শুক্রবার , ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - শীতকাল || ২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট সোসাইটি : যে ফর্মুলায় স্মার্ট বাংলাদেশ

প্রকাশিত হয়েছে-

ডেস্ক রিপোর্ট

ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবে। এবার টার্গেট স্মার্ট বাংলাদেশ। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ারও প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট সোসাইটি- এই চারটি ভিত্তির ওপর গড়ে তোলা হবে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’। এ লক্ষ্যে কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত হচ্ছে। প্রস্তুত হচ্ছে স্মার্ট বাংলাদেশের রোডম্যাপ। আর রোডম্যাপ চূড়ান্তকরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠন করা হয়েছে টাস্কফোর্স। ইতোমধ্যে টাস্কফোর্স কাজও শুরু করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ উদযাপন অনুষ্ঠানে গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রাধান্য পাচ্ছে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার অঙ্গীকার। যা এরই মধ্যে নজর কেড়েছে সবার। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক থেকে শুরু করে প্রতিটি নেতাকর্মী তাদের বক্তব্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কথা বলছেন। কিন্তু সবার মধ্যে প্রশ্ন- কীভাবে হবে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’? রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি থেকে সাধারণ মানুষের এই কৌতূহলের জবাব দিতে প্রস্তুত বর্তমান ডিজিটাল প্রশাসন এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার।

সূত্র জানায়, স্মার্ট বাংলাদেশের সফল বাস্তবায়নের জন্য আগের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্স’কে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ টাস্কফোর্স’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। গত বছরের ১৬ আগস্ট টাস্কফোর্সের গেজেট প্রকাশ করে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে টাস্কফোর্সের সদস্য সংখ্যা ৩০। এছাড়া সরকারের পাঁচজন মন্ত্রী, একজন প্রতিমন্ত্রী এই টাস্কফোর্সের সদস্য। মন্ত্রীরা হলেন- অর্থ, শিক্ষা, পরিকল্পনা, বাণিজ্য এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রীও এর সদস্য। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, বাংলাদেশ টেলিযাগোযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সাইন্স ও প্রকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) সভাপতি, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন ফর সফটওয়্যার এন্ড ইনফরমেশন সার্ভিসের (বেসিস) সভাপতি, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি, ই-ক্যাব সভাপতি, এটুআই প্রোগ্রামের পরামর্শক আমীর চৌধুরী, জাতীয় টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব কল সেন্টার এন্ড আউটসোর্সিংয়ের সভাপতি, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স এসোসিয়শেন অব বাংলাদেশের সভাপতি এবং হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এই টাস্কফোর্সের সদস্য থাকবেন।

সূত্র জানায়, গত বছরের ২০ মার্চ ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্সের তৃতীয় সভায় ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ এর রূপরেখা তৈরির নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। ওই সভায় আত্মকর্মসংস্থানভিত্তিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম, শিক্ষার্থীদের জন্য (ওয়ান স্টুডেন্ট, ওয়ান ল্যাপটপ, ওয়ান ড্রিম’র আওতায়) ল্যাপটপ সহায়তা, ডিজিটাল সার্ভিস, সব ডিজিটাল সেবাকে কেন্দ্রীয়ভাবে সমন্বিত ক্লাউডে নিয়ে আসা এবং ডেটা নিরাপত্তা, ডিজিটাল লিডারশিপ একাডেমি স্থাপনসহ স্মার্ট বাংলাদেশের মোট ১৪টি কনসেপ্ট পেপার বা ধারণাপত্র উপস্থাপন করা হয়।

টাস্কফোর্সের প্রথম সভায় ২৬ সিদ্ধান্ত : গত ১৩ নভেম্বর টাস্কফোর্সের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ২৬টি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ সফলভাবে বাস্তবায়ন হওয়ায় এ অর্জনটি সারাদেশে উদযাপন হবে। যা বাস্তবায়ন করবে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক স্মার্ট বাংলাদেশের কর্মপরিকল্পনা সারাদেশে ব্যাপকভাবে প্রচার করবে। সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার জাতীয় ওয়েব পোর্টাল হালনাগাদ করা হবে। দুর্গম অঞ্চলে ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন করার উদ্যোগ নেবে বিটিআরসি। বাংলাদেশের আইসিটি খাতের অর্জন আন্তর্জাতিক মণ্ডলে ব্র্যান্ডিং করা হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করতে দক্ষ জনবল তৈরির জন্য এ আই, ডিজিটাল সিকিউরিটি, ফোর আইআর, বিগ ডাটা, ব্লক চেইন, রোবোটিক্স ও টট ইত্যাদি বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলামে অর্ন্তভুক্ত করা হবে।

ফাইভ জি সেবা চালুর পাশাপাশি ২০২৫ সালের মধ্যে ব্যান্ডউইথের চাহিদা বিবেচনায় চতুর্থ সাবমেরিন ক্যাবলে সংযোগের ব্যবস্থা নেয়া হবে। পিছিয়ে পড়া ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীতে উন্নয়ন মূলধারায় নিয়ে আসতে আত্মকর্মসংস্থানভিত্তিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম নেয়া হবে। ক্ষুদ্র, কুটির, ছোট, মাঝারি ব্যবসাগুলোর জিডিপিতে অবদান বাড়াতে এন্টারপ্রাইজভিত্তিক ব্যবসাগুলোকে বিনিয়োগ উপযোগী স্টার্টআপ হিসেবে প্রস্তুত করা হবে। সার্ভিস এগ্রিগেটর ট্রেনিং মডেলে সরকারি সেবা ও অবকাঠামোনির্ভর উদ্যোক্তা তৈরি করা হবে। সব ডিজিটাল সেবাকে কেন্দ্রীয়ভাবে সমন্বিত ক্লাউডের আওতায় নিয়ে আসা হবে। জাতীয় রাজস্ববোর্ড ও বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সব সেবা অনলাইনের আওতায় আনা হবে। এছাড়া ডিজিটাল বাণিজ্য কর্র্তৃপক্ষ স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হবে।

‘যেভাবে হবে স্মার্ট বাংলাদেশ’: টাস্কফোর্সের একাধিক সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে উত্তরণের মাধ্যম হবে প্রযুক্তি। স্মার্ট বাংলাদেশের সব কাজ হবে প্রযুক্তির মাধ্যমে। নাগরিকরা প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ হবেন। প্রযুক্তির মাধ্যমে এমন একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা তৈরি করা হবে যা হবে ক্যাশলেস। মোটকথা, সরকার ও সমাজকে স্মার্ট করে গড়ে তোলা হবে। যার বিশাল কর্মযজ্ঞ সম্পাদন করেছে সরকার।
সূত্র জানায়, স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি ভিত্তিকে সমানতালে গুরুত্ব দিয়ে শুরুতে দেশের নির্দিষ্ট কিছু স্থানে পাইলটিং প্রকল্প হিসেবে শুরু করা হবে। ধীরে ধীরে দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়া হবে। ২০৪১ এর আগেই ভিশন বাস্তবায়ন করা হবে। তবে এই চারটি ভিত্তিকে ব্যবহার করে কীভাবে স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে তা ভোরের কাগজকে জানান টাস্কফোর্সের একাধিক সদস্য। স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি ভিত্তির মধ্যে একটি হলো স্মার্ট সিটিজেন। অর্থাৎ একজন নাগরিক প্রযুক্তিগত জ্ঞানে পারদর্শী হবেন। তাদের মধ্যে ক্যাশলেস পদ্ধতিতে অর্থনৈতিক লেনদেনের ক্ষেত্রে সক্ষমতা তৈরি হবে। এক্ষেত্রে গ্রামের প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষদেরও এই পদ্ধতিতে অভ্যস্ত করা হবে। প্রান্তিক মানুষদের প্রযুক্তি ব্যবহারের উপযোগী শিক্ষিত করে গড়ে তোলা হবে। গ্রামের কাঁচামালের বাজারেও যখন কাগজের টাকার পরিবর্তে ক্যাশলেস পদ্ধতি চালু হবে তখনই ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ হয়েছে বলে ধরে নেয়া হবে।
দ্বিতীয়ত, স্মার্ট ইকোনমির মূল কনসেপ্টই হলো ক্যাশলেস ট্রানজিশন বা টাকাবিহীন অর্থনৈতিক লেনদেন। স্মার্ট ইকোনমির ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের আয় ও খরচের স্বচ্ছতা থাকবে। কোনো ব্যক্তির সম্পত্তির পরিমাণ কতটুকু সেটা সরকারের কাছে তথ্য থাকবে। তার জন্য রাষ্ট্রকে ট্যাক্স বা রাজস্ব দিতে হবে। বর্তমানে লুকোচুরি করে ট্যাক্স ফাঁকি দেয়ার সুযোগ থাকলেও স্মার্ট ইকোনমি প্রতিষ্ঠিত হলে সেই সুযোগ চিরতরে বন্ধ হবে। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অনিয়মগুলো চিহ্নিত করা সহজ হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ ধারণাটি পাকাপোক্ত হওয়ার পরেও অনিয়ম চলছে। কিন্তু স্মার্ট ইকোনমি বাস্তবায়িত হলে এক্ষেত্রে অনিয়ম করার সুযোগ থাকবে না। ব্যক্তি চাইলেই তার সম্পত্তির হিসাব লুকাতে পারবে না। এটা সবার কাছে স্বচ্ছ হয়ে যাবে। এজন্য অর্থনীতিকে ব্যাংকিং চ্যানেলের অধীন নিয়ে আসতে হবে। কেউ যদি ব্যক্তিগতভাবে টাকা নিজের কাছে গচ্ছিত রাখে সেক্ষেত্রে স্মার্ট ইকোনমির বিষয়টি বাস্তবায়ন করা কষ্টসাধ্য হবে।

তৃতীয়ত, স্মার্ট গভর্নেন্সের ধারণাটি তখনই স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরিতে ভূমিকা রাখবে যখন সরকার দেশের শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সক্ষম হবে। জনগণও শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সরকারকে সহায়তা করবে। রাষ্ট্রের উন্নয়নে সরকার ঘোষিত বাজেটের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব থাকবে। অর্থাৎ সরকার প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত যা বাজেট দেবে সেটা স্বচ্ছ হবে। এছাড়া প্রকল্পের মেয়াদ বর্তমান সময়ের মতো বারবার বাড়ানো হবে না। বরং নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। এজন্য সরকারকে আলাদা কোনো বাজেটও দিতে হবে না। কাজগুলো ঠিকভাবে হচ্ছে কিনা তার সার্বিক তত্ত্বাবধানের জন্য মনিটরিং করা হবে।

সবশেষে, স্মার্ট সোসাইটির ধারণাটি স্মার্ট সিটিজেনের ধারণার বৃহৎ পরিসর। যে সমাজে মানুষ তাদের দৈনন্দিন জীবনাচার প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করেই পার করতে সক্ষম হবে এবং তারা তাতেই অভ্যস্ত হবে সেটা হবে স্মার্ট সোসাইটি। এক্ষেত্রে বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতাও রয়েছে। বর্তমানে গবেষণার দিকে সরকারে বাজেট অন্য খাতের তুলনায় কম। কিন্তু, স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরি করতে হলে গবেষণা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

গবেষণা ও সংশ্লিষ্ট খাতে বাজেট বাড়াতে হবে উল্লেখ করে স্মার্ট বাংলাদেশ টাস্কফোর্সের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সাইফুদ্দিন মো. তারিক ভোরের কাগজকে বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরে প্রধানত নেতৃত্বের আসনে থাকবেন প্রযুক্তি খাতের বিশেষজ্ঞরা। তাদের পর্যাপ্ত নার্সিং করতে হবে এবং তাদের জন্য যথাযথ সুযোগ তৈরি করতে হবে, যেন দেশের মেধা বিদেশে পাচার না হয়। বর্তমানে দেশের একটি বড় অংশই তরুণ। তাদের স্মার্ট বাংলাদেশের উপযোগী করে তুলতে পারলে একেকজন দেশের জন্য সম্পদে পরিণত হবে। তাদের দিকে নজর দিতে হবে। এছাড়া প্রযুক্তি খাতে সরকারের বিনিয়োগ আরো বাড়ানোসহ শিক্ষার্থীদের ব্যাপক পড়াশোনার সুযোগ তৈরি করতে হবে। তবেই স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা ত্বরান্বিত হবে।

যেহেতু স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য ধরা হয়েছে ২০৪১ সাল পর্যন্ত। তাই সরকার তার পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোবে। তাড়াহুড়ো না করে ঠাণ্ডা মাথায় শুরুতে কিছু কিছু জায়গায় পাইলট প্রোগ্রাম হিসেবে স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি ভিত্তি চালু করবে। ধারাবাহিকভাবে দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়া হবে চারটি ভিত্তিকে। ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ আর বর্তমানের বাংলাদেশ থাকবে না, সেটা হবে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’।

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হলে সবার আগে রাজধানী ঢাকাকে স্মার্ট করে গড়ে তুলতে হবে। এই স্মার্ট ঢাকা গড়তে বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাব) বাস্তবায়নের দায়িত্ব রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক)। সংস্থাটির প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ আশরাফুল ইসলাম বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ তখনই হবে যখন প্রতিটি নাগরিক ফেস টু ফেস কন্টাক্ট ছাড়াই তার মৌলিক সেবাগুলো নিতে পারবে। তিনি বলেন, আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিতে হবে স্মার্ট এডুকেশন সিস্টেম আর স্মার্ট এগ্রো ইকোনমিতে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে প্রতিটি ক্ষেত্রে গবেষণা ও প্রশিক্ষণকে প্রাধান্য দিতে হবে। প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে স্ব স্ব ডিপার্টমেন্টে প্রশিক্ষণকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ তখনই হবে যখন সরকারি বেসরকারি যে কোনো সেবা পেতে মানুষকে সশরীরে যেতে হবে না।

আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে। আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ব। প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটা অবস্থানে চলে এসেছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে যে প্রযুক্তির প্রয়োজন যেমন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অর্থাৎ আধুনিক প্রযুক্তিগুলো আমাদের দেশে শুরু হয়েছে। শিল্পকারখানাগুলোতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোবটের প্রচলন শুরু হয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়েছে। প্রযুক্তিগত পড়াশোনা ও ট্রেনিংয়ের বিকল্প নেই। সেগুলোতে জোর দেয়া হচ্ছে। ২০৪১ সালের আগেই আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে পারব।