শুক্রবার , ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - শীতকাল || ২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

ঘুমধুম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে একাধিক মামলায় জড়িতরা পদ প্রত্যাশী।

প্রকাশিত হয়েছে-

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আগামী ১০ নভেম্বর নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের নেতা-কর্মিদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দিপনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এদিকে আহ্বায়ক কমিটি কর্তৃক দেওয়া হয়েছে প্রচারনার জন্য বেশ কিছু নির্দেশনা।

সম্মেলনে সভাপতি, সাধারন সম্পাদক ও সাংগঠনিক পদে বিগত ৫ তারিখ ফরম সংগ্রহ করেছেন ৪জন সভাপতি , ৫ জন সাধারন সম্পাদক পদে এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ২জন প্রার্থী।

গত ৬ নভেম্বর ফরম জমা দেন সকল মনোনয়ন সংগ্রহকারীরা এবং সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি যাচাই-বাছাই করে সকলের  মনোনয়ন ফরম বৈধ ঘোষনা করেন এবং প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ করেন।

আগামী জাতীয় নির্বাচনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলে মাদক ও চোরাকারবারী কাউকে নির্বাচিত না করে স্বচ্ছ এবং সংগঠনকে আরো এগিয়ে নিতে যারা ভূমিকা রাখতে পারবে তাদেরকেই গুরুত্বপূর্ণ পদে দেখতে চায় কাউন্সিলররা।

তবে কাউন্সিলর, প্রার্থী এবং নেতাকর্মীদের অভিযোগ, প্রার্থীদের মাঝে অনেকে রয়েছে যাদের একের অধিক মাদক ও চোরাকারবার মামলার আসামি।

সভাপতি প্রার্থী খালেদ সরোয়ার হারেচের (প্রতীক চেয়ার) দুইটি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে বিশেষ ক্ষমতা আইনে নাইক্ষ্যংছড়ি থানাতে একটি  মামলা (জি আর নং-১৩৭/১২, তারিখ ২১/০৫/২০১২ [২]) এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে উখিয়া থানায় অপর একটি ইয়াবার মামলা ছিল (জি আর নং-৪৪২/২০,  তারিখ ২০/০৯/২০২০ [৩]

অপর সভাপতি প্রার্থী আব্দুর রশিদ (প্রতিক ছাতা) এর নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় মাদক আইনে একটি ইয়াবার মামলা রয়েছে (জি আর নং-৩২০/১৬, তারিখ ১৬/১১/১৬ [৪])।

এছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক  প্রার্থী কবির আহমদের (প্রতীক গোলাপ ফুল) নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় এবং কক্সবাজার থানায় দণ্ডবিধি-১৮৬০এ দুইটি মামলা রয়েছে।

ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের প্রার্থীরা নিজেদের প্রতীক নিয়ে  ইউনিয়নের প্রত্যেকটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের কাছে দোয়া ও ভোট চেয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এদিকে সরজমিনে গিয়ে  প্রার্থীদের সাথে সম্মেলনের বিষয়ে জানতে চাইলে সভাপতি প্রার্থী ওসমান সরওয়ার জানান, সম্মেলনে কাউন্সিলররা মাদক ব্যবসার  সাথে জড়িত কাউকে নির্বাচিত করবেন না বলে আশাবাদী।

অপর সভাপতি প্রার্থী খালেদ সরওয়ার হারেচ বলেন, তার জানা মতে যারা মনোনয়ন দিয়েছেন তাদের মধ্যে মাদক সংশ্লিষ্ট কেউ নাই, রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে মাদক কারবারে আমাদের এলাকা ব্যবহার হচ্ছে।   জেলা নেতৃবৃন্দ, মাননীয় পার্বত্য মন্ত্রী এবং কাউন্সিলররা যেটা সিদ্ধান্ত দেন তিনি মেনে নেবেন।

ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং সভাপতি প্রার্থী এ.কে.এম জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, ভৌগোলিকভাবে আমাদের ইউনিয়নটি খুবই স্পর্শকাতর এবং সীমান্তবর্তী এলাকা এখানে    ক্লিন ইমেজের যোগ্য-দক্ষ নেতৃত্বের বিকল্প নেই। সম্মেলনে কাউন্সিলর এবং জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ সেটা মাথায় রেখে নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী নুর হোসেন জানান, যদি কাউন্সিলররা তাকে যোগ্য মনে করেন, তবে তাকে জয়যুক্ত করবেন বলে আশাবাদী।

সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব অধ্যক্ষ মোঃ ফরিদ মাদক মুক্ত নেতৃত্ব গঠনের জন্য কাউন্সিলরদের আহবান জানান।

স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং আওয়ামী লীগের শুভাকাঙ্ক্ষীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের নেতৃত্ব আওয়ামী লীগে দেখতে চায়, দীর্ঘদিন ধরে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলাতে বিতর্কিত ও সুবিধাবাদীরা আওয়ামী লীগের কমিটির নেতৃত্বে আছেন। আসন্ন সম্মেলনে তারা আশাবাদী সঠিক নেতৃত্ব নির্বাচন করবে নীতি নির্ধারকেরা, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলকে সুসংগঠিত করবে।

এদিকে প্রার্থীদের মধ্যে সভাপতি পদে মূলত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে সাবেক সভাপতি খালেদ সরওয়ার হারেচ এবং বর্তমান চেয়ারম্যান এ.কে.এম জাহাঙ্গীর আজিজজের মধ্যে। বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার বিপক্ষে নির্বাচন করা সহ বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকান্ড এবং মাদককারবারে সংশ্লিষ্টতা থাকায় খালেদ সরওয়ার হারেচকে কাউন্সিলর এবং নীতি নির্ধারকেরা নেতৃত্বে না আনার সম্ভাবনা রয়েছে।  এক্ষেত্রে জাহাঙ্গীর আজিজ এগিয়ে থাকবেন। আর সাধারণ সম্পাদক পদেও নতুন মুখ আসার জোর সম্ভাবনা রয়েছে।