মঙ্গলবার , ১৬ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৩রা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

প্রকাশিত হয়েছে-

 

 

স্যারের স্বপ্ন অসামাপ্ত
গত ১৫ মার্চ ২০২১ ইং উখিয়া হতে রাস্তার মাথা পৌঁছা মাত্রই আমার মোবাইলের রিং বাজল।পকেট থেকে মোবাইল হাতে নিয়ে দেখি হেড স্যারের কল। কল রিসিভ করা মাত্রই হেড স্যার বলল শংকর স্যার সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন আছে। এই সংবাদ শুনে খৃবই মর্মাহত হলাম।

স্যারের দুর্ঘটনার বিষয়ে ফেইসবুকে একটা স্টেট্যাস লেখা শুরু করা মাত্রই আবার হেড স্যার ফোন করে জানাল শংকর স্যার মারা গেছে। এই মর্মান্তিক সংবাদের জন্য যেহতু প্রস্তুত ছিলাম না সেহেতু নিজে হতবিহ্বল হয়ে গেলাম।
বিকেলে আমরা কিছু সংখ্যক স্যারের প্রাক্তন ছাত্র স্যারকে শেষ দেখা দেখার জন্য স্যারের গ্রামের বাড়ি মির সরাই উপজেলার হাইদকান্দির পথে রওনা দিই। রাত আড়াইটার দিকে আমরা স্যারের মরদেহের কাছে পৌঁছে স্যারকে শেষ দেখা দেখি।আমাদের দেখার পর স্যারের মরদেহ শ্বসানে নিয়ে যায় এবং শবদাহ সম্পন্ন করে।
রাত সাড়ে তিনটার দিকে আমরা কুতুপালং চলে আসার পথে স্যারের নির্মানাধীন বাড়িতে যায়। সেখানে গিয়ে দেখি ছাদ ঢালাই কাজের জন্য সব কিছু প্রস্তুত। ১৭ তারিখ ছাদ ঢালাই করার দিন ছিল। স্যারের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল একটি বাড়ি করার। সেই স্বপ্ন পুরন হবার আগেই স্যার পরপারে চলে গেছে।
স্যারের নির্মানাধীন বাড়ি দেখার পর আমরা স্যারের পুরাতন বাড়িতে গেলাম। আমরা সেখানে পৌঁছার সাথে সাথেই এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। স্যারের স্ত্রী ও নাবালক দুই সন্তানের ক্রন্দনে আকাশ বাতাস বারি হয়ে যায়। তখন তাদেরকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা আমাদের ছিলনা। জানলাম স্যারের দুই সন্তান মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে অধ্যায়নরত। স্যারের স্বপ্ন ছিল ছেলেদ্বয়কে উচ্চ শিক্ষিত করাবে। স্যারের সেই স্বপ্নও বাস্তবায়িত হয়নি।


স্যারের ব্যাপারে এই লম্বা লিখার কারণ হলো স্যারের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কিছু সংখ্যক প্রাক্তন ছাত্র শংকর স্যার কল্যান তহবিল গঠন করেছে। এটা ভালো উদ্যোগ। আমরা স্যারের প্রাক্তন ছাত্র /ছাত্রীরা মিলে স্যারের অসমাপ্ত স্বপ্ন গুলো কি বাস্তবায়ন করতে পারিনা। সবাই আন্তরিক হলে অবশ্যই পারব।