
এইচ এম শাহাবউদ্দিন তাওহীদ।
গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তির মধ্যে বিভাজন রোধে মুখোমুখি রাজনীতির অশুভ সংস্কৃতি থেকে বের হতে হবে- পীর সাহেব চরমোনাই। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম, পীর সাহেব চরমোনাই আজ এক বিবৃতিতে বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিভেদ ও অনৈক্য থাকার কারণে পতিত ফ্যাসিবাদ ১৫ বছর স্টিমরোলার চালানোর সুযোগ পেয়েছে। ২০২৪এর নির্বাচনের আগ থেকে সবাই ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ধারাবাহিকতায় স্বৈরাচারকে উৎখাত করা গেছে। কিন্তু পতিত স্বৈরাচারের বিচার নিশ্চিত করা যায় নাই, রাষ্ট্র, সমাজ ও নীতিভাবনা থেকে ফ্যাসিজমের বিষবাস্প ও অবশিষ্টাংশ এখনো উৎখাত করা যায় নাই। প্রতিবেশি আধিপত্যবাদী শক্তির চক্রান্ত এখনো চলমান। এমন বাস্তবতায় জুলাই অভ্যুত্থানের শক্তিগুলোর মধ্যে বিভাজন ঈষাণকোণে কালো মেঘের ঘনঘটা বৃদ্ধি করবে। তাই পরস্পর বিরোধী দাবী ও কর্মসূচি থেকে সকলকে বিরত থাকার আহবান করছি।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, আমরা মুখোমুখি রাজনীতির অশুভ সংস্কৃতির শিকার হয়েছি বারংবার। যা আমাদের রাজনীতিকে সহিংস ও অসহিষ্ণু করে তুলেছে। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে এর পুনরাবৃত্তি রোধ করতে হবে।
রাজনীতিতে একই বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একাধিক এবং পরস্পর বিরোধী মতামত ও অবস্থান থাকতে পারে। আলোচনার টেবিলে, আইনের মাধ্যমে বা পরস্পর সমঝোতার মাধ্যমে এর সুরাহা করতে হবে। কোন অবস্থাতেই রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত কোন আচরণ করা এবং মুখোমুখি কর্মসূচি নেয়া সমীচীন হবে না।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর বলেন, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা নিয়ে সরকারকে স্পষ্ট অবস্থান জানাতে হবে। কোন সিটি কর্পোরেশনে পতিত স্বৈরাচারের অন্যায়ের শিকার প্রার্থীকে মেয়র ঘোষণা করা হচ্ছে, কোন সিটিতে আবার মেয়র ঘোষণা করে শপথ পড়ানো হচ্ছে না আবার বরিশাল সিটিতে মামলাই আমলে নেয়া হচ্ছে না। এ ধরণের দ্বিচারিতা রাজনীতিতে অস্থিরতা তৈরি করেছে। এর চেয়ে দ্রুততার সাথে স্থানীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। আগামী শীতের শুরুতেই স্থানীয় নির্বাচন আয়োজন করুন। সিটি কর্পোরেশেনের মেয়র ইস্যুতে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী পারস্পরিক বোঝাপড়ার রাজনীতিকে মাঠের পরস্পর বিরোধী রাজনীতির দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। এটা সংস্কার ও নতুন বাংলাদেশ নির্মানের পথে অন্তরায় হয়ে দেখা দেবে।
পীর সাহেব চরমোনাই মানবিক করিডোর নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বলেন, এই বিষয়ে পানি এতো ঘোলা হওয়ার আগেই ব্যাখ্যা তুলে ধরা যেতো। তথাপিও করিডোর বা চ্যানেল নিয়ে জনাব খলিলুর রহমানের ব্যাখ্যা ও বর্ণনার ওপরে আমরা আস্থা রাখতে চাই। একই সাথে তিনি অন্তবর্তী সরকারের প্রতি আহবান রেখে বলেন, চট্রগ্রাম বন্দরের ব্যবস্থাপনা বিদেশি কোম্পানীর হাতে তুলে দেয়া, নারী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের মতো বিতর্কিত বিষয়গুলো এড়িয়ে সংস্কারের কাজে গতি আনুন। রাজনীতিতে উত্তাপ তৈরি হয় এমন বিষয়ে দলগুলোর সাথে আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নিন। কারণ, যেকোন মূল্যেই সংস্কারের কাজ সম্পন্ন করতেই হবে। তাতেই আগামীর বাংলাদেশ নির্মাণের পথ সুগম হবে।