কক্সবাজারের উখিয়ায় আলোচিত সৈয়দ করিম হত্যাকন্ডে জড়িত ঘাতক চাচাতো ভাই সালামত উল্লাহ’কে হত্যাকান্ডের ১০ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করছেন র‍্যাব-১৫

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

কক্সবাজারের উখিয়ায় আলোচিত সৈয়দ করিম হত্যাকন্ডে জড়িত ঘাতক চাচাতো ভাই সালামত উল্লাহ’কে হত্যাকান্ডের ১০ ঘন্টার মধ্যে কক্সবাজারের রামু থানাধীন খুনিয়াপালং ইউনিয়নের পেঁচারদ্বীপের পাহাড়ী ঢাল থেকে র‌্যাব-১৫ কর্তৃক গ্রেফতার; হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত রক্তাক্ত ছুরি ও নিহতের পরিহিত জামা উদ্ধার

১। ‘‘বাংলাদেশ আমার অহংকার’’ এই স্লোগান নিয়ে র‌্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই খুন, ধর্ষণ, অপহরণ, জলদস্যু, ডাকাত, চুরি-ছিনতাই, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, জঙ্গী দমন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মাদকসহ দেশে বিরাজমান বিভিন্ন অপরাধ নির্মূলে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে আসছে। র‌্যাব-১৫, দায়িত্বাধীন কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলায় বিরাজমান এ সকল অপরাধসহ আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর ঘটনার সাথে জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে প্রতিনিয়তই অত্যন্ত অগ্রণী ভূমিকা পালন এবং নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

২। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়া থানাধীন জালিয়াপালং ইউনিয়নের উত্তর নিদানিয়া তেতুলতলা গ্রামে সৈয়দ করিম (৪৫) নামের এক সুপারী ব্যবসায়ী খুনের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের উত্তর নিদানিয়া তেতুলতলা গ্রামের বাসিন্দা সালামত উল্লাহ ও সৈয়দ করিম সম্পর্কে একে অপরের আপন চাচাতো-জেঠাতো ভাই। পারিবারিক কিছু বিষয় নিয়ে উভয়ের মধ্যে বিরোধ চলছিল বেশ কিছুদিন ধরে। ঘটনার দিন সকালে উখিয়ার উত্তর নিদানিয়া গ্রামের স্থানীয় স্টেশন থেকে সৈয়দ করিম বাড়ি ফেরার পথে বাড়ির নিকটে সুপারী বাগানে পৌঁছালে সালামত উল্লাহ পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তার উপর আকস্মিক হামলা করে। একপর্যায়ে ঘাতক সালামত উল্লাহ সৈয়দ করিমের বুকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থলেই গুরুতর আহত হয়ে পড়ে যায় সৈয়দ করিম। পরবর্র্তীতে তার পরিবার ও আত্নীয় স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সৈয়দ করিমকে মৃত ঘোষণা করেন। নির্মম এই হত্যাকান্ডের ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার সাথে সাথে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। একই সাথে হত্যাকারীকে গ্রেফতার ও হত্যার সুষ্ঠু বিচারের লক্ষ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।

৩। বিষয়টি সর্ম্পকে অবগত হওয়া মাত্রই র‌্যাব-১৫, কক্সবাজার ছায়াতদন্ত শুরু করে এবং ঘটনার সাথে জড়িত ঘাতককে গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় নির্ভরযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব জানতে পারে যে, ঘাতক সালামত উল্লাহ পালানোর উদ্দেশ্যে মেরিন ড্রাইভ রোড হয়ে কক্সবাজার শহরের দিকে যাচ্ছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখ রাত অনুমান ০৮.৪৫ ঘটিকার সময় ঘাতক সালামত উল্লাহ’কে গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে র‌্যাব-১৫, সিপিএসসি, কক্সবাজার ক্যাম্পের একটি চৌকস আভিযানিক দল কক্সবাজারের রামু থানাধীন খুনিয়ায়াপালং ইউনিয়নের পেঁচারদ্বীপ এলাকার টেকনাফ-কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ রোডে একটি অস্থায়ী চেকপোস্ট স্থাপনপূর্বক তল্লাশী অভিযান পরিচালনা করে। তল্লাশী অভিযান চলাকালীন টেকনাফ-কক্সবাজারগামী একটি সিএনজি চেকপোস্টের সামনে আসা মাত্রই ঘাতক সালামত উল্লাহ র‌্যাবের উপস্থিতি বুঝতে পেরে সিএনজি থেকে নেমে নিকটবর্তী পাহাড়ী এলাকায় পালানোর চেষ্টাকালে সালামত উল্লাহ (৩৮), পিতা-সৈয়দ কাশেম, সাং-উত্তর নিদানিয়া তেতুলতলা, জালিয়াপালং ইউনিয়ন, থানা-উখিয়া, জেলা-কক্সবাজার’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় এবং তার দেয়া তথ্যমতে ঘটনাস্থল হতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত রক্তাক্ত ছুরি ও নিহতের পরিহিত জামা উদ্ধার করা হয়।

৪। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত সালামত উল্লাহ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকার করে ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে বলেন, নিহত সৈয়দ করিমের সাথে তার স্ত্রীর দীর্ঘদিন যাবত পরকীয়া সম্পর্কের সন্দেহ এবং পারিবারিকভাবে পূর্ব শত্রুতা চলে আসছিল। এরই জেরে ঘাতক দীর্ঘদিন যাবত সুযোগের অপেক্ষায় ছিল এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি সংগ্রহে রেখেছিল। ঘটনার দিন সকালে উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের উত্তর নিদানিয়া গ্রামের স্থানীয় স্টেশন থেকে সৈয়দ করিম বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ি ফেরার পথে নিহতের বাড়ির সুপারী বাগানে পৌঁছালে গ্রেফতারকৃত সালামত উল্লাহ আকস্মিকভাবে তার উপর হামলা করে। একপর্যায়ে সুপারী বাগানে একটি ছোট গর্তে ফেলে সে সৈয়দ করিমের বুকে ছুরিকাঘাত করে এবং ঘটনাস্থলে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি ফেলে পালিয়ে যায় মর্মে স্বীকার করে। জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, ঘাতক আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার এড়াতে রাতের আঁধারে কক্সবাজার হয়ে অন্যত্র পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে অভিযানস্থলে র‌্যাবের আভিযানিক দলের নিকট ধৃত হয়।

৫। গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *