জেলা প্রশাসনের কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে গত ৫ বছরে কুড়িগ্রামে ১৫ বছরের নিচে বাল্যবিবাহের হার কমেছে ১১ শতাংশ। ২০১৭ সালে কুড়িগ্রামে ১৫ বছরের নিচে বাল্যবিবাহের হার ছিল ১৭% এবং ১৮ বছরের নিচে বাল্যবিবাহের হার ছিল ৬৫%। ২০২১ এই হার নেমে এসেছে যথাক্রমে ৬% এবং ৫১%। শনিবার কুড়িগ্রামে শেখ রাসেল অডিটরিয়ামে জেলা পর্যায়ে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-এর বিল্ডিং বেটার ফিউচার ফর গার্লস (বিবিএফজি) প্রকল্পের জেলা পর্যায়ে প্রকল্প সমাপনী কর্মশালায় কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম এমন তথ্য তুলে ধরেন।
বিবিএফজি প্রজেক্ট কর্তৃক পরিচালিত জরিপে এই তথ্য পাওয়া যায়। কুড়িগ্রাম জেলায় জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে বাল্যবিবাহ নিরোধ কমিটি, স্থানীয় সরকার, কাজী, ঘটক, ইমাম এবং পুরোহিত সম্মলিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ফলশ্রুতিতে জেলাটিতে বাল্যবিবাহের হার কমেছে। বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে বাল্যবিবাহ মুক্ত করার স্বপ্ন পূরণে জেলা প্রশাসনের কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন একটি শক্তিশালী হাতিয়ার, কুড়িগ্রামের সাফল্য এই লক্ষ্য অর্জনে হতে পারে সকল জেলার জন্য আদর্শ। এই লক্ষ্য অর্জনে প্রয়োজন আরো দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা এবং সমন্বিত উদ্যোগ বক্তারা এই সকল বিষয়ে বলেন।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক জিলুফা সুলতানা, ফুলবাড়ী উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমন দাস, রাজারহাট উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূরে তাসনিম, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাশেদুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুশান্ত চন্দ্র রায়, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-এর পরিচালক- গার্লস রাইট্স হাব কাশফিয়া ফিরোজ এবংআরডিআরএস বাংলাদেশ এর হেড অব এডমিনিসন্ট্রেশন এন্ড জেনারেল সার্ভিস নজরুল গনি। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ঘোষণা অনুসারে কুড়িগ্রাম জেলাকে বাল্যবিবাহ মুক্ত করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিট এর গাইড লাইন অনুযায়ী বিবিএফজি প্রকল্পের মাধ্যমে কুড়িগ্রাম জেলার ৩ টি উপজেলা, ৭৩টি ইউনিয়ন পরিষদ ও ৩টি পৌরসভা ইতিমধ্যে প্রাথমিকভাবে বাল্যবিবাহ মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশে অবস্থিত সুইডেন দূতাবাসের সহায়তায় “বিল্ডিং বেটারফিউচার ফর গার্লস (বিবিএফজি)চ্ প্রকল্পটি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এবং স্থানীয় সহযোগী সংস্থা আরডিএস বাংলাদেশ এর মাধ্যমে ২০১৭ সাল থেকে সমগ্র কুড়িগ্রাম জেলায় কাজ করে আসছে এবং ২০২২ সালের ৩১ মার্চ এই প্রকল্পটি সমাপ্ত হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিবিএফজি প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোঃ নজরুল ইসলাম চৌধুরী। বাল্যবিবাহের বর্তমান পরিস্থিতি, বিবিএফজি প্রকল্পের উল্লেখ্যযোগ্য অর্জন এবং সফলতার তথ্য তুলে ধরেন প্রকল্প সমন্বয়কারী আবদুল্লাহ আল মামুন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ, শিক্ষক, যুবক, সাংবাদিক, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান ও মেম্বার, ইমাম ঘটক, কাজি ও পরোহিত, মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
Leave a Reply