Category: বিশেষ সংবাদ

  • লালমোহনে ফরাজগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন মুরাদ বিচার চেয়ে দুই মেয়ের সংবাদ সম্মেলন

    লালমোহনে ফরাজগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন মুরাদ বিচার চেয়ে দুই মেয়ের সংবাদ সম্মেলন

    জেলা প্রতিনিধি

     

    ভোলার লালমোহনে টাকা দাবী করে না পেয়ে আবুল কালাম নামে একজনকে মারধর করে আটকে রাখেন ফরাজগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন মুরাদ। পরে তার ছেলে কামরুজ্জামান জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল করে বাবাকে পুলিশের সহায়তায় চেয়ারম্যানের কাছ থেকে উদ্ধার করে। গত মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার বিচার না পেয়ে শুক্রবার বিকেলে লালমোহন প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে নির্যাতিত আবুল কালামের দুই মেয়ে।

    লিখিত বক্তব্যে নির্যাতিত আবুল কালামের মেয়ে সিমা আক্তার ও রাজিয়া সুলতানা মুন্নি অভিযোগ করে বলেন, আমাদের দখলীয় জমিতে একই এলাকার মো. মুসা নামের এক ব্যক্তি জোরপূর্বক দখল করে। তিনি দাইমুদ্দিন নামের এক ব্যক্তি থেকে ওই জমি ক্রয় করেন বলে জানান। দাইমুদ্দিনের জমি দখল না করে আমাদের জমি দখল করার কারণে উপজেলার ফরাজগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন মুরাদের কাছে অভিযোগ করলে তিনি দুইবার ফয়সালায় বসেন। পরে তিনি আগামী ২৬ জানুয়ারী জমি মেপে দিবেন বলে তারিখ দেন। তবে ১৯ জানুয়ারি রাতে চেয়ারম্যান মুরাদ ও তার ভাই মামুন ডেকে নিয়ে এক লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা তাদের কাছে জমা দিতে বলেন। জমি পেতে হলে তাদের কাছে টাকা রাখতে হবে বলে জানান চেয়ারম্যান ও তার ভাই। তখন তার বাবা আবুল কালাম টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরের দিন সকাল ১১ টায় আমার বাবাকে আবার চৌকিদার পাঠিয়ে ডেকে নেন। এসময় আবারও টাকা দাবী করে চেয়ারম্যান ওই টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় আমার বাবাকে চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন মুরাদ প্রকাশ্যে মারধর করে আটকে রাখেন।
    তারা অভিযোগ করে আরও বলেন, পরে আমাদের ভাই কামরুজ্জামান জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল করে বাবাকে পুলিশের সহায়তায় চেয়ারম্যানের কাছ থেকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় লালমোহন থানায় অভিযোগ দিতে গেলে পুলিশ তাদের কোনো অভিযোগ নেয়নি। এ ঘটনার পর থেকে পুরো পরিবার চেয়ারম্যানের হুমকি ধামকি ও দাপটে অসহায় হয়ে পড়েছেন। তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। তাই সাংবাদিকদের মাধ্যমে এ ঘটনার ন্যায্য বিচার দাবী করছেন তারা।
    এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন মুরাদের কাছে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২০১২ সালে আবুল কালাম একই এলাকার মোস্তফার কাছে জমি বিক্রির কথা বলে এক লক্ষ ৬০ হাজার নেন। পরে মোস্তফাকে টাকা ফিরৎ না দিয়ে ওই্ জমি অন্যত্র বিক্রি দেয়। স্থানীয়দের ফয়সালার মাধ্যমে মোস্তফাকে ৯৫ হাজার টাকা ফিরৎ দিলেও বাকি টাকা ফেরৎ দেয়নি। ওই টাকা ফেরৎ দিবে বলে আমার থেকেও আবুল কালাম কয়েকবার সময় নেয়। সেজন্য তাকে ডাকাই। তার কাছ থেকে টাকা চাইলে সে আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে, যার জন্য তাকে কয়েকটা চর থাপ্পর মেরেছি।

  • নলছিটির কৃতি সন্তান মিজানুর রহমান আর নেই

    নলছিটির কৃতি সন্তান মিজানুর রহমান আর নেই

    মোঃরাকিব,নলছিটি উপজেলা প্রতিনিধিঃ

     

    নলছিটি উপজেলার কৃতি সন্তান প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক জনাব মিজানুর রহমান মহান আল্লাহ্ তায়ালার ডাকে সারা দিয়ে চিরতরে এ পৃথিবীর মায়া ত‍্যাগ করে চলে গেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিউন।

    তিনি একাধারে সাংবাদিক, সংবিধান বিশ্লেষক, কলামিস্ট ও সংগঠক ছিলেন। ” নি “তারুণ্যের নলছিটি” নামক সামাজিক সংগঠনের সহ সম্পাদক ছিলেন। তার মৃত্যুতে “তারুণ্যের নলছিটি” গভীর শোক প্রকাশ করেছে।

  • প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী একজন ইসলামিক স্কলার ও রাজনীতিবিদ

    প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী একজন ইসলামিক স্কলার ও রাজনীতিবিদ

    নিজস্ব প্রতিবেদক

    প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী একজন ইসলামিক স্কলার ও রাজনীতিবিদ। জন্ম ১৯৬৮ সালের ১৫ আগস্ট চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার মাদার্শা ইউনিয়নে।

    ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে লোহাগাড়া-সাতকানিয়া আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

    তিনি আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান,আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের (আইআইইউসি) অধ্যাপক এবং শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কীয় সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য। এ ছাড়াও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংকের শরীয়াহ বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান।

    এর আগে আবু রেজা নদভী সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় পরিচালিত শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ান ট্রাস্টের সদস্য, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ছিলেন, ইন্টারন্যাশনাল ইসলামীক রিলিফ অর্গানাইজেশন বাংলাদেশ শাখার নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান এবং সৌদি আরবের রিয়াদস্থ ইন্টারন্যাশনাল লীগ ফর ইসলামিক লিটারেচারের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

    তার শিক্ষা, চিন্তাধারা, কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানতে যুগান্তরের পক্ষ থেকে মুখোমুখী হন এহসান সিরাজ ও মনযূরুল হক। গ্রন্থনা করেছেন- তানজিল আমির

    যুগান্তর: আপনি নদভী। নদওয়া থেকেই শুরু করি। দারুল উলুম নদওয়াতুল উলামায় (ভারত) কবে, কার উৎসাহে গেলেন?

    আবু রেজা নদভী: নদওয়াতুল উলামায় গিয়েছি মাওলানা সুলতান যওক নদভীর (পরিচালক, জামিয়া দারুল মাআরিফ, চট্টগ্রাম) পরামর্শে। ১৯৮৩ সালে একসঙ্গে আমরা তিনজন গিয়েছিলাম। আমি, মাকসুদুর রহমান ফেরদৌস আর ড. মুজাফফর নদভি।

    আমাদের দিক-নির্দেশনা দিতেন আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ। তিনি বলতেন, এভাবে পড়ো, ওভাবে পড়ো। আমি পটিয়াতে পড়াশুনা করেছি। সে-বছর বোর্ড পরীক্ষায় আমার রেজাল্ট খুব ভালো হয়েছিল। আমি যে রেজাল্ট পেয়েছিলাম তখনকার একমাত্র বোর্ড ইত্তেহাদুল মাদারিসের পরীক্ষায়, ৪০-৫০ বছরেও কেউ এত নম্বর পায়নি।

    যুগান্তর: গিয়ে কী দেখলেন সেখানে?

    আবু রেজা নদভী: নদওয়ায় গিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সব দেখতাম। নদওয়ার পরিবেশ যাচাই করে দেখতাম। দেখতাম আধুনিকতার সঙ্গে তাকওয়ার মিশেল কতটুকু।

    দৃষ্টি ছিল সূক্ষ্ম। দেখতাম, এখানে আরবি এবং নুসুসের গুরুত্ব বেশি। ফার্সি ,মানতেক, ফালসাফার গুরুত্ব কম। তখন নদওয়ায় আন্তর্জাতিক যত দীনি ব্যক্তিত্ব আসতেন, আমি তাদের কাছে যেতাম।

    নদওয়ার কনফারেন্সে এসে জমা হয় পৃথিবীখ্যাত ব্যক্তিত্বরা। তখন নদওয়াতে ভিজিটিং প্রফেসর ছিলেন ড. ইউসুফ আল কারজাভী, শায়খ ড. আবদুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ।

    আমি এসব মহান ব্যক্তিত্বদের পর্যবেক্ষণ করতাম। তাদের সান্নিধ্যে বসতাম। আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে যোগ দিতাম। এভাবেই পরিচিত হতে হতে বাইরের পৃথিবীতে আমার পদযাত্রা শুরু।

    যুগান্তর: সেখানে আপনার প্রিয় শিক্ষক কে ছিলেন?

    আবু রেজা নদভী: আমার সবচেয়ে প্রিয় শিক্ষক ছিলেন সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী। আমার জন্য তার চেয়ে বড় শিক্ষক আর কেউ নেই। দীর্ঘ সাত বছর আমি আবুল হাসান আলী নদভীর সামনে ছিলাম। দেখেছি ব্যক্তিত্বগুণে মুগ্ধ হয়ে মানুষ কিভাবে তার চারপাশে এসে জড়ো হয়।

    শায়খ নদভী আমাকে লিখিতভাবে হাদিসের অনুমতি দিয়েছেন। আরেকজন প্রিয় শিক্ষক শায়খের নাতি আল্লামা সালমান হুসাইনী নদভী। তার কাছে আমি তিরমিজি ও মেশকাত শরিফ পড়েছি।

    আমি আরবি ও উর্দুতে শ্রেষ্ঠ দুজন বক্তা দেখেছি। একজন তো সালমান নদভী। আরেকজন সুদানের ড. ইস‘আমুল বশির, তিনি সুদানের ধর্মমন্ত্রীও ছিলেন। তার সঙ্গেও আমার বেশ হৃদ্যতা আছে।

    যুগান্তর: সালমান নদভীর সঙ্গে নদওয়ার আলেমদের একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে শুনলাম…

    আবু রেজা নদভী: শুনেছি রাবে নদভীর কাছে গিয়ে তিনি তওবা করেছেন। কতটুকু সত্যি জানি না। তবে তিনি ভুল করেছেন। জমহুর উলামায়ে কেরামের মতের বিপরীতে তিনি কেন বলবেন?

    যুগান্তর: আচ্ছা, নদওয়ায় গেলেন কিভাবে? মানে যাবার ভিসা প্রসেস কিভাবে করেছিলেন?

    আবু রেজা নদভী: তখন জাতীয় পার্টি থেকে সাতকানিয়ার এমপি ছিলেন আমার মামা ইবারাহিম বিন খলিল। তিনিই ভিসা ম্যানেজ করে দিয়েছেন। নদওয়া এবং দেওবন্দে যেন ভিসা প্রসেস সহজ হয়, ব্যাপক হয়, পরবর্তী সময়ে আমি এই প্রচেষ্টা শুরু করেছিলাম।

    কিন্তু রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে তা থমকে আছে। তবে চাইলে এখনও করতে পারি। সেই সংযোগ আছে আমার।

    যুগান্তর: ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে শিক্ষা বিনিময় তো সহজ হবার কথা ছিল। তা হয়নি কেন? এখনও তো দেওবন্দে শিক্ষাভিসা নিয়ে ছাত্ররা যেতে পারে না…

    আবু রেজা নদভী: আমাদের আলেমদের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হয়নি। এখনও যদি জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সদর সাইয়েদ আরশাদ মাদানী এবং জেনারেল সেক্রেটারি মাহমুদ মাদানীর মাধ্যমে চেষ্টা করা হয়, তাহলে সহজ হবে।

    যুগান্তর: আপনি চেষ্টা করবেন কিনা?

    আবু রেজা নদভী: করব। সবাই বললে অবশ্যই করব।

    যুগান্তর: দেশের বাইরে (নদওয়ার পর) সর্বপ্রথম কোন দেশে গেলেন এবং কেন?

    আবু রেজা নদভী: প্রথম গিয়েছি মালয়েশিয়ায়। নদওয়াতে থাকতেই গিয়েছি। মালয়েশিয়ার বৃহত্তম যুব সংগঠন ‘আবিম’র আমন্ত্রণে ‘আঞ্জুমানে জমইয়্যাতে শাবাবে ইসলাম’র পক্ষ থেকে গিয়েছিলাম। আবিম’র একসময় প্রেসিডেন্ট ছিলেন মালয়েশিয়ার বর্তমান বিরোধী দলীয় নেতা আনোয়ার ইবরাহিম।

    ওই আয়োজনে আন্তর্জাতিক ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়, মালয়েশিয়ার (IIUM) শিক্ষক মুস্তফা কামাল আইয়ূব ছিলেন। তিনি হলেন স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশন PKPIM -এর প্রেসিডেন্ট।

    তিনদিন বনে-বাদাড়ে ঘুরেছি। আরবি বক্তৃতা দিয়েছি, শুনেছি। আয়োজনটি ছিল মূলত একটি ইসলামী ক্যাম্প। এখানে ইসলামী ইতিহাসের প্রতি সচেতন করা হয়, যুহদ-তাকওয়ার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

    মুসলিম ব্যক্তিত্ব গঠনের প্রতি সজাগ এবং জাগ্রত করা হয়। আল্লামা ইকবালের ভাষায় ‘ইনসানে কামেল’ গঠনের তালিম দেওয়া হয়।

    যুগান্তর: সমাজসেবায় কিভাবে এলেন?

    আবু রেজা নদভী: ১৯৯১ সালে দারুল মাআরিফের পক্ষ থেকে কুয়েত যাই। সেখানে ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক চ্যারিটেবল অর্গানাইজেশনের শেখ নাদের নুরির সঙ্গে বৈঠক হয়। তিনি ছিলেন বিশ্বের সেরা খতিবদের একজন; ইলমি আমলি এবং দাওয়াতি লোক।

    তার চ্যারিটেবল অর্গানাইজেশনটির প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বের বড় বড় সব মনীষী। তাদের মধ্যে প্রথম আছেন সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভি, ড, ইউসুফ কারজাভি। এরপর রয়েছে আবুল লাইস নদভি, মুখতার আহমদ নদভি।

    মতবিনিময় বৈঠকে শেখ নাদের নুরি আমার কথা শুনে বললেন, ‘আমি তোমাকে চাই। তুমি একটা সমাজসেবার সংগঠন করো।’

    তিনি তখন আমাকে ‘রাসায়েলুল এখা’ নামে একটি বই দিয়েছিলেন। বইটি কুয়েতের বিখ্যাত সাপ্তাহিকী ‘মুজতামা’র সামাজিক, দাওয়াতি ও ফিকরি কিছু অর্টিকেলের সংকলন। বইটি বাংলায় অনুবাদ করতে হবে। তিনি আমাকে এক হাজার দিনার দিলেন। বাংলাদেশি টাকায় দুই লাখ নব্বই হাজার টাকা।

    দেশে এসে বইটি অনুবাদ করে প্রচার-প্রসার করলাম। আর আমার বাবার নামে ‘আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশন’ গড়ে তুললাম। পরে এনজিও ব্যুরো এবং সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে প্রতিষ্ঠানের জন্য সরকারি অনুমোদন নিলাম।

    যুগান্তর: আপনার ফাউন্ডেশন থেকে কেমন কাজ হয়েছে?

    আবু রেজা নদভী: এ পর্যন্ত ফাউন্ডেশন থেকে হাজার হাজার প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলি, এক হাজার মসজিদ, উখিয়াতে রোহিঙ্গাদের জন্য ১৬ হাজার বাড়ি, ৭ হাজার লাইট, কয়েক হাজার টিওবয়েলসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি।

    প্রধানমন্ত্রী যখন রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে আসেন, একই বিমানে আমি তার সফরসঙ্গী ছিলাম। প্রধানমন্ত্রীর বোন শেখ রেহানাও সঙ্গে ছিলেন।

    আমাকে বললেন, ‘আপনার সঙ্গে আরব বিশ্বের ভালো পরিচিতি আছে। আপনি রোহিঙ্গাদের জন্য কাজ করুন।’ তারপরই আমি রোহিঙ্গাদের জন্য কাজ শুরু করি।

    তারপর প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম আমাকে বলেছেন, ভাসানচরেও আমাকে কাজ করতে হবে। সমাজকল্যান মন্ত্রণালয় থেকে ভাসানচর পরিদর্শনে যাব। আমার ইচ্ছে, এক লাখ রোহিঙ্গার এক বছরের খাবারের ব্যবস্থা করবো আমি। ইনশাআল্লাহ।

    যুগান্তর: মানুষের সেবা করতে গিয়ে অনেক আনন্দ-বেদনার ঘটনা ঘটেছে নিশ্চয়..

    আবু রেজা নদভী: অবশ্যই। একবার আরব আমিরাতের এক ধনকুবের, মোহাম্মদ আল খাইয়াল এসেছিলেন। তার টাকার কোনও হিসাব নেই। আমাকেই দিয়েছেন কয়েক কোটি টাকা। তার সঙ্গে চট্টগ্রামে এক সঙ্গে ৫/৭ তলার প্রায় ৩৫টি ভবন উদ্বোধন করেছি।

    এটা ছিল আমার সবচে’ বড় আনন্দ—আমার মাধ্যমে এতগুলো ভবন অনুমোদন পেয়েছে। আল খাইয়াল তিন বছর আগে মারা গেছেন।

    কষ্টের কথা হলো, রোহিঙ্গাদের জন্য কাজ করার পর হঠাৎ একদিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পেলাম, আমার ফাউন্ডেশন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে জঙ্গি ট্যাগ দিয়ে। আমি তো অবাক।

    আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজ করছি, আর আমারটা দিল বন্ধ করে। প্রধানমন্ত্রী তখন অসুস্থ, দোতলা থেকে নামেন না। আমি ম্যাসেজ দিলাম আমার মামা প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীনের কাছে।

    তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জানালেন। প্রধানমন্ত্রী ফোন করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নির্দেশনা দিলেন। একটু পর পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ফোন দিলেন। তিনি বললেন, ‘কেমন আছেন?’ সেদিন বৃহস্পতিবার।

    আমি বললাম, ‘ফাউন্ডেশন বন্ধ করে দিছেন। অমি চট্টগ্রাম চলে যাচ্ছি। পরে আসব।’

    তিনি বললেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ফোন দিয়ে বলেছেন। আমি দশ মিনিটের মধ্যে নিষেধাজ্ঞা উইথড্র করে ফিরতি চিঠি দিচ্ছি।’ দশ মিনিটের মাথায় চিঠি চলে এলো!

    যুগান্তর: সামরিক সচিবের কথা যেহেতু এলো, কওমি স্বীকৃতির পেছনে তার অবদানের কথা শোনা যায়…

    আবু রেজা নদভী: তিনি (মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন) কাফিয়া পর্যন্ত আমার বাবার কাছে পড়াশুনা করেছেন। আরবি অনর্গল বলতে পারতেন, লিখতে পারতেন। ‘উসুলুশ শাশী’র মতন (টেক্সট) মুখস্থ শুনাতেন আমাকে। এরপর জেনারেল লাইনে জড়িয়ে যাবার কারণে তিনি দেওবন্দের ইতিহাস জানার সুযোগ পান নি।

    আমিই প্রথম তাকে জানানোর কাজটি শুরু করি। তাকে হোয়াটসঅ্যাপে আরবিতে পাঠাতাম দেওবন্দের ইতিহাস। দীর্ঘদিন তার পেছনে সময় দিয়ে তার মস্তিষ্ক তৈরী করেছি। তাকে জানিয়েছি, পাকিস্তানে বেফাকের সার্টিফিকেট দিয়ে মাস্টার্সে পড়াশুনা করা যায়।

    নদওয়া, দেওবন্দের সার্টিফিকেট দিয়ে আলিগড়সহ বিভিন্ন ভার্সিটিতে মাস্টার্স করা যায়। দারুল উলুম বার্মিংহামের সার্টিফিকেট দিয়ে অক্সফোর্ডে এবং বিভিন্ন জায়গায় মাস্টার্স করা যায়। তাদের সার্টিফিকেট মূল্যায়ন করা হয়।

    সামরিক সচিব মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বললেন। প্রধানমন্ত্রীও দীর্ঘ নয় বছর দেওবন্দের ইতিহাস স্টাডি করেছেন। তিনি আমাকে নিজে বলেছেন। তারপর স্বেচ্ছায় স্বীকৃতি দিয়েছেন।

    দেওবন্দের ইতিহাস তিনি যতটা জানেন, দেওবন্দ ফারেগ অনেক ছাত্রও ততটুকু ইতিহাস জানেন না। সংসদে আমিও স্বীকৃতির পক্ষে ধারাবাহিক বক্তব্য দিয়েছি।

    যেদিন স্বীকৃতির বিল সংসদে পাশ হলো, সংসদ থেকে বেরিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার মামা সামরিক সচিবকে দেখিয়ে বললেন, ‘তাকে ধন্যবাদ জানান, সব তিনি করেছেন।’ মামা বললেন, ‘আমি কিছু করিনি। সব আপনার অবদান।’

    তখন সংসদ থেকে দেওবন্দের একটা ইতিহাসগ্রন্থ প্রকাশ করা হয়েছে। কোনও দেশের পার্লামেন্ট থেকে দেওবন্দের ইতিহাস বের হয়নি। একমাত্র বাংলাদেশে হয়েছে।

    যুগান্তর: মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্বীকৃতিটা দিলেন কেন?

    আবু রেজা নদভী: এখানে রাজনৈতিক কোন উদ্দেশ্য নেই। শুধু কওমি শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করতেই দেওয়া। সমৃদ্ধ একটা অংশকে বাদ দিয়ে দেশ চলতে পারে না। কওমিরা মেধাবি। তারা লাখ লাখ ছাত্রদের ফ্রিতে পড়াশুনা করাচ্ছে। তাদের মূল্যায়ন দরকার। তাই স্বীকৃতি দিয়েছেন।

    যুগান্তর: স্বীকৃতি কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে অধীনে না দিয়ে একটি সংস্থার অধীনে দেওয়া হলো কেন?

    আবু রেজা নদভী: মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চেয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সার্টিফিকেট দিতে। কিন্তু আলেমরা তা মানেন নি। তাই স্বাধীন বোর্ড আল হাইয়াতুল উলইয়া গঠন করে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

    যুগান্তর: এই বোর্ড কি ইউজিসি’র মতো পাওয়ারফুল হবে?

    আবু রেজা নদভী: অবশ্যই পাওয়ারফুল হবে। আল হাইয়াতুল উলইয়া শক্তিশালী একটা বোর্ড। এটা চাইলে অনেক কিছু করতে পারে। এখন দরকার নীচের লেবেলের স্বীকৃতিগুলোও নেয়া। আলেমদের থেকে দাবি উঠলে আমারা প্রস্তাব পেশ করতে পারব।

    যুগান্তর: স্বীকৃতির কয়েক বছর পেরিয়ে গেল। কার্যক্ষেত্রে কতটুকু কাজে লাগছে?

    আবু রেজা নদভী: কাজে লাগছে। ভেতরে ভেতরে অনেকে চাকরি নিয়েছে এই সার্টিফিকেট দিয়ে। আমরা চেষ্টা করবো ৫৬০টি মডেল মসজিদ, দারুল আরকাম, এমপিওভুক্ত মাদরাসা এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে যোগ্যতার ভিত্তিতে কওমি আলেমদের নিয়োগ দিতে।

    ইউনিভার্সিটি, প্রাইমারী বিদ্যালয়েও আলেম নিয়োগ দেওয়া হবে। তবে আলেমদের এক থাকতে হবে। তারা যদি মতানৈক্য করে, বিভেদ সৃষ্টি করে, তাহলে অনেক অগ্রগতি আটকে যায়। সম্ভব হয় না।

    যুগান্তর: আপনি একজন আলেম শিক্ষক সমাজ সেবক। রাজনীতিতে কিভাবে এলেন? কেন এলেন?

    আবু রেজা নদভী: ১৯৯১ সাল থেকে আমি চ্যারিটির কাজ করি। কাজ করতে করতে অনেকে, বিশেষ করে আখতারুজ্জামান বাবু (সাবেক সংসদ সদস্য) আমাকে বললেন, ‘রাজনীতিও তো একটা চ্যারিটি। আপনি রাজনীতিতে আসুন।’

    প্রথমে আসতে চাইনি, পরিবারের বাধা, সন্তানদের বাধা। পরে জামায়াত যখন আমাকে প্রচণ্ড কষ্ট দিলো, আমি বিসমিল্লাহ বলে রাজনীতিতে এলাম, সফল হলাম।

    যুগান্তর: মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর একটা ভালো সম্পর্ক আছে। এই সময়ে তুরস্কের সঙ্গেও তাদের সম্পর্ক হচ্ছে। কওমি আলেমদের সঙ্গে কি এটা হতে পারে না?

    আবু রেজা নদভী: হতে পারে, তবে তাদের নির্দিষ্ট কাঠামো দাঁড় করাতে হবে। একটা সময় কওমিতে রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল। এখন রাজনীতি সিদ্ধ হয়েছে, কিছু কাজ হচ্ছে, কিন্তু কোনও কাঠামো নেই।

    জামায়াতে ইসলামের কাঠামো আছে। তাদের যদি আজ খতমও করে দেওয়া হয়, তারা আবার ফিরে এসে সেই কাঠামোতে কাজ করবে।

    যুগান্তর: হেফাজত তেমন একটা কাঠামো হতে পারে কি না?

    আবু রেজা নদভী: হেফাজত যদি প্রতিটি জেলা- উপজেলায় অফিস করে বেতনভুক্ত লোক নিয়োগ দেয়, বিদেশি ডেলিগেশনদের সঙ্গে কথা বলে, একটা কাঠামো উপস্থাপন করে, তাহলে শক্তি এবং পরিচিতি দু’টোই বাড়বে। কাঠামোটা তৈরি করে পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিতে হবে। তাহলে বিশ্বের অন্যান্য ইসলামি সংস্থাগুলো তাদেরকে চিনবে। কমিউনিকেশন তৈরি হবে।

    তুর্কিদের সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক হচ্ছে এই কাঠামো থাকার কারণেই। অথচ তুর্কিরা সুফি হানাফি। কওমিদের সঙ্গে এদের বেশি মিল। কিন্তু তারা তো কওমিদের চিনে না। হেফাজত আন্দোলন করছে, তারা জানে না। তাই আগে কাঠামো ঠিক করতে হবে।

    যুগান্তর: আপনি তো আরব বিশ্বে যাতায়াত করেন। হেফাজতের পক্ষ থেকে আরবদের সঙ্গে যোগাযোগের ব্যাপারে আপনাকে কখনও বলা হয়েছে কি না?

    আবু রেজা নদভী: তেমন কখনও বলা হয় নি। তবে আমি নিজেই যেখানে গিয়েছি, কওমিদের পরিচিত করে তুলতে চেষ্টা করেছি।

    যেমন, ২০১৩ সালের ৫মে’র পর আরবে যখন যাই, দেখি আরবের পত্রিকাগুলো হেফাজতের জমায়েতকে জামায়াতে ইসলামীর জমায়েত এবং শক্তি হিসেবে প্রচার করছে! হেফাজতের জমায়েতকে জামাতের লোকেরাও জামায়াতের জমায়েত বলে চালিয়ে দিচ্ছে।

    এক আরব শায়েখ তো অমাকে বলেই ফেললেন, ‘দেখছেন, জামায়াতের কী শক্তি!’ আমি তাদের সামনে প্রতিটি সভায় এর সঠিক ব্যাখ্যা দিয়েছি। তাদের বুঝিয়েছি এটা কওমিদের জমায়েত, জায়ামাতের না। এই যে পরিচয় সঙ্কট, এটা কিন্তু কাঠামোহীনতার কারণে।

    যুগান্তর: হেফাজতের বর্তমান অবস্থা নিয়ে আপনার মন্তব্য কী?

    আবু রেজা নদভী: আমি যেহেতু হেফাজতের কেউ না, তাই এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না।

    যুগান্তর: আপনাকে জামায়াত ট্যাগ দেওয়া হয় কেন?

    আবু রেজা নদভী: অতীতে কওমি আলেমদেরকে আন্তর্জাতিক কনফারেন্সগুলোতে ডাকা হতো না, এখনও তেমন ডাকা হয় না। সেখানে ডাকা হয় জামায়াতীদের। আমি যেহেতু বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কানফারেন্সে যোগ দিতাম, তাই আমাকেও জামায়াতী বলে ট্যাগ লাগিয়ে দেয়।

    তাছাড়া আরেকটি কারণ হলো আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রামে আমার অধ্যাপনা। বিশ্ববিদ্যায়ের শুরু থেকেই আমি সেখানকার প্রফেসর। আমার মাধ্যমে এ-বিশ্ববিদ্যালয়ে আরব স্কলাররা এসেছেন।

    যদিও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রথম চেয়ারম্যান বাইতুশ শরফের পীর মাওলানা আবদুর জাব্বার; তিনি প্রথম ভাষণেই বলেছিলেন, ‘এটা কোনও দলীয় বিশ্ববিদ্যালয় না’।

    মূলত শুরু থেকেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ে জামায়াতীরা ছিল। কিন্তু তারা তখন ছিল নীরব। তারা ব্যবহার করেছিল নির্দলীয় বাইতুশ শরফের পীর সাহেবকে। পরে চারদলীয় জোটের আমলে এখানে জামায়াত প্রভাবশালী হয়ে উঠে।

    তাদের প্রভাবে এখানে আসতেন অধ্যাপক গোলাম আযম, আবদুল কাদের মোল্লা, মীর কাসেম আলী, জাফর ইসলাম চৌধুরী, মীর নাসির, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী।

    সুতরাং সবাই যখন দেখল জামায়াতীরা যে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছে, আমি সেখানে আছি—আমাকে তো জামায়াত বলবেই। কিন্তু আমি জামায়াত—এর কোনো প্রমাণ নেই।

    জামায়াত হবার জন্য যে রিপোর্ট বই পূর্ণ করতে হয়ে, শপথ নিতে হয়, এমন কিছুই আমি করিনি। যদি করতাম, এতদিনে এসব ডকুমেন্ট জামায়াত আল জাজিরা, সিএনএনে মতো চ্যানেলকে ডেকে সংবাদ সম্মেলন করে পেশ করত।

    তারা আমাকে জামায়াত বলে। অথচ আমার দাদা মাওলানা রশিদ আহমদ গাঙ্গুহির মুরিদ ছিলেন। আমার বাবা মাওলানা খলিল আহমদ সাহারাপুরি, হাকিমুল উম্মত আশরাফ আলী থানভির অনুসারী ছিলেন।

    আমাদের পরিবারে আ.লীগের শীর্ষস্থানীয় ১৫/২০ জন নেতা, মুক্তিযুদ্ধের সময় কালুরঘাটে প্রথম যে খাদ্যট্রাক আসে, তা এসেছে আমাদের পরিবার থেকে। আমার বড় ভাই ছিলেন আ’লীগের প্রখ্যাত নেতা মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর রাজনৈতিক সঙ্গী।

    তার স্মারকে বাণী দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। জামায়াত পাঁচবার আমাকে আক্রমণ করেছে হত্যা করার জন্য। আমি জামায়াত হই কী করে?

    যুগান্তর: জামায়াতে যোগদানের আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন কি না?

    আবু রেজা নদভী: তারা আমাকে জামায়াতে নেবার আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। ইউকের লেস্টার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক কনফারেন্সে আমি গেছি, অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেবও গেছেন।

    তিনি পাকিস্তান জামায়াতের নায়েবে আমির সিনেট মেম্বর প্রফেসর খোরশেদকে বললেন, ‘আবু রেজা নদভীকে কত চাইলাম, পেলাম না। তাকে আমাদের দরকার ছিল।’

    মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীও চেয়েছেন। তাকে দলের লোকেরা বলতো, নদভী তো জামায়াত পছন্দ করে না। আপনি কেন তার জন্য উদ্বিগ্ন হচ্ছেন? অথচ তারাই জনগণের কাছে প্রচার করে, নদভী জামায়াতের!
    অদ্ভুত সুবিধাবাদিতা! সাঈদী বিখ্যাত এবং তুখোড় ওয়ায়েজ, কিন্তু তার তো ইলমের গভীরতা নেই। আমাকে কিছু বলতে এলে উল্টো আমি তাকে যে ইসলাহমূলক কথা বলতাম, তিনি ৯৫ শতাংশের সঙ্গে একমত পোষণ করতেন।

    তিনি বলতেন, ‘আপনার মতো এমন একজন ধীমান এমপি যদি আমি পেতাম, আর কিছু লাগতো না।’ আমি তাদের পাত্তা দেই নি। তারা মাওলানা সুলতান যওক নদভীকেও নিতে চেয়েছিল। কিন্তু আল্লাহর রহমতে তিনি ফিরে এসেছেন।

    যুগান্তর: আপনার শ্বশুর তো জামায়াতের শীর্ষ নেতা ছিলেন?

    আবু রেজা নদভী: আত্মীয় হওয়া জামায়াত হওয়ার দলিল না। আমার শ্বশুর ক্যাডারভিত্তিক জামায়াতী ছিলেন না। তিনি দেওবন্দকে ভক্তি-শ্রদ্ধা করতেন। আবুল হাসান আলী নদভিকে ভালোবাসতেন।

    শায়খ আলী নদভী যখন দারুল মাআরিফ এলেন, আমার শ্বশুর তাকে দেখতে গিয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার শ্বশুরকে পাক বাহিনী ধরে নিয়ে যাচ্ছিল। মুক্তিযোদ্ধা নেতারা তাকে বাঁচিয়েছে। পরে তিনি অনেক হিন্দু পরিবারকে বাঁচিয়েছেন।

    তিনি বেঁচে থাকতেই তার ছেলে সাতকানিয়া তাঁতী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এবং চেয়ারম্যান পদপার্থীও ছিলেন। আমার স্ত্রী বাংলাদেশ মহিলা আ’লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য।

    মামাশ্বশুর হাবিবুল্লাহ চেয়ারম্যান চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার কৃষকলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং বাশখালি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ছিলেন দীর্ঘদিন। আমার শ্বশুর কোনওদিন আমাদের আ’লীগ করতে বাধা দেননি, উপদেশও দেননি।

    যুগান্তর: আপনি একজন আলেম। কিন্তু আপনার মেয়ের বিয়েতে গানবাদ্য হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল..

    আবু রেজা নদভী: আসলে সবসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকে না। আমার মেয়ের শাশুড়ি, মানে আমর বেয়াইনের আপন নানা হলেন সাহারানপুরের বুজুর্গ, সাহারানপুর মাদ্রাসার নাজেমে আলা, হজরত মাওলানা আবদুল লতিফ সাহারানপুরি।

    সেই সূত্রে লখনৌ থেকেও মেহমান এসেছিল। মূলত তারাই ছোট ছোট শিশুদের দিয়ে নাচিয়েছে আরবীয় সংস্কৃতিতে। তাই সরাসরি আমি বাধা দিতে পারিনি। তবে এটাকে দমাতে আমি কলরবের বদরুজ্জামানকে নিয়ে এসেছিলাম ইসলামি সঙ্গীত পরিবেশন করার জন্য। পরে আরবীয় সংস্কৃতির নাচ বন্ধ হয়ে যায়। এটাকে বাড়িয়ে প্রচার করা হয়েছে হিংসাত্মকভাবে।

    যুগান্তর: লেখালেখি কবে থেকে শুরু করেছেন?

    আবু রেজা নদভী: ছাত্রকাল থেকেই আমি লেখালেখি করেছি। প্রথম লেখা ছাপা হয় পটিয়া থেকে প্রকাশিত সুলতান যওক নদভীর ’আস সুবহুল জাদিদ’ পত্রিকায়। এরপর নদওয়াতুল উলামার ‘আর রায়েদ’ পত্রিকায়।

    যুগান্তর: ‘উসুলুল ফিকহ’ বিষয়ে আপনার বোধহয় একটা কিতাব আছে…

    আবু রেজা নদভী: জি। কিতাবটির নাম ‘আল কাওয়াইদুল ফিকহিয়্যাহ’। এটি মূলত নদওয়ার ফজিলতের (মাস্টার্সের) থিসিস। থিসিসটি লিখেছিলাম সালমান নদভীর তত্ত্বাবধানে। পরে এটি গুছিয়ে কুয়েত ধর্ম মন্ত্রণালয়ে জমা দিই। কুয়েত সরকার কিতাবটি ছাপায়।

    রয়্যালিটি হিসেবে আমাকে দেয় আট লাখ টাকা। কিতাবটি নতুন করে আবার আরবি ও বাংলা দুই ভাষায় ছেপে আসছে। বাংলায় ছাপানো হচ্ছে বিচারকদের জন্য। নতুন এডিশনটি আমি নেসাবভুক্ত করব। কওমি মাদরাসায় এবং সরকারিভাবে।

    যুগান্তর: আপনার পিএইচডির থিসিস কী বিষয়ে ছিল?

    আবু রেজা নদভী: ‘মাওলানা আবুল হাসান আলী নদভী ও মাওলানা আবুল আলা মওদুদীর ইসলামি সমাজ বিনির্মাণ চিন্তার তুলনামূলক বিশ্লেষণ’।

    শায়খ নদভীর মতো মাওলানা মওদুদীও ইসলামি সমাজ কায়েম করতে চেয়েছেন। কিন্তু তাদের দুজনের চাওয়ার মধ্যে কী পার্থক্য—এটা দেখাতে চেয়েছি। তবে আমার থিসিসে মাওলানা আবুল হাসান আলী নদভীর মানহাজ এবং পদ্ধতিকে প্রাধান্য দিয়ে তুলে ধরা হয়েছে।

    যুগান্তর: একটু ব্যক্তিগত প্রশ্ন করি, ছোটবেলা কী হতে চেয়েছিলেন?

    আবু রেজা নদভী: ছোটবেলা আমার বাবাদের, মানে পূর্বপুরুষদে মতো হতে চেয়েছিলাম। আমার পূর্বপুরুষের প্রতিটি স্তরে আলেম ছিল। কোনও স্তর আলেম শূন্য ছিল না।

    আমার পূর্বপুরুষ শেখ ইয়াসিন মক্কী রহ. মক্কায় শুয়ে আছেন ছয় শতাব্দী ধরে। অনেক বড় বড় আলেম, বুজুর্গ ছিলেন আমাদের বংশে। তাই আমি তাদের মতোই হতে চেয়েছিলাম।

    যুগান্তর: ছেলেবেলার বন্ধুদের মনে পড়ে?

    আবু রেজা নদভী: হ্যাঁ, মনে পড়ে। ব্যক্তিগত জীবনে আমি বন্ধু ছাড়া থাকতে পারি না। আর রাজনৈতিক জীবনে থাকতে পারি না জনগণ ছাড়া। তবে স্কুল বন্ধুদের সঙ্গে তেমন যোগাযোগ নেই।

    পটিয়ায় পড়বার সময় যাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ আছে। নদওয়ায় পড়ার সময় বন্ধুদের সঙ্গেও যোগাযোগ আছে।

    যুগান্তর: আপনার বন্ধুদের মধ্যে কেউ বিখ্যাত হয়েছেন?

    আবু রেজা নদভী: আমার বন্ধুদের মধ্যে একজন হলেন আল্লামা আহমদ শফীর (রহ.) জামাতা মেহরিয়া মাদরাসার মাওলানা ইসহাক নূর। তিনি প্রসিদ্ধ।

    আরেকজন মাওলানা মুসা, রাঙ্গুনিয়া চন্দ্রগোনা ইউনুছিয়া মাদরাসার শিক্ষক। আরেকজন পটিয়ার মুফতি আযীযুল হক সাহেবের ছেলে হাফেজ মাহবুব সাহেবের দোহাজারি মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা হাবিবুল্লাহ। প্রথম দুজন করোনায় মারা গেছেন। তাদের বাড়িতে আমি অর্থ সাহায্য পাঠাই। বসুন্ধরা এবং মালিবাগ মাদ্রাসায়ও আমার বন্ধু রয়েছে।

    ভারতে যারা বন্ধু ছিল, তাদের প্রায় সবাই খ্যাতিমান। এদের মধ্যে অন্যতম দিল্লি ইউনিভার্সিটির প্রফেসর অলি আখতার নদভী, ৫৫ খণ্ডের কিতাব ‘আল মুহাদ্দিসাত’র লেখক মাওলানা আকরাম নদভী। আকরাম নদভী আমার দুই বছরের সিনিয়র ছিলেন। কিন্তু বন্ধু ছিলেন।

    আমার আরবি মাকালা দেখে দিতেন পত্রিকায় দেবার জন্য। ড. ইউসুফ কারজাভি তার মেধা এবং ইলম দেখে শুধু মুগ্ধতা প্রকাশ করতেন।

    যুগান্তর: ভবিষ্যতে কী করতে চান?

    আবু রেজা নদভী: মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যা বলবেন, তা করব। সৌদির সঙ্গে সম্পোর্কন্নয়ন, হাজীদের সেবা, ইসলামী ও ধর্মীয় চুক্তি বাড়ানো, কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতির ফলাফল বাস্তবায়ন করা, যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরিতে তাদের নিয়োগ ত্বরান্বিত করা, রোহিঙ্গাদের জন্য কাজ করা, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের খাবারের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি। আর আমার ফাউন্ডেশনে চ্যারিটি কাজ তো আছেই।

    যুগান্তর: সর্বশেষ প্রশ্ন— আপনি আলেম, লেখক, অধ্যাপক, রাজনীতিবিদ, বক্তা। কোন পরিচয়ে নিজেকে পরিচয় দিতে ভলো লাগে?

    আবু রেজা নদভী: শিক্ষকতা করেই আনন্দ পাই। কিন্তু জামায়াতীদের অপপ্রচারের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত ক্লাস নেই না। কেবল মাসে দুটো ক্লাস নিই।

    যুগান্তর: দীর্ঘ সময় দিলেন আমাদের। শুকরিয়া।

    আবু রেজা নদভী: শুকরিয়া।

    অনুলিখন: রাকিবুল হাসান

  • চসিক নির্বাচন নিয়ে উত্তর ও দক্ষিণ আগ্রাবাদ ওয়ার্ড কেন্দ্র কমিটির সাথে মহানগর আওয়ামী লীগের মত বিনিময় সভা

    চসিক নির্বাচন নিয়ে উত্তর ও দক্ষিণ আগ্রাবাদ ওয়ার্ড কেন্দ্র কমিটির সাথে মহানগর আওয়ামী লীগের মত বিনিময় সভা

    আলমগীর ইসলামাবাদী
    চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ-

    আজ ৯ জানুয়ারি রাতে আগ্রাবাদ কনভেনশন হলে আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী, ২৪ নং উত্তর আগ্রাবাদ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী নাজমুল হক ডিউক, ১২,২৩,২৪ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদপ্রার্থী জাহেদা বেগম পপি’র সমর্থনে ২৭ নং দক্ষিণ আগ্রাবাদ ওয়ার্ড (সাংগঠনিক) ও ২৪ নং উত্তর আগ্রাবাদ ওয়ার্ড ( প্রশাসনিক) এর আওতাভুক্ত ১৮ টি কেন্দ্র কমিটির সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

    ২৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: হারেছ এর সভাপতিত্বে এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল ইব্রাহিমের সঞ্চালনায় উক্ত সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জনাব মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সহ সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী ,সহ সভাপতি আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য বেলাল আহমেদ,২৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি রেজাউন,জালাল আহমেদ, উত্তর আগ্রাবাদ ওয়ার্ডের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত কাউন্সিলর পদপ্রার্থী নাজমুল হক ডিউক, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদপ্রার্থী জাহেদা বেগম পপি, ২৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী জাফরুল হায়দার সবুজ, মহানগর আওয়ামী যুবলীগের সদস্য মো: বেলাল হোসেন,২৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য জনাব মাসুদ পারভেজ সহ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

    বেসরকারি কারা পরিদর্শক আজিজুর রহমান আজিজ, নগর ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রনি মির্জা, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মো : সোহেল, ত্রাণ ও দূর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক আবুল মনসুর টিটু এবং ১৮ কেন্দ্র কমিটির আহ্বায়ক এবং সদস্য সচিব সহ কমিটির অন্যান্য সদস্য বৃন্দ।

  • বঙ্গবন্ধু স্মারক সম্মাননা পেলেন এম.নরুল হুদা চৌধুরী

    বঙ্গবন্ধু স্মারক সম্মাননা পেলেন এম.নরুল হুদা চৌধুরী

    আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

     

    বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা স্মৃতি পরিষদের আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও ৫০তম মহান বিজয় দিবস২০২০ উপলক্ষে ” যুদ্ধাপরাধীদের বিচার তরান্বিত করার অন্দোলন, মানবসেবা ও রাজনীতিতে অবদান রাখায়” একুশে পদক প্রাপ্ত উপমহাদেশের বিশিষ্ট সমাজ বিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর প্রদীপ চক্রবর্ত্তী’র নিকট থেকে বঙ্গবন্ধু স্মারক সম্মাননা গ্রহন করছেন চট্টগ্রাম আনোয়ারা উপজেলা ৯নং পরৈকোড়া ইউনিয়নের কৃতি সন্তান, চট্টগ্রাম মহানগর জননেত্রী শেখ হাসিনা পরিষদের সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও সাহিত্য চর্চা পরিষদের সভাপতি এম. নুরুল হুদা চৌধুরী।

    তিনি স্বাধীন বাংলা ৭১ নিউজ পোর্টালকে বলেন-
    আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করেছি মানুষের সেবা করার তথা দেশের জন্য কাজ করার। এ পুরস্কার পেয়ে সত্যিই আমি আনন্দিত।অভিনন্দন জানায় বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা স্মৃতি পরিষদের আয়োজক টিম কে।

  • নলছিটির সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানকে প্রাণনাশের হুমকি

    নলছিটির সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানকে প্রাণনাশের হুমকি

    মোঃরাকিব,নলছিটি উপজেলা প্রতিনিধিঃ

     

    ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আইনজীবী সমিতির সিনিয়র সদস্য অ‍্যাডঃ জি কে মোস্তাফিজুর রহমানকে মোবাইলে গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

    গতকাল শনিবার রাত ৭.৪৭ মিনিটে ০১৭৯১২৭১৪৯৪ এই নাম্বার থেকে ফোন করে হুমকি দেওয়া হয়। হুমকি প্রদানের পরপরই তিনি ঝালকাঠি সদর থানায় গিয়ে একটি জিডি করেন। জিডি নং- ৩৬৭। এ ব‍্যাপারে তিনি উক্ত নাম্বার ব‍্যাবহারকারীকে দ্রুত শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব‍্যাবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন ঝালকাঠি সদর থানার অফিসার ইনচার্জকে।

  • নলছিটির সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানকে প্রাণনাশের হুমকি

    নলছিটির সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানকে প্রাণনাশের হুমকি

    মোঃ রাকিব,নলছিটি উপজেলা প্রতিনিধি

     

    ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আইনজীবী সমিতির সিনিয়র সদস্য অ‍্যাডঃ জি কে মোস্তাফিজুর রহমানকে মোবাইলে গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

    গতকাল শনিবার রাত ৭.৪৭ মিনিটে ০১৭৯১২৭১৪৯৪ এই নাম্বার থেকে ফোন করে হুমকি দেওয়া হয়। হুমকি প্রদানের পরপরই তিনি ঝালকাঠি সদর থানায় গিয়ে একটি জিডি করেন। জিডি নং- ৩৬৭। এ ব‍্যাপারে তিনি উক্ত নাম্বার ব‍্যাবহারকারীকে দ্রুত শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব‍্যাবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন ঝালকাঠি সদর থানার অফিসার ইনচার্জকে।

  • আনোয়ারায় মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে কাজী ইব্রাহীম পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

    আনোয়ারায় মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে কাজী ইব্রাহীম পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

    আনোয়ারা (চট্টগ্রাম)প্রতিনিধিঃ-

    আনোয়ারা উপজেলার হাইলধর ইউনিয়ন মালঘর গ্রামের কাজী ইব্রাহীম গংদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।
    ৫ই জানুয়ারি (মঙ্গলবার) বিকেলে উপজেলার চাতরী চৌমুহনীর একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে কাজী ইব্রাহীম গং পরিবারের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কাজী সোলাইমান মাষ্টার।

    তিনি জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ তার পরিবারের সাথে প্রতিবেশী কামাল উদ্দীনের পরিবারের সাথে চলাচলের রাস্তা ও বসতবাড়ির মালিকানা সংক্রান্ত ব্যাপারে বিরোধ ছিল, যার ফলশ্রুতিতে একাধিক সালিশি বৈটক থেকে কোর্টে মামলা পর্যন্ত গড়ায়। ফলশ্রুতিতে বিরোধপূর্ণ জায়গার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত উভয়পক্ষকে কোন ধরনের স্থাপনা করতে নিষেধ করা হলেও কিছুদিন পূর্বে প্রতিবেশী কামাল উদ্দীনের পরিবার জোরপূর্বক ভাড়াটে লোক দিয়ে সীমানা প্রাচীর গেইট নির্মাণ করে বিরোধপূর্ণ জায়গাটি দখল করে রাখে। এই বিষয়টি নিয়ে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপির নির্দেশনায় আনোয়ারা থানার অফিসার ইনচার্জের মধ্যস্থতায় বৈটকে কামাল উদ্দীনের পরিবারকে নির্মাণকৃত গেইটটি সরিয়ে নিতে বলা হয়।

    উল্লেখ্য, গত ২৯শে ডিসেম্বর রাত প্রায় তিনটার সময় কে বা কারা রাতের অন্ধকারে কামাল উদ্দীনের বাড়ির গেইটটি ভেঙ্গে ফেলে। ঘটনার পরের দিন আনোয়ারা থানায় কামাল উদ্দীনের ছেলে মুহাম্মদ মোরশেদ উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাদের পরিবারের ১১জন সদস্যের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে যা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বলে দাবী করা হয়।
    এসময় তিনি অনতিবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ উক্ত ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করেন।
    সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুহাম্মদ ইব্রাহীম, মুহাম্মদ জয়নাল, মুহাম্মদ ইউসুফ, শওকত ওসমান, আবুল বশর, ইমন,শাহাদাত ওসমান, মিনহাজ প্রমুখ।

  • কেইসের হাজিরা দিতে এসে চট্টগ্রাম আদালতে আসামির মৃত্যু

    কেইসের হাজিরা দিতে এসে চট্টগ্রাম আদালতে আসামির মৃত্যু

    আলমগীর ইসলামাবাদী
    চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি

     

    চট্টগ্রাম আদালতে মামলায় হাজিরা দিতে এসে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে ইছহাক (৬৫) নামের এক আসামির মৃত্যু হয়েছে। তিনি একটি বন মামলার (২/২০১৮) এজাহারভুক্ত আসামি।

    বুধবার (০৬ জানুয়ারি ২১) চট্টগ্রামের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।
    মারা যাওয়া ইছহাক ফটিকছড়ির উত্তর কাঞ্চননগর দুল্যাছড়ি এলাকার ফকির আহমদের ছেলে।

    চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের কোর্ট পরিদর্শক-২ মো. হুমায়ুন কবির জানান, মামলায় হাজিরা দিতে এসে ওই আসামি এজলাসের সামনে বারান্দায় পড়ে যান। পরে তিনি মারা যান। বিচারক মহোদয়ের সামনে ওই ব্যক্তির সুরতহাল করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কোতোয়ালী থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়েছে।

    কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ‘আদালতে মামলায় হাজিরা দিতে এসে ইছহাক নামের এক আসামি মারা গেছেন। তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

  • রুখে দাও ভারতীয় অগ্রাসণ।

    রুখে দাও ভারতীয় অগ্রাসণ।

    মোঃরাকিব”বিশেষ প্রতিনিধিঃ

     

    আজ সেই নারকীয় ৭ই জানুয়ারি। হ‍্যা আজই সেই ফেলানী দিবস। ফেলানী খাতুনের দশম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোর ৬টায় কুরিগ্রাম ফুলবাড়ি সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষি বাহিনী (বিএসএফ) ঠান্ডা মাথায় গুলি করে হত্যা করে ফেলানীকে।

    বিএসএফ এর গুলিতে গুলিবিদ্ধ ফেলানী আধাঘণ্টা ধরে সীমান্তের কাঁটাতারের সাথে ঝুলে থেকে ‘পানি পানি’ বলে আহাজারি করতে থাকে। গুলি চালানোর পর ভারতের অনন্তপুর ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা লাশের পাশ দিয়ে টহল দিতে থাকে। তারা ফেলানীর বুকফাটা আর্তনাদ আনন্দের সঙ্গে উপভোগ করছিল। এক সময় কাঁটাতারে ঝুলে থাকা তরুণী ফেলানীর নিথর শরীর নিস্তব্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ সময় ধরে কাটাতারের সাথে ঝুলে থাকে ফেলানীর লাশ।

    নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম নূরু কাঁটাতারের বেড়া অতিক্রম করে বাংলাদেশে এলেও মেয়ের আর্তচিৎকারে সাড়া দিতে পারেননি। হত্যার ৩০ ঘণ্টা পর বিএসএফ ফেরত দেয় ফেলানির লাশ।
    সেই হতভাগ্য ফেলানীর বাড়ি নাগেশ্বরী উপজেলার দক্ষিণ রামখানা ইউনিয়নের বানার ভিটা গ্রামে।

    বাংলাদেশ ও ভারতের গলায় গলায় বন্ধুত্বে সীমান্তের কাঁটাতারের সাথে আটকে থাকা ফেলানীর ঝুলন্ত লাশের ছবি হইচই ফেলে দেয় বিশ্বজুড়ে। সারাবিশ্বের ছড়িয়ে পড়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বর্বরতা। ফেলানী হয়ে উঠে প্রতিবাদের প্রতীক। সেই নৃশংসতার শিকার ফেলানী খাতুনের মরদেহ কাটাতারের সঙ্গে ঝুলে থাকার ঝুলন্ত ছবি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ব‍্যাপক আকারে প্রচার হওয়ায় ভারত হত্যাকারী বিএসএফ সদস্যদের বিচারের প্রতিশ্রুতি দেয়। বিচার প্রক্রিয়া শুরুও হয়েছিল। তবে তৈরি হয়েছিল এক মহাপ্রহসনের বিচার।

    ফেলানী হত্যার কড়া প্রতিবাদ পর্যন্ত করতে পারেনি বাংলাদেশ; বরং সেই হত্যাকারীদের সাথে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নাকি এখন ইতিহাসের সর্বোচ্চচূড়া অতিক্রম করেছে। তাদের সব চাওয়া-পাওয়া সব দাবী পূরণ করা হয়েছে। বিশালাকার ভাবে প্রচার করা হয় হত্যাকারী ভারতের সঙ্গে রক্তের সম্পর্ক, রাখিবন্ধনের সম্পর্ক এমনকি এদেশের অধিপতিরা বলে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের কথা।

    ফেলানীকে নৃশংসভাবে হত্যার পর হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো মানবাধিকার সংগঠন বিএসএফকে একটি ‘খুনে বাহিনী’ হিসেবে অভিহিত করে। বিশ্বজুড়ে প্রচার হয়ে যায় প্রতিষ্ঠিত বিএসএফ একটি বর্বর বাহিনী। এই বাহিনী এর আগেও বহু নারী ও শিশুদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে। ফেলানী হত্যার আগে ২০১০ সালের মে মাসে ঠাকুরগাঁওয়ের রত্মাই সীমান্তের এক কিলোমিটার ভেতরে এসে পারুল নামে ১৪ বছরের এক কিশোরীকে হত্যা করেছিল। বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের প্রতিবাদ ও বিশ্বের দেশে দেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠায় ভারত ফেলানী হত্যার বিচারের প্রতিশ্রুতি দেয়। বিএসএফ এর ডিজি বাংলাদেশে এসে প্রতিশ্রুতি দিয়ে অঙ্গিকার করেছিলেন ‘আর কোনো বাংলাদেশী নাগরিকের ওপর তারা কোনো মারণাস্ত্র ব্যবহার করবেন না’। শুধু সেইবারই নয় কত শতবার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তারা তার কোনো হিসেব নেই। কিন্তু সে প্রতিশ্রুতির ছিটে ফোটাও তারা রাখতে পারেননি।

    বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের আমলে বর্বর ভারতীয় বাহিনী বিএসএফ এই পৈশাচিকতা ফ্রি-স্টাইল লাইসেন্সে পরিণত হয়েছে। আর নরঘাতক ভারতীয় বাহিনীর এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে একবারও প্রতিবাদ করতে পারেনি বাংলাদেশের সরকার।