রবিবার , ২৯শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১৪ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - শীতকাল || ২৭শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

কক্সবাজার সদরে পিএফজির উদ্যোগে ‘নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে নাগরিকদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত।

প্রকাশিত হয়েছে-

ওমর ফারুক উখিয়া কক্সবাজার।

সংঘাত নয়, ঐক্যের বাংলাদেশ চাই’ এ স্লোগানকে সামনে রেখে আজ ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ বৃহস্পতিবার কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএফজি সদস্যদের উদ্যোগে ও দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের সার্বিক সহযোগিতায় ‘নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে নাগরিকদের করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

অদ্য বিকাল ০৩ টায় কক্সবাজার মডেল হাই স্কুলের অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয় অনুষ্ঠানের সভাপতি ও কক্সবাজার পিস এ্যাম্বাসেডর ডিস্ট্রিক্ট নেটওয়ার্ক-পিএডিএন’র প্রধান উপদেষ্টা মো. মঞ্জুর আলমের স্বাগত বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে। এরপর নারীর প্রতি সহিংসতার বর্তমান অবস্থা, কারণ, ধরণ ও প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন কক্সবাজার মডেল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক কে এম রমজান আলী। তারপর নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আইনগত দিকগুলো নিয়ে বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল- ২ এর স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর ও কক্সবাজার সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ’র যুগ্ম আহ্বায়ক এডভোকেট সৈয়দ মোঃ রেজাউর রহমান রেজা।

এসময় তিনি বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা বর্তমান সময়ের সবচেয়ে মারাত্মক সামাজিক সমস্যা। এ সমস্যা নিরসনে রাষ্ট্র বিভিন্ন আইনগত সহায়তা নারীদেরকে দিচ্ছে। তারপরও নারীর প্রতি সহিংসতা থেমে নেই। এমতাবস্থায় সরকারের পাশাপাশি নাগরিকদেরকেও এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। পরবর্তীতে সহিংসতা প্রতিরোধে পুলিশি সহায়তার বিষয়ে কথা বলে কক্সবাজার জর্জ কোর্টের পুলিশ পরিদর্শক মো. সারোয়ার আলম। এসময় তিনি সহিংসতা বন্ধে বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন সেবার তথ্য উপস্থিত সকলের সামনে তুলে ধরেন।

সভায় আগত অতিথিবৃন্দের মধ্যে কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগের সদস্য আয়েশা সিরাজ, কক্সবাজার জেলা মহিলা লীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট হেলেনাজ তাহেরা, কক্সবাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাসুদা মোর্শেদ আইভী, বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমীর প্রদান শিক্ষক ছৈয়দ করিম, সাংবাদিক স.ম.ইকবাল বাহার চৌধুরী, জোসনা ইকবাল, জাফর আলম দিদার, বুলবুল ই জান্নাত প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এসময় বক্তারা বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা বা নির্যাতন হল বাবা-মা, অন্য কোন অভিভাবক, বন্ধু বান্ধব, সহপাঠী বা অন্য কারো দ্বারা কোন নারীর প্রতি শারীরিক, যৌন বা মানসিক দুর্ব্যবহার করা বা নারীকে অবহেলা করা। আর বর্তমান সময়ে আমাদের অতি আদরের মেয়ে সন্তানদের বা মা-বোনদের উপর এ ধরণের নিপীড়ন এত পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে যে, তা আর কোন ভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছেনা। এমতাবস্থায় পরিবার ও রাষ্ট্রের পাশাপাশি সমাজের সচেতন মহল নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ প্রতিরোধে এগিয়ে না আসলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কখনোই আলোর মুখ দেখবেনা। তারা অন্ধকারেই থেকে যাবে।

আরো বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিহত করার ক্ষেত্রে নারীদের পাশাপাশি পুরুষদের ও এগিয়ে আসতে হবে। প্রেম বা বন্ধুত্বের নামে কেউ যাতে ধর্ষনের মত ঘটনা ঘটাতে না পারে সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।সভার শেষ পর্যায়ে এসে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন কক্সবাজার জেলার শিক্ষা অফিসার মো. নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যেন আজ নারী নির্যাতনকারী ও ধর্ষকের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছ। শহরে, গ্রামে, পাহাড়ে, সমতলে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে নৃশংস নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন শিশু এবং নারী। এ অবস্থাকে আর সহ্য করা যাচ্ছেনা। এপরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে। ধর্ষক ও নিপীড়ন কারীদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণ প্রতিহত করার জন্য প্রচলিত আইন ও ধর্মীয় নির্দেশনার বাস্তবায়ন পূর্ণ মাত্রায় ঘটাতে হবে। পরিশেষে অনুষ্ঠানের সভাপতি ও কক্সবাজার পিএডিএন’র প্রধান উপদেষ্টা মঞ্জুর আলমের সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।