শুক্রবার , ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - শীতকাল || ২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

বান্দরবানে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন বাস টার্মিনাল সংলগ্ন টানেল শুভ উদ্বোধন করেন- বীর বাহাদুর উশৈসিং

প্রকাশিত হয়েছে-

এইচ এম শাহাবউদ্দিন তাওহীদ।

দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার পর বান্দরবানের বর্তমান বাসস্ট্যান্ড হয়ে প্রস্তাবিত কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল হাফেজঘোনা যাওয়ার পথে পাহাড়ি সড়কে নির্মিত ৫০০ ফুট আধুনিক বাস টার্মিনাল টানেলের উদ্বোধন করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।

২৭অক্টোবর-২০২৩ খ্রিঃ সকালে বান্দরবান বাসস্টেশন এলাকায় টানেলের উদ্বোধন করা হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, বান্দরবান ইউনিটের বাস্তবায়নে ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে এই টানেলটি। টানেলের উদ্বোধনের ফলে বর্তমান বাসস্ট্যান্ড এলাকায় যানজট কমে আসবে এবং কাটা পাহাড় এলাকাটিতে পাহাড় ধসে সড়ক যোগাযোগ বন্ধের শঙ্কা অনেকটাই কমে যাবে।

এ সময় মন্ত্রী বলেন, বাসস্টেশনের এই সড়কের দুই পাশেই পাহাড়। প্রতি বছর বর্ষায় পাহাড় ধসে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়। এই পাহাড় ধসের কারণে সাইড ওয়াল দিতে গিয়ে সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য টানেলটি নির্মাণ করা হয়েছে। এটি নির্মাণের ফলে চারপাশ থেকে যেমন পাহাড় ধসে ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে পাশাপাশি পর্যটন নগরী বান্দরবানে আগত পর্যটকদের যাতায়াতে ভোগান্তি কমে আসবে। এছাড়া এটি দর্শনীয় স্থান হবে। আগামীতে টানেলের অভ্যন্তরে স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত বিভিন্ন ওয়াল পেইন্টিং করার পরিকল্পনার কথাও জানান মন্ত্রী।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইয়াসির আরাফাত জানান, বর্ষা মৌসুমে বিভিন্ন সময়ের পাহাড় ধসের কারণে টানেলটি নির্মাণে বিলম্ব হয়েছে। তবে নানা কৌশল অবলম্বন করে পাহাড় ধস ঠেকিয়ে অবশেষে টানেলটি নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত টানেলের পর এটিই বাংলাদেশে সড়কপথের অন্যতম টানেল, যা এলাকার পর্যটন শিল্পকে আরও গতিশীল করবে।

এর আগে মন্ত্রী পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে ১ কোটি টাকা ব্যয়ে রুমা বাসস্টেশনের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন করেন। এ ছাড়া বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের অর্থায়নে ১০টি উন্নয়ন প্রকল্পে ৮ কোটি ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বিএইচডিসি স্পোর্টস সেন্টার নির্মাণ, ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ রেস্টহাউস জামে মসজিদের জায়গায় মার্কেট নির্মাণ, ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে বান্দরবান পৌর এলাকার উজানী পাড়া ৫নং ওয়ার্ডের বায়তুন নূর জামে মসজিদের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তকরণ, ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে বান্দরবান সদর ইউনিয়নের লেমুঝিড়ি জ্ঞান দর্শন আন্তর্জাতিক বিদর্শন ভাবনাকেন্দ্র নির্মাণ, ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে বান্দরবান ঠিকাদারকল্যাণ সমিতির ভবন নির্মাণ, ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে বান্দরবান কারাতে ক্লাব নির্মাণ, ১ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে মেঘলা জুনিয়র হাই স্কুল নির্মাণ, ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ রাস্তা হতে কমিউনিটি সেন্টার সংযোগ সড়কে ঝুলন্ত ব্রিজ নির্মাণ, ৫২ লাখ টাকা ব্যয়ে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চত্বরে একটি বৌদ্ধ বিহার নির্মাণ, ১ কোটি টাকা ব্যয়ে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও শুভ উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহ আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লক্ষ্মী পদ দাশ, পৌরসভার মেয়র সামসুল ইসলাম, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়াউর রহমান, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বিন ইয়াছির আরাফাত, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুসসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতারা।