Category: ব্রেকিং নিউজ

  • পদ্ধতিগত (নির্বাচনী) গণতন্ত্রের চর্চা: ইসলামী সরকার বা ইসলাম প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা ও বাস্তবতা!!

    পদ্ধতিগত (নির্বাচনী) গণতন্ত্রের চর্চা: ইসলামী সরকার বা ইসলাম প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা ও বাস্তবতা!!

    নিউজ ডেস্ক:

    পদ্ধতিগত (নির্বাচনী) গণতন্ত্রের চর্চা: ইসলামী সরকার বা ইসলাম প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা ও বাস্তবতা!!- আহমদ আলী। [গণতন্ত্র: ইসলামী দৃষ্টিকোণ নতুন সংস্করণ (প্রকাশিতব্য) বই থেকে] গণতন্ত্র বিরুদ্ধে এক দল আলিমের একটি বড়ো আপত্তি হলো- প্রচলিত গণতন্ত্রের মাধ্যমে ইসলামী সরকার গঠন করা কোনোক্রমেই সম্ভব নয়। কেননা, গণতান্ত্রিক নির্বাচনব্যবস্থা বলতে গেলে কার্যত টাকার খেলা, প্রভাব-প্রতিপত্তির খেলা, ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের খেলা, ব্যালট বাক্সে জাল ভোট ভর্তির খেলা, এসব খেলা কোনো ইসলামী আদর্শবাদী লোকেরা খেলতে পারে না। অতএব, তাদের পক্ষে ব্যাপকভাবে বিজয়ী হওয়া এবং দলগতভাবে জয় লাভ করা, অন্তত সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তদুপরি গণতন্ত্রে যেহেতু বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও মতবাদের অস্তিত্ব স্বীকার করে নিতে হয় এবং সেখানে তাদেরকে তাদের নিজস্ব মত, চিন্তা ও মতাদর্শ লালন ও প্রচারের অধিকারও মেনে নিতে হয়, তাই গণতন্ত্রের মাধ্যমে কোনোভাবেই ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। এ আপত্তির মধ্যে দুটি প্রসঙ্গ রয়েছে এক. গণতন্ত্রের মাধ্যমে ইসলামী সরকার গঠন এবং ইসলামপন্থীদের পক্ষে বিজয়লাভ ও ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব নয়। দুই. গণতন্ত্রের মাধ্যমে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। প্রথম প্রসঙ্গে আমাদের বক্তব্য হলো- আমরা মনে করি, এ কথাটি যদিও কোনো কোনো দেশে গণতন্ত্র চর্চার অবস্থার নিরিখে সঠিক মনে হয়; কিন্তু গণতন্ত্রের মূল ধারণা, আদর্শ ও লক্ষ্যের ভিত্তিতে তা যুক্তিযুক্ত নয়। আমরা মুসলিম বিশ্বের এমন অনেক দেশ (যেমন: সুদান, আলজেরিয়া, মরক্কো, তিউনিসিয়া, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, মিসর ও মধ্যপ্রাচ্যের অধিকাংশ দেশ) সম্পর্কে জানি, যেখানে গণতন্ত্র সঠিকভাবে বিকশিত হতে পারলে অল্প সময়ের মধ্যেই ইসলামপন্থার অনুসারীরাই সরকার গঠন করবেন। তাই এসব দেশে যাতে ইসলামপন্থার অনুসারীরা সরকার গঠন করতে না পারেন, এ কারণে মুসলিমবিদ্বেষী বিশ্বমোড়লরা সেসব দেশে গণতন্ত্রের চর্চাকে নানা উপায়ে বাধাগ্রস্ত করে চলছে। মূল কথা হলো- বর্তমান গণতান্ত্রিক নির্বাচনব্যবস্থা ইসলামী সরকার গঠনের জন্য বড়ো বাধা নয়। ইসলামী সরকার গঠনের জন্য সবচেয়ে বড়ো প্রয়োজন হলো, ইসলামী সরকার গঠনের পক্ষে ব্যাপক জনমত গড়ে তোলা। আর এজন্য ইসলামপন্থিদের জনমত সৃষ্টির যুগোপযোগী মাধ্যমগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার করে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে ইসলামী শাসনব্যবস্থার পক্ষে নিয়ে আসতে হবে। এতদুদ্দেশ্যে দাওয়াহ ও তারবিয়াহ কার্যক্রম বাড়াতে হবে, শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তুলতে হবে এবং শিক্ষা ও সেবামূলক কর্মকাণ্ডের ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটাতে হবে।বলার অপেক্ষা রাখে না, যে দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী ইসলামী সরকার প্রত্যাশা করবে, তাতে গণতান্ত্রিক নির্বাচনব্যবস্থা_ যদি তা সুষ্ঠুভাবে বিকশিত করা যায়_ ইসলামী সরকার প্রতিষ্ঠার করার পথকে বাধাগ্রস্ত তো করবেই না; বরং অধিকতর প্রশস্ত ও সুগম করে দেবে। জনমতের বিরুদ্ধে গিয়ে যেকোনোভাবে জোরজবরদস্তিমূলক ইসলামী সরকার প্রতিষ্ঠার প্রয়াসকে ইসলামও সমর্থন করে না। আর এভাবে কোনোক্রমে ইসলামী সরকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হলেও বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে তা টিকিয়ে রাখা একেবারেই সম্ভব নয়।

    অনেকেই ‘গণতন্ত্রের মাধ্যমে ইসলামী সরকার আদৌ কায়েম করা সম্ভব নয়’- এ প্রসঙ্গে সাম্প্রতিককালের মিসর ও আলজেরিয়াকে উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করে থাকেন। আলজেরিয়ায় ইসলামপন্থার অনুসারীগণ নির্বাচনে জিতেও ক্ষমতায় যেতে পারেনি এবং মিসরে ক্ষমতায় গিয়েও টিকে থাকতে পারেনি। আমরা মনে করি, এটা গণতন্ত্রের ত্রæটি নয়। সেই দেশদুটিতে কিছু সময়ের জন্য হলেও গণতন্ত্রের সুবাতাস প্রবাহিত হয়েছিল বলেই তারা নির্বাচনে জিতেছিল এবং ক্ষমতায়ও যেতে পেরেছিল। আর তাদের যা ব্যর্থতা (অর্থাৎ ক্ষমতায় যেতে না পারা কিংবা ক্ষমতায় টিকতে না পারা) তার মূল কারণ ছিল বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক ষড়যন্ত্র ও অপরাজনীতি এবং সেনাবাহিনীর উচ্চাভিলাষ। বিশ্লেষকদের মতে, মিসরে মুরসীর পতনের পেছনে মূল কারিগর ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল; সৌদি আরবও গোপনে নানাভাবে ষড়যন্ত্রে অংশ নিয়েছিল। তারা মিসরে ইখওয়ানের উত্থানকে নিজেদের অস্তিত্ব ও মধ্যপ্রাচ্যে খবরদারির জন্য হুমকি মনে করেছিল। উল্লেখ্য, গণতন্ত্রের মাধ্যমে ইসলামপন্থীরা ক্ষমতায় গেলেই এবং সরকার গঠন করলেই যে পরিপূর্ণ ইসলাম কায়েম হয়ে যাবে তা নয়। কারণ, ইসলাম একটি বিপ্লবের নাম; আমূল পরিবর্তনের নাম; ব্যক্তি থেকে রাষ্ট্র পর্যন্ত সকল দিক ও বিভাগের পরিবর্তনের নাম; দু/চারটি বিধান কার্যকর করার নাম ইসলাম প্রতিষ্ঠা নয়; বরং ইসলাম প্রতিষ্ঠার অর্থ হলো_ ব্যক্তির চিন্তা-চেতনা ও বিশ্বাস থেকে শুরু করে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে ইসলামী নীতির পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন ও প্রতিষ্ঠা। বলার অপেক্ষা রাখে না, গণতন্ত্রের মাধ্যমে পরিপূর্ণ ইসলাম প্রতিষ্ঠা, এরূপ আমূল পরিবর্তন প্রায় দুরূহ বলা চলে। কারণ, ইতঃপূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে, গণতন্ত্রে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও মতবাদের অস্তিত্ব স্বীকার করে নিতে হয় এবং সেখানে তাদেরকে তাদের নিজস্ব মত, চিন্তা ও মতাদর্শ প্রচারের অধিকারও মেনে নিতে হয়, যদিও তা স্পষ্টত ইসলাম ও উম্মাহর স্বার্থের বিরুদ্ধে যায়। অথচ সত্যিকার ইসলামী রাষ্ট্রে বাকস্বাধীনতার অধিকারের কথা বলে ইসলাম ও তার শিক্ষার বিরুদ্ধে প্রচারণার কোনো সুযোগ নেই।

    এ কথা স্বীকার্য যে, সমাজের যে কোনো বড়ো ধরনের পরিবর্তন, বিশেষ করে শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন, স্বৈরাচারী সরকারের পতন, কোনো মতাদর্শ প্রতিষ্ঠা প্রভৃতি সহজেই নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে খুব কমই সংঘটিত হয়। এর জন্য প্রয়োজন ব্যাপক জনমত তৈরি ও গণজাগরণ। পৃথিবীতে যতবারই বড়ো ধরনের পরিবর্তন হয়েছে তা গণজাগরণের মাধ্যমে হয়েছে। সাম্প্রতিককালে চীনের সমাজতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা বলুন, রাশিয়ায় সমাজতন্ত্রের পতন বলুন, ইরানের বিপ্লব বলুন, আফগানিস্তানে ইমারতে ইসলামিয়্যাহর প্রতিষ্ঠা বলুন- কোনো পরিবর্তনই ভোটের মাধ্যমে হয়নি; গণজাগরণের মাধ্যমেই সংঘটিত হয়েছে। এমনকি, বাংলাদেশে গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকে আর দু হাজার চব্বিশে স্বৈরাচারের পতনও ভোটের মাধ্যমে হয়নি; গণজাগরণের মাধ্যমেই সংঘটিত হয়েছে। মোটকথা, রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠার পক্ষে যদি ব্যাপক জনমত গড়ে তোলা যায় এবং ইসলামের চাহিদাকে গণদাবিতে পরিণত করা যায়, তখনই গণজাগরণের মাধ্যমে ইসলামী ব্যবস্থা পরিপূর্ণরূপে কায়েম করা সম্ভব হতে পারে।

    ইতঃপূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে, এমন অনেক মুসলিম দেশ রয়েছে, সেগুলোতে যদি গণতন্ত্র সঠিকভাবে বিকশিত হতে পারে, তবে অল্প সময়ের মধ্যে সেসব দেশে ইসলামপন্থীরা সরকার গঠন করতে পারবে; তবে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে তাদের পক্ষে ক্ষমতায় গিয়েও পূর্ণাঙ্গ ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং সমাজ ও রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে ইসলামের বিধিবিধান চালু করা প্রায় অসম্ভবই বলা চলে। তারা আপাতত সেসব দেশে- যদি ইসলামী সরকার গঠিত হয়- যেসব কর্মসূচি নিয়ে এগুতে পারে তা হলো- সামাজিক সাম্য ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিতে পারে এবং সার্বিক পরিবেশ-পরিস্থিতি বিবেচনা করে ধীরে ধীরে- যতটা সম্ভব- ইসলামী বিধানগুলো কার্যকর করার পদক্ষেপ নিতে পারে। বলার অপেক্ষা রাখে না, একযোগে পূর্ণাঙ্গ ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা এবং সমাজ ও রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে ইসলামের বিধিবিধান চালু করার উদ্যোগ ভেস্তে যেতে পারে; ক্ষেত্রবিশেষে তা মহাবিপর্যয় ডেকে আনতে পারে, এ অবস্থায় নিজেদের অস্তিত্ব বিপন্ন হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। উল্লেখ্য, সকল নবী ও রাসূলই নিজ নিজ জাতিকে সর্বপ্রথম তাওহীদের দাওয়াত পেশ করেছেন। যখন কোনো জাতি এ দাওয়াত কবুল করতো, তখনই তাদেরকে ধীরে ধীরে অন্যান্য বিধানের প্রতি দাওয়াত দেওয়া হতো। মুসলিম উম্মাতের ওপর আল্লাহ তা‘আলার একটি বড় অনুগ্রহ হচ্ছে, তিনি শরীয়তের সকল বিধান একযোগে নাযিল করেননি; বরং ক্রমাগতভাবে শরীয়তের বিধানগুলো জারি করেছেন। তদুপরি অনেক বিষয়ের চূড়ান্ত বিধি-নিষেধ এক দিনেও কার্যকর করেননি। ইসলামের আবির্ভাবের সময় মদ্যপান ছিল তৎকালীন আরবের তথা গোটা পৃথিবীর মানুষের সাধারণ অভ্যাস এবং তারা মদ্যপানকে কোনোরূপ অপরাধযোগ্য কর্ম মনে করতো না। অনুরূপভাবে যিনাও ছিল তৎকালীন সমাজে বহুল প্রচলিত একটি সাধারণ চরিত্র। কিন্তু ইসলামে মদ্যপান, যিনা প্রভৃতি মারাত্মক দণ্ডনীয় অপরাধ। তবে মানুষের এই চিরাচরিত অভ্যাস ও চরিত্র পরিবর্তন সাধনে ইসলাম ধীর পদক্ষেপে পর্যায়ক্রমে অগ্রসর হয়েছে। কেননা, এসব বিষয়কে যদি হঠাৎ করে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হতো তাহলে তা মেনে চলা তখনকার লোকদের পক্ষে খুবই কষ্টকর হয়ে পড়তো। অনেকেই হয়তো তা গ্রাহ্যই করতো না। এ প্রসঙ্গে উম্মুল মুমিনীন আয়িশা (রা) বলেছেন,

    ‘‘.. কুরআনের প্রথম অবতীর্ণ সূরাগুলোর মধ্যে জান্নাত ও জাহান্নামের উল্লেখ রয়েছে। তারপর যখন লোকেরা দলে দলে ইসলামে দীক্ষিত হতে লাগলো তখন হালাল-হারামের বিধান সম্বলিত সূরাগুলো নাযিল হয়েছে। যদি শুরুতেই নাযিল হতো যে, তোমরা মদ পান করো না, তাহলে তারা অবশ্যই বলতো যে, আমরা কখনো মদপান ত্যাগ করবো না। যদি শুরুতেই নাযিল হতো যে, তোমরা ব্যভিচার করো না, তাহলে তারা অবশ্যই বলতো যে, আমরা কখনো অবৈধ যৌনাচার বর্জন করবো না।…” (বুখারী)

    সাইয়িদুনা ইবনে আব্বাস (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘‘আল্লাহ তা‘আলা মুহাম্মদ (সা:)-কে পাঠালেন, এই দাওয়াত দেওয়ার জন্য যে, আল্লাহ ব্যতীত কোনো সত্যিকার ইলাহ নেই। মুমিনরা যখন এই কথার স্বীকৃতি দিলো তখন তাদের ওপর সালাত ফরয করা হলো। যখন তারা সালাত বাস্তবায়ন করলো তখন তাদের ওপর সিয়ামের বিধান দেওয়া হলো। যখন তারা সিয়াম পালন করলো তখন তাদের ওপর যাকাত ফরয করা হলো। যখন যাকাতের বিধান পালন করলো তখন হজ্জের বিধান দেওয়া হলো। যখন হজ্জের বিধান পূর্ণ করলো তখন জিহাদের বিধান প্রদান করা হলো। এরপর এই আয়াত অবর্তীণ করা হলো- আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম।” (তাফসীরে তাবারী) এসব রিওয়ায়াতে গুরুত্ব অনুযায়ী দাওয়াতের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা রক্ষার শিক্ষা রয়েছে। তাই আমাদেরও ইসলাম প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় রাখতে হবে। খলীফা উমর ইবনু আবদিল আযীয (রাহ.) সম্পর্কে বর্ণিত রয়েছে, খলীফা হবার পর তিনি শরীয়তের কিছু কিছু বিধান কার্যকর করতে সময় নিচ্ছিলেন। তখন তাঁর ছেলে আবদুল মালিক (রাহ.) এসব বিধানের দ্রæত বাস্তবায়নের কামনা পেশ করলে তিনি বলেন,

    “হে স্নেহের পুত্র! তাড়াহুড়া করো না! কারণ, আল্লাহ তা‘আলাও পবিত্র কুরআনে প্রথম দুবার মদের নিন্দা করেছেন, তৃতীয়বারে হারাম করেছেন। আমার আশঙ্কা হয় যে, আমি যদি সকল লোককে একসাথে সকল সত্য মেনে চলতে নির্দেশ দেই, তাহলে তারা সকলেই মিলে সত্যকে প্রত্যাখ্যান করবে এবং এতে ফিতনা সৃষ্টি হবে।” (আল মুওয়াফাকাত) বর্তমানে দুঃখজনক বাস্তবতা হলো, বর্তমানে বিশ্ব মোড়লরা আন্তর্জাতিকতাবাদ ও বিশ্বায়নের কঠিন ফাঁদে ফেলে মুসলিম দেশগুলোকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে যেভাবে শাসন-শোষণ করছে, তাদের ওপর নিজেদের একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছে, তাতে মুসলিম দেশগুলোতে ইসলামপন্থীদের ক্ষমতায়ন বা ইসলামী রাষ্ট্র কায়িম করা তো দূরের কথা, বরং স্বাধীনভাবে তাদের অস্তিত্ব রক্ষা করাও এখন দুরূহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক ব্যবস্থায় বড়ো ধরনের কোনো পরিবর্তন সূচিত না হলে নিকট-ভবিষ্যতে প্রায় সকল দেশেই_ গণতন্ত্র বলেন, গণজাগরণ বলেন বা সশস্ত্র জিহাদ বলেন_ কোনো পদ্ধতিতেই ইসলামপন্থীদের পক্ষে ব্যাপক জনসমর্থন থাকলেও ক্ষমতায় যাওয়া কঠিন, আবার কোথাও কোনোভাবে গেলেও স্বাধীনভাবে টিকে থাকা অনেক চ্যালিঞ্জিং ব্যাপার, যা মোকাবেলা করার মতো ইসলামী নেতৃত্ব ও মুসলিমমানস আজও মুসলিম দুনিয়ায় খুব একটা গড়ে ওঠেনি।

    সুতরাং এ বৈশ্বিক রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রেক্ষিতে গণতান্ত্রিক মুসলিম দেশগুলোতে ইসলামপন্থীদের গণতন্ত্রের চর্চা, গণতান্ত্রিক নির্বাচনে অংশগ্রহণ কেবল ক্ষমতায় যাওয়ার জন্যই নয়; বরং নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা ও অবস্থান উত্তরোত্তর দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর করার উদ্দেশ্যেও হতে পারে। এরূপ প্রতিকূল রাজনৈতিক অবস্থায় ইসলামপন্থীগণ অন্তত গণতান্ত্রিক নির্বাচন ব্যবস্থায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে-যতটুকু সুযোগ পাওয়া যায় তার যথার্থ ব্যবহার করে- ক্ষমতার দৃশ্যপটে বরাবরই একটি বড়ো প্রেসার গ্রুপ/ইন্টারেস্ট গ্রুপ হিসেবে আবির্ভূত হতে পারেন এবং এ প্রক্রিয়ায় দীন ও মিল্লতের স্বার্থ ও কল্যাণ- যতটা সম্ভব- আদায় করে নিতে পারেন। পক্ষান্তরে এ অবস্থায় যদি ইসলামপন্থীগণ মোটেরওপর গণতন্ত্রের চর্চা ত্যাগ করেন, নির্বাচন ব্যবস্থা বর্জন করেন, তাহলে অনেক ক্ষেত্রে তারা ক্ষমতার দৃশ্যপট থেকে সম্পূর্ণ হারিয়ে যেতে বাধ্য হবেন এবং এর ফলে ক্রমে তাদের অস্তিত্ব ও স্বাতন্ত্র্য রক্ষা করা, সম্মানজনক অবস্থান ধরে রাখাও অনেকখানি কঠিন হয়ে যেতে পারে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এ কথাটি আরও উত্তমভাবে প্রযোজ্য। সমকালীন বৈশ্বিক রাজনীতি ও বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান, বিশেষ করে বর্তমান ভারতের পেটে বসে ইসলামপন্থীদের ক্ষমতায়ন বা ইসলামী রাষ্ট্র/খিলাফত/ইমারত কায়িম করা তো দূরের কথা; বরং স্বাধীনভাবে নিজেদের টিকে থাকা এবং সগর্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোই এখন অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। এমনকি, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে দেশে ইসলামী শক্তির পক্ষে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বাইরে গিয়ে কোনো সরকার গঠন করার কিংবা রাষ্ট্র তৈরি করার বা সমহিমায় টিকে থাকার চিন্তা করা যে একটা অপরিণামদর্শী ও অবাস্তব চিন্তা_ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কাজেই আপাতত ইসলামী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অগ্রসর হয়ে নিজেদের অবস্থান_যতটা পারা যায়_সুসংহত করার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে, যতদিন না বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক রাজনীতিতে আশানুরূপ কোনোরূপ পরিবর্তন আসে।

    তবে এর মানে কখনো এ নয় যে, আমরা একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী রাষ্ট্র/খিলাফত/ইমারত কায়েমের প্রচেষ্টা একেবারে ছেড়ে দেবো; বরং সার্বিক পরিস্থিতির প্রতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে সময়োচিত ও বাস্তবসম্মত কর্মসূচি ও পরিকল্পনা নিয়ে আমরা আমাদের লক্ষ্যপানে এগিয়ে যাবো, আমাদের প্রচেষ্টা প্রতিনিয়ত চালিয়ে থাকবে। আল্লাহ তা‘আলা_ চাহেন তো_ যেকোনো মুহূর্তে অবস্থা পরিবর্তন করে দিতে পারেন!! আমাদের কেউ কেউ আফগানিস্তানের উদাহরণ টানেন। তাদের কথা হলো, সেখানে যদি বিপ্লবের মাধ্যমে ‘ইমারতে ইসলামিয়্যাহ’ প্রতিষ্ঠা করা যায়, তাহলে বাংলাদেশে বা অন্য দেশগুলোতে পারা যাবে না কেন?! আমরা মনে করি, আফগানিস্তানের ইতিহাস ও এর ভৌগোলিক অবস্থার সাথে আমাদের ইতিহাস ও ভৌগোলিক অবস্থার ঢের পার্থক্য রয়েছে। প্রথমত, আফগানরা প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে বিশে^র পরাশক্তিগুলোর সাথে লড়াই করে নিজেদের সক্ষমতার অনন্য নজীর স্থাপন করেছেন; এ দীর্ঘ সময় ধরে তারা প্রচুর ত্যাগ স্বীকার করেছেন এবং চরম ধৈর্যের পরীক্ষা দিয়েছেন। বলতে গেলে, এ সময়ের মধ্যে আফগান শিশুরা মায়ের পেট থেকে বের হয়েছে বোমার আওয়াজ শুনে, যুদ্ধ-বিগ্রহের মধ্যে দিয়েই তারা বেড়ে ওঠেছে। এভাবে ক্রমে তারা এক ধরনের অজেয় শক্তিতে পরিণত হন এবং দেশটি পরিচয় লাভ করে ‘সাম্রাজ্যবাদের কবরস্থান’রূপে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও সোভিয়েত ইউনিয়নসহ বিশে^র সব পরাশক্তি দীর্ঘসময় সামরিক অভিযান পরিচালনার পরও আফগান জনগণকে নিজেদের করতলে আনতে সক্ষম হয়নি এবং শেষাবধি ব্যর্থ হয়ে ফিরে গেছে।

    রাজনৈতিক বিশ্লেষক অ্যাসবি বলেন,
    ‘‘যদি বস্তুনিষ্ঠভাবে দেখা হয়, আফগানিস্তান একটি কঠিন জায়গা। এটি এমন এক জটিল দেশ, যেখানে অস্থিতিশীল অবকাঠামো, খুব সীমিত উন্নয়ন এবং অঞ্চলটির চারদিকে রয়েছে বিস্তৃত ভূমি। .. সোভিয়েত ইউনিয়ন, ব্রিটেন বা যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানের সঙ্গে কোনো নমনীয়তা দেখায়নি। তারা নিজেদের পথে যেতে চেয়েছিল, অনেকদূর এগিয়েও যায়, কিন্তু তারা কখনও আফগানিস্তানের জটিলতা বুঝতে পারেনি।” বলতে গেলে আফগানিস্তান বর্তমানে এমন এক অবস্থায় এসে পৌঁছেছে, মনে হয় না যে, এখন অন্য কোনো শক্তি কথিত ওই কবরস্থানে আক্রমণের ঝুঁকি নেবে। দ্বিতীয়ত, তাদের ভৌগোলিক অবস্থানও আমাদের তুলনায় অনেক সুবিধাজনক; এটি প্রায়ই মুসলিম দেশগুলোর মধ্যস্থলে অবস্থিত, এর সীমানায় রয়েছে ইরান, পাকিস্তান, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান ও তুর্কমেনিস্তান প্রভৃতি দেশ। ওই সব দেশ থেকে বিভিন্ন সময় তারা নানাভাবে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও রসদ প্রভৃতি সহযোগিতা পেয়েছে।

    তৃতীয়ত, সেখানে জনসংখ্যার প্রায় ৯৯ শতাংশই হলো মুসলিম। ফলে দেশের অভ্যন্তরে সংখ্যালঘু কর্তৃক কোনোরূপ ষড়যন্ত্র তৈরির সম্ভাবনাও ছিল না বললেই চলে। আমাদের বাংলাদেশের অবস্থা ঠিক বিপরীত। কারণ, প্রথমত, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বৃহৎ শক্তিগুলোর সাথে দীর্ঘ সময় ধরে মোকাবেলা করে টিকে থাকার মতো দৃঢ় মানসিকতাসম্পন্ন ত্যাগী জানবাজ লোক আজও এ দেশে খুব বেশি তৈরি হয়নি। দ্বিতীয়ত, প্রশ্ন হলোÑ দীর্ঘ সময় ধরে কোনো বড়ো শক্তির সাথে যুদ্ধ-সংগ্রাম চালিয়ে যাবার মতো প্রয়োজনীয় শক্তি-সামর্থ্য-রসদ-সরঞ্জাম আমাদের কতটা আছে?! ভারত যেভাবে বিভিন্ন দিক থেকে আমাদের বেষ্টন করে রেখেছে সেই অবস্থায় থেকে বাইরের সহযোগিতা পাওয়াও আমাদের জন্য অনেক কঠিন ব্যাপার। তৃতীয়ত, আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ আজও ইসলামী বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত নয়। তারা ইসলামকে ভালোবাসলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হোক- তা আন্তরিকভাবে কামনা করে না এবং এ কারণে এতদুদ্দেশ্যে বড়ো ধরনের কোনো ত্যাগ স্বীকার করতেও প্রস্তুত নয়। চতুর্থত, বাংলাদেশ যদিও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য ভূমি; তবুও আমাদের পাশর্^বর্তী রাষ্ট্র ভারত তার স্বার্থে প্রতিনিয়ত সংখ্যালঘুদের একটি শ্রেণিকে দিয়ে নতুন নতুন ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে। পঞ্চমত, আমাদের ইসলামী শক্তিগুলো সুসংহত ও ঐক্যবদ্ধ নয়। নিজেরা নানা দল-উপদল ও শাখা-প্রশাখায় বিভক্ত এবং প্রায়ই নিজেদের অভ্যন্তরীণ কলহ-বিবাদে লিপ্ত থাকে। তদুপরি সামাজিক ও সেবামূলক কার্যক্রমে তাদের অন্তর্ভুক্তিও আশানুরূপ নয়। এ অবস্থায় আমাদের জনগণ তাদেরকে কোনোভাবেই রাষ্ট্রপরিচালনায় আস্থায় নিতে পারছে না।

    কাজেই প্রত্যেকটি দেশকে তার নিজস্ব ইতিহাস-ঐতিহ্য, শক্তি-সামর্থ্য ও অবস্থান দিয়েই মূল্যায়ন করতে হবে; অন্য দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য, শক্তি-সামর্থ্য ও অবস্থান দিয়েই নয়। উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে এটা প্রতীয়মান হয় যে, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ক্ষেত্রবিশেষে ইসলামপন্থীদের পক্ষে ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব, এমনকি সরকারও গঠন করা যেতে পারে; তবে এ কথা অনস্বীকার্য যে, এ পদ্ধতিতে সমাজ ও রাষ্ট্রে পরিপূর্ণরূপে ইসলাম প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।তবে বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠায় কিছু সুবিধা লাভ করা যায়, যা অন্য কোনো শাসনব্যবস্থায় (যেমন- রাজতন্ত্র, একনায়কতন্ত্র, স্বৈরতন্ত্র প্রভৃতি) লাভ করা দুরূহ। নিম্নে এ সুবিধাগুলো উল্লেখ করা হলো-ক. ইসলামের পক্ষে ব্যাপক জনমত গড়ে তোলা যায় গণতন্ত্রে যেহেতু কথা বলার স্বাধীনতা থাকে, সভা-সমাবেশের অধিকার থাকে, অবাধ প্রচারণা চালাবার অধিকার থাকে, তাই এ সুবাদে সেখানে স্বাধীনভাবে ইসলামের প্রচারণা চালানো যায়, তার পক্ষে ব্যাপক জনমত গড়ে তোলা যায়।

    খ. ইসলামপন্থীদের ভিত্ মজবুত করা যায়
    গণতন্ত্রে যেহেতু সামাজিক ও রাজনৈতিক নানা দল, সংগঠন ও সমিতি গড়ে তোলা যায় এবং নির্বিঘেœ দলীয় ও সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করা যায়, তাই এই সুবাদে ইসলামপন্থীরাও সেখানে নিজেদের বিভিন্ন দল ও সংগঠন গড়ে তুলতে পারে এবং নির্বিঘ্নে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে। এভাবে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় তাদের ভিত্ মজবুত করা যায়। গ. রাষ্ট্র ও সমাজের সর্বস্তরে অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করা যায় গণতন্ত্রে যেহেতু সকলেই সমান অধিকার ভোগ করে, রাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিক তার সামর্থ্য ও যোগ্যতা অনুসারে প্রযোজ্য যে কোনো পদে অধিষ্ঠিত হবার অধিকার লাভ করে, তাই সেই সুবাদে ইসলামপন্থীদের পক্ষে সেখানে সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বস্তরে নিজেদের অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি করা সহজ হয়।

    ঘ. সহজেই গণঅভ্যুত্থান ঘটানো যায়
    গণতন্ত্রে যেহেতু নাগরিকরা স্বাধীনভাবে সভা-সম্মেলন-শোডাউন-মিছিল ইত্যাদি করতে পারে, তাই সেই সুবাদে সেখানে সহজেই গণঅভ্যুত্থান ঘটানো যায়, বিপ্লব ঘটানো যায়। ঙ. ইসলামবিরোধী সরকার পরিবর্তন করা যায় গণতন্ত্রে যেহেতু নির্দিষ্ট মেয়াদ অন্তর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ পায়, তাই সেই সুবাদে জনমতের ভিত্তিতে নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ইসলাম-বিরোধী সরকার পরিবর্তন করা যায়, এমনকি কখনও ইসলামপন্থীরা সরকারও গঠন করতে পারে।

    (রিপোস্ট)
    (আপনার সুচিন্তিত মতামতের জন্য ধন্যবাদ)

  • জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়টি রাজপথে নয়; আলোচনার টেবিলে সমাধান করুন- পীর সাহেব চরমোনাই।

    জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়টি রাজপথে নয়; আলোচনার টেবিলে সমাধান করুন- পীর সাহেব চরমোনাই।

    জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়টি রাজপথে নয় আলোচনার টেবিলে সমাধান করুন- পীর সাহেব চরমোনাই।

    ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম, পীর সাহেব চরমোনাই আজ ১৬ মে শুক্রবার এক বিবৃতিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, দেশের প্রথম সারীর একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট দূরীকরণ ও ক্যাম্পাস নির্মাণের মতো বিষয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের রাজপথে আন্দোলন করতে হচ্ছে; এর মতো লজ্জাজনক বিষয় আর হতে পারে না। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের অপশাসনের ফলে দেশের সকল খাতের মতো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এর সম্ভাবনা নষ্ট করে ভবিষ্যত ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। এখন এর একটা বিহিত হওয়া আবশ্যক তবে তা রাজপথে নয় বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের চাহিদা ও সরকারের সামর্থ্য পর্যালোচনা করে আলোচনার টেবিলে এর সমাধান করতে হবে।

    পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, আমাদের সবার মনে রাখতে হবে, বর্তমান সরকার অভ্যুত্থান পরবর্তী একটি অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকারের প্রধান কাজ রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় নীতি ও কাঠামোগত সংস্কার শেষ করে নির্বাচন আয়োজন করা। বিগত ৫৪ বছরের অনিয়মের ফলে সৃষ্ট জঞ্জাল দুর করার দাবী এই সরকারের ওপরে চাপিয়ে দেয়া বেইনসাফি হবে। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার দেশের অর্থনীতিকে যে পর্যায়ে রেখে গেছে তাতে করে মানুষের প্রাথমিক মৌলিক চাহিদা পূরণেই সরকারকে সংগ্রাম করতে হচ্ছে। এই বাস্তবতায় বিগত সরকারগুলোর সৃষ্ট সমস্যার সমাধান তাৎক্ষণিকভাবে এই সরকারের কাছে চাওয়া যৌক্তিক হবে কিনা তা ভেবে দেখতে হবে।

    ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কষ্ট অবর্ননীয়। ঢাকার মতো উচ্চ আবাসন ব্যয়ের শহরে তাদের নিজ দায়িত্বে আবাসন ব্যবস্থা করতে হয়। এটা একজন শিক্ষার্থীর ওপরে প্রচন্ড আর্থিক চাপ তৈরি করে। সেই চাপে শিক্ষার্থীরা টিউশনি, খণ্ডকালীন চাকুরী করতে বাধ্য হয়;যা তাদের একাডেমিক দক্ষতা অর্জনের পথে বাঁধা তৈরি করে। সেজন্য তাদের আবাসন বৃত্তি ও ক্যাম্পাস নির্মাণের দাবী খুবই যৌক্তিক। তাই সরকারকে আহবান করবো, অতি দ্রুত সম্ভব্য যেকোন পন্থায় তাদের দাবী পূরণের ব্যবস্থা করুন।

    পীর সাহেব চরমোনাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পুলিশের শক্তি প্রয়োগ এবং তাদের সমাবেশ থেকে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপরে বোতল নিক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে বলেন, পতিত স্বৈরাচার রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তারা যৌক্তিক আন্দোলনে অনুপ্রবেশ করে সুযোগ নিতে পারে। সেজন্য সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। তাই এই আন্দোলন রাজপথে না বরং আলোচনার টেবিলে সমাধান করুন।

  • টেকনাফে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের নিয়ে ডুবে যাওয়া নৌকা উদ্ধারের সময় সাগরে নিখোঁজ বিজিবি সদস্য সিপাহি বেলালের মরদেহ উদ্ধার

    টেকনাফে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের নিয়ে ডুবে যাওয়া নৌকা উদ্ধারের সময় সাগরে নিখোঁজ বিজিবি সদস্য সিপাহি বেলালের মরদেহ উদ্ধার

    এইচ এম শাহাবউদ্দিন তাওহীদ।

    টেকনাফে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের নিয়ে ডুবে যাওয়া নৌকা উদ্ধারের সময় সাগরে নিখোঁজ বিজিবি সদস্য সিপাহি মোহাম্মদ বেলালের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার (২৩ মার্চ) মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। বিজিবির পক্ষ থকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। মরদেহটি উদ্ধার করে সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ সীমান্ত ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বেলাল এই সীমান্ত ফাঁড়িতেই কর্মরত ছিলেন। তার সঙ্গে থাকা একটি রাইফেলস ও চারটি ম্যাগাজিনও নিখোঁজ রয়েছে বলে জানায় বিজিবি।  এর আগে, শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমে অবৈধ অনুপ্রবেশের সময় রোহিঙ্গা বহনকারী একটি ট্রলার ডুবে যায়। এতে ২৪ জন রোহিঙ্গাকে জীবিত উদ্ধার করে বিজিবি। এ ঘটনায় বিজিবির নিখোঁজ হন বেলাল। পরবর্তীতে, শনিবার সন্ধ্যায় টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ ও দমদমিয়াস্থ নাফনদীর মোহনায় ৪ রোহিঙ্গার মরদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা। এদের মধ্যে এক শিশু ও ৩ জন নারী। পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহায়তায় মরদেহ উদ্ধার করে বিজিবি।

  • সুশাসন নিশ্চিত করা এবং রাজনৈতিক চরিত্র বদলে প্রয়োজনীয় সংস্কারে ঐকমত্য তৈরির বার্তা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠকে- ইসলামী আন্দোলন।

    সুশাসন নিশ্চিত করা এবং রাজনৈতিক চরিত্র বদলে প্রয়োজনীয় সংস্কারে ঐকমত্য তৈরির বার্তা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠকে- ইসলামী আন্দোলন।

    নিউজ ডেস্ক:

    সুশাসন নিশ্চিত করা এবং রাজনৈতিক চরিত্র বদলে প্রয়োজনীয় সংস্কারে ঐকমত্য তৈরির বার্তা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের তিন প্রতিনিধি।

    অদ্য ১৫ ফেব্রুয়ারী-২০২৫ খ্রি: শনিবার প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠকে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে উপস্থিত হয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, দলের মহাসচিব হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ ও দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান।

    রক্তাক্ত গণঅভ্যুত্থানের পরে সুশাসন নিশ্চিত করা এবং রাজনৈতিক চরিত্র বদলে প্রয়োজনীয় সংস্কারে ঐকমত্য তৈরির বার্তা নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এই বৈঠকে অংশ নিয়েছে।

    বৈঠকে কমিশনসমূহের প্রতিবেদন নিয়ে সুনির্দিষ্ট পরামর্শ দেবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

  • জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার পত্রিকা’র ৯ম বর্ষপূতি উদযাপন উপলক্ষে সম্মাননা গ্রহণ করেন ব্যবস্থাপনা সম্পাদক রাশেল সাবরিন

    জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার পত্রিকা’র ৯ম বর্ষপূতি উদযাপন উপলক্ষে সম্মাননা গ্রহণ করেন ব্যবস্থাপনা সম্পাদক রাশেল সাবরিন

    এইচ এম শাহাবউদ্দিন তাওহীদ।

    পেশাগত দক্ষতা, নিষ্ঠা ও বিশেষ কৃতিত্বের জন্য এবছরও জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার পত্রিকা’র বিশেষ সম্মাননায় ভূষিত করেছে প্রতিষ্ঠান। এই অর্জনের জন্য প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা সম্পাদককে সম্মাননা প্রদান করেন অতিথি বৃন্দরা।

  • পুকুর থেকে মহিলার লাশ উত্তোলন-

    পুকুর থেকে মহিলার লাশ উত্তোলন-

    সাংবাদিক জিহাদ পীরগাছা, রংপুর।

    পীরগাছা উপজেলার তাম্বূল পুর ইউনিয়নের রমজান আলী মুন্সী কলেজ এর পুর্ব পরশে মাইক ওয়ালা রফিকুল ইসলাম এর স্ত্রী মাসুদা বেগমের লাশ অদ্য সকাল ৯ ঘটিকার দিকে মরহুমার ছোট মেয়ে বাড়ির পাশের পুকুরে ভেসে থাকতে দেখে চিল্লাচিল্লি শুরু করে। এর পর আশেপাশের লোক জন এসে পীরগাছা থানায় সংবাদ দেয়। সংবাদ পেয়ে পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহোদয় পুলিশ ফোর্সসহ এসে পুকুর থেকে লাশ উত্তোলন করে সুরতহাল রিপোর্টের পর লাশের ময়না তদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানোর উদেশ্য পাঠিয়ে দেন। এসময় তাম্বুলপুর ইউনিয়ন এর চেয়ারম্যান মোঃ বজলুর রশিদ মুকুলসহ স্থানীয় কয়েক জন মেম্বার ও গন্যমাণ্য ব্যক্তি ছাড়াও এলাকার শতশত নারীপুরুষ উপস্থিত ছিলেন।
    খোজখবর নি জানাজায় মরহুমার স্বামী রফিকুল ইসলামের প্রথম স্ত্রী মাসুদা ওদুই সন্তান থাকার পরেও দিতীয় বিবাহ করে সংসার চালাতেন। সাইকেল রিক্সার মেকারী ও মাইক ভাড়া দিয়ে সামান্য আয়ে দুই স্ত্রীর ভরন পোষন চালাতে গিয়ে প্রতিনিয়ত বড় স্ত্রীর সাথে ঝগরাঝাটি ও ডাংমার করতেন। এরপরেও বড় স্ত্রীর খরচ চালাতেন না। এমতাবস্থায় শুধু সন্তানের দিকে চেয়ে মানুষের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে সামীর সংসারে পরেছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হলো না।
    আরো খোজখবর নিয়ে জানাজায় মরহুমার স্বামী রফিকুল ও তার বড় ভাই শফিকুল গতকাল সন্ধ্যা থেকে পলাতোক।লোকজন বলাবলি করছে মাসদাকে মেরে ফেলে ধামাচাপা দেয়ার জন্য লাশ পুকুরে ফেলে রাখা হয়েছে। কেহ কেহ রফিকুল কে সেফ করতে মিরকী রোগের কথাও বলছেন। যেটাযাই হোক এলাকাবাসী প্রশাসনের কাছে সঠিক বিচার দাবী করেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মামলার প্রস্তুতি চলছে।কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

  • পশু কুরবানী করার সময় যে সব দোয়া পড়া হয়।

    পশু কুরবানী করার সময় যে সব দোয়া পড়া হয়।

    এইচ এম শাহাবউদ্দিন তাওহীদ রিপোর্ট।

    পশু কুরবানী করার সময় যে সব দোয়া পড়া হয়।

    إِنِّي وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ السَّمَوتِ وَالْأَرْضَ حَنِيفًا وَ مَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ * إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَلَمِينَ * لَا شَرِيكَ لَهُ وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا مِنَ الْمُسْلِمِينَ পশু কুরবানী করার পূর্বে দোয়াটি পাঠ করে পশুর ঘাড়ের নিকটতম বাহুর উপর নিজের ডান পা রেখে

    اللَّهُمَّ لَكَ وَ مِنْكَ بِسْمِ اللَّهِ اللَّهُ أَكْبَر
    দিয়ে দ্রুত জবেহ করুন। কুরবানী যদি নিজের পক্ষ থেকে হয় তাহলে জবেহ করার পর এই দোয়া পাঠ করুন।

    اللَّهُمَّ تَقَبَّلْ مِنِّي كَمَا تَقَبَّلْتَ مِنْ حَبِيْبِكَ مُحَمَّدٍ وَخَلِيْلِكَ إِبْرَاهِيمَ عَلَيْهِ الصَّلُوةُ وَالسَّلَامُ
    وَحَبِيْبِكَ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّم

    আর যদি অন্য কারো পক্ষ থেকে পশু কুরবানী করা হয় তবে জবেহকারী বক্তি তাঁর শব্দের স্থলে ওর বলে যার কুরবানী তার নাম উচ্চারণ করবেন।

  • কোরবানির ইতিহাস ও ঈব্রাহিম (আ:) এর স্বপ্ন বাস্তবায়নসহ মহান রবের সন্তুষ্ট লাভ করা

    কোরবানির ইতিহাস ও ঈব্রাহিম (আ:) এর স্বপ্ন বাস্তবায়নসহ মহান রবের সন্তুষ্ট লাভ করা

    এইচ এম শাহাবউদ্দিন তাওহীদ কক্সবাজার।

    কোরবানির ইতিহাস ও কোরবানি ইবাদত হিসেবে স্বীকৃত হওয়া যদিও হজরত আদম (আ.) এর যুগ থেকেই সাব্যস্ত। কিন্তু এর বিশেষ তাৎপর্য হজরত ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ (আ.) এর ঘটনা থেকে শুরু হয়েছে। প্রভু প্রেমের বিরল এ ঘটনার স্মরণার্থেই শরীয়তে মুহাম্মদিয়ায় কোরবানিকে ওয়াজিব সাব্যস্ত করা হয়েছে।
    পৃথিবীর ইতিহাসে এ ঘটনা নজিরবিহীন ও শিক্ষণীয়। পবিত্র কোরআনে সূরা সাফ্ফাতে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। ইসলামের দৃষ্টিতে কোরবানির বিষয়টি বোঝার একমাত্র উপায় শিক্ষণীয় ঘটনা হজরত ইব্রাহিম (আ.) এর ঘটনা। কোরআন ও নির্ভরযোগ্য রেওয়ায়েত দ্বারা ঐতিহাসিক এ ঘটনার যতটুকু অংশ সাব্যস্ত তা বর্ণনা করা হচ্ছে।

    #হকের দাওয়াত:

    নবীদের পিতা হজরত ইব্রাহিম (আ.) যখন নবিওয়ালা দায়িত্ব ও হকের দাওয়াত শুরু করলেন তখন সর্ব প্রথম স্বীয় পিতা আযরকে অত্যন্ত আদবের সঙ্গে মূর্তি পূজা বর্জনের দাওয়াত দিলেন। কিন্তু তিনি এতো বেশিই ক্ষিপ্ত হয়ে গেলেন যে, অকথ্য নির্যাতন করা শুরু করে এবং এক পর্যায়ে ঘর থেকে বের করে দেয়। পরিশেষে ফলাফল এই দাড়াঁয় নিজের পূর্ব পুরুষের প্রতিমা পূজা ছেড়ে দেয়া এবং এক অদ্বিতীয় মহান আল্লাহর পথে আহ্বান করার কারণে আপন পিতাসহ সম্প্রদায়ের সবাই হজরত ইব্রাহিম (আ.) এর বিরোধিতা করা শুরু করলো।

    #স্বজাতির শত্রুতা ও আগুনে নিক্ষেপ করা:

    জালেমরা এই মহান ব্যক্তিকে আগুনে নিক্ষেপ করে জালানোর জন্য এক হয়ে যায়। তারা যখন হজরত ইব্রাহিম (আ.)-কে আগুনে নিক্ষেপ করছিল তখন হজরত জিবরাঈল আমিন আসলেন এবং বললেন যে, আমার সাহায্যের প্রয়োজন হলে আমি উপস্থিত তখন ইব্রাহিম (আ.) বললেন সাহায্য যদি আপনার পক্ষ থেকে হয় তাহলে প্রয়োজন নেই। যেই মহান সত্তার জন্য আমার এই অবস্থা হচ্ছে তিনি ‘আলিম, খাবির’। তিনি আমাকে দেখছেন তিনি আমার জন্য যা কিছু করবেন তাতে আমি সন্তুষ্ট আছি।

    #ইরাক থেকে হিজরত:

    আল্লাহ তায়ালা আগুনকে بردا وسلاما (অর্থাৎ ঠান্ডা ও আরামদায়ক) হওয়ার নির্দেশ দিলেন। মুহূর্তে আকাশচুম্বি অগ্নিস্ফুলিঙ্গ হজরত ইব্রাহিম (আ.) এর জন্য বাগানে পরিণত হলো।

    হজরত ইব্রাহিম (আ.) এর প্রকাশ্য মুজিযা দেখে ঈমান আনার পরিবর্তে শত্রুতা আরো প্রকট হলো। মা-বাবা, বংশ এবং মাতৃভূমি আল্লাহ তায়ালা থেকে বিমুখ হওয়ার কারণে সব কিছুকে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। তখন তিনি বললেন انى ذاهب الى ربى سيهدين (আমি আমার রবের দিকে প্রত্যাবর্তনশীল তিনি আমাকে তাঁর প্রিয় জায়গার পথ দেখাবেন)। উদ্দেশ্য হলো আমি এমন এক জায়গায় যাব যেখানে প্রতিপালকের আহকাম সমূহ নির্দ্বিধায় পালন করা যাবে।

    হজরত লূত (আ.) যিনি তাঁর ওপর ঈমান এনেছেন তাকে নিয়ে স্বীয় মাতৃভূমি ইরাক ত্যাগ করলেন এবং ফিলিস্তিনের কেনয়ানে অবস্থান করলেন। ছিয়াশি বৎসর বয়সে নিজের মাতৃভূমি, মা-বাবা পরিবার-পরিজন সবাইকে আল্লাহ তায়ালার জন্য ছেড়ে দিয়ে অপরিচিত জায়গায় বন্ধু-বান্ধব ও সাহায্যকারী ছাড়া বসবাস করতে লাগলেন।

    #সন্তানের জন্য প্রার্থনা:

    সন্তান মহান আল্লাহর সেরা নেয়ামত। সন্তানের মাধ্যমেই বংশ পরম্পরা যুগ যুগ জিইয়ে থাকে পৃথিবীর বুকে। ধরণীর মাঝে আল্লাহর একাত্ম কায়েম রাখার মাধ্যমও বটে। হজরত ইব্রাহিম (আ.) এ দুরবস্থার সময় মহান আল্লাহর কাছে এই দোয়া করলেন,

    رب هب لى من الصالحين
    বঙ্গানুবাদ : ‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে নেককার সন্তান দান করুন।’ মহান আল্লাহ তার দোয়া কবুল করেন।

    ইসমাঈল (আ.) এর জন্মের সুসংবাদ:
    মহান আল্লাহ হজরত ইব্রাহিম (আ.)-কে সন্তানের সুসংবাদ এই শব্দের মাধ্যমে দেন,

    فبشرناه بغلم حليم
    বঙ্গানুবাদ : ‘আমি ইব্রাহিমকে সহনশীল সন্তানের সুসংবাদ দিলাম।’

    কোরআনের ইশারা ও হাদিসের দিক নির্দেশনা তার সাক্ষী যে غلم حليم দ্বারা হজরত ইসমাঈল (আ.) উদ্দেশ্য। হজরত ইসমাঈল (আ.) এর ব্যাপারে غلم حليم বলে তার বিশেষ গুণের দিকে ইশারা করা হয়েছে, কোরবানির সময় যার যথার্থতা প্রকাশ পেয়েছে। কেননা حليم অর্থ সহনশীল। যে কঠিন মসিবতের সময় বিচলিত হয় না।

    আহলে কিতাবের বর্ণনা অনুযায়ী ছিয়াশি বৎসর বয়সে হজরত ইসমাঈল (আ.) এর জন্ম হয়। আর এ সময় হজরত ইসমাঈল (আ.)-ই হজরত ইব্রাহিম (আ.) এর প্রথম ও একমাত্র সন্তান ছিলেন। আহলে কিতাবের জবাইয়ের বর্ণনায় এসেছে, যে সন্তানকে জবাইয়ের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিল সে একক ছিল। তাহলে তিনি শুধু মাত্র হজরত ইসমাঈল (আ.)-ই। আহলে কিতাবের বর্ণনা অনুযায়ীই নিরানব্বই বৎসর বয়সে দ্বিতীয় সন্তান হজরত ইসহাক (আ.) এর জন্ম হয়।

    #ভালবাসার নির্মম পরীক্ষা:

    হজরত ইব্রাহিম (আ.) এর বৃদ্ধ বয়সে অনেক দোয়া ও আকাক্সক্ষার পরে জন্ম নেয়া এক মাত্র সন্তান হজরত ইসমাঈল (আ.)। কে জানত! বহু সাধনা ও আকাক্সক্ষার পর জন্ম নেয়া এ সন্তান হজরত ইব্রাহিম (আ:) এর জন্য সবচেয়ে বড় পরীক্ষার কারণ হবে?

    প্রথম পরীক্ষা এই ছিল, মহান আল্লাহ হজরত ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ (আ.)-কে হুকুম দিলেন, আদরের সন্তান ও সম্মানিত স্ত্রী হাজেরা (আ.)-কে নিয়ে শাম থেকে হিজরত করে হিজাযের মধ্যবর্তি স্থান যা বালুময় ছিল যেখানে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত কোনো মানুষ, প্রাণী এমনকি গাছপালাও ছিল না সেখানে তাদের আবাস বানানোর। মহান আল্লাহর প্রিয় বন্ধু হজরত ইব্রাহিম (আ.) বিন্দু মাত্র ভাবনা-চিন্তা ছাড়াই মহান আল্লাহর নির্দেশ পালন করলেন। প্রিয় সন্তান ও প্রেয়সী হজরত হাজেরা (আ.)-কে ধ্বংসাত্মক মরুস্থানে রেখে যান। যা এক সময় তাদের মাধ্যমে ‘মক্কা মুকারমা’ ও ‘উম্মুল কোরা’ হিসেবে আবাদ হয়।

    শুধু এটুকুই নয়। এবার হুকুম আসল আরো কঠিন মা ও ছেলেকে এখানে রেখে হজরত ইব্রাহিম (আ.)-কে শাম দেশে চলে যাওয়ার। মহান আল্লাহর বন্ধু ইব্রাহিম (আ.) এর ত্যাগ লক্ষ্য করুন, যে স্থানে এ হুকুম পান সে স্থান থেকেই শাম দেশে রওয়ানা শুরু করেন। এতটুকু সময়ও নষ্ট করেননি যে, হজরত হাজেরা (আ.) এর পাশে বসে একটু সান্তনা দেবেন। এ কথা বলে যাবেন যে, মহান আল্লাহর হুকুমেই এ বিচ্ছেদ।

    যখন হজরত হাজেরা (আ.) দেখলেন হজরত ইব্রাহিম (আ.) ক্রমে দূরে চলে যাচ্ছেন, তখন তিনি সজোরে চিৎকার দিয়ে বললেন, আমাদেরকে এ ভয়ঙ্কর জঙ্গলে একা রেখে কোথায় চলে যাচ্ছেন? এ কথা শুনেও মহান আল্লাহর অকৃত্রিম বন্ধু ফিরে তাকাননি এক মুহূর্তের জন্য।

    অত:পর হজরত হাজেরা (আ.) এর মনে হলো, এ মহান ব্যক্তি মহান আল্লাহর হুকুম ছাড়া আমাদেরকে এ জঙ্গলে একা ফেলে চলে যেতে পারেন না। এবার হজরত হাজেরা (আ.) প্রশ্ন করলেন: মহান আল্লাহ কি আপনাকে এখান থেকে চলে যাওয়ার হুকুম দিয়েছেন?

    মহান আল্লাহর রাহে স্ববর্স বিলিয়ে দেয়া বন্ধু জবাব দিলেন,
    : হ্যাঁ।

    একথা শুনে মহিয়সী নারী হজরত হাজেরা (আ.) বললেন, যদি মহান আল্লাহর হুকুমে চলে যান তাহলে মহান রব আমাদের কোনো ক্ষতি করবেন না।

    এখন এ নির্জন মরু প্রান্তর যেখানে খাবার- পানি বলতে কিছুই নেই। প্রচন্ড গরমের উত্তাপ। সব ধরনের কষ্টের উপকরণ এখানে কিন্তু কে জানত, এ মরু প্রান্তর এক সময় পৃথিবীর সবচেয়ে দামী স্থানে পরিণত হবে? এ ঘটনা অনেক দীর্ঘ। কিভাবে হজরত হাজেরা (আ.) ও তার সন্তান এ নির্জন প্রান্তরে জীবন বাঁচায়? এ আলোচনায় না গিয়ে আমরা কোরবানির বিষয়ে আলোচনা শুরু করছি।

    যখন বালক ইসমাঈল বাবার সঙ্গে চলা-ফেরা করার ও বাবাকে সাহায্য করার উপযুক্ত হলো তখন ইব্রাহিম (আ.) তার ছেলেকে বলেন, হে আমার প্রিয় ছেলে! আমি স্বপ্নে দেখেছি, আমি তোমাকে জবাই করছি। এখন বলো, এ বিষয়ে তোমার কি মত? এ কথার উদ্দেশ্য ছিল যে, নবীদের স্বপ্নও ওহির মতো হয়। সুতরাং স্বপ্নে জবাই করা দেখা জবাইয়ের হুকুমের মতোই। এখন তুমি বলো, মহান আল্লাহর এ হুকুম পালনে তুমি কি প্রস্তুত?

    মহান আল্লাহর বন্ধু হজরত ইব্রাহিম (আ.) এর জন্য মহান আল্লাহর নির্দেশের পর কারো সঙ্গে পরামর্শ করার প্রয়োজন ছিল না। মহান আল্লাহর হুকুম পরামর্শের ওপর মওকুফও না কিন্তু এখানে ছেলের সঙ্গে পরামর্শ করার দ্বারা উদ্দেশ্য হলো,

    প্রথমত: ছেলের ইচ্ছাশক্তি ও মহান আল্লাহর আনুগত্যের পরীক্ষা হয়ে যাবে।

    দ্বিতীয়ত: যদি সে আনুগত্য বেছে নেয় তাহলে সে সওয়াবের হকদার হবে। কেননা সওয়াবের ভিত্তি ইচ্ছা ও নিয়তের ওপর।

    তৃতীয়ত: জবাই করার সময় মানবিক ও পিতৃ স্নেহের দাবী হলো দুর্ভাবনার আশঙ্কা কোনোভাবে যেন সান্তনা হয়ে যায়।

    #রুহুল বয়ান
    উপর্যুক্ত আয়াতে এ শব্দগুলো বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যখন সে বাবার সঙ্গে চলার উপযুক্ত হলো। এ আয়াতে এ দিকে ইশারা পাওয়া যায় যে, এই সন্তান যাকে জবাই করার হুকুম দেয়া হচ্ছে, এমন নয় যে সে অবুঝ বরং সে চলাফেরা করতে পারে। বাবার কাজে সাহায্য-সহযোগিতাও করতে পারে। ঐতিহাসিক রেওয়াতের বর্ণনায় পাওয়া যায়, এ সময় হজরত ইসমাঈল (আ.) এর বয়স হয়েছিল নয় বছর।

    #রুহুল বয়ান
    ওই প্রেক্ষাপটে হজরত ইসমাঈল (আ.) কী পরিমাণ ধৈর্য ধারণ করেছিলেন, তা চিন্তা করাও দুস্কর।
    সম্মানিত বাবা মহান আল্লাহর বন্ধু হজরত ইব্রাহিম (আ.) ছেলের সঙ্গে পরামর্শ করেছেন। ছেলে বাবার স্বপ্ন শুনে বলেন, হে আমার বাবা! আপনাকে যে কাজের আদেশ দেয়া হয়েছে আপনি সে কাজ করেন। ইনশাল্লাহ! আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন।

    এ ঘটনায় যেমনিভাবে হজরত ইব্রাহিম (আ.) এর জন্য বয়োবৃদ্ধে জন্ম নেয়া সন্তান কোরবানির মতো মারাত্মক পরীক্ষা অন্যদিকে ছেলে মহান আল্লাহর আনুগত্যে নিজের জীবন উৎসর্গ করাও ছোট কোনো বিষয় নয় বরং মহান আল্লাহ এ পুরো পরিবারকে তাঁর অগণন পরীক্ষার জন্য বানিয়েছিলেন। এসব ঘটনাই এর প্রমাণ।

    এখানে লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো, হজরত ইসমাঈল (আ.) এর আনুগত্য তো ঈর্ষণীয় পাশাপাশি হজরত ইসমাঈল (আ.) এর শব্দচয়ন শিক্ষণীয়। তিনি নিজের অদম্য ইচ্ছাশক্তির ওপর ভরসা করেননি বরং মহান আল্লাহর ওপর ন্যস্ত করেছেন নিজের সর্বস্ব। হজরত ইসমাঈল (আ.) মহান আল্লাহর আনুগত্য প্রকাশ করার সময় বলেন, ইনশাআল্লাহ! তিনি এটাও বলেননি আমি ধৈর্যধারণ করবো বরং তিনি বলেছেন, আমাকে ধৈর্যশীলদের মাঝে পাবেন যা বিনয়ের সর্বোচ্চ চূড়া।

    ধৈর্য ও ধীরতার গুণ শুধু মাত্র আমার পূর্ণতা নয় বরং মহান আল্লাহর অগণন বান্দা ধৈর্যধারণকারী ছিলেন। আমিও তাদের অন্তর্গত। নিজেকে এমন সমর্পণ ও বিনয়ের বরকতে হিমালয়ের মতো মহা বিপদের ধাপগুলো পার হয়েছেন অত্যন্ত নিরাপদে।

  • প্রশ্ন প্রচলিত জমি বন্দক জায়েজ হবে?- মাওলানা হাফেজ দিদার বিন হাসান সাহেব।

    প্রশ্ন প্রচলিত জমি বন্দক জায়েজ হবে?- মাওলানা হাফেজ দিদার বিন হাসান সাহেব।

    দিদার বিন হাসান,খতিব ফলিয়াপাড়া জামে মসজিদ।

    উত্তর

    وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

    بسم الله الرحمن الرحيم

    উক্ত চুক্তিটি জায়েজ হবার দু’টি সূরত রয়েছে। এ দু’টি সূরত অনুসরণ করলে এ চুক্তি জায়েজ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

    ১ম সূরত

    যিনি জমীন নিবেন তিনি এ হিসেবে চুক্তি করবেন যে, তিনি জমিটি ভাড়া নিচ্ছেন। নামমাত্র কিছু মূল্য মাসিক ভাড়া হিসেবে নির্দিষ্ট করে নিবে। যেমন ৫০ টাকা বা ১০০ টাকা। আর অগ্রিম ভাড়া হিসেবে প্রদান করবে ১/২ লাখ টাকা।

    তারপর যেদিন জমিনটি ফেরত নিতে চাইবে, সেদিন আগের নির্ধারণকৃত নামমাত্র ভাড়ার টাকা রেখে বাকি টাকা ফেরত দিয়ে দেবে জমিনটি ভোগদখলকারী তথা জমির ভাড়াটিয়াকে।

    যেমন-

    আব্দুল্লাহ এর জমি আছে। কিন্তু টাকা নেই। তার টাকা প্রয়োজন। আর আব্দুর রহমানের টাকা আছে। কিন্তু জমি নেই। তার জমি প্রয়োজন। আব্দুল্লাহ তার জমিটি আব্দুর রহমানের কাছে দিয়ে ৫ লাখ টাকা নিতে চাচ্ছে। আর আব্দুর রহমান টাকা প্রদান করে জমিটির ফসল নিতে চাচ্ছে।

    এমতাবস্থায় আব্দুল্লাহ তার জমিটি আব্দুর রহমানের কাছে ভাড়া দিবে। মাসিক ভাড়া নির্দিষ্ট করে নিল কথার কথা ৫০ টাকা। যতদিন আব্দুর রহমান জমিটি রাখবে ততদিন মাসিক ৫০ টাকা করে ভাড়া প্রদান করবে। মাসিক ভাড়া অগ্রিম হিসেবে আব্দুর রহমান ৫ লাখ আব্দুল্লাহকে দিয়ে দিবে। ফলে জমিটির ভাড়াটিয়া হিসেবে আব্দুর রহমান ভোগদখল করতে থাকবে। আর আব্দুল্লাহ টাকাটি খরচ করতে পারবে।

    তারপর যেদিন আব্দুল্লাহ তার জমিটি ফেরত নিতে চাইবে, সেদিন বিগত দিনের মাসিক ভাড়া বাদ দিয়ে বাকি টাকা প্রদান করে জমিটি ফেরত নিয়ে নেবে। কথার কথা যদি ৫ মাস পর ফেরত নিতে চায়, তাহলে ৫ মাসের ভাড়া ২৫০ টাকা রেখে বাকি এক লাখ নিরান্নব্বই হাজার সাতশত পঞ্চাশ টাকা প্রদান করে আব্দুল্লাহ সাহেব তার জমিটি ফেরত নিয়ে নিবেন। {জাদীদ ফিক্বহী মাসায়েল-১/১৪৭-১৪৮, মালে হারাম আওর উসকে মাসারেফ ওয়া আহকাম-৮৫}

    وَأَمَّا زَكَاةُ الْأُجْرَةِ الْمُعَجَّلَةِ عَنْ سِنِينَ فِي الْإِجَارَةِ الطَّوِيلَةِ الَّتِي يَفْعَلُهَا بَعْضُ النَّاسِ عُقُودًا وَيَشْتَرِطُونَ الْخِيَارَ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ فِي رَأْسِ كُلِّ شَهْرٍ فَتَجِبُ عَلَى الْآجِرِ لِأَنَّهُ مَلَكَهَا بِالْقَبْضِ وَعِنْدَ الِانْفِسَاخِ لَا يَجِبُ عَلَيْهِ رَدُّ عَيْنِ الْمَقْبُوضِ بَلْ قَدْرُهُ فَكَانَ كَدَيْنٍ لَحِقَهُ بَعْدَ الْحَوْلِ (فتح القدير- كتاب الزكاة، 2/174)

    ২য় সূরত

    দু’টি চুক্তি সম্পাদন করবে। প্রথমে ক্রয় বিক্রয় চুক্তি। তারপর আলাদা আরেকটি চুক্তি নামায় যেদিন টাকা পরিশোধ করতে পারবে সেদিন জমিটি প্রথম জমির মালিক ক্রয় নিয়ে নিয়ে যাবে আর বর্তমান মালিক তা বিক্রি করে দিবে মর্মে চুক্তি সম্পাদিত করবে।

    যেমন-

    আব্দুল্লাহ এর জমি আছে। কিন্তু টাকা নেই। তার টাকা প্রয়োজন। আর আব্দুর রহমানের টাকা আছে। কিন্তু জমি নেই। তার জমি প্রয়োজন। আব্দুল্লাহ তার জমিটি আব্দুর রহমানের কাছে দিয়ে ৫ লাখ টাকা নিতে চাচ্ছে। আর আব্দুর রহমান টাকা প্রদান করে জমিটির ফসল নিতে চাচ্ছে।

    এমতাবস্থায় আব্দুল্লাহ তার জমিটি ৫ লাখ টাকায় আব্দুর রহমানের কাছে বিক্রি করে টাকা গ্রহণ করে নিবে। এভাবে আব্দুল্লাহ টাকার মালিক ও আব্দুর রহমান জমিটির ভোগ দখলের মালিক হয়ে যাবে।

    তারপর ভিন্ন আরেকটি চুক্তি সম্পাদন করবে। যাতে লিখবে যে, যেদিন আব্দুল্লাহ ৫ লাখ টাকা দিতে পারবে, সেদিন আব্দুর রহমান জমিটি আব্দুল্লাহের কাছে ৫ লাখ টাকা দিয়ে বিক্রি করে দিবে।

    এভাবে ভিন্ন দু’টি চুক্তি সম্পাদিত করলে টাকা খরচ করা এবং জমিটি ভোগ দখলের মাঝে অবৈধতার কোন কিছুই বাকি থাকবে না।

    لو ذكرا البيع بلا شرط ثم ذكرا الشرط على وجه العقد جاز البيع ولزم الوفاء بالوعد، إذ المواعيد قد تكون لازمة فيجعل لازما لحاجة الناس تبايعا بلا ذكر شرط الوفاء ثم شرطاه يكون بيع الوفاء؛ (رد المحتار، كتاب البيوع، مطلب فى البيع بشرط فاسد-7/281، 547، البحر الرائق، كتاب البيوع، باب خيار الشرط-6/8)

     

    والله اعلم بالصواب

  • সোনাইছড়ি আল-ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসায় ২০২৪ সালের প্রথম অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়

    সোনাইছড়ি আল-ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসায় ২০২৪ সালের প্রথম অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়

    মাওলানা আবু সুফিয়ান, সোনাইছড়ি নাইক্ষ্যংছড়ি

    পার্বত্য বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার স্বনামধন্য দ্বীনি শিক্ষা কেন্দ্র সোনাইছড়ি আল-ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসায় ২০২৪ সালের প্রথম অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

    উক্ত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জনাব নুরুল আজিম চৌধুরী- সভাপতি অত্র মাদ্রাসা, অত্র মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা হেলাল উদ্দিন জাফরি সাহেবের সঞ্চালনায় ৯ম শ্রেণির ছাত্র মাসউদ এর কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
    অত্র অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন –
    জনাব বশির আহমদ – উপদেষ্টা সভাপতি অত্র মাদ্রাসা।
    জনাব নুরুল আলম মেম্বার -সাধারণ সম্পাদক অত্র মাদ্রাসা, জনাব আব্দুল করিম সাহেব – সমাজ সরদার বৈদ্যরছড়া।

    জনাব আব্দুল আজিজ -ক্যাশিয়ার বৈদ্যরছড়া কেন্দ্রীয় জামেমসজিদ, জনাব মুফিজ সওদাগর -সাধারণ সম্পাদক বৈদ্যরছড়া কেন্দ্রীয় জামেমসজিদ।
    জনাব আবছার আহমদ- শিক্ষার্থী অভিভাবক সহ আরো অনেক অভিভাবক গন।
    (অনুষ্ঠানটি সাজানোর জন্য সহযোগিতা করেছেন আমার সকল সহযোদ্ধা গন) বিশেষ করে আমি আমার উপস্থিত সকল অভিভাবক গনকে ধন্যবাদ জানালেন পরিচালক, কারণ বছরের শুরুতে এভাবেই ছাড়া দিবেন আমি কল্পনা করি নাই বলও উল্লেখ করেন তিনি। এছাড়াও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও অভিভাবক বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন

    পরিশেষে প্রিয়দের কাছে দোয়ার আরজ প্রতিষ্ঠানের উন্নতির জন্য।