বৃহস্পতিবার , ২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - শীতকাল || ২৪শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

কোরআন ও হাদীসের আলোকে ভাস্কর্য বা মূর্তি নির্মাণ হারাম: শীর্ষ ওলামায়ে কেরাম

প্রকাশিত হয়েছে-

মোঃ রাকিব,বিশেষ প্রতিনিধি

 

কোরআন এবং হাদিসের আলোকে মূর্তি বা ভাস্কর্য নির্মাণ হারাম বলে দাবি করেছেন দেশের শীর্ষ আলেম ও মুফতিরা। একইসঙ্গে তারা বলেছেন, এসব মূর্তি-ভাস্কর্য ভাঙার দায়িত্ব সরকারের।

গতকাল ৩ ডিসেম্বর ( বৃহস্পতিবার) বিকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে মূর্তি বা ভাস্কর্য স্থাপন নিয়ে জনমনের বিভ্রান্তি নিরসনে দেশের শীর্ষ আলেম ও মুফতিদের ফতোয়া প্রকাশ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ঐ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন দেশের শীর্ষ আলেমরা।

উক্ত সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে সরকারি উদ্যোগে ভাস্কর্য নির্মাণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এই ভাস্কর্য নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা চলছে।

কেউ বলছেন ভাস্কর্যের পক্ষে আবার কেউ বলছেন ভাস্কর্যের বিপক্ষে। এ নিয়ে পাল্টা পাল্টিভাবে জবাব চলছে। ফলে জাতীয়ভাবে এ সংক্রান্ত জিজ্ঞাসার সৃষ্টি হয়েছে।

ভাস্কর্য ও মূর্তির ব‍্যাপারে শরীয়াহ বিধান নিয়ে তৈরি করা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তি।
“ তবে সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, মূর্তি ও ভাস্কর্য জায়েজ-নাজায়েজ হালাল-হারাম সংক্রান্ত ইসলামী শরিয়তের বিধান বিষয়ক যে কেউ যেখান থেকে পারছেন মন্তব্য করছেন ও বক্তব্য দিচ্ছেন।

তাই এভাবে ইসলামী শরিয়তের বিধান বিষয়ে সম্যক অবগত না হয়ে যত্রতত্র এ জাতীয় বক্তব্য প্রদান করা দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় এবং একটি উদ্বেগজনক বিষয়। সেই বিষয়ের উপর লক্ষ রেখে দেশের শীর্ষ ওলামায়ে কেরাম ও মুফতি সাহেবদের পক্ষ থেকে ভাস্কর্য ও মূর্তি সংক্রান্ত বিতর্কিত বিষয়ে একটি সম্মিলিত ফতোয়া প্রস্তুত করা হয়েছে। ”

শীর্ষ ওলামায়ে কেরামের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে সম্মিলিত ফতোয়াটি উপস্থাপন করেন ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের প্রধান মুফতি এনামুল হক কাসেমী।

লিখিত ঐ সম্মিলিত ফতোয়ায় তিনি বলেন, “মানুষ বা অন্য যে কোনো প্রাণীর ভাস্কর্য আর মূর্তির মধ্যে শরীয়ত কর্তৃক নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে কোনো পার্থক্য নেই। পূজার জন্য তৈরি করা না হলেও তা সন্দেহাতীতভাবে নাজায়েজ ও স্পষ্ট হারাম কাজ এবং কঠিন আজাবযোগ্য গুনাহ। এ বিষয়ে ইসলামের সুস্পষ্ট বিধানকে পাশ কাটিয়ে গিয়ে প্রাণীর ভাস্কর্য আর মূর্তির মধ্যে বানোয়াট পার্থক্য তৈরি করে প্রাণীর ভাস্কর্যকে বৈধতা দিয়ে সত্য গোপন করা স্পষ্টভাবেই কোরআন ও সুন্নাহর বিধান অমান্য করার নামান্তর। ”

ঐ সংবাদ সম্মেলনে মুফতি এনামুল হক কাসেমী বলেন, “উপরন্তু যেখানে কোরআন ও সুন্নাহর সুস্পষ্ট বিধান রয়েছে সেখানে সেই বিধানের সামনে বিভিন্ন দেশের ভাস্কর্য ও মূর্তির উদাহরণ টেনে আনা ইসলামের একটি অকাট্য বিধানের অবজ্ঞা করার শামিল। কোন মুসলিম দেশের শাসক শরিয়ত বিরোধী কাজ করলে সেটা মুসলমান জাতির জন্য অনুসরণযোগ্য নয়। তাদের জন্য একমাত্র অনুসরণীয় হচ্ছে আল কোরআন, সুন্নাহ এবং ইসলামী শরীয়ত।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিট মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী, মুফতি আরশাদ রহমানি, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা এনামুল হক কাসেমী, মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, মাওলানা নুরুল ইসলামসহ প্রমুখ শীর্ষ আলেমগন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপিত সম্মিলিত ফতোয়ায় স্বাক্ষর করেন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত ৯৫ জন মুফতি ও মাওলানা সহ বিভিন্ন ওলামায়ে কেরাম।