উস্তাদে মুহতরম হযরত আল্লামা মুফতি আবদুল হালিম বোখারী সাহেব (দা.বা.) এর প্রতি সশ্রদ্ধ অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাই তিনি তাঁর জীবদ্দশায় তাঁর উত্তরাধিকারী মনোনীত করলেন। যাকে দায়িত্ব দিলেন তিনি আমাদের প্রীতিভাজন জনাব মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযা (দা.বা.)। পটিয়া মাদরাসার যিম্মাদারী সব সময় যোগ্য ও দক্ষ ব্যক্তির হাতে পড়েছে। এই ঐতিহ্য অনুকরণীয়।
তাঁর সাথে ১৮ বছর একসাথে কাজ করেছি। আমার সাথে কোনদিন মনোমালিন্য হয়নি। আলাপচারিতায় আমি অনেক সময় তাঁকে শক্ত কথা বলেছি কিন্তু তাঁকে উত্তেজিত হতে দেখিনি। হাসিমুখে সব কথা মেনে নিয়েছেন। এই সহনশীল মানসিকতা তাঁকে ওপরে নিয়ে গেছে। তিনি আরবী সাময়িকী “বালাগুশ শারক” এর সম্পাদক ও বাংলা মাসিক “আত-তাওহীদ”এর সহকারী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযা (দা.বা.) বহুমাত্রিক মেধা ও মননের অধিকারী। তিনি একাধারে মুহাদ্দিস, ওয়ায়েয, আলোচক, গ্রন্থকার ও খতিব।
বাংলা, আরবি, ইংরেজি, উর্দূ ও ফার্সি ভাষায় তাঁর দক্ষতা ঈর্ষণীয়। তাঁকে কওমি সিলসিলার রত্ন বলা চলে। আমি তাঁর রচিত বহু কিতাবে অভিমত ও ভূমিকা লিখে দিয়েছি।
তিনি সোশ্যাল ইসলামি ব্যাংক ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের শরীয়াহ এডভাইজারি বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। পৃথিবীর বহুদেশে বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, লেবানন, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, পাকিস্তান, হংকং, থাইল্যান্ড, ওমান, আমিরাত, বাহরাইনে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক একাডেমিক সেমিনারে অংশ নেন।
১৯৯২ সালে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার অধীনে দাওরায়ে হাদীস পরীক্ষায় তিনি প্রথম বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করার কৃতিত্ব অর্জন করেন। ১৯৯৪-২০০০ পর্যন্ত সৌদি আরবের প্রতিরক্ষা ও বিমানচলাচল মন্ত্রণালয়ে অনুবাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
আমরা জনাব মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযা (দা.বা)-কে পটিয়া মাদরাসার সহকারী পরিচালক নিযুক্ত হওয়ায় মুবারকবাদ ও অভিনন্দন জানাই।
পটিয়া মাদরাসার আরেক রত্ন ছিলেন ড. মাওলানা মাহমুদুল হাসান আযহারী (দা.বা.)। বেফাকুল মাদারিসিল আরবিয়ার অধীনে তিনিও প্রথম বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করেন। তিনি বহুদিন পটিয়া মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন। চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ও অধ্যাপক ছিলেন। তাঁর মেধার বহুমাত্রিকতা বিস্ময়কর। এই মানুষটাকে পটিয়া মাদরাসায় ধরে রাখতে পারলে কতই না ভাল হতো। সব আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছে। এখন তিনি লন্ডনে অবস্থান করে সারা দুনিয়াব্যাপী ইসলামের খিদমত আঞ্জাম দিয়ে চলেছেন।
পটিয়া মাদরাসা যুগে যুগে ইলমের তারকাপুঞ্জ জন্ম দিয়ে আসছে, যারা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। এটা সম্মানিত উস্তাদ ও মুরব্বিদের নেক নযরের বরকত। দোয়া করি আল্লাহ তায়ালা আমাদের মুরব্বি ও উস্তাদ হযরত আল্লামা আবদুল হালিম বোখারী (দা.বা.)-কে স্থায়ী সুস্থতা ও সমৃদ্ধ জীবন দান করুন এবং নবনিযুক্ত সহকারী পরিচালক মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযা (দা.বা)-কে সুষ্ঠুভাবে মাদরে ইলমি পরিচালনার তাওফিক দান করুন, আমিন, আমিন।
Leave a Reply