স্বাধীনতা পরবর্তী উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি বর্ষায় সাঁতরে-গ্রীষ্মে জঙ্গল কেটে চলছে টেকনাফের তুলাতলী বাসিন্দারা

ইব্রাহীম মাহমুদ, টেকনাফ কক্সবাজার প্রতিনিধি,

স্বাধীনতার ৪ যুগ পেরিয়ে গেলেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি টেকনাফ উপজেলার সাগর উপকুলীয় জনবহুল সম্ভাবনাময় পর্যটন এলাকার একটি রাস্তার। বর্ষা মৌসুমে ওই রাস্তায় পানি জমে কোমর ও হাঁটু পর্যন্ত, হয়ে যায় গর্ত। ভরপুর বর্ষায় সাঁতার কেটেই চলতে হচ্ছে হাজারো মানুষকে। এতে বছরের পর বছর চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ওই এলাকার হাজারো বাসিন্দা।

এ দশা টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়নের তুলাতলীর জনবহুল একটি সড়কের। যার অবস্থান কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিনড্রাইভ সড়ক পর্যন্ত প্রায় ১:৫০ কিলোমিটারের রাস্তা।
ভুক্তভোগী এলাকাবাসীরা বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী উন্নয়নের কাংখিত ছোঁয়া লাগেনি এই রাস্তায়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচনের আগে রাস্তাটি সংস্কার পূর্বক পাকা করে দেওয়ার বারংবার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা প্রতিশ্রুতিই রয়ে যায়।
এই রাস্তাটি বেহাল হওয়ার কারণে প্রতিদিনই কয়েক গ্রামের হাজার মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখাযায়, দেড় কিলোমিটারের ওই রাস্তায় লোকজন স্বাভাবিক চলাচল করতে পারছে না।

পায়ে হেঁটে যাওয়াও হয়ে উঠেছে কষ্টকর। এতে চরমভাবে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে সাগরে আহরিত মাছ ও উৎপাদিত কৃষী পণ্য বাজারজাত করনে।
বিশ্ব্যবিদ্যালয়ের ছাত্র জাহেদ উল্লাহ জানান, ‘স্বাধীনতার ৫১ বছরেও আমাদের এ রাস্তায় কাংখিত উন্নয়ন চোখে পড়েনি। আমাদের প্রতিনিয়ত চলাচল করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ এলাকার মানুষের প্রাণের দাবি, এ কাঁচা সড়কটি যাতে অতি দ্রুত সংস্কার করে পাকা রাস্তায় উন্নিত করা হয়।
কৃষিরানী রহিমা আক্তার বলেন, ‘এই রাস্তা দিয়ে আমাদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে যেতে হয়। তবে একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে থাকে। সে সময় পায়ে হেঁটেই যাওয়ায় কষ্টকর হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা মাওলানা নুর হোছাইন ও আহমদ হোছাইন জানান, কোনো রোগী বা গর্ভবতী নারীদের হাসপাতালে ও মৃতদের দাফন কাফনে কবরস্থানে নিয়ে যেতে চাইলে বিপদে পড়তে হয়। এলাকায় কেই মৃত্যু বরণ করলে কয়েক ঘন্টা লোকজন নিয়ে ঝোপজঙ্গল পরিস্কার করতে হয়।
স্থানীয় সুত্রে আরও জানা যায়, জনসংখ্যার দিকে ওই গ্রামের প্রায় ১/২ হাজার লোকের চলাচলের পাশাপাশি বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারের যাওয়ার জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এটি। প্রতিদিন জেলেরা আসা যাওয়া করে এই সড়ক দিয়ে। অথচ টেকনাফ সদরের তুলাতলি গ্রামের এই সড়কটিতে উন্নয়নে কোন ছোঁয়া লাগেনি। দেখলে মনে হয় অভিভাবকহীন এ সড়ক। অন্যান্য গ্রামের সড়কের চাইতে এ সড়কটি অতিগুরুত্বপূর্ণ। জন চলাচলের এরাস্তাটির বেহাল অবস্থা হওয়ায় এলাকার জনসাধারনের নানামুখী সমস্যায় জর্জরিত।স্বাধীরতার ৫১ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। পূর্ব পশ্চিম এ রাস্তাটি হচ্ছে স্থানীয় আজল নামের দোকান হতে মৃত মাওঃ আদুল মজিদের বাড়ির সামনে থেকে সমুদ্র সৈকত তথা কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিনড্রাইভ পর্যন্ত রাস্তাটির এমন নাজুক অবস্থা। প্রায় দেড় কিলোমিটারের বেশী রাস্তাটি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবী উঠেছে সাধারন এলাকাবাসীর মধ্যে। তাই রাস্তাটি উন্নয়ন ও সংস্কার করে বর্ষা মৌসুমে জনদূর্ভোগ কমাতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন স্থানীয়রা। যদি এই মৌসুমে রাস্তাটি উন্নয়ন করা না হয় তাহলে বর্ষা মৌসুমে মানুষের চলাচলে দূর্দশা চরমে পৌছবে বলে আশংকা করছে এলাকাবাসী। রাস্তাটি উন্নয়ন ও সংস্কার হলে সমুদ্রে মৎস আহরন, কৃষকদের যাতায়তে সহজতর হবে। ফলে মানুষের প্রয়াজনীয় ক্ষেত খামারের তরি তরকারী ও মৎস্য সহজেই বাজারজাত করনে বাঁধা গ্রস্ত হচ্ছে। এতে মানুষের আয় বাড়ার পাশাপাশি সরকারের বাড়বে রাজস্ব আয়। সদরের সবক‘টি গ্রামে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলে ও দীঘ বছর ধরে এ গ্রামটি উন্নয়নের আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিগত কয়েক বছরে একাধিকবার মাটি দিয়ে কিছুটা সংস্কারের চেষ্টা করলেও বর্ষার মৌসুমে ফের মাঠি সরে যাওয়ায় পূর্বের অবস্থায় ফিরে যায় রাস্তাটি। বর্ষা মৌসুমে ঐ রাস্তাদিয়ে স্কুল, কলেজ, মাদরাসায় পড়–য়া শিক্ষার্থীদের বিপদজনক অবস্থায় যাতায়াত করতে হয়।
ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা নুরুল কবির জানান, বহু যুগ থেকে স্থানীয়দের চলাচলের একমাত্র রাস্তা ছিল এটি। যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো না থাকায় শুষ্ক মৌসুমে কোন রকম হাঁটা চলাচল করতে পারলেও বর্ষা মৌসুমে অতি কষ্টে গ্রামবাসীর চলাফেরা করতে হয়।
তুলাতলী গ্রামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩টি জামে মসজি ও ফোরকানিয়া, নূরানী মাদরাসাসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। রাস্তা সংস্কার না হওয়ার কারণে মুসল্লী ও শিক্ষার্থীরা রয়েছেন বিপাকে।
এ প্রতিবেদক সরেজমিনে গেলে স্থানীয় মুরব্বীরা জানান, রাস্তাটির সংস্কার হলে প্রচুর রাজস্ব আয় ও জনসাধারনের কষ্ট অনেকটাই লাগব হতো। বর্তমানে রাস্তাটি বালুমাটি দ্বারা এবং অনেকাংশ ঝোপ জঙ্গলে পরিনত হওয়ায় দিনের বেলায়ও ঐ রাস্তা দিয়ে চলাচলে ভীতিকর অবস্থায় পড়তে হয়। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে টিলা ও বৃষ্ঠির পানি ঐ রাস্তাদিয়ে চলাচলের কারনে হাঁটু, কোমর পরিমাণ পর্যন্ত পানি জমে যায়। ফলে জনসাধরনকে পড়তে দূর্ভোগে। বিশেষ করে মহিলাদের কষ্ট বেড়ে যায়। এজন্য স্থানীয় সাংসদ ও সাবেক সাংসদ, উপজেলা চেয়ারম্যান এর সু-দৃষ্টি কামনা করছি।
স্থানীয় সমাজ সেবক মোস্তাক আহমদ জানান, বর্ষায় পানি চলাচল ও শুকনা মৌসুম ঝোপড়ি থাকায় অনেক কষ্ট হয়। রাস্তাটি সংস্কার না করায় এলাকার মানুষ খুব কষ্টে রয়েছেন। বর্ষার সময় বৃষ্টির পানি জমে চলাচলে একদম অনুপযোগী হয়ে পড়ে। সড়কটি সংস্কার করা খুবই জরুরি। এজন্য এলাকার সব য়সের লোকেরা স্থানীয় র্বতমান সাংসদ শাহিন আকতার ও সাবেক সাংসদ আবদুর রহমান বদি, উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আলম এর দৃষ্টি কামনা করেছেন।।
স্থানীয় মেম্বার শাহ আলম জানান, সড়কটি উন্নয়নের জন্য বড় বাজেট প্রয়াজন। সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে উন্নয়নের জন্য উদ্যোগ নেয়া হবে।
ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিহাদ জানান, আমি কয়েক মাস হলো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দায়িত্বপালন করছি। ইতি মধ্যে সদরের জমিদারী কাঁড়িসহ বেশ কয়েকটি রাস্তায় উন্নয়ন কাজ চলছে। শীঘ্রই তুলাতলীর রাস্তার কাজও শুরু হবে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *