কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি
কক্সবাজার জেলার অন্তর্গত উখিয়া উপজেলার হলদিয়া পালং ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের গঠনতন্ত্র বাদ দিয়ে সাবেক বহিষ্কৃত সভাপতি মাহবুবুল আলম চৌধুরী নেতৃত্বে, তথাকথিত হলদিয়া পালং ইউনিয়নের সিলেক্টেড চেয়ারম্যান শাহ আলমের সহযোগীতায় মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এক বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হওয়ায় সাধারণ আওয়ামী কর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অস্থিরতা বিরাজ করতেছে। এহেন অগঠনতান্ত্রীক কর্মকাণ্ড তৃণমূল আওয়ামীলীগ চরম বিভ্রান্তিতে পড়েছে। উক্ত নিয়মপরিপন্থিমূলক বর্ধিত সভায় হলদিয়া পালং ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে কটুক্তি সহ উপজেলা ও জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দদেরকে পর্যন্ত চরম কটুক্তি করা হয়ে।
উক্ত বর্ধিত সভা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে হলদিয়া পালং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মোহাম্মদ ইসলাম বলেন, উক্ত বর্ধিত সভা যে আয়োজন করা হচ্ছে তা আমি জানি না, তাছাড়া যারা ওখানে বক্তব্য দিয়েছে জাহাঙ্গীর কবির চৌঃ ছাড়া আর কেউ উপজেলা আওয়ামীলীগের বৈধ নেতা নয়। ঐ সভায় যে সভাপতিত্ব করেছেন মাহবুবুল আলম চৌধুরী ওনি তৎকালীন জামাতের পক্ষে নির্বাচন করা’ই আওয়ামীলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। তারা অবৈধ, ঐ মিঠিং নিয়ে হলদিয়া পালং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ মোটেও বিচলিত নয়। যেখানে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নির্বাচিত কমিটি আছে সেখানে বহিরাগত কারো স্থান হবে না। তারা জামায়াত বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য ইউনিয়ন আওয়ামীলীগকে দ্বিধা বিভক্ত করার চেষ্টা করতেছে। ইনশাল্লাহ্ হলদিয়া পালং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ ঐক্যবদ্ধ। এখানে ফাটল ধরানো কোনমতেই সম্ভব নয়।
হলদিয়া পালং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, হলদিয়া পালং ইউনিয়নের আমি কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। আমাকে বাদ দিয়ে হলদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নামে বর্ধিত সভা তারা কিভাবে করে তা আমার বোধগম্য নয়। তারা জামায়াত বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য ইউনিয়ন আওয়ামীলীগকে ধ্বংস করার পায়তারা করতেছে। আমি এই ধরনের গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কার্যকালাপের তীব্রনিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও হলদিয়া পালং ইউনিয়নের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমিনুল হক আমিন বলেন, উখিয়া উপজেলায় আওয়ামীলীগের একদল ভ্রাম্যমাণ জনবিচ্ছিন্ন ও স্বঘোষিত নেতার আবির্ভাব হয়েছে। তারা রাতে জামায়াত বিএনপি, দিনে আওয়ামীলীগ। তাদের আশেপাশে যারা আছে তাদের মধ্যেও অনেকে বিএনপি জামায়াতের কর্মী ও অনেকে নাশকতা মামলার আসামী। হলদিয়া পালংয়ের সিলেক্টেড চেয়ারম্যান শাহ আলম উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। তারা কয়েকজন ভাসমান ও লাইসেন্স বিহীন নেতার কারণে উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের চরম ক্ষতি হচ্ছে। হলদিয়া পালং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ অনেক সুসংগঠিত আছে, কিন্তু একদল জনবিচ্ছিন্ন নেতার কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। হলদিয়া পালং ইউনিয়নের নির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বাদ দিয়ে বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত সত্যিই লজ্জাজনক ও দুঃখজনক। এই ধরনের ঘটনার তীব্রনিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এই বিষয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উখিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, একটি গোষ্টি উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগকে ধ্বংস করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। তারা বিএনপি জামায়াতের সাথে হাত মিলিয়ে আওয়ামীলীগের ভিতরে থেকে খন্দকার মোস্তাকের মত আওয়ামীলীগকে ধ্বংস করতে চায়। তারই ধারাবাহিতায় কতগুলো জনবিচ্ছিন্ন ও বহিষ্কৃত নেতাদের সমন্বয়ে আওয়ামীলীগের গঠনতন্ত্রকে বাদ দিয়ে হলদিয়া পালংয়ে নাকি একটি বর্ধিত সভা করেছে, যার কোন ভিত্তি নাই। ইতিপূর্বে জেলা আওয়ামীলীগ তাদেরকে লিখিত নোটিশ দিয়েছে এই ধরনের বিভ্রান্তি না ছড়ানোর জন্য। তারপরও তারা কোন অদৃশ্য শক্তির অনুবলে উখিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে তা আমার বোধগম্য নয়। আমি জেলা আওয়ামীলীগের নীতিনির্ধারকদের কাছে অনুরোধ করছি, এই ধরনের কর্মকাণ্ড ঘটতে থাকলে উখিয়ায় আওয়ামীলীগ শূণ্য হতে বেশিদিন লাগবেনা। তাদের লাগাম টেনে ধরা জরুরী।
তাছাড়া হলদিয়া পালং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের তৃণমূলের নেতৃবৃন্দদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করতেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউনিয়ন আ’লীগের এক নেতা বলেন, তথাকথিত হলদিয়ার চেয়ারম্যান শাহ আলম দীর্ঘ্য পাঁচ বছর যাবৎ হলদিয়ার আওয়ামীলীগের কর্মীদের সরকারের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছেন। শিবিরের ক্যাডারদেরকে সুযোগ দিয়ে তিনি আওয়ামীলীগের কর্মীদের নির্যাতিত করেছেন। জামায়াত বিএনপির কর্মীদের দিয়ে আওয়ামীলীগের কর্মীদের নির্যাতন করেছেন। এখন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগকে একেবারে ধ্বংস করার পায়তারা করতেছেন।
আরেক নেতা বলেন, শাহ আলম নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে কিভাবে আওয়ামী লীগের ক্ষতি করতে আমার জানা নেই। তার সমস্ত কর্মকাণ্ড আওয়ামীলীগকে সমূলে ধ্বংস করা। আমরা আওযামী লীগের কর্মীরা তার হাত থেকে বাচতে চায়। জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কাছে তিনি অনুরোধ করে বলেন, শাহ আলম চেয়ারম্যানের মত এমন আ’লীগ খেকোদের হাত থেকে আ’লীগকে বাচান, অন্যথায় সে আওয়ামী লীগকে জামায়াত বিএনপির হাতে বিক্রি করে দিবে।
গঠনতন্ত্র পরিপন্থী এমন ঘটনায় হলদিয়া পালং ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করতেছে। তারা এই বর্ধিত সভার বিরুদ্ধে নিন্দা জ্ঞাপন করেছেন। ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা যেন পূণরায় না ঘটে সে জন্য জেলা আওয়ামী লীগকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অনুরোধ করেন।