সূর্যমুখী চাষে সফলতা দেখছেন বিরামপুরের তাহের

এস এম মাসুদ রানাঃ- বিরামপুর দিনাজপুর প্রতিনিধি,

রূপবান উদ্ভিদ সূর্যমুখী যার ফুলগুলো পাগলপাড়া করে দিতেছে তাঁর রূপবৈচিত্র্য দিয়ে বিরামপুর পৌর এলাকার ৮ নং ওয়ার্ডের জোয়ালকামড়া গ্রামের পশ্চিমপাশে। বিরামপুর থেকে হিলি যেতে রেলগেট পার হয়ে এলাকাটি। ওড়াপকরার বাঁক পার হয়ে পাকা সড়কের পূর্বপাশেই চোখে পড়বে এ হাসির সূর্যমুখী। ছোট্ট ক্ষেতে হলুদ ফুলগুলো যেন অপরূপ সৌন্দর্যের উৎস হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। হৃদয়জুড়ে জাগিয়ে তুলছে মনভোলানো অনুভব।

কথা হয় সূর্যমুখীর কৃষক মোঃ আবু তাহের এর সাথে। তিনি বলেন, “১২ শতক জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে সূর্যমুখী চাষ করেছি। এছাড়াও অন্য জমিতে ধান, সরিষা চাষ করেছি। এই সূর্যমুখী চাষ করতে এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ৪ হাজার টাকা। ইউরিয়া, ফসফেট, পটাশ সহ প্রয়োজনীয় সার প্রয়োগ করি। ভিটার পাশেই নিজ বাড়ি হওয়াই নিয়মিত পরিচর্যা করতে পারি। আমাকে দেখে এলাকার অনেক কৃষকরা সূর্যমূখী ফু্ল চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। আশা করি সূর্যমুখী চাষে সফলতা আসবে”।

দৈনিক মানুষ ভিড় জমাচ্ছে। মানুষের এই আগমন বিড়ম্বনা হয়ে দাঁড়িয়েছে কৃষক মোঃ আবু তাহের ও তাঁর স্ত্রী মোছাঃ নূরছাপা বেগমের। বীজের জন্য সূর্যমুখী চাষ করে বিপাকে পড়েছে তারা। দর্শনার্থীরা ফুলের সঙ্গে ছবি তোলায় ব্যস্ত। সূর্যমুখী চাষ যেন বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের। কারণ ফুলেই পাওয়া যায় বীজ। মানুষের শরীরের স্পর্শে ঝরে পড়ছে পাপড়ি, ভেঙ্গে যাচ্ছে গাছ। কিন্তু দৃষ্টিকাড়া ফুলের মধ্যই ফোনক্যামেরায় সেলফি তুলছে আগত বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ। সূর্যমুখী দেখতে রূপময়ই নয়, গুণেও অনন্য।

বিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিকছন চন্দ্র পাল বলেন, “এবার ৩০ জন কৃষককে বিরামপুর উপজেলা কৃষি দপ্তর থেকে বীজ প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। অত্র উপজেলার সকল অঞ্চলে সূর্যমুখী চাষ হচ্ছে। বেশি লাভজনক ফসল সূর্যমুখী। কৃষকেরা সূর্যমূখী চাষ করে লাভবান হবেন বলে আমরা আশা করছি। আগামীতে উপজেলায় সূর্যমুখী ফুলের চাষ আরো বাড়বে। সূর্যমুখি ফুল চাষের লক্ষ্য নিছক বিনোদন নয়। সূর্যমুখীর বীজ থেকে যে তেল উৎপন্ন হয় তা স্বাস্থ্যসম্মত ও মানসম্পন্ন। ভোজ্য তেলের ঘাটতি পুরণ করবে সূর্যমুখী তেল। বীজ থেকে তেল, খৈল এবং গাছের কান্ড জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়”।

মন নেচে উঠছে সূর্যমুখীর হাসির দোলায়, সবুজের বুকে হলুদমাখা ফুলগুলো ডাকছে অপরূপ সৌন্দর্যের স্বপ্নিল হাতছানিতে। বসন্তে রূপের স্নিগ্ধতার উৎসের সন্ধানে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পুষ্প-প্রকৃতিপ্রেমী দর্শনার্থীরা আসছে। বিরামপুর উপজেলার প্রকৃতির রূপবৈচিত্র্য বড়ই সুন্দর।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *