক বক্তব্যে ছিল – সংগঠনের বৃহত্তর স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দল পরিচালনায় এগিয়ে আসার বারবার আহবান জানানোর পরও যারা গঠনতন্ত্রের তোয়াক্কা না করে প্রকাশ্যে গ্রুপিংয়ে মদদ দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে।
আর এই গ্রুপিংয়ে প্রধান মদদ দাতা হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিতর্কিত হিসেবে পরিচিত জনাব শাহ আলম কথায় কথায় তার শহীদ ভাই এটিএম জাফর আলমের নাম ব্যবহার করে যে ন্যাক্কারজনক ভুমিকা পালন করছে তার প্রতিবাদ করতে যেয়ে আমি বলেছিলাম – স্থানীয়ভাবে অপরিচিত জনাব শহীদ এটিএম জাফর আলমের নাম ব্যবহার করে ভুমি দখল, বাজার দখলসহ অসংখ্য যে অনিয়ম করছে তা আওয়ামী লীগের ইমেজ যেমন ক্ষুণ্ন করছে তেমনি মহান মুক্তিযুদ্ধে কক্সবাজার অঞ্চলকে পাক হানাদার মুক্ত করায় যেসব স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা অসামান্য অবদান রেখেছেন তাদের স্মৃতি রক্ষায় কোন ধরনের উদ্যোগ না নিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে শুধুমাত্র একজন শহীদ এর স্মৃতি রক্ষায় অসংখ্য প্রতিস্টানের নামকরণ করে যেভাবে স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি অবজ্ঞা করা হয়েছে তার বহিঃপ্রকাশ।
প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে আমার সামগ্রিক বক্তব্যের একটি অংশকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা দেখে আমি সত্যিই বাকরুদ্ব।
দুঃখ ভারাক্রান্ত হ্নদয় নিয়ে আমাকে বলতে হচ্ছে –
আমি হামিদুল হক চৌধুরী সেই পরিবার এবং সেই মহান ব্যক্তির সুযোগ্য সন্তান। যার মহান পিতা তৎকালীন সময়ে উখিয়ার মতো দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাস করে নিজে স্বল্প প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ পেলেও স্বশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে যেমন নিজের দশ পুত্র এবং তিন কন্যা সন্তানকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করে নিজ পরিবারকে দক্ষিণ চট্টগ্রামের গুটিকয়েক অনন্য পরিবারের একটি হিসেবে পরিচিত করে তুলেন তেমনি প্রতিকুল সময়ে আওয়ামী লীগের পতাকা বহন করে কক্সবাজার অঞ্চলে মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠকদের একজন হিসেবে দ্বিধাবিভক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের বিভেদ ঘুচিয়ে রণাঙ্গনে পাকবাহিনীকে প্রতিরোধে অসাধারণ ভুমিকা রাখেন।
একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং এ অঞ্চলের অন্যতম একজন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে মরহুম জনাব বদিউর রহমান চৌধুরী যেমন সমস্ত অন্যায় অনিয়ম এবং অনাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন তেমনি আমি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী মহান পিতার পদাংক অনুসরণ করে অনিয়ম অনাচার এবং স্বার্থসিদ্বিতে লিপ্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভুমিকা পালন করে এসেছি। বর্তমানে সময়ে সমাজে সাহসী হয়ে সত্য কথা বলা লোকজনকে যেভাবে হেনস্থা করার চেষ্টা করা হয় এক্ষেত্রেও আমাকে ঘায়েল করার জন্য তাই করা হচ্ছে বলে মনে করি।যার প্রমাণ হচ্ছে উখিয়ার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি আমিনুল হক আমিন, ব্যাংক এশিয়ার কর্মকর্তা জনাব জামালউদ্দিন, উখিয়ার বিশিষ্ট সাহসী সাংবাদিক জসিম আজাদ, কক্সবাজারের অনলাইন মিডিয়া কক্স টিভির উখিয়া প্রতিনিধি শাহীনকে সাইবার /প্রযুক্তি মামলায় আসামি করে জেলে পাঠায় ও দীর্ঘদিন হয়রানি করে।তাদের অপরাধ ছিল শুধুমাত্র সচিব পরিবার ও চেয়ারম্যান শাহ আলমের দুর্নীতির বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখা ও প্রতিবাদ স্বরুপ মামলা করা।একই সাথে চেয়ারম্যান শাহ আলমের প্রতিবেশী ও তারই পরিষদের সদস্য জনাব রফিক মেম্বারকেও ষড়যন্ত্র মুলক মিথ্যা মামলায় আসামী করে জেল খাটায়।বর্তমানে আমার বিরুদ্ধে এ অপপ্রচারও বিকৃত পদক্ষেপ জাহাংগীর শাহ আলমদের অশুভ ষড়যন্ত্র ও চরিত্র হননের অপপ্রয়াস মাত্র।
তবু আমার সেদিনের বক্তব্যে অনাকাঙ্খিতভাবে কাউকে বা কোন গুষ্টি অসম্মান করা হয়ে থাকলে আমি নিদ্বিধায় দুঃখ প্রকাশ করছি।
বিনীত
অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী
চেয়ারম্যান
উখিয়া উপজেলা পরিষদ
সভাপতি
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, উখিয়া উপজেলা শাখা,
উখিয়া কক্সবাজার।
Leave a Reply