বৃহস্পতিবার , ২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - শীতকাল || ২৪শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

রংপুরে গ্রামের ভিতরে খোলা আঙ্গিনায় চলছে অবৈধ সাবান কারখানা

প্রকাশিত হয়েছে-

শরিফা বেগম শিউলীঃ- স্টাফ রিপোর্টার রংপুর,

রংপুর সদর উপজেলায় গ্রামের বসত বাড়ির আঙ্গিনায় কোন প্রকার পরিবেশ ও সর্তকতা অবলম্বন ছাড়াই চলছে সাবান তৈরির কাজ।মঙ্গলবার (১৫ মার্চ ২০২২) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সদর উপজেলার ৪নং সদ্যপুস্করনী ইউনিয়নের পালিচড়া উয়ারপার গ্রামে সাবান তৈরি হচ্ছে। শুধুমাত্র ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া অন্য কোন লাইসেন্স যেমন, ইনকাম ট্যাক্স, বিএসটিআই পরিবেশ লাইসেন্স নাই। ট্যাক্স ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে, সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে, দিব্যি ব্যবসা করে চলছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানাযায়, গ্রামে কয়েক হাজার লোক বসবাস করে। কিন্ত মুকুল মিয়া বসত বাড়ির আঙ্গিনায় কোন প্রকার সর্তকতা ছাড়াই গায়ের জোরে সাবান তৈরির কাজ করে আসছে। সাবান তৈরির জিনিসপত্র গুলো ঢাঁকি না রাখি উনদেও করি রাখে। গ্রামে তো অনেকগুলো বাচ্চা আছে। সব বাচ্চা গুলা সবার বাড়িতে যায়। কোন বাচ্চা মুকুলের বাড়িত যায়া যদি ওই জিনিসগুলা খেলে মারা যায়। তাহলে এর দায়ভার কে নেবে। তোমরা গুলোই কন এলা।

এ বিষয় জানার জন্য সাদিব কমলা ডিটারজেন্টের মালিক মুকুলকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি ছোট থেকে সাবান বানানোর সঙ্গে জড়িত। আমি নিজেই প্রায় আট মাস থেকে প্রতিদিনে ১,৬০০ (ষোলশো) পিস সাবান তৈরি করে মার্কেটে সেল দেই। শুধুমাত্র ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া আমার কাছে আর কোনো লাইসেন্স নাই। আমি বিএসটিআই ও পরিবেশ অফিসে গেছিলাম। তাদের সাথে কথা বলেছি। তারা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিলে লাইসেন্স দিবে আমাকে। আমি বিএসটিআই এর অনুমতি পাইনি কিন্তু বিএসটিআই এর নাম্বার ছাড়া কেউ প্রোডাক্ট নিতে চায় না। তাই বিএসটিআই এর লোগো প্যাকেটে ব্যবহার করে ব্যবসা করছি।
মুকুলের মহাজন গুরু ডিটার্জেনের মালিক আতিক হোসেন সাংবাদিককে মুঠোফোনে ফোন দিয়ে বলেন, আপনি ওখানে গেছেন কেন, কত টাকা লাগবে আপনার আমাকে বলেন, ওনাদের কাছে গেছেন কেন?? পড়ে সাক্ষাতে এসে ক্ষমা চেয়ে বলে আমি মনে করেছিলাম আপনারা সাংবাদিক নন। কারণ এর আগে আমার সাবান কারখানায় এসে অনেকে সাংবাদিক নামে ভুয়া পরিচয় দিয়ে টাকা নিয়ে গেছে। তাই আমি না বুঝে আপনার সাথে রাগ হয়ে কথা বলেছি।

গুরুডিটার্জেনের মালিক আতিক হোসেনের সাথে কথা বলে আরো জানা যায় সেও অবৈধ ভাবে বিএসটিআইয়ের অনুমোদন ছাড়াই লোগো ব্যবহার করে আসতেছে। আতিক হোসেন বলেন আমাকে প্যাকেট গুলো বিএসটিআইয়ের অফিসার পুড়ে ফেলতে বলছে আমি পুড়ি নাই। এখনো প্যাকেট গুলো ব্যাবহার করে আসতেছি। শেষ হলে আমার ব্যবসা আমিও এখানে গ্রামে নিয়ে আসবো এবং একসাথে ব্যবসা করবো।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আতিক হোসেন জানান, মুকুল নিজেই সাবান তৈরি করে ও আর্থিকভাবে অসচ্ছল। আমি মুকুলকে আর্থিক সাপোর্টা দেই। আমার গুরু ডিটারজেন্ট পাউডার নামের একটা কোম্পানি আছে। সেজন্য আমি মুকুলকে সাবান বানাইতে বলছি। মুকুল সাবান তৈরি করে আমাকে সাপ্লাই দেয় সেগুলো আমি আমার কোম্পানির নাম দিয়ে বাজারে বিক্রি করি।

এ বিষয়ে জানার জন্য মুঠোফোনে ফোন দিলে ৪নং সদ্যপুস্করনী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার আলমগীর হোসেন জানান, আমি জানি জুয়েল সহ ওখানকার কয়েকজন শাবান তৈরি করে। তাদের কোনো প্রকার লাইসেন্স নাই অবৈধ ভাবে তারা ব্যবসা করে আসছে।

এদিকে বিএসটিআইয়ের অফিসারের সাথে কথা বললে তিনি জানান সাদিব কমলা সাবান নামে কোন কারখানার অনুমোদন দেয়া হয় নাই। তারা অবৈধ ভাবে বিএসটিআইয়ের লোগো ব্যবহার করে আসছে। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।