Author: UkhiyaVoice24

  • লালমোহনে ফরাজগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন মুরাদ বিচার চেয়ে দুই মেয়ের সংবাদ সম্মেলন

    লালমোহনে ফরাজগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন মুরাদ বিচার চেয়ে দুই মেয়ের সংবাদ সম্মেলন

    জেলা প্রতিনিধি

     

    ভোলার লালমোহনে টাকা দাবী করে না পেয়ে আবুল কালাম নামে একজনকে মারধর করে আটকে রাখেন ফরাজগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন মুরাদ। পরে তার ছেলে কামরুজ্জামান জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল করে বাবাকে পুলিশের সহায়তায় চেয়ারম্যানের কাছ থেকে উদ্ধার করে। গত মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার বিচার না পেয়ে শুক্রবার বিকেলে লালমোহন প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে নির্যাতিত আবুল কালামের দুই মেয়ে।

    লিখিত বক্তব্যে নির্যাতিত আবুল কালামের মেয়ে সিমা আক্তার ও রাজিয়া সুলতানা মুন্নি অভিযোগ করে বলেন, আমাদের দখলীয় জমিতে একই এলাকার মো. মুসা নামের এক ব্যক্তি জোরপূর্বক দখল করে। তিনি দাইমুদ্দিন নামের এক ব্যক্তি থেকে ওই জমি ক্রয় করেন বলে জানান। দাইমুদ্দিনের জমি দখল না করে আমাদের জমি দখল করার কারণে উপজেলার ফরাজগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন মুরাদের কাছে অভিযোগ করলে তিনি দুইবার ফয়সালায় বসেন। পরে তিনি আগামী ২৬ জানুয়ারী জমি মেপে দিবেন বলে তারিখ দেন। তবে ১৯ জানুয়ারি রাতে চেয়ারম্যান মুরাদ ও তার ভাই মামুন ডেকে নিয়ে এক লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা তাদের কাছে জমা দিতে বলেন। জমি পেতে হলে তাদের কাছে টাকা রাখতে হবে বলে জানান চেয়ারম্যান ও তার ভাই। তখন তার বাবা আবুল কালাম টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরের দিন সকাল ১১ টায় আমার বাবাকে আবার চৌকিদার পাঠিয়ে ডেকে নেন। এসময় আবারও টাকা দাবী করে চেয়ারম্যান ওই টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় আমার বাবাকে চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন মুরাদ প্রকাশ্যে মারধর করে আটকে রাখেন।
    তারা অভিযোগ করে আরও বলেন, পরে আমাদের ভাই কামরুজ্জামান জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল করে বাবাকে পুলিশের সহায়তায় চেয়ারম্যানের কাছ থেকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় লালমোহন থানায় অভিযোগ দিতে গেলে পুলিশ তাদের কোনো অভিযোগ নেয়নি। এ ঘটনার পর থেকে পুরো পরিবার চেয়ারম্যানের হুমকি ধামকি ও দাপটে অসহায় হয়ে পড়েছেন। তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। তাই সাংবাদিকদের মাধ্যমে এ ঘটনার ন্যায্য বিচার দাবী করছেন তারা।
    এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন মুরাদের কাছে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২০১২ সালে আবুল কালাম একই এলাকার মোস্তফার কাছে জমি বিক্রির কথা বলে এক লক্ষ ৬০ হাজার নেন। পরে মোস্তফাকে টাকা ফিরৎ না দিয়ে ওই্ জমি অন্যত্র বিক্রি দেয়। স্থানীয়দের ফয়সালার মাধ্যমে মোস্তফাকে ৯৫ হাজার টাকা ফিরৎ দিলেও বাকি টাকা ফেরৎ দেয়নি। ওই টাকা ফেরৎ দিবে বলে আমার থেকেও আবুল কালাম কয়েকবার সময় নেয়। সেজন্য তাকে ডাকাই। তার কাছ থেকে টাকা চাইলে সে আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে, যার জন্য তাকে কয়েকটা চর থাপ্পর মেরেছি।

  • বাঁশখালী আইনজীবি সমিতির নির্বাচনে সভাপতিঃ এড: শামসুল আলম, সম্পাদকঃ এড:দিদার নির্বাচিত

    বাঁশখালী আইনজীবি সমিতির নির্বাচনে সভাপতিঃ এড: শামসুল আলম, সম্পাদকঃ এড:দিদার নির্বাচিত

     

    আলমগীর ইসলামাবাদী
    চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি

     

    বাঁশখালী আইনজীবি সমিতির নির্বাচনে সভাপতিঃ এড.শামসুল আলম, সম্পাদকঃএড.দিদার নির্বাচিত।

    চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলা আইনজীবি সমিতির ২০২০-২১ সেশনের নির্বাচনে এডভোকেট আলহাজ্ব শামসুল আলম সভাপতি এবং এডভোকেট মোহা: দিদারুল আলম সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।

    (২০ জানুয়ারী’২১ ইং) বুধবার দুপুর
    ০১ টায় ভোট গ্রহন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে নির্বাচনী শিডিউল অনুযায়ী বিকাল ৪ টায় ভোট গ্রহন শেষ হয়।

    নির্বাচনে ৪৮ ভোটের মধ্যে ২৫ ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন এডভোকেট শামসুল আলম চৌধুরী, তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি এডভোকেট বাবু দিলিপ দাশ পেয়েছেন ২০ ভোট। ২৩ ভোট পেয়ে সহ: সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন এড: রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি এড: ফজল আকবর জয়নুল আবেদীন বেলাল চৌধুরী পেয়েছেন ২০ ভোট।

    সাধারন সম্পাদক পদে তরুন আইনজীবি এড: মোহা: দিদারুল আলম ২৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন, তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি এড: অসীমা দেবী পেয়েছেন ২০ ভোট। কোন প্রতিদ্বন্ধি না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হয়েছেন, সহ:সাধারন সম্পাদক এড: মোহাম্মদ নাছের, দপ্তর সম্পাদক এড: সাইফুদ্দিন, তথ্য-প্রযুক্তি সম্পাদক এডভোকেট শহিদুল হক ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক এড: বাবু লিংকন তালুকদার।

    নির্বাচনী পরিবেশ ছিল উৎসবমুখর, শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ। প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থিদের মধ্যে সম্পর্ক ছিল নজরকাড়া ও দৃষ্টান্তমুলক। নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন,এডভোকেট আব্দুল খালেক, সহকারী কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন যথাক্রমে এড: শওকত ইকবাল চৌধুরী ও এড: নাজমুল আলম চৌধুরী।

    ফলাফল ঘোষনার সাথে সাথে নব নির্বাচিত সভাপতি, সাধারন সম্পাদক সহ বিজয়ী সকলকে আলিঙ্গন করে অভিনন্দন জানান প্রতিদ্বন্ধি পরাজিত প্রার্থীরা, যে দৃশ্য ছিল বিরল ও নজিরবিহীন।

  • মেয়র নির্বাচিত হলে সর্বপ্রথম নগর ভবনকে দুর্নীতি মুক্ত করব-মেয়ের প্রার্থী জান্নাতুল ইসলাম

    মেয়র নির্বাচিত হলে সর্বপ্রথম নগর ভবনকে দুর্নীতি মুক্ত করব-মেয়ের প্রার্থী জান্নাতুল ইসলাম

     

    আলমগীর ইসলামাবাদী
    চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি

     

    বায়েজিদ থানায় হাতপাখার পক্ষে জান্নাতুল ইসলামের ব্যাপক গণসংযোগ।

    আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়রপ্রার্থী আলহাজ্ব জান্নাতুল ইসলাম তার প্রতীক হাতপাখার পক্ষে বায়েজিদ থানায় ব্যাপক গণসংযোগ করেছেন।

    আজ বুধবার (২০ জানুয়ারী২০২১) বেলা ২ টায় টেক্সটাইল মোড় চন্দ্রনগর থেকে প্রচারণার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হওয়া।

    এ সময় বাংলাবাজার পথসভায় মেয়রপ্রার্থী জান্নাতুল ইসলাম বলেন,
    আমি নিজেও দুর্নীতি করবো না; কাউকে করতেও দিবো না।
    বাজেটের শতভাগ টাকা উন্নয়নের কাজেই ব্যবহার করবো।আমি বিশ্বাস করি বাজেটের শতভাগ টাকা দিয়ে উন্নয়নের কাজ করলে বর্তমান সময়ের চেয়েও দ্বিগুণ উন্নয়ন করা সম্ভব।

    এসময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক আলহাজ্ব আবুল কাসেম মাতব্বর, সেক্রেটারি আলহাজ্ব আল মুহাম্মদ ইকবাল, মিডিয়া সমন্বয়ক তরিকুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, পোলিং এজেন্ট সমন্বয়ক আবু সুফিয়ান ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দীন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সাবেক প্রচার সম্পাদকঃ মাও,গিয়াস উদ্দিন আল মাহমুদ,ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সাবেক সহকারী অর্থ সম্পাদকঃ মিডিয়া কর্মি আলমগীর ইসলামাবাদী ও ইসলামী আন্দোলন বায়েজিদ থানার নেতৃবৃন্দ।

  • বায়তুশ শরফ আধ্যাত্মিকতা, সেবা, দয়া ও জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার সমন্বিত আধার।” মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

    বায়তুশ শরফ আধ্যাত্মিকতা, সেবা, দয়া ও জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার সমন্বিত আধার।” মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

     

    আলমগীর ইসলামাবাদী
    চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি

     

    মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এম.পি বলেন, দরবার কেন্দ্রিক প্রচলিত পীর মুরিদীর আবহে পরিবেষ্ট না থেকে বায়তুশ শরফের পীর মুর্শিদরা ইহ ও পারলৌকিক কল্যাণে নিবেদিত থেকে যেভাবে দেশে ইসলামের বাণী ছড়িয়ে দিয়েছেন তা অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। ঢাকা বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের মাধ্যমে আধ্যাত্মিক এই প্রতিষ্ঠানের সাথে অনেক পূর্ব থেকে পরিচয় এবং যাতায়াতের কথা তুলে ধরে মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মহানবী (সাঃ) যেভাবে সেবা ও দয়ার মাধ্যমে ইসলামের সুমহান বাণী বিশ্বময় ছড়িয়ে দিয়েছিলেন বায়তুশ শরফ তারই বাস্তব উদাহরণ। তিনি বলেন, বায়তুশ মসজিদ ভিত্তিক একটি আধ্যাত্মিক প্রতিষ্ঠান হলেও মসজিদ, মাদ্রাসা, ইসলামী গবেষণা কেন্দ্র, এতিমখানার পাশাপাশি, স্কুল, কারিগরি প্রতিষ্ঠান, হাসপাতালের মাধ্যমে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। বায়তুশ শরফ পরিচালিত স্কুল ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মুসলিম ছাত্রদের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মাবলম্বী ছেলের লেখাপড়ার সুযোগ সৃষ্টি করে অসাম্প্রদায়িকতার যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হয়েছে তা বিরল ঘটনা। কারণ, অন্যান্য পীরদের দরবারে সচরাচর এমনটি দেখা যায়না। মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করে বলেন, বর্তমান পীর সাহেব আল্লামা শায়খ আবদুল হাই নদভীর এবং তাঁর মরহুম পিতার আল্লামা আবদুল জব্বার (রাহঃ) রচিত বিভিন্ন গ্রন্থ পাঠ করে নিজের অনভূতি ব্যক্ত করে বলেন, বায়তুশ শরফকে আধ্যাত্মিকতা, সেবা, দয়া ও জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার সমন্বিত আধার।

    মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (২০ জানুয়ারী ২০২১) বুধবার সকাল ১১টায় কক্সবাজার বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্স পরিদর্শন, কক্সবাজার বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের আওতাধীন বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমী ক্যাম্পাসে শাহ আবদুল জব্বার মিলনায়তন এর ভিত্তি ফলক উম্মোচন ও নব নির্মিত কারিগরি শিক্ষা ভবনের উদ্বোধন এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী ও মহান স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে দেয়ালিকা উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা গুলো বলেন।

    বায়তুশ শরফ আনজুমনে ইত্তেহাদ বাংলাদেশ এর সভাপতি ও পীর সাহেব আল্লামা শায়খ মুহাম্মদ আবদুল হাই নদভী (ম.জি.আ.) এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার সদর আসনের এমপি সাইমুম সরওয়ার কমল, কুতুবদিয়া মহেশখালী আসনের এমপি রফিকুল্লাহ আশেক, সংরক্ষিত মহিলা এমপি কানিজ ফাতেমা মোস্তাক, চট্টগ্রাম জোনের ডিআইজি মো.আনোয়ার হোসেন, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মামুনুর রশিদ, কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, কক্সবাজার পৌর সভার মেয়র মুজিবুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের মহাপরিচালক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এম. এম. সিরাজুল ইসলাম।

    শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন আনজুমনে ইত্তেহাদের সেক্রেটারি জেনারেল আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইদ্রিছ মিয়া। উপস্থিত ছিলেন এস আলম গ্রুপের ডাইরেক্টর রাশেদুল আলম খোরশেদ, আনজুমনে ইত্তেহাদের সহ সভাপতি মর্তুজা ছিদ্দিক, অধ্যাপক শফিউর রহমান, আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম, কবির গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হারুন শেঠ, ঢাকা বায়তুশ শরফের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুল আজিম আজাদ,অধ্যাপক জামাল উদ্দিন, অধ্যাপক একরামুল হক আজাদসহ কেন্দ্রীয় বায়তুশ শরফ ও কক্সবাজার বায়তুশ শরফের বিভিন্ন কর্মকর্তাগণ।

    মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুষ্ঠান শেষে দুপুর ১২টায় একই মঞ্চে বায়তুশ শরফ আনজুমনে নওজোয়ান কক্সবাজার শাখার শপথ গ্রহন ও অভিষেক অনুষ্ঠান এবং কক্সবাজার জেলার বায়তুশ শরফের বিভিন্ন শাখার দায়িত্বশীলদের সাথে আগামী ৪, ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য আখতারাবাদের (কুমিরাঘোনা) পবিত্র মাহফিলে ইছালে ছওয়াব ২০২১ উপলক্ষে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। আনজুমনে নওজোয়ান কক্সবাজার শাখার সভাপতি মোহাম্মদ শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অভিষেক ও শপথ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন আনজুমনে নওজোয়ান কক্সবাজার জেলার সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হাফেজ মোহাম্মদ আবুল কালাম।

  • কক্সবাজারে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের প্রথম পর্বের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে নেতৃবৃন্দ

    কক্সবাজারে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের প্রথম পর্বের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে নেতৃবৃন্দ

    প্রভাষক রাশেদ আনোয়ার,প্রতিবেদক

     

    কক্সবাজারে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের প্রথম পর্বের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে নেতৃবৃন্দ।

    আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর মুহতারাম আমীর হযরত পীরসাহেব হুজুর চরমোনাই এর ঘোষণা মতে দেশের সকল ইউনিয়নে হাতপাখা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে দেশে ইসলামী বিপ্লবের শস্যক্ষেত্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সকল প্রকার নেতা-কর্মীও দায়িত্বশীলদেরকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। নির্বাচনী মাঠে সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে এদেশে ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠার পথ রচনা করতে হবে। ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়েই নৈতিক ও আদর্শবান নেতৃত্ব সৃষ্টি করে দেশের সকল প্রকার অন্যায়, অবিচার, দুর্নীতি ধর্ষণের সংস্কৃতি থেকে মানুষকে মুক্তি দেয়ার জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। তাই আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নির্বাচনী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশকে ইসলামী বিপ্লবের দিকে ধাবিত করার ক্ষেত্রে আগামী নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর পথচলা একটি মাইল ফলক সৃষ্টি করবে। গণ দাওয়াতের মাধ্যমে দেশের সকল মানুষের কাছে ইসলামের হুকুমত প্রতিষ্ঠার মাধ্যম হিসেবে ইসলামী আন্দোলনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ কার্যকর ভূমিকা রাখবে। দেশের প্রতিটি নির্বাচনে হক্কানি, দ্বীনদার দেশপ্রেমিক এবং নিষ্কলুষ ব্যক্তি নির্বাচিত করা গেলে দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন সম্ভব। তাই নির্বাচনী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ইসলামী আন্দোলনের সকল নেতাকর্মী ও সদস্যদের এখন থেকে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। সর্বাত্মকভাবে ইসলামী বিপ্লবের প্রস্তুতি গ্রহণের সময় এখনই। দেশের মানুষ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের দিকে চেয়ে আছে। সুতরাং উপজেলার সকল দায়িত্বশীলদের এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। জেলার সকল ইউনিয়নে হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া হবে। হাতপাখার প্রার্থীদের বিজয়ী করার জন্য সকলকে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
    আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঘোষিত সমগ্র দেশব্যাপী সকল ইউনিয়নে প্রার্থী নির্ধারণের অংশ হিসেবে কক্সবাজার জেলায় প্রাথমিকভাবে মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীদের প্রথম পর্বের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে বক্তারা উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন।
    অদ্য 13 জানুয়ারি 2021 কক্সবাজার এর অভিজাত হোটেল মিশুক এর কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত চেয়ারম্যান প্রার্থীদের প্রথম পর্বের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠান জেলা সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে জেলা সেক্রেটারী মাওলানা মোহাম্মদ শোয়াইব এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠান তদারকি করেন জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক প্রভাষক রাশেদ আনোয়ার। সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে সাক্ষাৎকার বোর্ডের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা মোহাম্মদ আলী

    মাওলানা মুহাম্মদ শোয়াইব, প্রভাষক রাশেদ আনোয়ার, আলহাজ্ব নুরুল আমিন, আল্বহাজ বদিউল আলম ও মোঃ আব্দুর রহিম।
    সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা আবুল হাশেম, জয়েন্ট সেক্রেটারী মাওলানা ফরিদুল আলম। জেলা নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা সেলিম উদ্দীন, মাওলানা ফজলুল করিম, মাওলানা মুহাম্মদ ইসমাইল, জাতীয় শিক্ষক ফোরামের জেলা সেক্রেটারী মুহাদ্দিস মাওলানা আমিরুল ইসলাম, ইশা ছাত্র আন্দোলনে জেলা সভাপতি মোরশেদ কারীমি সহ আন্দোলন ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠানে জেলার 28 টি ইউনিয়নে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ ও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
    (রাশেদ কক্স)

  • খুলনায় ওলামা মশায়েখ আইম্মা পরিষদের নগর ও জেলার যৌথ সভা

    খুলনায় ওলামা মশায়েখ আইম্মা পরিষদের নগর ও জেলার যৌথ সভা

    শেখ নাসির উদ্দিন, খুলনা প্রতিনিধি

     

    গত ১২ ই জানুয়ারী মঙ্গলবার সকাল ৭ টায় জাতীয় ওলামা মশায়েখ আইম্মা পরিষদ খুলনা মহানগর সভাপতি মুফতী গোলামুর রহমান এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মুফতী আব্দুল্লাহ ইয়াহইয়া এর পরিচালনায় রেলওয়ে মসজিদে যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

    সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রচলিত জেনারেল শিক্ষা ব্যবস্থায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক না থাকার কারণে বর্তমান প্রজন্মের বোদ-বিশ্বাসে প্রগতিশীলতা ও পশ্চিমারা সাংস্কৃতিক প্রভাব প্রকট আকারে ধারণ করেছে, যার কারণে জিনা-ব্যাবিচার, ধর্ষণ ও ধর্ষণ পরবর্তী হত্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে।

    নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, এধরনের গর্হিত অন্যায় বৃদ্ধির জন্য আমাদেরকে দূর্বল ও ভঙ্গুর বিচার ব্যবস্থা ও প্রশাসন দায়ী।

    সংগঠন সম্প্রসারণ ও মজবুতি অর্জনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

    সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা সভাপতি মাওলানা শেখ আব্দুল্লাহ।

    উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন মুফতী আব্দুর রহিম, মুফতী মাহবুবুর রহমান, মুফতী আলী আহমাদ, মুফতী ইমরান হুসাইন, মুফতী আব্দুর শাকুর, মুফতী আব্দুর রহমান মিয়াজি, মুফতী ফখরুল হাসান কাসেমী, মুফতী জাকির হুসাইন, মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, মুফতী আনোয়ারুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুল কাদের, মুফতী মাহমুদুল হাসান, মাওলানা শায়খুল ইসলাম বিন হাসান, মুফতী আব্দুল্লাহ মুফতার, মুফতী শেখ আমীরুল ইসলাম, মাওলানা ইকবাল মাহমুদ প্রমুখ।

  • আনোয়ারায় লটারির মাধ্যমে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ভর্তি

    আনোয়ারায় লটারির মাধ্যমে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ভর্তি

     

    আনোয়ারা (চট্টগ্রাম)প্রতিনিধিঃ-

    শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ি আনোয়ারা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে ফলাফল নির্ধারনের মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়েছে।

    সোমবার (১১ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় আনোয়ারা সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিপুল সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রীদের উৎসাহ উদ্দীপনা পরিবেশে লটারির মাধ্যমে ফলাফল প্রদান করা হয়।এতে লটারির মাধ্যমে ১৫২ জন ছাত্র-ছাত্রী নির্বাচিত হয়।এছাড়া ৩০ জন ছাত্র-ছাত্রীকে অপেক্ষমান রাখা হয়।

    আনোয়ারা সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহি অফিসার (ইউএনও) শেখ জোবায়ের আহমেদ।বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ ফেরদৌস হোসেনসহ আরো অনেকে.

  • নলছিটির কৃতি সন্তান মিজানুর রহমান আর নেই

    নলছিটির কৃতি সন্তান মিজানুর রহমান আর নেই

    মোঃরাকিব,নলছিটি উপজেলা প্রতিনিধিঃ

     

    নলছিটি উপজেলার কৃতি সন্তান প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক জনাব মিজানুর রহমান মহান আল্লাহ্ তায়ালার ডাকে সারা দিয়ে চিরতরে এ পৃথিবীর মায়া ত‍্যাগ করে চলে গেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিউন।

    তিনি একাধারে সাংবাদিক, সংবিধান বিশ্লেষক, কলামিস্ট ও সংগঠক ছিলেন। ” নি “তারুণ্যের নলছিটি” নামক সামাজিক সংগঠনের সহ সম্পাদক ছিলেন। তার মৃত্যুতে “তারুণ্যের নলছিটি” গভীর শোক প্রকাশ করেছে।

  • ভোলায় এসএসসি পরীক্ষার্থীকে ইউপি সচিবের মারধর ॥ আতঙ্কিত শিক্ষার্থী

    ভোলায় এসএসসি পরীক্ষার্থীকে ইউপি সচিবের মারধর ॥ আতঙ্কিত শিক্ষার্থী

    ভোলা প্রতিনিধি

     

    ভোলায় পরানগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীকে মারধর ও অর্কত্য ভাষায় গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠেছে দৌলতখানের ভবানীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোঃ আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে। রবিবার (১০ জানুয়ারী) বিকালে ভোলা সদর উপজেলার পরানগঞ্জ বাজারের নাজিউর রহমান কলেজের পেছনে মীর বাড়ী সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ইউপি সচিব কর্তৃক মারধরের শিকার এসএসসি শিক্ষার্থী সোহাগ বর্তমানে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীর পরিবার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ইউএনও স্যারসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবী করেন।
    সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের বাসিন্দা মোঃ সিরাজ উদ্দিন মোল্লার ছেলে পরানগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী মোঃ সোহাগ প্রতিদিনের মতো প্রাইভেট পড়ে বাড়ী ফেরার পথে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে তার সহপাঠি বন্ধু মিতুলের সাথে কথা বলছিলো। এসময় ওই পথ দিয়ে দৌলতখান উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোঃ আলমগীর হোসেন আরও একজন লোকসহ যাচ্ছিলো। শিক্ষার্থী মিতুল সহপাঠি মোঃ সোহাগকে সাইড দিতে বলে। সোহাগ সচিব আলমগীরকে সাইড দেয়। সচিব আলমগীর ও তার সাথে থাকা লোক কিছু দূর চলে যায়। সোহাগ তার সহপাঠি বন্ধু মিতুলের উদ্দেশ্যে বলে মানুষই তো যাইতেছে, গাড়িতো আর যাইতেছে না যে মাইরা দিয়া চলে যাবে। ভয়ের কি আছে। দুই বন্ধুর সাথে চলা এই কথা দুর থেকে শুনতে পেয়ে ইউপি সচিব আলমগীর হোসেন উত্তেজিত হয়ে তেঁড়ে এসে এসএসসি পরীক্ষার্থী সোহাগকে মারধর করে। সচিব আলমগীর উত্তেজিত মেজাজে বলে তোর বাড়ি কোথায়, বাপের নাম কি, তোর বাপেরে বাড়ি থেকে এনে তোকে ও বাপকে পিঠাবো। আমাকে চিনিস? এসময় শিক্ষার্থী সোহাগ ও মিতুল সচিব আলমগীর হোসেনকে উদ্দেশ্যে করে বলে আপনাকে তো কিছু বলি নাই। আপনি কেনো এমন করছেন। আলমগীর হোসেন আরও উত্তেজিত হয়ে সোহাগকে অর্কত্য ভাষায় গালিগালাজ করে। একজন ইউপি সচিবের এমন আচরণে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে শিক্ষার্থী সোহাগ ও মিতুল।
    নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী মোঃ সোহাগের বড় ভাই এম শাহরিয়ার জিলন বলেন, দুই বন্ধুর কথোপকথনকে কেন্দ্র করে ইউপি সচিব আলমগীর হোসেন আমার ভাই সোহাগকে মারধর ও অশোভন আচরণের ঘটনায় আমরা ব্যথিত হয়েছি। একজন ইউপি সচিবের কাছ থেকে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা আশা করিনি। আমার ভাই এসএসসি পরীক্ষার্থী সোহাগ এ ঘটনার পর থেকে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। আমি এ ঘটনায় জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ইউএনও স্যারসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি।
    এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ভবানীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন, আমি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম। তারা রাস্তা অবরোধ করে রাখছিলো। তারা দুজন কথা বলছিলো, আমি ডাক দিলে কথা না শুনায় সোহাগকে থাপ্পর দিয়েছি।
    বাল্যবিয়ে ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি এডভোকেট সাহাদাত হোসেন শাহিন বলেন, এসএসসি পরীক্ষার্থী সোহাগকে মারধরের ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। তুচ্ছ কারণে শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। একজন সরকারী চাকুরীজীবি ব্যক্তির কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ কেউ আশা করে না। প্রশাসনের কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানাচ্ছি।
    উল্লেখ্য, দৌলতখান উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোঃ আলমগীর হোসেনের আগেও একাধিক লোকের সাথে এমন অশোভন আচরণ করেছেন বলে জানা গেছে।

  • প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী একজন ইসলামিক স্কলার ও রাজনীতিবিদ

    প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী একজন ইসলামিক স্কলার ও রাজনীতিবিদ

    নিজস্ব প্রতিবেদক

    প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী একজন ইসলামিক স্কলার ও রাজনীতিবিদ। জন্ম ১৯৬৮ সালের ১৫ আগস্ট চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার মাদার্শা ইউনিয়নে।

    ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে লোহাগাড়া-সাতকানিয়া আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

    তিনি আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান,আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের (আইআইইউসি) অধ্যাপক এবং শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কীয় সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য। এ ছাড়াও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংকের শরীয়াহ বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান।

    এর আগে আবু রেজা নদভী সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় পরিচালিত শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ান ট্রাস্টের সদস্য, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ছিলেন, ইন্টারন্যাশনাল ইসলামীক রিলিফ অর্গানাইজেশন বাংলাদেশ শাখার নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান এবং সৌদি আরবের রিয়াদস্থ ইন্টারন্যাশনাল লীগ ফর ইসলামিক লিটারেচারের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

    তার শিক্ষা, চিন্তাধারা, কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানতে যুগান্তরের পক্ষ থেকে মুখোমুখী হন এহসান সিরাজ ও মনযূরুল হক। গ্রন্থনা করেছেন- তানজিল আমির

    যুগান্তর: আপনি নদভী। নদওয়া থেকেই শুরু করি। দারুল উলুম নদওয়াতুল উলামায় (ভারত) কবে, কার উৎসাহে গেলেন?

    আবু রেজা নদভী: নদওয়াতুল উলামায় গিয়েছি মাওলানা সুলতান যওক নদভীর (পরিচালক, জামিয়া দারুল মাআরিফ, চট্টগ্রাম) পরামর্শে। ১৯৮৩ সালে একসঙ্গে আমরা তিনজন গিয়েছিলাম। আমি, মাকসুদুর রহমান ফেরদৌস আর ড. মুজাফফর নদভি।

    আমাদের দিক-নির্দেশনা দিতেন আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ। তিনি বলতেন, এভাবে পড়ো, ওভাবে পড়ো। আমি পটিয়াতে পড়াশুনা করেছি। সে-বছর বোর্ড পরীক্ষায় আমার রেজাল্ট খুব ভালো হয়েছিল। আমি যে রেজাল্ট পেয়েছিলাম তখনকার একমাত্র বোর্ড ইত্তেহাদুল মাদারিসের পরীক্ষায়, ৪০-৫০ বছরেও কেউ এত নম্বর পায়নি।

    যুগান্তর: গিয়ে কী দেখলেন সেখানে?

    আবু রেজা নদভী: নদওয়ায় গিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সব দেখতাম। নদওয়ার পরিবেশ যাচাই করে দেখতাম। দেখতাম আধুনিকতার সঙ্গে তাকওয়ার মিশেল কতটুকু।

    দৃষ্টি ছিল সূক্ষ্ম। দেখতাম, এখানে আরবি এবং নুসুসের গুরুত্ব বেশি। ফার্সি ,মানতেক, ফালসাফার গুরুত্ব কম। তখন নদওয়ায় আন্তর্জাতিক যত দীনি ব্যক্তিত্ব আসতেন, আমি তাদের কাছে যেতাম।

    নদওয়ার কনফারেন্সে এসে জমা হয় পৃথিবীখ্যাত ব্যক্তিত্বরা। তখন নদওয়াতে ভিজিটিং প্রফেসর ছিলেন ড. ইউসুফ আল কারজাভী, শায়খ ড. আবদুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ।

    আমি এসব মহান ব্যক্তিত্বদের পর্যবেক্ষণ করতাম। তাদের সান্নিধ্যে বসতাম। আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে যোগ দিতাম। এভাবেই পরিচিত হতে হতে বাইরের পৃথিবীতে আমার পদযাত্রা শুরু।

    যুগান্তর: সেখানে আপনার প্রিয় শিক্ষক কে ছিলেন?

    আবু রেজা নদভী: আমার সবচেয়ে প্রিয় শিক্ষক ছিলেন সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী। আমার জন্য তার চেয়ে বড় শিক্ষক আর কেউ নেই। দীর্ঘ সাত বছর আমি আবুল হাসান আলী নদভীর সামনে ছিলাম। দেখেছি ব্যক্তিত্বগুণে মুগ্ধ হয়ে মানুষ কিভাবে তার চারপাশে এসে জড়ো হয়।

    শায়খ নদভী আমাকে লিখিতভাবে হাদিসের অনুমতি দিয়েছেন। আরেকজন প্রিয় শিক্ষক শায়খের নাতি আল্লামা সালমান হুসাইনী নদভী। তার কাছে আমি তিরমিজি ও মেশকাত শরিফ পড়েছি।

    আমি আরবি ও উর্দুতে শ্রেষ্ঠ দুজন বক্তা দেখেছি। একজন তো সালমান নদভী। আরেকজন সুদানের ড. ইস‘আমুল বশির, তিনি সুদানের ধর্মমন্ত্রীও ছিলেন। তার সঙ্গেও আমার বেশ হৃদ্যতা আছে।

    যুগান্তর: সালমান নদভীর সঙ্গে নদওয়ার আলেমদের একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে শুনলাম…

    আবু রেজা নদভী: শুনেছি রাবে নদভীর কাছে গিয়ে তিনি তওবা করেছেন। কতটুকু সত্যি জানি না। তবে তিনি ভুল করেছেন। জমহুর উলামায়ে কেরামের মতের বিপরীতে তিনি কেন বলবেন?

    যুগান্তর: আচ্ছা, নদওয়ায় গেলেন কিভাবে? মানে যাবার ভিসা প্রসেস কিভাবে করেছিলেন?

    আবু রেজা নদভী: তখন জাতীয় পার্টি থেকে সাতকানিয়ার এমপি ছিলেন আমার মামা ইবারাহিম বিন খলিল। তিনিই ভিসা ম্যানেজ করে দিয়েছেন। নদওয়া এবং দেওবন্দে যেন ভিসা প্রসেস সহজ হয়, ব্যাপক হয়, পরবর্তী সময়ে আমি এই প্রচেষ্টা শুরু করেছিলাম।

    কিন্তু রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে তা থমকে আছে। তবে চাইলে এখনও করতে পারি। সেই সংযোগ আছে আমার।

    যুগান্তর: ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে শিক্ষা বিনিময় তো সহজ হবার কথা ছিল। তা হয়নি কেন? এখনও তো দেওবন্দে শিক্ষাভিসা নিয়ে ছাত্ররা যেতে পারে না…

    আবু রেজা নদভী: আমাদের আলেমদের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হয়নি। এখনও যদি জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সদর সাইয়েদ আরশাদ মাদানী এবং জেনারেল সেক্রেটারি মাহমুদ মাদানীর মাধ্যমে চেষ্টা করা হয়, তাহলে সহজ হবে।

    যুগান্তর: আপনি চেষ্টা করবেন কিনা?

    আবু রেজা নদভী: করব। সবাই বললে অবশ্যই করব।

    যুগান্তর: দেশের বাইরে (নদওয়ার পর) সর্বপ্রথম কোন দেশে গেলেন এবং কেন?

    আবু রেজা নদভী: প্রথম গিয়েছি মালয়েশিয়ায়। নদওয়াতে থাকতেই গিয়েছি। মালয়েশিয়ার বৃহত্তম যুব সংগঠন ‘আবিম’র আমন্ত্রণে ‘আঞ্জুমানে জমইয়্যাতে শাবাবে ইসলাম’র পক্ষ থেকে গিয়েছিলাম। আবিম’র একসময় প্রেসিডেন্ট ছিলেন মালয়েশিয়ার বর্তমান বিরোধী দলীয় নেতা আনোয়ার ইবরাহিম।

    ওই আয়োজনে আন্তর্জাতিক ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়, মালয়েশিয়ার (IIUM) শিক্ষক মুস্তফা কামাল আইয়ূব ছিলেন। তিনি হলেন স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশন PKPIM -এর প্রেসিডেন্ট।

    তিনদিন বনে-বাদাড়ে ঘুরেছি। আরবি বক্তৃতা দিয়েছি, শুনেছি। আয়োজনটি ছিল মূলত একটি ইসলামী ক্যাম্প। এখানে ইসলামী ইতিহাসের প্রতি সচেতন করা হয়, যুহদ-তাকওয়ার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

    মুসলিম ব্যক্তিত্ব গঠনের প্রতি সজাগ এবং জাগ্রত করা হয়। আল্লামা ইকবালের ভাষায় ‘ইনসানে কামেল’ গঠনের তালিম দেওয়া হয়।

    যুগান্তর: সমাজসেবায় কিভাবে এলেন?

    আবু রেজা নদভী: ১৯৯১ সালে দারুল মাআরিফের পক্ষ থেকে কুয়েত যাই। সেখানে ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক চ্যারিটেবল অর্গানাইজেশনের শেখ নাদের নুরির সঙ্গে বৈঠক হয়। তিনি ছিলেন বিশ্বের সেরা খতিবদের একজন; ইলমি আমলি এবং দাওয়াতি লোক।

    তার চ্যারিটেবল অর্গানাইজেশনটির প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বের বড় বড় সব মনীষী। তাদের মধ্যে প্রথম আছেন সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভি, ড, ইউসুফ কারজাভি। এরপর রয়েছে আবুল লাইস নদভি, মুখতার আহমদ নদভি।

    মতবিনিময় বৈঠকে শেখ নাদের নুরি আমার কথা শুনে বললেন, ‘আমি তোমাকে চাই। তুমি একটা সমাজসেবার সংগঠন করো।’

    তিনি তখন আমাকে ‘রাসায়েলুল এখা’ নামে একটি বই দিয়েছিলেন। বইটি কুয়েতের বিখ্যাত সাপ্তাহিকী ‘মুজতামা’র সামাজিক, দাওয়াতি ও ফিকরি কিছু অর্টিকেলের সংকলন। বইটি বাংলায় অনুবাদ করতে হবে। তিনি আমাকে এক হাজার দিনার দিলেন। বাংলাদেশি টাকায় দুই লাখ নব্বই হাজার টাকা।

    দেশে এসে বইটি অনুবাদ করে প্রচার-প্রসার করলাম। আর আমার বাবার নামে ‘আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশন’ গড়ে তুললাম। পরে এনজিও ব্যুরো এবং সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে প্রতিষ্ঠানের জন্য সরকারি অনুমোদন নিলাম।

    যুগান্তর: আপনার ফাউন্ডেশন থেকে কেমন কাজ হয়েছে?

    আবু রেজা নদভী: এ পর্যন্ত ফাউন্ডেশন থেকে হাজার হাজার প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলি, এক হাজার মসজিদ, উখিয়াতে রোহিঙ্গাদের জন্য ১৬ হাজার বাড়ি, ৭ হাজার লাইট, কয়েক হাজার টিওবয়েলসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি।

    প্রধানমন্ত্রী যখন রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে আসেন, একই বিমানে আমি তার সফরসঙ্গী ছিলাম। প্রধানমন্ত্রীর বোন শেখ রেহানাও সঙ্গে ছিলেন।

    আমাকে বললেন, ‘আপনার সঙ্গে আরব বিশ্বের ভালো পরিচিতি আছে। আপনি রোহিঙ্গাদের জন্য কাজ করুন।’ তারপরই আমি রোহিঙ্গাদের জন্য কাজ শুরু করি।

    তারপর প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম আমাকে বলেছেন, ভাসানচরেও আমাকে কাজ করতে হবে। সমাজকল্যান মন্ত্রণালয় থেকে ভাসানচর পরিদর্শনে যাব। আমার ইচ্ছে, এক লাখ রোহিঙ্গার এক বছরের খাবারের ব্যবস্থা করবো আমি। ইনশাআল্লাহ।

    যুগান্তর: মানুষের সেবা করতে গিয়ে অনেক আনন্দ-বেদনার ঘটনা ঘটেছে নিশ্চয়..

    আবু রেজা নদভী: অবশ্যই। একবার আরব আমিরাতের এক ধনকুবের, মোহাম্মদ আল খাইয়াল এসেছিলেন। তার টাকার কোনও হিসাব নেই। আমাকেই দিয়েছেন কয়েক কোটি টাকা। তার সঙ্গে চট্টগ্রামে এক সঙ্গে ৫/৭ তলার প্রায় ৩৫টি ভবন উদ্বোধন করেছি।

    এটা ছিল আমার সবচে’ বড় আনন্দ—আমার মাধ্যমে এতগুলো ভবন অনুমোদন পেয়েছে। আল খাইয়াল তিন বছর আগে মারা গেছেন।

    কষ্টের কথা হলো, রোহিঙ্গাদের জন্য কাজ করার পর হঠাৎ একদিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পেলাম, আমার ফাউন্ডেশন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে জঙ্গি ট্যাগ দিয়ে। আমি তো অবাক।

    আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজ করছি, আর আমারটা দিল বন্ধ করে। প্রধানমন্ত্রী তখন অসুস্থ, দোতলা থেকে নামেন না। আমি ম্যাসেজ দিলাম আমার মামা প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীনের কাছে।

    তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জানালেন। প্রধানমন্ত্রী ফোন করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নির্দেশনা দিলেন। একটু পর পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ফোন দিলেন। তিনি বললেন, ‘কেমন আছেন?’ সেদিন বৃহস্পতিবার।

    আমি বললাম, ‘ফাউন্ডেশন বন্ধ করে দিছেন। অমি চট্টগ্রাম চলে যাচ্ছি। পরে আসব।’

    তিনি বললেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ফোন দিয়ে বলেছেন। আমি দশ মিনিটের মধ্যে নিষেধাজ্ঞা উইথড্র করে ফিরতি চিঠি দিচ্ছি।’ দশ মিনিটের মাথায় চিঠি চলে এলো!

    যুগান্তর: সামরিক সচিবের কথা যেহেতু এলো, কওমি স্বীকৃতির পেছনে তার অবদানের কথা শোনা যায়…

    আবু রেজা নদভী: তিনি (মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন) কাফিয়া পর্যন্ত আমার বাবার কাছে পড়াশুনা করেছেন। আরবি অনর্গল বলতে পারতেন, লিখতে পারতেন। ‘উসুলুশ শাশী’র মতন (টেক্সট) মুখস্থ শুনাতেন আমাকে। এরপর জেনারেল লাইনে জড়িয়ে যাবার কারণে তিনি দেওবন্দের ইতিহাস জানার সুযোগ পান নি।

    আমিই প্রথম তাকে জানানোর কাজটি শুরু করি। তাকে হোয়াটসঅ্যাপে আরবিতে পাঠাতাম দেওবন্দের ইতিহাস। দীর্ঘদিন তার পেছনে সময় দিয়ে তার মস্তিষ্ক তৈরী করেছি। তাকে জানিয়েছি, পাকিস্তানে বেফাকের সার্টিফিকেট দিয়ে মাস্টার্সে পড়াশুনা করা যায়।

    নদওয়া, দেওবন্দের সার্টিফিকেট দিয়ে আলিগড়সহ বিভিন্ন ভার্সিটিতে মাস্টার্স করা যায়। দারুল উলুম বার্মিংহামের সার্টিফিকেট দিয়ে অক্সফোর্ডে এবং বিভিন্ন জায়গায় মাস্টার্স করা যায়। তাদের সার্টিফিকেট মূল্যায়ন করা হয়।

    সামরিক সচিব মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বললেন। প্রধানমন্ত্রীও দীর্ঘ নয় বছর দেওবন্দের ইতিহাস স্টাডি করেছেন। তিনি আমাকে নিজে বলেছেন। তারপর স্বেচ্ছায় স্বীকৃতি দিয়েছেন।

    দেওবন্দের ইতিহাস তিনি যতটা জানেন, দেওবন্দ ফারেগ অনেক ছাত্রও ততটুকু ইতিহাস জানেন না। সংসদে আমিও স্বীকৃতির পক্ষে ধারাবাহিক বক্তব্য দিয়েছি।

    যেদিন স্বীকৃতির বিল সংসদে পাশ হলো, সংসদ থেকে বেরিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার মামা সামরিক সচিবকে দেখিয়ে বললেন, ‘তাকে ধন্যবাদ জানান, সব তিনি করেছেন।’ মামা বললেন, ‘আমি কিছু করিনি। সব আপনার অবদান।’

    তখন সংসদ থেকে দেওবন্দের একটা ইতিহাসগ্রন্থ প্রকাশ করা হয়েছে। কোনও দেশের পার্লামেন্ট থেকে দেওবন্দের ইতিহাস বের হয়নি। একমাত্র বাংলাদেশে হয়েছে।

    যুগান্তর: মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্বীকৃতিটা দিলেন কেন?

    আবু রেজা নদভী: এখানে রাজনৈতিক কোন উদ্দেশ্য নেই। শুধু কওমি শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করতেই দেওয়া। সমৃদ্ধ একটা অংশকে বাদ দিয়ে দেশ চলতে পারে না। কওমিরা মেধাবি। তারা লাখ লাখ ছাত্রদের ফ্রিতে পড়াশুনা করাচ্ছে। তাদের মূল্যায়ন দরকার। তাই স্বীকৃতি দিয়েছেন।

    যুগান্তর: স্বীকৃতি কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে অধীনে না দিয়ে একটি সংস্থার অধীনে দেওয়া হলো কেন?

    আবু রেজা নদভী: মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চেয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সার্টিফিকেট দিতে। কিন্তু আলেমরা তা মানেন নি। তাই স্বাধীন বোর্ড আল হাইয়াতুল উলইয়া গঠন করে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

    যুগান্তর: এই বোর্ড কি ইউজিসি’র মতো পাওয়ারফুল হবে?

    আবু রেজা নদভী: অবশ্যই পাওয়ারফুল হবে। আল হাইয়াতুল উলইয়া শক্তিশালী একটা বোর্ড। এটা চাইলে অনেক কিছু করতে পারে। এখন দরকার নীচের লেবেলের স্বীকৃতিগুলোও নেয়া। আলেমদের থেকে দাবি উঠলে আমারা প্রস্তাব পেশ করতে পারব।

    যুগান্তর: স্বীকৃতির কয়েক বছর পেরিয়ে গেল। কার্যক্ষেত্রে কতটুকু কাজে লাগছে?

    আবু রেজা নদভী: কাজে লাগছে। ভেতরে ভেতরে অনেকে চাকরি নিয়েছে এই সার্টিফিকেট দিয়ে। আমরা চেষ্টা করবো ৫৬০টি মডেল মসজিদ, দারুল আরকাম, এমপিওভুক্ত মাদরাসা এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে যোগ্যতার ভিত্তিতে কওমি আলেমদের নিয়োগ দিতে।

    ইউনিভার্সিটি, প্রাইমারী বিদ্যালয়েও আলেম নিয়োগ দেওয়া হবে। তবে আলেমদের এক থাকতে হবে। তারা যদি মতানৈক্য করে, বিভেদ সৃষ্টি করে, তাহলে অনেক অগ্রগতি আটকে যায়। সম্ভব হয় না।

    যুগান্তর: আপনি একজন আলেম শিক্ষক সমাজ সেবক। রাজনীতিতে কিভাবে এলেন? কেন এলেন?

    আবু রেজা নদভী: ১৯৯১ সাল থেকে আমি চ্যারিটির কাজ করি। কাজ করতে করতে অনেকে, বিশেষ করে আখতারুজ্জামান বাবু (সাবেক সংসদ সদস্য) আমাকে বললেন, ‘রাজনীতিও তো একটা চ্যারিটি। আপনি রাজনীতিতে আসুন।’

    প্রথমে আসতে চাইনি, পরিবারের বাধা, সন্তানদের বাধা। পরে জামায়াত যখন আমাকে প্রচণ্ড কষ্ট দিলো, আমি বিসমিল্লাহ বলে রাজনীতিতে এলাম, সফল হলাম।

    যুগান্তর: মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর একটা ভালো সম্পর্ক আছে। এই সময়ে তুরস্কের সঙ্গেও তাদের সম্পর্ক হচ্ছে। কওমি আলেমদের সঙ্গে কি এটা হতে পারে না?

    আবু রেজা নদভী: হতে পারে, তবে তাদের নির্দিষ্ট কাঠামো দাঁড় করাতে হবে। একটা সময় কওমিতে রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল। এখন রাজনীতি সিদ্ধ হয়েছে, কিছু কাজ হচ্ছে, কিন্তু কোনও কাঠামো নেই।

    জামায়াতে ইসলামের কাঠামো আছে। তাদের যদি আজ খতমও করে দেওয়া হয়, তারা আবার ফিরে এসে সেই কাঠামোতে কাজ করবে।

    যুগান্তর: হেফাজত তেমন একটা কাঠামো হতে পারে কি না?

    আবু রেজা নদভী: হেফাজত যদি প্রতিটি জেলা- উপজেলায় অফিস করে বেতনভুক্ত লোক নিয়োগ দেয়, বিদেশি ডেলিগেশনদের সঙ্গে কথা বলে, একটা কাঠামো উপস্থাপন করে, তাহলে শক্তি এবং পরিচিতি দু’টোই বাড়বে। কাঠামোটা তৈরি করে পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিতে হবে। তাহলে বিশ্বের অন্যান্য ইসলামি সংস্থাগুলো তাদেরকে চিনবে। কমিউনিকেশন তৈরি হবে।

    তুর্কিদের সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক হচ্ছে এই কাঠামো থাকার কারণেই। অথচ তুর্কিরা সুফি হানাফি। কওমিদের সঙ্গে এদের বেশি মিল। কিন্তু তারা তো কওমিদের চিনে না। হেফাজত আন্দোলন করছে, তারা জানে না। তাই আগে কাঠামো ঠিক করতে হবে।

    যুগান্তর: আপনি তো আরব বিশ্বে যাতায়াত করেন। হেফাজতের পক্ষ থেকে আরবদের সঙ্গে যোগাযোগের ব্যাপারে আপনাকে কখনও বলা হয়েছে কি না?

    আবু রেজা নদভী: তেমন কখনও বলা হয় নি। তবে আমি নিজেই যেখানে গিয়েছি, কওমিদের পরিচিত করে তুলতে চেষ্টা করেছি।

    যেমন, ২০১৩ সালের ৫মে’র পর আরবে যখন যাই, দেখি আরবের পত্রিকাগুলো হেফাজতের জমায়েতকে জামায়াতে ইসলামীর জমায়েত এবং শক্তি হিসেবে প্রচার করছে! হেফাজতের জমায়েতকে জামাতের লোকেরাও জামায়াতের জমায়েত বলে চালিয়ে দিচ্ছে।

    এক আরব শায়েখ তো অমাকে বলেই ফেললেন, ‘দেখছেন, জামায়াতের কী শক্তি!’ আমি তাদের সামনে প্রতিটি সভায় এর সঠিক ব্যাখ্যা দিয়েছি। তাদের বুঝিয়েছি এটা কওমিদের জমায়েত, জায়ামাতের না। এই যে পরিচয় সঙ্কট, এটা কিন্তু কাঠামোহীনতার কারণে।

    যুগান্তর: হেফাজতের বর্তমান অবস্থা নিয়ে আপনার মন্তব্য কী?

    আবু রেজা নদভী: আমি যেহেতু হেফাজতের কেউ না, তাই এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না।

    যুগান্তর: আপনাকে জামায়াত ট্যাগ দেওয়া হয় কেন?

    আবু রেজা নদভী: অতীতে কওমি আলেমদেরকে আন্তর্জাতিক কনফারেন্সগুলোতে ডাকা হতো না, এখনও তেমন ডাকা হয় না। সেখানে ডাকা হয় জামায়াতীদের। আমি যেহেতু বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কানফারেন্সে যোগ দিতাম, তাই আমাকেও জামায়াতী বলে ট্যাগ লাগিয়ে দেয়।

    তাছাড়া আরেকটি কারণ হলো আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রামে আমার অধ্যাপনা। বিশ্ববিদ্যায়ের শুরু থেকেই আমি সেখানকার প্রফেসর। আমার মাধ্যমে এ-বিশ্ববিদ্যালয়ে আরব স্কলাররা এসেছেন।

    যদিও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রথম চেয়ারম্যান বাইতুশ শরফের পীর মাওলানা আবদুর জাব্বার; তিনি প্রথম ভাষণেই বলেছিলেন, ‘এটা কোনও দলীয় বিশ্ববিদ্যালয় না’।

    মূলত শুরু থেকেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ে জামায়াতীরা ছিল। কিন্তু তারা তখন ছিল নীরব। তারা ব্যবহার করেছিল নির্দলীয় বাইতুশ শরফের পীর সাহেবকে। পরে চারদলীয় জোটের আমলে এখানে জামায়াত প্রভাবশালী হয়ে উঠে।

    তাদের প্রভাবে এখানে আসতেন অধ্যাপক গোলাম আযম, আবদুল কাদের মোল্লা, মীর কাসেম আলী, জাফর ইসলাম চৌধুরী, মীর নাসির, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী।

    সুতরাং সবাই যখন দেখল জামায়াতীরা যে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছে, আমি সেখানে আছি—আমাকে তো জামায়াত বলবেই। কিন্তু আমি জামায়াত—এর কোনো প্রমাণ নেই।

    জামায়াত হবার জন্য যে রিপোর্ট বই পূর্ণ করতে হয়ে, শপথ নিতে হয়, এমন কিছুই আমি করিনি। যদি করতাম, এতদিনে এসব ডকুমেন্ট জামায়াত আল জাজিরা, সিএনএনে মতো চ্যানেলকে ডেকে সংবাদ সম্মেলন করে পেশ করত।

    তারা আমাকে জামায়াত বলে। অথচ আমার দাদা মাওলানা রশিদ আহমদ গাঙ্গুহির মুরিদ ছিলেন। আমার বাবা মাওলানা খলিল আহমদ সাহারাপুরি, হাকিমুল উম্মত আশরাফ আলী থানভির অনুসারী ছিলেন।

    আমাদের পরিবারে আ.লীগের শীর্ষস্থানীয় ১৫/২০ জন নেতা, মুক্তিযুদ্ধের সময় কালুরঘাটে প্রথম যে খাদ্যট্রাক আসে, তা এসেছে আমাদের পরিবার থেকে। আমার বড় ভাই ছিলেন আ’লীগের প্রখ্যাত নেতা মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর রাজনৈতিক সঙ্গী।

    তার স্মারকে বাণী দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। জামায়াত পাঁচবার আমাকে আক্রমণ করেছে হত্যা করার জন্য। আমি জামায়াত হই কী করে?

    যুগান্তর: জামায়াতে যোগদানের আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন কি না?

    আবু রেজা নদভী: তারা আমাকে জামায়াতে নেবার আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। ইউকের লেস্টার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক কনফারেন্সে আমি গেছি, অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেবও গেছেন।

    তিনি পাকিস্তান জামায়াতের নায়েবে আমির সিনেট মেম্বর প্রফেসর খোরশেদকে বললেন, ‘আবু রেজা নদভীকে কত চাইলাম, পেলাম না। তাকে আমাদের দরকার ছিল।’

    মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীও চেয়েছেন। তাকে দলের লোকেরা বলতো, নদভী তো জামায়াত পছন্দ করে না। আপনি কেন তার জন্য উদ্বিগ্ন হচ্ছেন? অথচ তারাই জনগণের কাছে প্রচার করে, নদভী জামায়াতের!
    অদ্ভুত সুবিধাবাদিতা! সাঈদী বিখ্যাত এবং তুখোড় ওয়ায়েজ, কিন্তু তার তো ইলমের গভীরতা নেই। আমাকে কিছু বলতে এলে উল্টো আমি তাকে যে ইসলাহমূলক কথা বলতাম, তিনি ৯৫ শতাংশের সঙ্গে একমত পোষণ করতেন।

    তিনি বলতেন, ‘আপনার মতো এমন একজন ধীমান এমপি যদি আমি পেতাম, আর কিছু লাগতো না।’ আমি তাদের পাত্তা দেই নি। তারা মাওলানা সুলতান যওক নদভীকেও নিতে চেয়েছিল। কিন্তু আল্লাহর রহমতে তিনি ফিরে এসেছেন।

    যুগান্তর: আপনার শ্বশুর তো জামায়াতের শীর্ষ নেতা ছিলেন?

    আবু রেজা নদভী: আত্মীয় হওয়া জামায়াত হওয়ার দলিল না। আমার শ্বশুর ক্যাডারভিত্তিক জামায়াতী ছিলেন না। তিনি দেওবন্দকে ভক্তি-শ্রদ্ধা করতেন। আবুল হাসান আলী নদভিকে ভালোবাসতেন।

    শায়খ আলী নদভী যখন দারুল মাআরিফ এলেন, আমার শ্বশুর তাকে দেখতে গিয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার শ্বশুরকে পাক বাহিনী ধরে নিয়ে যাচ্ছিল। মুক্তিযোদ্ধা নেতারা তাকে বাঁচিয়েছে। পরে তিনি অনেক হিন্দু পরিবারকে বাঁচিয়েছেন।

    তিনি বেঁচে থাকতেই তার ছেলে সাতকানিয়া তাঁতী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এবং চেয়ারম্যান পদপার্থীও ছিলেন। আমার স্ত্রী বাংলাদেশ মহিলা আ’লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য।

    মামাশ্বশুর হাবিবুল্লাহ চেয়ারম্যান চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার কৃষকলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং বাশখালি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ছিলেন দীর্ঘদিন। আমার শ্বশুর কোনওদিন আমাদের আ’লীগ করতে বাধা দেননি, উপদেশও দেননি।

    যুগান্তর: আপনি একজন আলেম। কিন্তু আপনার মেয়ের বিয়েতে গানবাদ্য হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল..

    আবু রেজা নদভী: আসলে সবসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকে না। আমার মেয়ের শাশুড়ি, মানে আমর বেয়াইনের আপন নানা হলেন সাহারানপুরের বুজুর্গ, সাহারানপুর মাদ্রাসার নাজেমে আলা, হজরত মাওলানা আবদুল লতিফ সাহারানপুরি।

    সেই সূত্রে লখনৌ থেকেও মেহমান এসেছিল। মূলত তারাই ছোট ছোট শিশুদের দিয়ে নাচিয়েছে আরবীয় সংস্কৃতিতে। তাই সরাসরি আমি বাধা দিতে পারিনি। তবে এটাকে দমাতে আমি কলরবের বদরুজ্জামানকে নিয়ে এসেছিলাম ইসলামি সঙ্গীত পরিবেশন করার জন্য। পরে আরবীয় সংস্কৃতির নাচ বন্ধ হয়ে যায়। এটাকে বাড়িয়ে প্রচার করা হয়েছে হিংসাত্মকভাবে।

    যুগান্তর: লেখালেখি কবে থেকে শুরু করেছেন?

    আবু রেজা নদভী: ছাত্রকাল থেকেই আমি লেখালেখি করেছি। প্রথম লেখা ছাপা হয় পটিয়া থেকে প্রকাশিত সুলতান যওক নদভীর ’আস সুবহুল জাদিদ’ পত্রিকায়। এরপর নদওয়াতুল উলামার ‘আর রায়েদ’ পত্রিকায়।

    যুগান্তর: ‘উসুলুল ফিকহ’ বিষয়ে আপনার বোধহয় একটা কিতাব আছে…

    আবু রেজা নদভী: জি। কিতাবটির নাম ‘আল কাওয়াইদুল ফিকহিয়্যাহ’। এটি মূলত নদওয়ার ফজিলতের (মাস্টার্সের) থিসিস। থিসিসটি লিখেছিলাম সালমান নদভীর তত্ত্বাবধানে। পরে এটি গুছিয়ে কুয়েত ধর্ম মন্ত্রণালয়ে জমা দিই। কুয়েত সরকার কিতাবটি ছাপায়।

    রয়্যালিটি হিসেবে আমাকে দেয় আট লাখ টাকা। কিতাবটি নতুন করে আবার আরবি ও বাংলা দুই ভাষায় ছেপে আসছে। বাংলায় ছাপানো হচ্ছে বিচারকদের জন্য। নতুন এডিশনটি আমি নেসাবভুক্ত করব। কওমি মাদরাসায় এবং সরকারিভাবে।

    যুগান্তর: আপনার পিএইচডির থিসিস কী বিষয়ে ছিল?

    আবু রেজা নদভী: ‘মাওলানা আবুল হাসান আলী নদভী ও মাওলানা আবুল আলা মওদুদীর ইসলামি সমাজ বিনির্মাণ চিন্তার তুলনামূলক বিশ্লেষণ’।

    শায়খ নদভীর মতো মাওলানা মওদুদীও ইসলামি সমাজ কায়েম করতে চেয়েছেন। কিন্তু তাদের দুজনের চাওয়ার মধ্যে কী পার্থক্য—এটা দেখাতে চেয়েছি। তবে আমার থিসিসে মাওলানা আবুল হাসান আলী নদভীর মানহাজ এবং পদ্ধতিকে প্রাধান্য দিয়ে তুলে ধরা হয়েছে।

    যুগান্তর: একটু ব্যক্তিগত প্রশ্ন করি, ছোটবেলা কী হতে চেয়েছিলেন?

    আবু রেজা নদভী: ছোটবেলা আমার বাবাদের, মানে পূর্বপুরুষদে মতো হতে চেয়েছিলাম। আমার পূর্বপুরুষের প্রতিটি স্তরে আলেম ছিল। কোনও স্তর আলেম শূন্য ছিল না।

    আমার পূর্বপুরুষ শেখ ইয়াসিন মক্কী রহ. মক্কায় শুয়ে আছেন ছয় শতাব্দী ধরে। অনেক বড় বড় আলেম, বুজুর্গ ছিলেন আমাদের বংশে। তাই আমি তাদের মতোই হতে চেয়েছিলাম।

    যুগান্তর: ছেলেবেলার বন্ধুদের মনে পড়ে?

    আবু রেজা নদভী: হ্যাঁ, মনে পড়ে। ব্যক্তিগত জীবনে আমি বন্ধু ছাড়া থাকতে পারি না। আর রাজনৈতিক জীবনে থাকতে পারি না জনগণ ছাড়া। তবে স্কুল বন্ধুদের সঙ্গে তেমন যোগাযোগ নেই।

    পটিয়ায় পড়বার সময় যাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ আছে। নদওয়ায় পড়ার সময় বন্ধুদের সঙ্গেও যোগাযোগ আছে।

    যুগান্তর: আপনার বন্ধুদের মধ্যে কেউ বিখ্যাত হয়েছেন?

    আবু রেজা নদভী: আমার বন্ধুদের মধ্যে একজন হলেন আল্লামা আহমদ শফীর (রহ.) জামাতা মেহরিয়া মাদরাসার মাওলানা ইসহাক নূর। তিনি প্রসিদ্ধ।

    আরেকজন মাওলানা মুসা, রাঙ্গুনিয়া চন্দ্রগোনা ইউনুছিয়া মাদরাসার শিক্ষক। আরেকজন পটিয়ার মুফতি আযীযুল হক সাহেবের ছেলে হাফেজ মাহবুব সাহেবের দোহাজারি মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা হাবিবুল্লাহ। প্রথম দুজন করোনায় মারা গেছেন। তাদের বাড়িতে আমি অর্থ সাহায্য পাঠাই। বসুন্ধরা এবং মালিবাগ মাদ্রাসায়ও আমার বন্ধু রয়েছে।

    ভারতে যারা বন্ধু ছিল, তাদের প্রায় সবাই খ্যাতিমান। এদের মধ্যে অন্যতম দিল্লি ইউনিভার্সিটির প্রফেসর অলি আখতার নদভী, ৫৫ খণ্ডের কিতাব ‘আল মুহাদ্দিসাত’র লেখক মাওলানা আকরাম নদভী। আকরাম নদভী আমার দুই বছরের সিনিয়র ছিলেন। কিন্তু বন্ধু ছিলেন।

    আমার আরবি মাকালা দেখে দিতেন পত্রিকায় দেবার জন্য। ড. ইউসুফ কারজাভি তার মেধা এবং ইলম দেখে শুধু মুগ্ধতা প্রকাশ করতেন।

    যুগান্তর: ভবিষ্যতে কী করতে চান?

    আবু রেজা নদভী: মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যা বলবেন, তা করব। সৌদির সঙ্গে সম্পোর্কন্নয়ন, হাজীদের সেবা, ইসলামী ও ধর্মীয় চুক্তি বাড়ানো, কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতির ফলাফল বাস্তবায়ন করা, যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরিতে তাদের নিয়োগ ত্বরান্বিত করা, রোহিঙ্গাদের জন্য কাজ করা, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের খাবারের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি। আর আমার ফাউন্ডেশনে চ্যারিটি কাজ তো আছেই।

    যুগান্তর: সর্বশেষ প্রশ্ন— আপনি আলেম, লেখক, অধ্যাপক, রাজনীতিবিদ, বক্তা। কোন পরিচয়ে নিজেকে পরিচয় দিতে ভলো লাগে?

    আবু রেজা নদভী: শিক্ষকতা করেই আনন্দ পাই। কিন্তু জামায়াতীদের অপপ্রচারের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত ক্লাস নেই না। কেবল মাসে দুটো ক্লাস নিই।

    যুগান্তর: দীর্ঘ সময় দিলেন আমাদের। শুকরিয়া।

    আবু রেজা নদভী: শুকরিয়া।

    অনুলিখন: রাকিবুল হাসান