শনিবার , ২৮শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১৩ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - শীতকাল || ২৬শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

বেগম রোকেয়া পদকে ভূষিত হলেন চবি উপাচার্য=UkhiyaVoice24.Com

প্রকাশিত হয়েছে-

 

  • আলমগীর ইসলামাবাদী,,চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি

নারী শিক্ষা, নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, সাহিত্য ও সংস্কৃতির মাধ্যমে নারী জাগরণ এবং পল্লী উন্নয়নে সর্বোচ্চ স্বীকৃতি স্বরুপ এ বছর ‘বেগম রোকেয়া পদক-২০২০’ এর জন্য মনোনীত হলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ও কলামিস্ট প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার। ১৫ নভেম্বর ২০২০ তারিখে প্রেরিত মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব স্বাক্ষরিত এক পত্রের মাধ্যমে তাঁকে এ মনোনয়ন প্রদান করা হয়। প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার এ পদকের জন্য মনোনীত হওয়ায় পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তার দরবারে শুকরিয়া আদায় করেন। এ রাষ্ট্রীয় পদকের জন্য তাঁকে মনোনীত করায় মাননীয় উপাচার্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার কাছে অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। একইসাথে সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা এবং মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কমকর্তাবৃন্দসহ সকলের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। আগামী ৯ ডিসেম্বর ২০২০ সকাল ১০ টায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে তাঁকে এ পদক প্রদান করা হবে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নারী উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার ১৯৯১ সনে ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ.ডি. ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগ থেকে ১৯৮১ সনে এম. এ, ১৯৮০ সনে বি.এ (অনার্স) ডিগ্রি অর্জন করেন। এ মেধাবী গুণী শিক্ষক-গবেষক ১৯৭৫ সনে চট্টগ্রাম মহিলা কলেজ থেকে এইচ.এস.সি এবং ১৯৭৩ সনে কক্সবাজার সরকারী মহিলা স্কুল থেকে এস.এস.সি পাস করেন। প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার ১৯৯৬ সনের ১ জানুয়ারী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দিয়ে মহান শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে নিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি ২৫ জানুয়ারি ২০০৬ সনে প্রফেসর হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। এ কৃতি গবেষকের সাহিত্য বিষয়ক গবেষণা প্রবন্ধ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন খ্যাতিমান জার্ণালে প্রকাশিত হয়েছে। এরমধ্যে গল্প, উপান্যাস ও বিভিন্ন গবেষণা প্রবন্ধ উল্লেখযোগ্য। তিনি নজরুল জন্মশত বর্ষ উদযাপন পরিষদ কর্তৃক ‘চট্টগ্রাম একুশ পদক ২০১০’ পদকসহ বিভিন্নসময়ে বিভিন্ন সম্মানসূচক পদকে ভূষিত হয়েছেন। তিনি বাংলা একাডেমির আজীবন সদস্যসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত আছেন। তিনি ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, সৌদিআরব, সিংগাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিশ্বের বেশ কিছু দেশ সফর করেন। উল্লেখ্য এ গুণী শিক্ষক ২০১৬ সালের ২৮ মার্চ থেকে চট্টগাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি ২০১৬ সালে বাংলাদেশ সরকারের অনুসন্ধান কমিটির (প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনারদের নিয়োগের লক্ষ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতির নিকট নাম সুপারিশ প্রদানের জন্য) সদস্য ছিলেন। তিনি নির্বাচক মন্ডলীর সদস্য হিসেবে জয়ীতার (বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ নারী নির্বাচন) সাথে কাজ করেছেন। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন আয়োজিত কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলাম রজত জয়ন্তী, একুশে ফেব্রুয়ারী এবং মহান স্বাধীনতা দিবস ও মহান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানের সাথে যুক্ত আছেন। তিনি বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ, কলকাতা, ভারত, বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব অব হীরণ লাইব্রেরী, কলকাতা, ভারত-এর সদস্য ছিলেন। তিনি ‘কুচবিহার অনাসৃস্টি’ (বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক পত্রিকা), পশ্চিমবঙ্গ-এর উপদেস্টা, ‘লোক বাংলা’ (লোকসংস্কৃতি বিষয়ক সাময়িকী), ঢাকা, বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ হেরিটেজ রিসার্চ সেন্টার, ঢাকা, বাংলাদেশ এর সদস্য। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের অধীনে প্রকাশিত বিভিন্ন জার্ণাল, পান্ডুলিপি (গবেষণা পত্রিকা), বাংলা বিভাগের সম্মানিত সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাছাড়াও তিনি দেশ-বিদেশে বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সেমিনার-সিম্পোজিয়ামে অংশগহণ করেছেন। সর্বশেষ তিনি সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য ভারতের আচার্য দীনেশ চন্দ্র স্বর্ণ পদক এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক একুশে পদকে ভূষিত হন। প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার ১৯৫৬ সনে কক্সবাজারের জোয়ারিয়ানালা গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গহণ করেন। তাঁর পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আফসার কামাল চৌধুরী এবং মা মরহুমা বেগম লুৎফুন্নাহার কামাল। তাঁর স্বামী বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মেজর (অবঃ) মোঃ লতিফুল আলম চৌধুরী। তিনি ১ পুত্র ও ১ কন্যা সন্তানের জননী। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য রাষ্ট্রীয় সম্মানে ভূষিত হওয়ায় চবি শিক্ষক সমিতি, অফিসার সমিতি, কর্মচারী সমিতি ও কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ পৃথক পৃথক বিবৃতিতে মাননীয় উপাচার্যকে উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছেন।