শনিবার , ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ১১ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সৈকতে পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধ ক্যাম্পেইন এবং লাইফগার্ড ইউনিফর্ম উন্মোচন

প্রকাশিত হয়েছে-

সাইফুল ইসলামঃ- কক্সবাজার সদর প্রতিনিধি,

কক্সবাজারে সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে এসে অসতর্কতার জন্য প্রায়শই পানিতে ডুবে যাওয়ার মত দূর্ঘটনার শিকার হয়ে থাকেন পর্যটকরা। তাদেরকে সতর্ক করার জন্য নানা সময়ই নানা রকম উদ্যোগ নিয়ে থাকে স্থানীয় প্রশাসন। এরই ধারাবাহিকতায়,জেলা প্রশাসন, কক্সবাজার এবং সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ, বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি) এর সিসেইফ প্রজেক্টের এর যৌথ উদ্যোগে ১২ই মার্চ ২০২২ কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে একটি সচেতনতা ক্যাম্পেইন এর আয়োজন করা হয়। একই অনুষ্ঠানে সিআইপিআরবি’র সিসেইফ প্রজেক্টের আওতায় লাইফগার্ড এর নতুন ইউনিফর্ম উন্মোচন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো:মামুনুর রশীদ, অন্যান্য অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মো: আবু সুফিয়ান-অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট, এম রেজাউল করিম রেজা, সভাপতি, ট্যুর অপারেটরস ওনারস অ্যাসোসিয়েশন অফ কক্সবাজার, মিল্টন রায়, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সৈয়দ মুরাদ আহমেদ-এক্সিকিউটিভ কমিশনার অ্যান্ড এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (টুরিজম) এবং ড. আমিনুর রহমান-ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর, সিআইপিআরবি ও মো: শাফকাত হোসাইন, ইন্টারভেনশন ম্যানেজার, সিসেইফ প্রজেক্ট, সিআইপিআরবি।
স্বাগত বক্তব্যে সিআইপিআরবি’র ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর, ড. আমিনুর রহমান বলেন, বিশ্বের বৃহত্তম এই সমুদ্র সৈকতকে পর্যটক বান্ধব করতে তাদের নিরাপত্তার নিশ্চিত করতে হবে সবার আগে। এজন্য লাইফগার্ড সেবার কোন বিকল্প নেই। আমরা আমাদের লাইফগার্ডদের আন্তর্জাতিকমানের প্রশিক্ষণ দিয়েছি, তাই তারা খুবই দক্ষ। প্রজেক্টে সহযোগিতার জন আমাদের সাহায্য সংস্থাগুলোকে ধন্যবাদ জানাই। আর জেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই আমাদের কার্যক্রমকে চালিয়ে যেতে সার্বিক সহযোগিতার জন্য। এই লাইফগার্ড সেবা যেন চালিয়ে নেয়া যায় সেজন্য সবার সহযোগিতা চান ড.আমিনুর রহমান।
কক্সবাজারের সমুদ্র্র সৈকতে পর্যটকরা যেন নিরাপদে সাঁতার কাটতে পারে সেজন্য ২০১৬ সাল থেকে সেবা দিয়ে আসছে সিসেইফ প্রজেক্টের লাইফগার্ডরা।

এবারই প্রথম এই লাইফগার্ডদের পোশাকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নাম যুক্ত করার অনুমতি পাওয়া গেল। সেজন্য জেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ দেন, প্রজেক্টের ইন্টারভেনশন ম্যানেজার শাফকাত হোসেন।
অনুষ্ঠানের অপর অতিথী, ট্যুর অপারেটরস ওনারস অ্যাসোসিয়েশন অফ কক্সবাজারের সভাপতি এম রেজাউল করিম রেজা বলেন, কক্সবাজারকে একটি আন্তর্জাতিক মানের টুরিস্ট স্পট হিসাবে তৈরি করতে এবং পর্যটকদের জন্য নিরাপদ রাখতে সিআইপিআরবি’র সিসেইফ প্রজেক্ট যে কাজ করছে তা খুবই প্রশংসার দাবীদার। লাইফগার্ড একটি বিশোষায়িত নিরাপত্তা ইউনিট। তাদের সংখ্যা আরো বাড়ানোর প্রতি নজর দিতে আমি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

লাইফগার্ডদের পোশাকের উন্মোচন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথী, মো: মামুনুর রশীদ- জেলা প্রশাসক, কক্সবাজার। তার বক্তব্যে তিনি বলেন, সৈকতে বেড়াতে এসে মৃত্যু কিছুতেই মেনে নেয়া যায়না। সৈকতে নামতে হলে পর্যটকদের কী কী সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে তা জোর দিয়ে প্রচার করতে হবে। কক্সবাজার জেলা প্রশাসন নিয়মিতভাবে এই সচেতনতা বৃদ্ধি কার্যক্রম পরিচালনা করে বলে জানান তিনি। পর্যটকদের সচেতন করানোর এই ক্যাম্পেইন আয়োজন ও লাইফগার্ড সেবা অব্যহত রাখার জন্য সিআইপিআরবি এবং সাহায্য সংস্থাগুলোকে ধন্যবাদ দেন তিনি। একই সাথে জেলা প্রশাসন ও নিরাপত্তার সাথে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রচারিত নিরাপত্তা বার্তা মেনে চলার জন্য পর্যটকদেরও অনুরোধ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে আগত অতিথি, কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগ এর সহ সভাপতি রেজাউল করিম বলেন, কক্সবাজারকে বিশ্বের অন্যতম টুরিস্ট বান্ধব পর্যটন শহর হিসাবে গড়তে কাজ করছে বর্তমান সরকার। আর এই কাজকে বিশেষভাবে সহযোগিতা করছে সিআইপিআরবি’র সিসেইফ প্রজেক্ট। এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই। সৈকতকে নিরাপদ করতে আমাদের কর্মীরা সার্বিক সহযোগিতা করবে।
অনুষ্ঠানের অতিথী অ্যাডিশনাল ডিসট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট মো: আবু সুফিয়ান তার সমাপনী বক্তব্যে বলেন, এই সৈকত একদিনের জন্য নয়। বাংলাদেশ যত উন্নত হবে, সৈকতকেও ততটা আধুনিক করতে হবে।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতকে পর্যটকদের জন্য নিরাপদ করতে জেলা প্রশাসন আন্তরিক, আর সেই আন্তরিকতার জন্যই কিছুদিন পরপর পর্যটকদের সচেতন করতে এমন ক্যাম্পেইন আয়োজন করা হয়। সবার আন্তরিকতায় পর্যটন শহর হিসাবে কক্সবাজার একসময় বিদেশী পর্যটকদেরও মন কাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।