১৮-০৩-২০২৩ ইংরেজি তারিখে কালির ছড়া উত্তর পাড়ার ছাবের আহমদ এর ছেলে নেছার উদ্দিন মোটর সাইকেল এক্সিডেন্ট করে ডান পায়ের টাকনুর নিচে আঘাত প্রাপ্ত হয়ে ঈদগাহ মডেল হাসপাতাল ইমার্জেন্সি বিভাগে চিকিত্সার জন্য ভর্তি হন। তত্ক্ষনাত আমি রোগীর ক্ষতস্থানটি পরিক্ষা করে দেখলাম ক্ষতস্থান মারাত্নকভাবে সয়েল কন্ঠামিনেটেড (মাটি, ময়লা, ও লোহার মরিচা) ও লেচারেটেড (চামড়া ও মাংসপেশী থেঁতলে গেছে)। তারপর রোগীকে অপারেশন রুমে নিয়ে ক্ষতস্থানটি এসেপ্টিক প্রক্রিয়ায় টয়লেটিং করা হয় ।
মাংসপেশীর রক্তপাত বন্ধ করার জন্য ভিক্রিল সুতা দিয়ে লাইগেট করা হয়। রোগীকে যথোপযুক্ত এন্টিবায়োটিক ও নির্দেশনা প্রেসক্রাইব করা হয় এবং রোগীকে ২দিন পর পর ঈদগাহ মডেল হাসপাতালে নিয়মিত ড্রেসিং করতে বলা হয় ।
উল্লেখ্য যে, ঈদগাহ মডেল হাসপাতালে প্রতিটি ড্রেসিং এর জন্য আলাদা আলাদা গজ, মপ, ফরসেপ, আর্টারি ও কিডনি ট্রে অটোক্লেভিং প্রক্রিয়ায় সম্পুর্ণ জ্বীবানুমুক্ত করে ব্যবহার করা হয় ।
এরকম জ্বীবানুমুক্ত ড্রেসিং করা ফার্মেসিতে সম্ভব না যার ফলে ইনফেকশনের ঝুকি বেড়ে যায় ।
পরবর্তীতে রোগী ডাক্তারের নির্দেশ অনুযায়ী নিয়মিত হাসপাতালে ড্রেসিং না করে গ্রামের ফার্মেসিতে ড্রেসিং করতে থাকে। সম্পূর্ণ জ্বীবানুমুক্ত ভাবে ড্রেসিং না করার কারণে ক্ষতস্থানে ইনফেকশন দেখা দিলে একপর্যায়ে রোগী আবার ঈদগাহ মডেল হাসপাতালে ইনফেকশনযুক্ত ক্ষতস্থান নিয়ে আসে। ইনফেকশন হওয়ায় ক্ষতস্থানটি আবার নিয়মিত ড্রেসিং করে শুকাইতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়।
একপর্যায়ে ডা. মো. ইউসুফ আলী স্যার কে দেখানোর পর স্যার নিয়মিত মডেল হাসপাতালে এসে ড্রেসিং করার পরামর্শ দেন। কিন্তু রোগী ডাক্তারের পরামর্শ উপেক্ষা করে ২৫-০৫-২০২৩ ইং তারিখে কক্সবাজার ডাক্তার সাখাওয়াত হোসেন স্যারের কাছে যায় এবং ক্ষতস্থান ডেব্রাইডমেন্ট করেন ।
পরবর্তীতে প্রায় ২০ দিন পর কুচকিতে ফোঁড়া দেখা দিলে আবার ১৪-০৬-২০২৩ ইং তারিখে ডা. নজরুল ইসলাম স্যারের কাছে যায় তিনি ফোঁড়া অপারেশন করে বায়োপসির জন্য পাঠালে ২৬-০৬-২০২৩ ইং তারিখে যক্ষার জ্বীবানু ধরা পড়ে।এবং যক্ষার ওষুধ সেবন করা শুরু করলে তার ক্ষতস্থানটি দ্রুত উন্নতি হতে থাকে ।
উল্লেখ্য- যক্ষা রোগীর ওষুধ সম্পুর্ণ সরকারীভাবে সরবরাহ করা হয়। যক্ষা শুধু ফুসফুসের রোগ নয় বরং দেহের বিভিন্ন অঙ্গে হতে পারে। যক্ষা দেহে বিভিন্নভাবে সংক্রমণ হতে পারে ।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটা প্রতীয়মান হয় যে, রোগীর যক্ষা সংক্রমণের জন্য ক্ষতস্থানটি শুকাইতে বিলম্ব ঘটে।
এখানে রোগী র যক্ষা আগে থেকেই ছিলো বা এক্সিডেন্ট`র সময় সয়েল কন্ঠামিনেশন থেকে বা বাইরে ফার্মেসী তে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ড্রেসিং থেকে সংক্রমণ হয়েছে। আর রোগীর যক্ষা ধরা পড়েছে কক্সবাজার হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু করার প্রায় ১ মাস পর এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তারা আমার হোয়াটসঅ্যাপে বিভিন্নভাবে হেনস্থা ও মানহানি করার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে ও ১ লক্ষ টাকা দাবি করেন।
এক পর্যায়ে তারা ১৫-২০ জন লোক দলবদ্ধ হয়ে ডা. মো. ইউসুফ আলী স্যারের চেম্বারে এসে টাকা দাবী করলে ডা.মো. ইউসুফ আলী স্যার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায় ।
এতে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে ১০-০৭-২৩ ইং তারিখে আমার বিরূদ্ধে মিথ্যা মামলা করে । (সি আর নং-১৮৪/২০২৩ ঈদগাঁও)। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ভুল চিকিৎসায় পঙ্গু হতে চলেছে বলেও সংবাদ পরিবেশন করে। যা সম্পূর্ন মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর।
রোগী বর্তমানে সুস্থ ও স্বাভাবিক আছেন তবে যক্ষা সম্পুর্ণ ভাল হতে ৬ মাস লাগতে পারে ।
এই মামলা সম্পুর্ণ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমুলক । এ রোগীর বিষয়ে চিকিৎসায় কোন অবহেলা বা ভুল করা হয়নি।
প্রতিবাদ ও ব্যখ্যাকারীঃ
ডা. হাফেজ মাওলানা মো. হাবিবুর রহমান
(বিএমডিসি রেজি: নং- এ-১০৫০৬২)
সিনিয়র মেডিকেল অফিসার- ঈদগাহ মডেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াবেটিস কেয়ার সেন্টার।
Leave a Reply